নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প নয় সত্য (আমার দেখা একজন উত্তম আধুনিক শিক্ষিত মুসলিম ছেলের বিয়ে )

২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩২




------------------------------------------------------------------
পাত্র তার চাচা চাচী মামা মামী বোন দুলা ভাই বাবা মা ফুফু ফুফা এছোট সহ
আসছে মেয়ে দেখতে । ঘটক আগেই বলেছে যে মেয়ে শিক্ষিত ও সুন্দরী ।
পাত্রের ব্যাপারে পেয়ে পক্ষ সব খুঁজ খবর নিয়ে জেনেছে যে তারা ভাল মানুষ ।
তাই তারা মেয়ে দেখাতে রাজি হয়েছে । মেয়ের বাবা একটু ভয়ে আছে এই জন্য
যে ছেলে লন্ডন থেকে উচ্চ শিক্ষিত । তারা যদি মেয়ে পছন্দ করে তাহলে তাদের
কাছে বিয়ে দেয়ার মত অর্থ সামর্থ্য নাই । যাই যথা সময় সবাই চলে এসেছে ।
মেয়ে কে সবার সামনে আনা হলো । ছেলে খুব আধুনিক কোট টাই পড়া মানুষ ।
মেয়ে কে সবাই প্রশ্ন করছে লিখা পড়া রান্না বান্না । নামজ রোজা ইত্যাদি ?
ছেলের কানে কানে ভাবী বলল তোমার কি পছন্দ হয়েছে । ছেলে বলল আমি
কি কিছু প্রশ্ন করতে পারি ?
---মেয়ে বলল জী করতে পারেন !
--- ছেলে বলল । নামজ কি মাঝে মাঝে পড়েন ?
---- মেয়ে বলল জী ?
---- আপনি কি সব সময় নামজ পড়তে পারবেন ?
---- মেয়ে বলল চেষ্টা করব !
---- ছেলে বলল না । এটা অন্যায় । নামজ চেষ্টার বিষয় না। এটা পরীক্ষা না।
এটা হল আল্লার হুকুম ? বলুন নামজ কি সব সময় পড়তে পারবেন ?
---- মেয়েটি বলল , আজ এখন থেকেই সব সময় পড়ব ।
---- ছেলে বলল আমার আর কিছু বলার নাই । আপনার জন্য দোয়া রইল সালাম রইল
। আপনি এখন আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিতে পারেন ।ছেলে মেয়ের হাতে
একটা খাম দিল । আর বলল এটা আপনার জন্য আমাদের তরফ থেকে একটা
ছোট উপহার আপনার ছোট ভাই বোনদের জন্য ।।
মেয়ের বাড়িত সবাই তখন বসা । বিশেষ করে মেয়ের বড় মামা । একজন ব্যাংকার ।
মেয়ের চাচারা আর কিছু প্রতিবেশী । ছেলের বাবা বলল মেয়ে আমাদের পছন্দ ।
এখন আপনাদের কোন কিছু বলার থাকলে বলুন । ছেলে আপনাদের পছন্দ হয়েছে কি না? মেয়ের বড় মামা বলল - আল্লার ইচ্ছায় ছেলে আমাদের পছন্দ । ছেলের বাবা বলল
আল্লাহর রহমতে পছন্দ হয়েছে । ছেলের বাবা বলল এখন বলুন মেয়ের কি কি চাওয়া
পাওয়া আছে ? আমাদের মেয়ে নেয়ার খুব ইচ্ছা । আপনাদের দায় দাবী বলুন ।
মেয়ের বাবা বলল আমাদের কোন কিছু চাওয়ার নেই । শুধু কাবিন আর যদি
মেয়ে কে কোন স্বর্ণ অলংকার দেন ।
ছেলের বাবা বলল মেয়ে কে আমারা ছয় ভরি স্বর্ণ দেব । দেন মোহর কত চান ?
মেয়ের বাবা বলল আমার বড় ভাইয়ের মেয়ে কে তিন লক্ষ টাকা কাবিন দিয়েছে ।
ছেলের চাচা বলল এই ব্যাপারে ছেলে নিজেই কথা বলবে । কারন ছেলে দেন মোহর দিবে
এটা তার বলা দরকার । মেয়ের মামা বলল বাবা থাকলে ছেলের বলার দরকার কি?
ছেলের বাবা একটু হেসে বলল - আসলে বিয়েটা আমার ছেলে করবে । সংসার সে করবে
তাই তার বিষয়ে তারই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ । মেয়ের মামা বলল আচ্ছা তাহলে ছেলে মুখ থেকেই শুনি ।
-----ছেলে সালাম দিয়ে বলল । আমি এক লক্ষ এক টাকার বেশি কাবিন দিতে পারব না।
আমি টাকাটা নগদে মেয়ের বিয়ের এজিন সময় প্রধান করিব । কোন রকম বাকি
রাখব না।
---- মেয়ের মামা বলল না । তা হয় না।
----- ছেলে বলল মামা আপনি মেয়ের সাথে আমার প্রস্তাব নিয়ে আগে একটু কথা বলুন ।
----- মেয়ের মামা বলল আমরা তার অভিবাবক । আমাদের সিদ্ধান্তই তার সিদ্ধান্ত ।
---- ছেলে বলল মামা তাহলে তো আর কোন কথা নাই । কারন সিদ্ধান্ত তো শেষ ।
আমি যা পারব তাই বলেছি ।
----- মেয়ের মামা বলল দেখ বাবা তুমি বিদেশে লিখা পড়া করেছ । এটা বিদেশ না
আমাদের সমাজে বিয়ে একটা কঠিন বিষয় ।
----- ছেলে একটু হেসে বলল মামা আমি সমাজ দেখে বিয়ে করছি না। আমি মেয়ে
ও তার পরিবার পরিজন দেখে বিয়ে করছি ।
---- ঠিক আছে বাবা । কবিন আমারা কম দিয়ে বিয়ে দিতে পারব না।
---- ছেলে বলল মামা সিদ্ধান্ত টা কিন্ত আপনার আমার মনে হয় কথা শেষ না করে
আপনি মেয়ের মা এবং মেয়ের সাথে একটু কথা বলুন । যদি মেয়ে স্বর্ণ না নেয়।
তাহলে স্বর্ণের বাজার মুল্য বাবদ যে টাকা তা নগদে দেন মোহরের সাথে যোগ
হবে তখন মেয়ে পাবে তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ।
মেয়ের মামা বলল তাহলে আমি একটু কথা বলে আসি । মেয়ের মামা কথা বলা শেষ
করে এসে বলল আপনার কথাই আমারা রাজি । স্বর্ণের বিষয়টা আমি আগে বুঝি
নাই । কারন আমাদের সমাজে বিয়ের সময় মেয়ে কে অনেক সময় অন্য কারো
স্বর্ণ পড়িয়ে বিয়ে করে নিয়ে যায় ।
---- ছেলে বলল আপনাদের সমাজ আর আমার সমাজ এক না । এটা তো মামা আপনি
আগেই বলেছেন । মামা মনে মনে বলে ছেলেটা বিদেশে লিখা পড়া করে একটু
বেশি ফাজিল হয়েছে । মামা বলল তাহলে তারিখ কবে ।
--- ছেলে বলল মামা আগামী রবি বার ।
---- মামা বলল । এটা কি করে হাতে তো খুব কম সময় । মাত্র ৪ দিন । এই অল্প
সময়ে এত আয়োজন করা সম্ভব না। আচ্ছা আপনারা বর যাত্রী কত জন আসবেন
---- ছেলে বলল সময় তাহলে বুধ বার করেন । ৭ দিন অনেক সময় । ছেলের বাবা
বলল ৭ দিন হলেই ভাল হয় । কারন ছেলের হাতে সময় কম । বিয়ে করে হয়ত
পনের দিন পরে লন্ডন যাবে । একমাস পড়ে আসবে ।
---- মামা বলল বর যাত্রী ব্যাপারটা । গেইট ধরা । ছেলের আর কো দাবী আছে কিনা
---- ছেলে বলল আর দাবী মানে মামা ?
----- মামা বলল আমরা বিয়ে দেয়ার সময় ছেলে কিছু না চাইলেই বরং ছেলে বেশি
কিছু পায় । আর যদি দাবি থাকে তাহলে সেটা খোলা মেলা আলোচনা করা ভাল।
---- ছেলে বলল মামা পরিষ্কার না। ভাল করে বলুন ।
মেয়ে পাশের ঘর থেকে আলোচনা শুনছে । সবাই তাদের খাবার দাবার নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছে ।মামা বলল -
---- আমরা মেয়ের চাচাত বোন কে বিয়ের সময় ছেলে ফার্নিচারের বদলে একটা মটর
সাইকেল আর টি ভি ফ্রিজ দিয়েছি । কারন ছেলের ঘরে আগের ফার্নিচার ছিল।
---- ছেলে বলল সরি মামা আমার কিছুই লাগবে না । মেয়ে কে যেন তার বাবা একটা
আল কুরান আর ৪ টা হাদিসের বই আর মেয়ের মা যেন একটা নমাজের
জায়নামাজ দিয়ে দেয় ।
---- এটা কোন কথা হল বাবা তুমি তো মেয়েকে ছয় ভরি স্বর্ণ আর নগদ এক লক্ষ
টাকা টাকা দিবে ।
---- ছেলে বলল এটা তার হক পাওনা । সেটা তার সম্পদ । সে চাইলে সেই স্বর্ণ আর
টাকা তার বাবা কে মা কে বা যে কাউকে দিয়ে দিতে পারে । তাতে আমার কোন
অধিকার নাই । আমাকে দোয়া দিলেই হবে । আমার জন্য যেন কোন কিছু কেনা
কাঁটা বা সালামি না দেয়া হয় । কারন আমি বিয়ে বাবদ কিছুই গ্রহন করব না।
----- মামা বলল সমাজ কি বলবে ?
----- ছেলে আবার বলল মামা আমি সমাজ কে বদলাতেই চাই ।
------ ঠিক আছে বর যাত্রী কত জন আসবে ?
------ মামা আমার বর যাত্রী আসবে তিন শত জন ।
------ বলেন কি এত মানুষ ?
------ ছেলে বলল হ্যা । কারন আমার বংশ অনেক বর আমি কাউকে না রেখে আসতে
পারব না।
------ তাহলে তো মুশকিল ?
------- ছেলে বলল মামা আমি একটু মেয়ের বাবার সাথে কথা বলতে চাই ।
------- ঠিক আছে ! এই তো মেয়ের বাবা কি বলবে বলেন ?
------ ছেলে সালাম দিয়ে বলল । একটা সর্ত না মানলে আমি এই বিয়ে
করতে পারব না।
------ মেয়ের মামা বলে আবার কি সর্ত ।
----- ছেলে বলতে লাগলো এই বিয়েতে আমার তিনশত বরযাত্রী আসবে তাদের সকল
খাবার খরচ আমি প্রধান করিব । সাথে আপনার মেহেমান যারা আসবে তাদের
খাবার খরচ আমি দিব । বিয়েতে কারো কাছ থেকে কোন উপহার বা সালামি
গ্রহন করিবেন না। সবাই কে দোয়া করতে বলবেন । রান্নার জন্য বাবুর্চি আর
আমি পাঠাব । গেইট বাবদ পঁচিশ হাজার টাকা দেয়া হবে । আজ আমি নগদ এই
খানে তিন লক্ষ টাকা খাবার বাবদ দিয়ে যাচ্ছি বাকিটা আমার ছোট মামা কাল
কে নিয়ে আসবে কত খরচ আমাকে বললেই হবে । টাকাটা মেয়ের বাবার
হতে দেয় । ছেলে বলে আমি লন্ডনের নাগরিক মেয়ে আশা করি
ছয় মাসের মধ্যে লন্ডন যাবে । মেয়ে লিখা পড়া ও চাকুরী করতে পারবে ।
তার বেতন থেকে সে আপনাদের খরচ দিতে পারবে ।
সাত দিন পড়ে বিয়ে হয়ে যায় মেয়ের । ছেলে কবুল বলার আগেই মেয়ে কে টাকা ও
গহনা দিয়ে দেয় । সারা গ্রামে সবার কাছে সেই ছেলে হয় যায় খুবেই
সম্মানী । এমন কি গ্রামের সাধারন মানুষ তাকে খুবেই সম্মান করে । মেয়ে লন্ডন যেয়ে
এক বছর সময় লেগে যায় । যে দিন মেয়ে কে নিয়ে লন্ডন যাবে তার এক সপ্তাহ আগে
সে স্ত্রী নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসে । শুধু জামাই দেখার জন্য যে কত মানুষ আসে
তা বলে শেষ করা যাবে না। ঐ মেয়ের অন্য দুই বোন কে বিয়ে দিতে কোন টাকা
লাগে নাই । আজ পর্যন্ত তারা ভাল আছে ।
তাদের সম্মানে আমি তাদের নাম বললাম না।।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


এই ছেলে আরো ২/৪ টা বিয়ে করবে।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩৫

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: ২৭ বছরে তো করে নাই । তার মেয়ে বিয়ে দিয়েছে । সেই ছেলে ডাক্তার ও হাফেজ

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


"লেখক বলেছেন: ২৭ বছরে তো করে নাই । তার মেয়ে বিয়ে দিয়েছে । সেই ছেলে ডাক্তার ও হাফেজ "

-তা'হলে আপনি তিলকে তাল বানায়েছেন।

ডাক্তারেরা হাফেজ, কবি, লেখক, রাজনীতিবিদ; তাই সবাইকে ভারত যেতে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য, আমরা বসে বসে ওয়াজ শুনে ভারত গিয়ে টাকা খরচ করছি।

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৪

কালনী নদী বলেছেন: সুন্দর হয়েছে বোন, সংগ্রহে গেল!

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৮

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: ভাই জান অনেক খুশি হলাম

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২

প্রীতম বলেছেন: আসলে কোরানের শিক্ষা আর নীতি থেকে আমরা এতো বেশি দূরে সরে এসেছি যে সেসব শুনলে মনে হয় আজগুবি গল্প। এখানে ছেলেটা যা করেছে তা একজন খাটি মুসলমান হিসেবে যা নিয়ম তাই করেছে। আমাদের অবাক লাগছে এই কারনে যে আমরা এ নিয়মগুলো ভুলে বসে আছি।
ধন্যবাদ সুন্দর একটি লেখা দেয়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.