নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনু গল্প । শ্রাবণে বসন্তের বৃষ্টি ।

২৫ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮




সকাল থেকে বৃষ্টি আর বৃষ্টি । লায়লা সকালে এই বৃষ্টির মধ্য অফিসে এসেছে । উত্তরা থেকে সে প্রতিদিন মতিঝিল আসে । স্বামী স্ত্রী একেই সাথে একেই ব্যাংক এ চাকুরী করে । বিয়ে হয়েছে আজ নয় বছর । স্বামীর অনেক চেষ্টায় একেই বাঙ্কে চাকুরী করে । লায়লা আর তার স্বামী গাড়িতে বসে আছে । মতিঝিল থেকে জ্যাম । তাই তাঁদের গাড়ি রামপুরা দিয়ে নিয়ে চলল । নিজেদের গাড়ি এটাই সুবিধা । ফ্লাইওবারের কাজ চলছে রাস্তায় অনেক পানি আর জ্যাম । হটাত গাড়ি আর স্টার্ট নিচ্ছে না। লায়লা আর তার স্বামী মিনহাজ প্রাইভেট কার থেকে নেমে অনেক চেষ্টা করলো । কিন্তু ইঞ্জিন কাজ করছে না। মিনহাজ বলল লায়লা তুমি সি এন জি নিয়ে চলে যাও । আমি গাড়ি ঠিক করে নিয়ে আসছি । লায়লা এই বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি পাচ্ছে না। যাও পায় কেউ উত্তরা যেতে চায় না । কারন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সাহেব কে বিমান বন্দরে তার নেতা কর্মীরা শুভেচ্ছা জানাতে এসেছে । মিনহাজ বলল একটা কাজ কর যে কোন বাসে চরে চলে যাও । জেই বৃষ্টি আজ মনে হয় আর থামবে না। স্বামী কে রেখেই শেষ পর্যন্ত তুরাগ বাসে উঠে গেল লায়লা । কোন সিট নেই অনেকেই দারিয়ে । লায়লা অনেক কষ্টে গাড়িতে উঠে এক পাশে দারিয়ে রইল । তার সাথে অনেক মেয়ে দারিয়ে । মহিলা সিটে মহিলারা বসে । এমন সময় পিছন থেকে দিল লায়লা এই লায়লা এই দিকে এসো । লায়লা পিছনে তাকিয়ে অবাক । আরে হাসান ? লায়লা খুব অবাক হয়ে গেল । ভাবতে পারছে না। হাসান তাকে দেখলে কথা বলবে । লায়লা কাছে গেল । হাসান সিট ছেরে বসতে দিল ।
লায়লা বলল ভাল আছ হাসান ,
----- হাসান একটা সেই আগের মতো মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল জীবন চলে যাচ্ছে ।
------ হাসান তুমি ঢাকায় থাক ।
------- না লায়লা ।
-------- হাসান ভাবতে পারি না এভাবে দেখা হবে ।
------- লায়লা এই দেশ টা খুব ছোট চাইলেও পালানো যায় না।
লায়লা ভাবতে থাকলো , এই হাসান তাকে কত ভাল বাসাতো । চোখের সামনে তাঁদের দুই জনের অতীত ভাসতে লাগলো । লায়লা ইডেন এ ভর্তি হয় । হাসান সেই কিশোর গঞ্জের গুরু দয়াল কলেজ । লায়লা শহরে এসে হাসান কে একটু একটু করে মন থেকে সরাতে থাকে । হাসান প্রতি সপ্তাহে চলে আসতো লায়লার সাথে দেখা করতে । লায়লা শহরে জিবনে তার এক বান্ধুবির ভাইয়ের নতুন করে প্রেমে পড়ে যায় । হাসান বিষয়টা জানতে পারে । খুব কষ্ট পায় হাসান । এক সময় লায়লা তার বান্ধবির ভাই তাকে ছেরে অন্য মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় । হাসান তার পড় লায়লার কাছে আসে তার প্রেম নিয়ে লায়লা তাকে ভুল বুঝে । ভাবে হয়ত হাসান তাকে চরম লজ্জা দিবে , লায়লা দেখা করে না। হাসান পাঁচ বছর লায়লার জন্য অপেক্ষা করে । একদিন শুনে কোন এক ব্যাংকারের সাথে তার বিয়ে হয়ে গেছে । তার পড় আজ এই দেখা । লায়লা বলল কি করছ তুমি হাসান আমিতো ব্যাংকে আছি । আমার স্বামী ব্যাংকার । ভাগ্য ভাল আজ আমাদের গাড়ি নষ্ট হয়েছে । কিছু না পেয়ে এই বাসে উঠা ।
হাসান বলল এটা ভাগ্য না মিরাক্কেল বলা চলে । ভাল আছ জেনে ভাল লাগলো । প্রায় তের বছর পড়ে দেখা ।
------ হাসান কি কর এখন ।
------- হাসান তেমন কিছু না।
------- বিয়ে করেছ
-------- না
এমন সময় পাশের সিট খালি হয় লায়লা হাসান কে বসতে দিয়ে বলে
--------- কেন বিয়ে কর নাই ?
-------- না তেমন কোন কারন না।
--------- তুমি কি এখনো আমাকে ভুলতে পারনি?
------- হাসান বলল লায়লা জীবনে আবেগ আর ভালবাসা এক না ।
তুমি আমার আবেগ ছিলে ভালবাসা না। কারন আবেগ বদলায়
ভালবাসা না।
------ বাহ দারুন কথা বলা শিখেছ ।
------ হাসান বলল বাচতে হলে কিছু সিখতে হয় ।
------ তা কি কর বললে না তো । ঢাকা তে থাক না । কিছু বল ।
------ হাসান বলল থাক সে কথা আবার যদি দেখা হয় বলব ।
----- হাসান তোমার অনেক পরিবর্তন জামা কাপড় জুতা ঘড়ি দেখে বুঝা যায় ভাল আছ ।
আমি তো অনেক বছর পড়ে আজ বাসে উঠলাম । আমি আর আমার স্বামী মিলে একটা
গাড়ি কিনেছি । উত্তরায় একটা ফ্ল্যাট কিস্তি দিয়ে যাচ্ছি তিন বছর পড়ে উঠব।
----- লায়লা তুমি ভাল আছ জেনে ভাল লাগলো । তোমার বাচ্চা কয়জন ।
------ হাসান বাচ্চা নেই । চেষ্টা করে যাচ্ছি । ভাবছি সামনের বছর ইন্ডিয়া যাব ।
------- লায়লা বাচ্চা নিতে ?
------- হ্যা
------- ভাল লায়লা যাও । একটা কথা বলব কিছু মনে নিবে না তো ।
------ তোমার তো বিয়ের আগে একটা বাচ্চা হয়েছিল ।
------ কি বল হাসান ?
------ লায়লা আমি সব জানি ? কেন লুকাচ্ছ ? নিরাল ক্লিনিকে আজ থেকে ৯ বছর আগে তোমার একটা মেয়ে হয়েছিল । পরীর মতো সুন্দর । নাকটা একেবারে তোমার মতো । আমি সেই দিন নিরালা ক্লিনিকে ছিলাম !! লায়লা চুপ হয়ে গেল । হাসান বলল জীবনে তুমি এক অপূর্ব মেয়ে । আজো সেই আগের মতো সাজিয়ে সুন্দর মিথ্যা বলতে পার ।
------ হাসান বিশ্বাস কর আমি ওর কোন খবর জানি না। আমার মা নাকি কাকে দিয়ে দিয়েছে । এক মাত্র মা জানতো । মা মারা গেলে আর তার কোন খবর নিতে পারি না। বিশ্বাস কর হাসান । আমি সত্যি আমি অপরাধী ।
লায়লার চোখ দিয়ে পানি ঝড়তে থাকে । এক দিকে বৃষ্টি জ্যাম আর লায়লার চোখের পানি সব একাকার । হাসানের মোবাইল বেজে উঠল ভিডিও কল ।
----- হাসান বলল হ্যালো মা মনি
----- একটা পরীর মতো মেয়ে বলল আব্বু তুমি কোথায় ?
------ মা আমি বিমান বন্দর যাচ্ছি
------- আব্বু দুই ঘণ্টা আগে বিমানে তোমাকে রিপোর্ট করতে হবে না হয় গত বছরের মতো হবে ?
-------- না মা হবে না এবার বাংলাদেশ বিমান নয় গালফের টিকেট করেছি । ঠিক আছে আব্বু
ভাল থেকে বাই বাই ।
লায়লা বলল তুমি বিয়ে কর নাই । আবার একটা মেয়ে তোমাকে বাবা ডাকছে । ঠিক বুঝতে পারছি না।কে এই মেয়ে ।। হাসান বলল আরে বিয়ে না করে কি বাবা হওয়া যায় না। তোমার মতো কোন মায়ের সন্তান । সমাজ তাকে মেনে নিবে না বলে ফেলে দিয়েছিল আমি কুড়িয়ে নিয়েছি মাত্র । যেই দিন
ওকে বাসায় নিলাম সেই দিনেই আমার ডি ভি ভিসার কাগজ হাতে পেলাম । মেয়েটা আমার ভাগ্য নিয়ে এসেছে ।
------কি নাম তোমার মেয়ের হাসান ?
------ লাকি হাসান
------ আমি আর একটু দেখি আর একবার কল কর । তুমি অ্যামেরিকা তে থাক ?
হাসান বলল লায়লা আমার নামতে হবে চলে এসেছি । যাবার সময় বলে যাই মেয়েটা এই শ্রাবণে জন্ম নিয়েছে । এই বলে হাসান নেমে যায় । লায়লা বাস থেকে নামে কিন্তু হাজার হাজার মানুষ এরশাদ এরশাদ বলে শ্লোগান দিচ্ছে । চার দিক পুলিশ আর পুলিশ । মুসুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে । লায়লা হাজার মানুষের ভিরে আর হাসান কে খুঁজে পায় না। হেঁটে হেঁটে বিমান বন্দরের দিকে যায় । কিন্তু কোথাও হাসান নাই ।
লায়লা বলল হাসান একবার বলে যাও আমার মেয়েটা কোথায় ? আমি জানি তুমি যদি এই ক্লিনিক চিনে থাক সময় চিনে থাক তাহলে আমার মেয়েকে চিন । অনেক খোঁজার পড় একজন বলল এই নামে গালফ ইয়ার লাইনে হাসান সাহেব চলে গেছে । লায়লা আকাশের দিকে থাকে ...........................।।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৯

তপোবণ বলেছেন: গল্পটা দারুণ, হৃদয়গ্রাহী। তবে এটাকে আরো নিপুন করে তোলা যেত। ঘষা মাজা একটু কম হয়েছে।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৮

নীল প্রজাপ্রতি বলেছেন: সুন্দর গল্প.... শুভেচ্ছা রইল

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: গল্প পড়ে ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ।

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫৩

সুমন কর বলেছেন: খুব দ্রুত লিখেছেন কি ? শেষটা ভালো লাগল।
+।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.