নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অর্থহীন প্রলাপ

দার্শনিক শিবলী শাহেদ

নিষিদ্ধ শব্দবণিকের উত্তর-পুরুষ।

দার্শনিক শিবলী শাহেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন, সাহিত্যের আফসোস ..

২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:১২

মনে করেন, আমি কিছু সাহিত্য রচনা করলাম যা কিনা বোদ্ধা-মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিলো কিন্তু ঐ একই সাহিত্য আমজনতা প'ড়ে ডেন্টিস্টের কাছে দৌড়ায় - তাহলে সাহিত্য কইরা লাভ কী? কথায় কথায় আমরা বলি - সবার জন্য স্বাস্থ্য । সবার জন্য সাহিত্য কেন নয়। যাইহোক, তো এই সাহিত্যকে সবার কাছে মানে আমজনতার কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থাটা যিনি করে গেলেন অনেকাংশেই ,তাঁর নাম হুমায়ুন আহমেদ। সিরিয়াস সাহিত্যিকগণ অবশ্য তাঁকে 'সাহিত্যিক' আখ্যা দিতে নারাজ। প্রায়ই তাঁকে অপন্যাসিক বইলা গালি দেওয়া হয়। কারণ তিনি সহজ ভাবে লিখে গেছেন, ব'লে গেছেন ; সাহিত্যে অনর্থক দূর্বোধ্যতা সৃষ্টি ক'রে পাঠকের কোষ্ঠকাঠিন্য বাঁধিয়ে দেন নাই।

হুমায়ুন আহমেদের ' যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ ' উপন্যাসটা যারা পড়েছেন, তারা দেখেছেন, পাঠকের জন্য কতটা স্পেস রাখা হয়েছে এ উপন্যাসে। ডিলিউশন আর ইল্যুশনের খেলাটা জমে উঠলেই সাধারণত মিসির আলি সাহেব আইসা সমস্যার সমাধান দেন। কিন্তু এই উপন্যাসে তা হয় নাই। সূক্ষ উইট, মেটাফরিক রিডল এবং ফ্ল্যাশব্যাকের জটিল অন্তর্বয়নে কিন্তু সহজবোধ্য ভাষায় এক অসাধারণ উপন্যাস রচনা করেছেন তিনি। এটি কি বিশ্বমানের সাহিত্য নয় !! আরো আছে। আমরা সেগুলোর কথা জানি তাই নাম উল্লেখ ক'রে লেখাটির শরীর বাড়াতে চাই না।

তবে সাহিত্য কিন্তু সাহিত্যই। বোদ্ধাদের জন্য হোক চাই সকলের জন্য হোক - সাহিত্য হতে গেলে তাতে শিল্পগুণ তো থাকতেই হবে। কাকেরঠ্যাং বকেরঠ্যাং লিখলেই তো আর সাহিত্য হয় না। হুমায়ুনের ব্যর্থতা এই যে - তাঁর রচনার বেশিরভাগই ওই কাকেরঠ্যাং বকেরঠ্যাং। তবে এর জন্য এককভাবে তাঁকে দায়ী করতে আমি নারাজ। এর পেছনে রয়েছে প্রকাশকদের বাণিজ্যিক চিন্তা, বিপুল পরিমাণ পাঠকের সস্তা চাহিদা আর ব্যক্তিগত অর্থনীতি । খারাপ লাগে যখন ভাবি এই মহাপ্রতিভাবান লেখক সস্তা জনপ্রিয়তার কাছে নতি স্বীকার করেছিলেন। তবুও তিনি বাংলা নাটক, উপন্যাস, চলচ্চিত্র, ছোটগল্প, সায়েন্স ফিকশনে যে ভিন্নমাত্রা যোগ ক'রে আমাদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে গেছেন এ-ই অনেক। তবে এই ' অনেক 'টা অঢেল হতে পারতো। এটা আফসোস...

তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৪৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: সাহিত্যে অনর্থক দূর্বোধ্যতা সৃষ্টি ক'রে পাঠকের কোষ্ঠকাঠিন্য বাঁধিয়ে দেন নাই।
যথার্থই বলেছেন।

হুমায়ুনের ব্যর্থতা এই যে - তাঁর রচনার বেশিরভাগই ওই কাকেরঠ্যাং বকেরঠ্যাং।-- আপনার মাথা ঠিক আছেতো?

নাকি সুকৌশলে এটা লিখেছেন, যেন আপনার পোস্টটি আলোচনায় আসে?

বাংলা সাহিত্যের এক মহাবিস্ময় হুমায়ুন আহমেদ।

২| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:০৪

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: @ খেয়া ঘাট, আপনাকে হুমায়ূনীয় সাহিত্যের গন্ডী থেকে বের হওয়ার আহবান জানাই।
হুমায়ূন আহমেদ এই একটা ক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও বাধিয়েছেন। অনেক কিশোর-কিশোরী হুমায়ূন পাঠের পর আর কোনো গ্রন্থ পাঠ করেন নাই। তারা সাহিত্য বলতে হুমায়ূন আহমেদকেই বোঝে।
লেখক যথার্থই বলেছেন।
জনপ্রিয় উপন্যাসিকের ধরন হলো, তাঁর কোনো কেতাব যখন বের হয় তখন ঝালমুড়ির মতো বিক্রি হয়। খাওয়া শেষ হলে মানুষ ঠোঙাটাও ফেলে দেয়।
আর মানসম্পন্ন গ্রন্থগুলো প্রকাশের পর ঝাল মুড়ির মতো বিক্রি হয় না বটে তবে যত দিন যায় বিক্রি বাড়তে থাকে। দীর্ঘদিন সেগুলোর বিক্রি বাড়তেই থাকে। হুমায়ুনের মৃতু্যর পর সেটা স্পষ্ট।
সাহিত্য আর ঝালমুড়ি এক জিনিস নয়।
হুমায়ূনের কিছু ভালো লেখার প্রশংসার পাশাপাশি সস্তা বাজারি লেখাগুলোর তীব্র নিন্দা জানাই। কারন একজন প্রকৃত সাহিত্যিক কখনো ব্যবসার চিন্তা করতে পারেন না।

৩| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:০৬

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের মৃতু্যর পর এ বিষয়ে আমি একটি গদ্য রচনা করেছিলাম।

সাহিত্যিকের মৃতু্য এবং আমাদের গদগদে আবেগ
Click This Link

৪| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:০৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: @পরাজিত........ ............
ভাই আপনি আমার অভিবাদন গ্রহণ করুন।
অনেকদিন পর এতো হাসি হাসলাম। বিশ্বাস করেন বুকটা হালকা হয়েগেলো।

৫| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪০

দার্শনিক শিবলী শাহেদ বলেছেন: জ্বি ভাই, মাথা আমার ঠিকই আছে। আর আলোচনায় আসার কোনো ইচ্ছা আমার নাই। কে না জানে, আলোচনায় আসলেই বিপদ। :D .

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.