নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুব কম লিখি...

হোল্ডেন ফোর্ড

হোল্ডেন ফোর্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

এনাদার ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল – ছোট গল্প

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫৭



- আপনার প্রিয় গান কোনটা?
- হুম?...

প্রশ্নটা শোনার সাথে সাথে ইমরান আলি চোখ তুলে তাকালেন পত্রিকার ইন্টারভিউয়ারের দিকে। এতক্ষণ মোবাইল টিপতে টিপতে উত্তর দিচ্ছিলেন দেশের ইতিহাসের সর্ব কনিষ্ঠ শিক্ষামন্ত্রী। যার বয়স মাত্র ৫০।

আজ ৫ মাস হল তিনি তার দায়িত্ব গ্রহন করেছেন। কিশোর ও তরুণদের মাঝে তিনি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বনে গেছেন এই অল্প কয় মাসেই। যেই তরুণেরা কিছুদিন আগেও ছিল দেশ ও রাজনীতি বিমুখ, তারা এখন রীতিমত সিস্টেম নিয়ে চিন্তিত এবং মনে প্রানে ইমরান আলীর মত একজন মানুষ হতে চান।
তরুণদের মাঝে তার এই বিপুল জনপ্রিয়তার কারনে, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকার বিনোদন পাতার বহুল জনপ্রিয় সেকশন ‘যা আমার প্রিয়’-র, জন্য তার ইন্টারভিউ নিতে এসেছেন একজন সাংবাদিক ও তার সাথে একজন ফটোগ্রাফার। আর এই প্রশ্নটিই ছিল সর্বশেষ প্রশ্ন।

কপালটা চুলকে হাসলেন তিনি। আর বললেন,
আমার প্রিয় গান? উম... ঠিক এইটুকু বলেই তিনি যেন গভীর ভাবনার মাঝে ডুব দিলেন।
প্রিয় গান, হুম... সেটা একটা ব্যান্ডের গান। ৮০’র দশকে ইলেক্ট্রিক গিটারের ঝন-ঝন শব্দে যেই গানগুলো আমাদের কানের পর্দা কাপাতো, সেগুলোই ছিল আমাদের কাছে প্রিয় গান। দেশ বা ভাষার ভিন্যতা কখনই কোন সমস্যার ব্যাপার ছিলনা । ৮৫ সালে আমি প্রথম ভি.ছি.আর-এ দেখি সেই গানটা। গানটার মিউজিক ভিডিওতে ফুটে উঠে শিক্ষার নামে বাচ্চাদের উপর স্কুলে ঘটা ভয়ঙ্কর নির্যাতন ও নিপীড়নের কাহিনী। আমিও তখন ছিলাম একজন সাধারণ স্কুলছাত্র। মিউজিক ভিডিওটা যতই দেখতাম ততই ভাবতাম, আমরাও তো এই একই নিপীড়নের শিকার। কিন্তু আমার বাকি বন্ধুরা তা বুঝত না। তারা বোকার মত শিক্ষকদের কথা বিশ্বাস করত আর হা-ভাতের মত তাদের মার খেত।
ওই গানটার কিছু দৃশ্য এখনো আমাকে তাড়া করে বেড়ায়, মুখোশ পরে মার্চ পাস্ট করতে করতে মেশিনের ভেতর পরছে শয়ে শয়ে শিক্ষার্থী আর অপর প্রান্ত দিয়ে তারা সসেজ হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, আর সেই অসাধারণ দৃশ্য যেখানে ছেলেমেয়েরা তাদের স্কুলের বইপত্র ছিড়ে, টেবিল-চেয়ার ভেঙ্গে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল।
আমার স্কুল তখনও ভাল লাগত না এখনও ভাল লাগেনা। যদি পারতাম তাহলে হয়ত সেই শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে ছুড়ে মারতাম জলন্ত এক মলটভ ককটেইল।
আর আমার সেই প্রিয় গানের নাম হল, ‘এনাদার ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল’।

- স্যার , আপনার প্রিয় গান? নীরবতা ভেঙ্গে প্রশ্ন করল সাংবাদিক।

ইন্টারভিউয়ারের প্রশ্নে হঠাৎ যেন সংজ্ঞা ফিরে পেল সে। এতক্ষণ সে আসলে তার উত্তরটা ভাবছিল।
একটু নড়ে-চড়ে বসে তিনি বললেন।
ও হ্যা, আমার প্রিয় গান… তারপর তিনি তার উত্তরটা দিলেনঃ
প্রাণ চায় চক্ষু না চায় বাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

পরের দিন সকালে খবরের কাগজে ইন্টারভিউটা পড়ে দেশের আপামর শিক্ষার্থীরা বেশ খুশী হল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.