| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৌম্য
আমি সাঈদ সৌম্য। ঘুরা ঘুরি করতে ভাল্লাগে আমার ব্যাক্তিগত সাইট http://www.shoummo.com/
গতকাল দেখলাম কে জানি বিরিশিরি যাবার খোজ করছিল। ইনফর্মেশন অপ্রতুল। যারা ঘুরতে পছন্দ করে তাদের মুল দুটি সমস্যাঃ
১ ইনফর্মেশনের অভাব। কোথায় যাব, কিভাবে যাব, খরচ, কিংবা উলটা পালটা ইনফর্মেশন প্যাচ খেয়ে যায়।
২। সঙ্গির অভাব।
এই দুইটা সমস্যা সমাধারনের একটা চেষ্টা আমরা করছি ফেসবুকে। আমরা একটা গ্রুপ খুলেছি। যেখানে আমরা ট্রাভেল নিয়ে (শুধু বাংলাদেশের ভেতরের) আলাপ করি। একজন কোথাও গেলে সেটা নিয়ে রিভিঊ লিখে। আর বাকিরা এর সাথে নিজেদের এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করে। তাই কেউ যখন কোথাও যেতে চায় কোন চিন্তা ছাড়াই ঢু মারতে পারে। খুব শিঘ্রি আমাদের ওয়েব সাইট আসছে। তার আগে পর্যন্ত ফেস বুক গ্রুপ এড্রেসটা দিলাম। কারো উপকারে এলে খুশি হব।http://www.facebook.com/group.php?gid=22012931789
এই ব্লগটা বিরিশিরি থেকে ফিরে লিখেছিলাম ব্লগস্পটে। পহেলা শ্রাবনে অনেক মজা করেছি।
গতকাল রাতে বিরিশিরি থেকে ব্যাক করলাম। অসাধারন একটা ট্যুর হলো। মজা লাগছে অনেক, দেখার মতো খুব বেশী কিছু পাইনি কিন্ত পুরো ট্যুরটা মজার হলো আমাদের অসাধারন যাত্রার জন্যে। আলেন এর আমার বাড়িতে আসার কথা ছিল সকাল নয়টার মধ্যে। সকাল সাড়ে দশটায় ও ফোন করে বললো ও বের হতে পারছেনা ভয়ানক বৃষ্টি বাইরে। যাইহোক আমরা বের হলাম ১২টার পরে। আমরা মহাখালি বাস স্ট্যাণ্ডএ গিয়ে দেখি বিরিশিরির একটাই বাস কাউন্টার জিন্নাত পরিবহন। ওটা কেমন বাস জানিনা। বাস কাউন্টারের লোকটারও কথা বলার অসীম অনাগ্রহ। টিকেট চাইলাম বল্লো, আমরা টিকেট বেচিনা, বাস এ উঠে টিকেট করবেন, তাইলে টিকেট কাউন্টার কেন বানালো কে জানে? যাইহোক একটা নেত্রকোনার বাসের টিকেটওয়ালা ভুজুং ভাজুং মেরে তাদের বাসে উঠায় দিল। ভালো সীট পেলাম, ড্রাইভারের পিছেরটাই। ড্রাইভার লোকটা নতুন। হেল্পার আর সুপারভাইজার দুইজন মিলে তাকে বকাঝকা করছিল। বেচারা প্যান্ট না পরে লুঙ্গি পরে বাস চালাচ্ছিল। আমরা শ্যামগঞ্জে বাস থেকে নামলাম ৬টা বাজার একটু আগে। শ্যামগঞ্জ থেকে রিক্সা নিয়ে একটু এগিয়ে গেলে বিরিশিরির রাস্তা, ওখান থেকে বাস ছাড়ে, বাসএর দেখলাম করুন অবস্থা, ভিতরে এত মানুষ, তিল ঠাই আর নাহিরে, আমরা ছাদে উঠতে চাইলাম, হেল্পার ব্যাটা দিল না। শুনেছি ওখানে নাকি মোটর সাইকেল ভাড়া পওয়া যায়। ড্রাইভারের পিছে বসে যেতে হয়। হুমায়ন নামের একলোক, যে গাজিপুরে শ্রমিকের কাজ করে, আমাদের বললো, বাইকে যান, ১০০ টাকা লাগবে, বাইক ওয়ালা ৩০০ টাকার কমে রাজি হয়না, মুড মারে, রেগে গিয়ে বললাম থাকো তুমি গুর মুড়ি খাও, আমরা যাই, এমন সময় দেখলাম একটা ট্রাক যাচ্ছে, পিছে বালু ক্যারি করে, এখন খালি, আমাদের হুমায়ন মামা আর আরো কিছু শ্রমিক টাইপ লোক উঠেছে, আমরাও লাফ দিয়ে ট্রাক এ উঠে গেলাম। ট্রাক হচ্ছে পথের রাজা, হেভি মজা হলো, কিন্ত রাস্তা ছিল অতি খারাপ, অতি অতি খারাপ, কার্পেটিং উঠে গেছে, মাঝে মাঝে ইটের রাস্তা, ট্রাক চলেও মাস্তান স্টাইলে, তাই ঝাকুনিতে আমাদের পেটের ভাত চাউল হয়ে যাবার দশা। কিন্ত আশেপাশের দৃশ্য এতোই সুন্দর, চারপাশে খালি বিল, আমরা যখন আড়িয়া বাজারে আসলাম তখন প্রায় সাড়ে সাতটা বাজে। হুমায়ন মামার সাথে কথা হলো, উনার প্রফেশন হচ্ছে, উপকারি। এক্সপ্লেইন করি, গ্রামে কেউ কোনো ঝামেলায় পড়লে উনি তার হয়ে কোর্টে মামলা করে দেন, ধুরন্ধর মামলাবাজ মানুষ, এখন গাযিপুরে কি একটা গার্মেন্টসে কাজ করে। আড়িয়া বাজার গ্রামটার করুনদশা।কিন্ত পাশেই বিশাল সোমেশ্বরি নদি, সিলেটের ক্বীন ব্রীজের মতো অতি সুন্দর একটা লোহার ব্রীজ, খুব সুন্দর। আমি হুমায়ন মামার সাথে গায়ে পরে খাতির করলাম, মাম্লাবাজ মানুষ, আর বাড়ি বিরিশিরি। উনার সাথে ব্রীজ পার হলাম। জাঞ্জাইল নামের একটা জায়গা গন্তব্য। আগে বিরিশিরি ডাইরেক্ট বাস যেত, কিন্ত বন্যায় জাঞ্জাইল ব্রীজ ভেঙ্গে গেছে, বাস গুলো জাঞ্জাইল পর্যন্ত যায় এখন। রিক্সা ওয়ালারা টুরিস্ট দেখে অনেক ভাড়া চাচ্ছিল, হুমায়ন মামা না করে দিল, আমরা হেটে গেলাম জানজাইল ঘাটে, আলেন এর হাটা হাটির অভ্যাস নাই, ও ফোনে কোনো একটা মেয়ের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল, তাই দুতই চলে এলাম জাঞ্জাইল খেয়া ঘাটে, খেয়া নৌকা সার্ভিস, অনেক লোক, অন্ধকার। আমরা নদী পার হয়ে আসলাম আরেকটা জায়গায় নাম শুকনাকড়ি, কাদায় ভরতি খেয়াঘাট। ওখানথেকে আমরা মোটর সাইকেল ভাড়া করলাম। মোটর সাইকেল ওয়ালা, এর পরে আলেন, আমি তার পিছে হুমায়ন মামা, একটা রোগা ভোগা মোটর সাইকেলএ আমরা ৪ জন। নির্জন রাত, ব্রিজ ভাঙ্গা তাই এদিকে কোনো যানবাহন নাই, রিক্সা,ভ্যান আর মোটর সাইকেল ছাড়া। উড়ে যাওয়া যায়, কিন্ত রাইডার জামাল মামা খুব স্লো চালালো, আমরা রাত সাড়ে আটটায় পৌছালাম আত্রাইল বাজার। ওখানে রেস্টুরেন্টে চা-ডালপুরি খেয়ে YMCA রেস্টহাউজে উঠলাম। আমি গোসলের জন্যে শাওয়ার অন করতেই কারেন্ট চলে গেল, কিন্ত গোসল করে অনেক আরাম পেলাম। সাড়ে দশটার দিকে ডিনার করতে গিয়ে দেখি সব দোকান বন্ধ। গ্রামের বাজার রাত দশটা অনেক রাত। একটা দোকান পেলাম, খাবার কিছুই নাই, মুরগির ঝোল আর আলু (গোস্ত শেষ) দিয়ে ভাত খেয়ে চলে এলাম। চারিদিকে অনেক ঝিঝি পোকা।
সকালে আমরা ঘুম থেকে উঠলাম অনেক সকাল সাতটার মধ্যে। আতরাইল বাজারে ব্রেকফাস্ট করলাম। একেতো রাস্তা বন্ধ তার উপরে এই ঘোর বর্ষা আর প্লাবনে টুরিস্টরা সহজে আসে না। তাই বাজারের লোকজনের নাস্তার মেনু দেখে বুঝলাম ওরা টুরিস্ট আশা করে না এই মৌসুমে। খাওয়া শেষে তুমুল বৃষ্টি শুরু হলো আমরা কিছুক্ষন মনের আনন্দে ভিজলাম। এই জায়গাতে পাহাড়িদের সংখ্যা অনেক বেশি।
পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের সহবস্থান সুন্দর। বান্দারবানে গিয়ে দেখেছিলাম বাঙ্গালীরা পাহাড়িদের মাথার উপরে ছড়ি ঘোরায়। এখানে তা নেই। সকালেই দেখলাম বাঙ্গালী রিক্সাওয়ালা আর পাহাড়ি সওয়ারি। যাই হোক আমরা জালাল মামার জন্যে অপেক্ষা করছিলাম। জালাল মামা রাতে ক্ষ্যাপ নিয়ে ময়মন সিংহ গেসলেন। আসলেন সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে। কালকেই আমরা সারাদিনের জন্যে তার বাইক ভাড়া করেছিলাম। ঠিক হয়েছিল সারাদিন বাইক আমরা চালাবো আর উনি গাইড হিসেবে আমাদের পথের ডিরেকশান দেবেন। আমরা প্রথমে বিরিশিরি বাজারের মধ্যে দিয়ে গেলাম কংশ নদীর তীরে। আষারে প্লাবনে নদীর তুলকালাম অবস্থা। এপাশে অনেক বালু, বীচের মতো, বাইক টেনে নেয়া যায়না। আর ওদিকে ভয়ঙ্কর ভাঙ্গন লাগছে। বাড়ি ঘর, রাস্তা, সুপারি বাগান সব কংশ নদীর গর্ভে চলে যাচ্ছে দ্রুত। আমরা খেয়া নৌকায় উঠলাম, ৩ জন মানুষ আর ১টা বাইক, জনপ্রতি ২ টাকা ভাড়া। নদীতে দেখলাম হাজার হাজার মানুষ। পুরুষ, মহিলা, শিশু বৃদ্ধ সবাই পোলো জাল ফেলেছে। প্রথমে ভাবলাম মাছ ধরছে। কিন্ত সহযাত্রীরা বললো এ নদীতে মাছ খুব একটা নেই। গত বছর নাকি একটা বিশাল মসুর মাছ ( পাহাড়ি নদীতে পাওয়া যায়, পাইক জাতীয় মাছ, কেউ বলে মহাশোল) ধরা পরেছিল, যেটা চৌদ্দ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আসলে লোকজন মাছ না কয়লা ধরছিল। এই নদীটা আসলে একটা বিশাল কয়লা খনি। পানির স্রোতে বালুর স্তর থেকে কয়লা বের হয়। তাকিয়ে দেখি সত্যি তাই। নদীর বালুতে অযুত নিযুত কয়লার টুকরা। এগুলো প্রাকৃতিক কয়লা। খুব সহজ আহরণ পদ্ধতি, নদী থেকে কুড়িয়ে নিয়ে স্তুপ করে শুকাও এরপরে ভ্যানে করে আড়িয়া বাজার, সেখান থেকে ট্রাকে করে সারা দেশে ছড়িয়ে যায়।
এতোক্ষন ঝিরঝিরে বৃষ্টি এখন তুমুল বর্ষন হলো। মাঝি আমাদের এক্সট্রা খাতির করে ছাতা দিল, কিন্ত ছাতা খোলার কথা ভুলে গেলাম। দূরে আকাশে ২ টা রঙ। মেঘে ঢাকা কালচে আকাশ, ঠিক নিচে সকালের উজ্জল রুপালী। কঠিন একটা স্ন্যাপ নিলাম। দূরে সোমেশ্বরি আর ঢেপা নদী মিলে গেছে। ওই দুইটা আলাদা নদী হলেও আসলে কংশ থেকে উতপত্তি। আমরা নদীর ওপারে পৌছে কঠিন সমস্যায় পড়লাম। শরীরে একটা ইঞ্চিও শুকনা নেই। কিন্ত আমাদের হাতে সময় বেশি নেই। তাই বৃষ্টি কমার জন্যে বসে থাকার উপায় নেই। বাইক টানতেও এখানে অনেক সমস্যা। রাস্তা ঘাট সব কংস নদীর পেটের ভেতরে চলে গেছে। গ্রামের জমির আইল, বাড়ির উঠান, সব্জী খেত কিংবা সুপারী বাগানের মধ্যে দিয়ে পায়ে চলা বিকল্প রাস্তা। একহাটু কাদা। বাইক চালানো ভয়ঙ্কর কঠিন। তবে আধা ঘণ্টার মধ্যেই আমরা শিবগঞ্জ পাকা রাস্তা পেলাম। কার্পেটিং ক্ষয়ে গেছে কিন্তু কাদায় স্কিড করার ভয়তো নেই, ফোর্থ গিয়ারে দিয়ে বাইক উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছি। পথে চমতকার একটা স্তম্ভ চোখে পড়লো, কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারে না এটা কি, লিখা আছে হাজাং মাতা স্মৃতি স্তম্ভ উদ্ধোধন করেছেন কুমুদিনি হাজং। কিন্ত এই হাজং মাতার পরিচয় জানতে পারলাম না। আশে পাশের কোনো স্কুল পালিয়ে আসা কিছু পাহাড়ি বখা ছেলে লুকিয়ে সিগারেট খাচ্ছিল, আমাদের দেখে লজ্বা পেয়ে চলে গেল। ওরাও কিছু বলতে পারলো না কেউ এই হাজং মাতা। আমরা BOP দেখলাম। পাহাড়ের ওপরে ছোট্ট একটা বিডিআর ক্যাম্প, ওপাশে ইন্ডিয়া। পাহাড়িরা মনে হলো বর্ডার মানে না। যাতায়াত করছে সমানে। এর পরে গেলাম গুচ্ছ গ্রাম দেখতে, গারোদের গ্রাম। রাস্তায় সাদা সাদা কিছু পাহাড় দেখলাম। আমাদের গাইডের কাছে এগুলো দর্শনীয় কিছু মনে হয়নি তাই বলে নি। শুনলাম আসলে এগুলো চিনা মাটি, মাটি কেটে ঢাকায় কারখানায় পাঠায়, পরে এগুলো দিয়ে চিনা মাটির বাসন কোসন তৈরি হয়। কিছু কিছু মাটি আবার লাল, নীল হরেক রঙের। একটা জায়গায় ২টা টিলার মাঝে এক চিলতে রাস্তা। এক্সিলেটর বাড়িয়ে রেখেছিলাম যাতে টান মেরে টিলায় উঠে যেতে পারি। সাদা চিনা মাটির রাস্তা, ভয়ানক পিচ্ছিল, পিছের চাকা স্কীড করলো। বাইক নিয়ে ধপাস। আমাদের নেভিগেটর জামাল মামা বিপদ দেখে লাফিয়ে নেমে গেছে, আলেনও ভালো ব্যাথা পেয়েছে। আর আমার ডান পায়ের শিন বোনে বাইকের বাম্পার ধাক্কা দিল অনেক জোরে, সাথে সাথে জায়গাটা কালো হয়ে ফুলে উঠলো। আর কাফ মাসলের সাথে গরম সাইলেন্সার লাগলো, সাথে সাথে চামড়া উঠে গেল, এমন জায়গা চারপাশে খালি চিনা মাটির পাহার, পানি দিয়ে ধোবো এই উপায় নাই। কিছুদুরে একটা বাজারে গিয়ে চা খেলাম আর পা ধুলাম পানি দিয়ে। দগ দগে ক্ষত হয়ে গেছে। আমরা গুচ্ছ গ্রাম যেতে পারলাম না।
বন্যায় রাস্তা ডুবে গেছে। ফিরে এলাম একি পথ ধরে কংস নদীর উপর দিয়ে। বিরিশিরি বাজারে গিয়ে লাঞ্চ করলাম। এর পরে বাইক নিয়ে গেলাম গারো পাহাড়ে, দেখার মতো কিছুই পাইনি সত্যি কিন্ত জার্নি টা ছিল অনেক মজার। কাদায় গারো পাহাড়ের অবস্থা শেষ এর মাঝে বাইক টেনে ঊঠা কঠিন। দূরে একটা রাস্তা দেখলাম, পাহাড় কেটে বানানো ছবির মতো রাস্তা। ওটা ভারতের মধ্যে, ভবানীপুর কলকাতা ডাইরেক্ট রাস্তা।
আমরা ফেরার পথে জামাল মামাকে বললাম সুসং দুর্গাপুর মহারাজের বাড়ি দেখবো, এই মহারাজা অনেক বিখ্যাত ছিলেন, তার কথা সবাই জানে। গিয়ে দেখি তার বাড়ি এখন সরকারী গার্লস স্কুল। স্কুল ছুটি তাই তালা মারা, ঢুকতে পারলাম না। ফেরার পথে কমরেড মনি সিংহে স্মৃতি স্তম্ভ দেখতে গেলাম। একটা বাড়ির মধ্যে দিয়ে রাস্তা ছিল, এখন বন্ধ। হাটু কাদা পাড়ি দিয়ে অনেক কষ্টে স্তম্ভের গোরায় এসে হাজির হলাম। অনেক সুন্দর। পাশে লিখা আছে টুঙ্কা বিপ্লবের স্মরণে।
কমরেড মণি সিংহ ছিলেন প্রখ্যাত হাজং নেতা আর কমুনিস্ট। সুসং দুর্গা পুরের মহারাজা ছিলেন তার মামা। কিন্তু তেভাগা আন্দোলনের নেতা মণি সিংহ মহারাজার ধান ভাগ করে কৃষকদের ঠকানোর ব্যাপারে আন্দোলন শুরু করলেন। অনেক হাজং এবং গারো নেতা এখানে শহীদ হন। তাদের টুঙ্কা (হাজং ভাষায় টুঙ্কা মানে তেভাগা) আন্দোলনের মুখে পরক্রমশালী সুসং মহারাজা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। আমরা ফিরে আসার পথে দেখলাম একজন লোক গরু চড়াতে এসে মোবাইলে কথা বলছে। সত্যি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সব শেষে আমরা গেস্ট হাউজে ফিরে এসে ডলে একটা গোসল দিলাম। ফ্রেশ হয়ে মুল রাস্তায় উঠলো আলেন আর জামাল মামা। আমি আসতে আসতে দেখলাম ঠিক রেস্ট হাউজের সাম্নেই একটা আদিবাসী কুটির শিল্প কারখানা। ভিতরে গিয়ে ওদের তাত ঘরের ছবি নিলাম। পুরো টুরটাতেই আদি বাসীরা কেউ ছবি তুলতে পার্মিশান দেয়নি। যেই দিদি বিক্রি করছিল উনাকে বলতেই ছবি তুলতে দিলেন। দিদির একটা বছর পাচেক এর মেয়ে আছে। ওর ছবি তোলার সময় আমি আর দিদি অনেক চেষ্টা করেও ওকে হাসাতে পারলাম না। রাগি রাগি চেহারা করে লেন্সএর দিকে তাকিয়ে থাক্লো। মোটর সাইকেল এ চেপে বসলাম। এটা পাকা রাস্তা, হাইওয়ে। কিন্তু ব্রীজ ভাঙ্গায় কোনো যানবাহন নেই বাইক ছাড়া। আলেন বাইক জাস্ট উড়িয়ে নিয়ে এল। পিছনে পরে থাকলো অদ্ভুত সারল্যে ভরা একটা জনপদ। বাঙ্গালী পাহাড়ি মিলে বৈচিত্রময় একটা জগত।
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪১
সৌম্য বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার নামটাও অদ্ভুত
২|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:১৫
সোমেশ্বর অলি বলেছেন: যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক বলে এক বছর বাড়ি যাইনা। আপনারা যে ভালোই ভালোই ফিরেছেন, শুকরিয়া। ভ্রমণ বর্ণনা ও ছবি দুইই সুন্দর। প্রিয়তে রাখলাম... শুভ রাত।
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪৩
সৌম্য বলেছেন: সোমেশ্বর আলি। আপনার ক্ষেত্রে তো মায়ের কাছে মাসীর বাড়ির গল্প। আমি গিয়েছি বন্যার সময়। আশা করি এখন অবস্থা ভালো।
৩|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:১৭
শয়তান বলেছেন: নদীর বালি খুইরা কয়লা তুলতে দেখসিলাম । মজার দৃশ্য ।
৪|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪৫
সৌম্য বলেছেন: শয়তান ভাই, আমি তো বালি খুড়ার কিছু দেখি নাই। আমি দেখছি স্রোতের টানে বালি সরে যায় আর কয়লা এমনি এমনি উঠে আসে, আর লোকজন জাল ফেলে কয়লা তুলে।
আর আপনাকে চটাবো না। জিসি নাম্বারঃ ৬৫৩৯।
৫|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৫২
শয়তান বলেছেন: আমি শুকনার মৌসুমে গেসিলাম । তাই হয়তো ঐ ভাবে দেখসি । কিছু ফটো আছে ।
৬|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৫৩
শয়তান বলেছেন:
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৫৬
সৌম্য বলেছেন: হুম। শুকনার মৌসুমে যেতে হয় পাহাড়ে। জোক থাকে না। তো আপনি কোন লং এর?
৭|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:১০
শয়তান বলেছেন: ২৫ ফেরত
৮|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৩০
সৌম্য বলেছেন: আমার প্রথম প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন মেজর ইমতিয়াজ স্যার। আমি ফেরেস্তার চেয়েও উপরে রাখি। আপনের কোর্সমেট
৯|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৩৯
শয়তান বলেছেন: রিলেটেড পোস্টঃ Click This Link
[ অপ্রাসংগিক কমেন্টগুলা মুছে দিতে পারেন চাইলে ]
১০|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৪৫
রাতমজুর বলেছেন:
অফে কৈলাম:
২৫ লং এর পাবলিকে অখন লে: কর্নেলের RANK পরতেছে। লে: কর্নেল শয়তান
![]()
১১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৫১
শয়তান বলেছেন: ২৫ এরলগে ফেরত লিখা আচে
১২|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৫৪
রাতমজুর বলেছেন:
@শয়তান
দেখছি
আমি ৪৫ যাই নাই ![]()
আমাগো নাটকের একটা চরিত্র আছিলো জেনারেল মামদো, তাই কৈলাম লে: কর্নেল শয়তান ![]()
১৩|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:০০
সৌম্য বলেছেন: আমি ৫০ বিএম এ লং
১৪|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:০৫
রাতমজুর বলেছেন:
সৌম্য,
আপনে অখন থিক্যা উপরের লং ফেরত আর যাইনাই দের স্যার কৈবেন
![]()
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:০৯
সৌম্য বলেছেন: ইয়েচ ছার (সৈনিক স্টাইলে, পা মারলাম)
১৫|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:১০
রাতমজুর বলেছেন: ঠিকাসে, রঙরুট, ডিসমিস ![]()
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:১৫
সৌম্য বলেছেন: মাইল টেস্ট টারেই ডরাইতাম। ওয়ান মাইল। পদক্ষেপ তো জটিল এডভেঞ্চার ছিলো।
১৬|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:২১
রাতমজুর বলেছেন: আমি প্রায়ই দিতাম, মার পাংখার বাড়ি খাওনের ডরে
মা চেতলে একেবারে দুই তলা থিক্যা লাফ দিয়া নাইম্যা কয়েক মাইল দৌড়াইয়া তার পর হাঁপাইতাম ![]()
তর আমি কৈলাম কেডু না, ফৌজীও না
১০০% সিভিলিয়ান ![]()
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:২৪
সৌম্য বলেছেন: তাইলে ওয়ান মাইল মিস করছেন গুরু। ৫মিনিট ১৫ সেকেন্ডে ১ মাইল দৌড়ানী, বেল ম্যান হ্যাঙ্গার ক্রস কইরা রেলগেট দেখলে খালী মনে হইতো ট্রেনের তলায় লাফ দেই।
ফেস বুকে যেই গ্রুপের এড্রেসটা দিছি। ঐটা চেক কইরেন। ভালো না লাগলে কান কাইটা দিব।
১৭|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:২৯
রাতমজুর বলেছেন: ঐ অভিজ্ঞতাও আছে
পুরা ব্যাকপ্যাক শুদ্দা, তয় ৮ মিনিট পাইতাম। তাতেই জান গলায় আইসা আটকাইতো।
খোমাখাতায় জয়েন করলাম ![]()
আপনে এইখানে আইতে পারেন
http://www.somewhereinblog.net/group/jotil
১৮|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৩০
রাতমজুর বলেছেন:
কার কান কাটবেন? আমার

বোম মারুম
![]()
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:২৫
সৌম্য বলেছেন: মনে একটা স্বপ্ন আছে। প্রথম এভারেস্ট জয়ী বাঙ্গালী হিসাবে নাম লিখানোর। কানটা এখন কাইটা রাখি, বোমটা নাহয় এরপরেই মাইরেন
১৯|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৪৯
নুশেরা বলেছেন: খুব সুন্দর ছবি আর বর্ণনা। আমিও যেন ঘুরে এলাম। অনেক ধন্যবাদ, সৌম্য। শারদীয় শুভেচ্ছা।
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫২
সৌম্য বলেছেন: ধন্যবাদ হাফ গ্রহন করলাম আপু। ফুল করবো যেই দিন বলবেন যে আমি আজকে ফুল ফ্যামিলি নিয়া বিরিশিরি ঘুরে আসলাম
২০|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১০:১৮
দখিনা বাতাস বলেছেন: আমি গেছিলাম গত মার্চে। ছিলাম YMCA এর পিছনে নতুন করা YWCA। যাওয়ার রাস্তাটা মাঝে ২০ কি;মি; খুব খারাপ অবস্থা ঐ সময়ও ছিল। রাস্তাটা ঠিক করলে বিরিশিরিতে আরো পর্যটক যেত। সুন্দর দেখার মত জায়গা ঐটা।
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:৪৬
সৌম্য বলেছেন: রাস্তা ভালো করলে কিংবা এসি বাস লাগালে এডভেঞ্চারটা থাকবে??? আমার এক সিনিয়র ভাই গতকাল জিজ্ঞেস করছিল বগা লেক কিভাবে যায়?? ওখানে এসি বাস আছে নাকি??? আমি কইলাম জি না হেটে যাওয়া লাগবে
২১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১০:২৭
তিতা করোলা বলেছেন: ভালো লাগলো। ইচ্ছা আছে ঘুরে আসার।
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:৪৮
সৌম্য বলেছেন: পরশু পুজার বন্ধ আছে। শুক্রবার শনিবার ছুটি, চলে যান।
২২|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১১:৩৭
যীশূ বলেছেন: ভালো লিখেছেন। বেশ কাজে দিবে অনেকের। আমি বিরিশিরি গিয়েছি ৪ বার। কিন্তু এটা নিয়ে কিছু লেখা হয়ে ওঠেনি। আসলে গরম গরম না লিখলে পরে আর লেখার আগ্রহ থাকে না।
২৩|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:৫৪
ফারহান দাউদ বলেছেন: এক সপ্তাহ হইলো ঘুরে আসলাম,দুর্গাপুর ছাড়িয়ে ভবানীপুর![]()
১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:২৭
সৌম্য বলেছেন: ওয়াও
২৪|
১২ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৯:৫৬
নাজনীন খলিল বলেছেন:
চমৎকার বর্ণনা । খুব ভাল লাগল। আপনি খুব ঘুরে বেড়ান?
শুভকামনা রইল। আরো ঘুরে বেড়ান আর এখানে লিখে আমাদেরও একটু আনন্দের ভাগ দেন।
১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:৩১
সৌম্য বলেছেন: ধন্যবাদ আপু, সিপ্পি আরসুয়াং জয় করে ফিরলাম গতকাল। ভয়ঙ্কর সুন্দর। ভয়ঙ্কর কিন্তু সুন্দর। ৩০৪২ ফিট আবোভ সী লেভেল আমাদের জি পি এস রিডিং (আমরা স্বস্তা জিপিএস ব্যাবহার করছি), আমাদের আগে শুধু একবারেই জাতিয় পতাকা উড়েছে ওখানে, নেচার ক্লাবের হান রেগি উড়িয়েছিল এই ফেব্রুয়ারীতে, এছাড়া আর কোন ট্রেকার যেতে পারেনাই।
২৫|
১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪২
মুনতাসীর মারুফ বলেছেন: আপনারা দেখি হেভি পানি পাইছেন। আমি তো পানি-ই পাই নাই।
১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:২৮
সৌম্য বলেছেন: ভয়ঙ্কর পানি পাইছি। বন্যায় কংশের ভাঙ্গনে রুদ্র রুপ।
২৬|
২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪৪
রুবেল শাহ বলেছেন: ১৯৯৫ সালে আমার খালাতো এসেছিল কলকাতা থেকে শুধু বিরিশিরির তে যাবার জন্য আমি তখন এ সর্ম্পকে কিছুই জানতাম না...
আমার শুধু এতটুকু ষ্মরণ আছে সেখানে আমি একটা মেয়েকে দেখেছিলাম লাকড়ি মাথায় করে নিয়ে আসছে পরে ভাইয়া আমাকে বলল মেয়েটি নাকি গ্রজুয়েট তুখন আমি নিজেই বুঝিনি গ্রজুয়েট কি ........ আমার মনে পড়ল সেই বিরিশিরির কথা
ধন্যবাদ অসাধারণ সব লেখা আপনার
২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:১৪
সৌম্য বলেছেন: বান্দারবানে শৈলপ্রপাতের ওখানে ফিল্ম কিনতে দোকানে দাড়াইছিলাম। থামি পড়া এক পাহাড়ি মেয়েকে দেখে টাস্কি খেয়ে গেলাম। তাকাতে লজ্জা লাগে আবার অন্য দিকেও চাইতে পারি না। ফেরার পথে একই জায়গায় জীপ থামাইছিলাম কি জানি কিনতে, এইবারেও সেই মেয়ে...। পাথুরে নদী জলে পাহাড়ি মেয়ে নামে, ভেজা তার তনু মন ধরা দেয়না, কি স্বপন একে দিল বলা যায় না। প্রায় ৪/৫ বছর হয়ে গেছে। চেহাড়া ভুলতে পারি না
২৭|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৩২
অগ্নির বলেছেন: বান্দারবানে শৈলপ্রপাতের ওখানে ফিল্ম কিনতে দোকানে দাড়াইছিলাম। থামি পড়া এক পাহাড়ি মেয়েকে দেখে টাস্কি খেয়ে গেলাম। তাকাতে লজ্জা লাগে আবার অন্য দিকেও চাইতে পারি না। ফেরার পথে একই জায়গায় জীপ থামাইছিলাম কি জানি কিনতে, এইবারেও সেই মেয়ে...। পাথুরে নদী জলে পাহাড়ি মেয়ে নামে, ভেজা তার তনু মন ধরা দেয়না, কি স্বপন একে দিল বলা যায় না। প্রায় ৪/৫ বছর হয়ে গেছে। চেহাড়া ভুলতে পারি না
তাই ! না ? চেহারা ভুলতে পারো না ? দাড়াও ভুলাচ্ছি সবকিছু
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:০৯
বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: দারুন লাগলো । +++++
জায়গাটার নাম অদ্ভুত !!!