নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শোভন©২০১৫

S M Shovon

S M Shovon › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোছনা বিলাসী সেই রাতে....

২৮ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১০

চাঁদের রুপালি আলোয় চারদিক আলোকিত। গাছের নিচে আলো ছায়ার খেলা। জোত্‍স্নার আলোয় রাস্তার পাশের এই নির্জন মাঠটি বহু দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। মৃদু দখিনা হাওয়া পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে গায়ে। দৈত্যাকার এই বট গাছটির নিচে বিরাণ পথের ধারে বসে আছি। দূরের গ্রামগুলোতে মাঝে মাঝে শেয়াল ডেকে ওঠছে।



কলি এই নীরবতার মাঝে বললো-

এই তুমি কি দেখছ?

হঠাত্‍ ওর কথা শুনে তাকালাম ওর দিকে। কিছুক্ষণ অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকলাম ওর মুখ পানে। এরপর গম্ভীর কন্ঠে উত্তর দিলাম-

দুটো চাঁদকে...

ও মৃদু হেসে বললো-

চাঁদ তো একটা উঠেছে। তুমি দুটো পেলে কোথায়?

-একটা আমার চাঁদ, আরেকটা পৃথিবীর চাঁদ।

কিছুক্ষণ নীরব থেকে ও আবার বললো-

তোমার চাঁদটা আবার কে?

ওর মুখপানে চেয়ে বললাম-

আমি এখন যার দিকে তাকিয়ে আছি।

-তুমি তো তাকিয়ে আছো ঐ কালো অন্ধকারের দিকে।

কথাটা শুনে অনেকটা চমকে উঠলাম। নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম-

হ্যাঁ। আমি তাকিয়ে আছি কালো অন্ধকারের ন্যায় তোমার ওই ডাগড় আঁখি পানে।

অনেকটা অভিমানের স্বরে কলি আমায় বললো-

মিথ্যে বলছ কেন? তুমি তো আমার পানে তাকাও নি।

-না না। আমি তো তোমার পানেই তাকিয়ে আছি। আসলে আমি তোমার মত সুন্দর নই তো। তাই তুমি চাঁদের আলোয় আমার চোখ দেখে বুঝতে পারছ না যে কোন দিকে তাকিয়ে আছি।

কলি এ কথা শুনে একটু হেসে দিয়ে বললো-

এমন উদ্ভট কথা পাও কোথায় শুনি?

-কেন? তুমি যেথায় ঐ সৌন্দর্য পেয়েছ।

ও আবার হাসলো। আমিও হেসে দিলাম ওর সাথে।



এরপর আবার নীরবতা। দূরে জোনাকীরা ঝারবাতি তৈরী করে রেখেছে। শেয়াল ডেকে যাচ্ছে। আকাশে টুকরো টুকরো মেঘ উড়ে আসছে। চাঁদটা মাঝে মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে মেঘের আড়ালে। আবার বেরিয়ে এসে আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে ধরণীর বুকে। আকাশের উজ্বল তারা গুলো ছাড়া বাকি তারা গুলো হারিয়ে গিয়েছে চাঁদের আলোর গভীরে।



এমন সময় এক ঝাপটা দখিনা হাওয়া বয়ে গেল। ওর চুলের গন্ধ পেলাম তার মাঝে। এখন চুপ করে থাকাটা আমার জন্যে অসহ্য হয়ে গেল। ওকে বললাম-

কলি....

-হুম বল।

-এভাবেই কেটে যেত যদি সারাটি জীবন। শুধু সুখ আর সুখ.... তবে কেমন হতো?

-ভালো হতো না মোটেও।

-কেন?

-জীবনে যদি দুঃখ না থাকে তবে সুখকে অনুভব করে যায়না। পূর্ণিমার পর অমাবস্যা আসে বলেই পূর্ণিমা এত সুন্দর।

-হুম... এ কারণেই কী তুমি আমার থেকে দূরে দূরে থেকে আমাকে দুঃখ দাও?

-শোভন, আমি তোমায় ভালোবাসি। এ ভালোবাসাকে উপলব্ধি করতেই তোমার থেকে দূরে থাকি....

-নাহ্! এ কষ্ট যে আমার সহ্য হয় না কলি।

এবার ও হেসে দিলো। বললো-

পাগল! তুমি এমন পাগলামো করো কেন?

আমি ওর হাতে হাত রেখে বললাম-

চাঁদ যখন সাগরের কাছে আসে তখন সাগরের বুকে জল পাগলের মতো ফুলে ওঠে জোয়ারের সৃষ্টি করে। আর তুমিই তো আমার চাঁদ। তাই তোমায় কাছে পেলে আমার বুকে ভালোবাসার জোয়ার আসে।

ও হাসতে হাসতে বললো-

পাগল! আমি তো তোমারই....

এমন সময় হাতের ফোনটা বেজে ওঠল। বিরক্ত হয়ে বললাম-

এই সময়ে কে বিরক্ত করতে এল!

ফোনটা রিসিভ করলাম-

হ্যালো...

-কিরে শোভন! কোথায় তুই?

-এই তো রে সজিব, বটতলা বসে আছি...

-এই রাতে ওখানে কি করিস?

-জোত্‍স্না দেখছিলাম... বাইরে এসে দেখ কত্ত বড় চাঁদ ওঠেছে!

-তোকে নিয়ে আর পারলাম না। এত রাতে কেউ বাইরে থাকে? তাও আবার একা!

-ইস! তোর জ্বালায় আর বাচলাম না। আমি একা তোকে কে বলল? আমরা দুজনে জোছনা রাত উপভোগ করছি। আর তুই কিনা....

-তোর এই জোছনা বিলাসী স্বভাবটা আর গেল না। কি সব ফালতু কথা.... দুজন পেলি কোথায়? নিশ্চই আবার কলিকে কল্পনা করে বসে আছিস....

-কলিকে কল্পনা করতে নিষেধ আছে নাকি?

-দেখ শোভন, এই মাঝরাতে পাগলামো করিস না তো। তুই তো জানিস যে কলি তোকে ভালোবাসে না। তোকে চায় না। তবে কেন এই মরীচিকার পেছনে ছুটছিস? মাথা ঠান্ডা কর। বাসায় যেয়ে ঘুমা।

-দোস্ত! এমন করে বলিস না। আমি কলিকে চাই। ওকে ভালোবাসি। ওকে না পেলে আমার জীবনটাই অপূর্ণ থেকে যাবে।

-ok! যাহ্ ও তোকে ভালবাসবে.... এবার ফোন রেখে বাসায় যা।

-ঠিক আছে। রাখি।

প্রকৃতির নিষ্ঠুর লীলা খেলার কথা ভাবতে ভাবতে বাড়ীর পথে পা বাড়ালাম। রাত বাড়ছে, চাঁদ পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ছে.....

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:১০

বেঈমান আমি বলেছেন: ভালো লাগলো।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৫২

S M Shovon বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ৩:২৮

রবিন মিলফোর্ড বলেছেন: ভাল লাগল । ++++++++

২৮ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৫৩

S M Shovon বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.