| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
নাইরোবী শহরে
আইভরি  কোষ্টের  বাণিজ্যিক  রাজধানী  আবিদজান  থেকে  বাংলাদেশে  বিভিন্ন  রুটে  আসা  যায়।  আমি  কেনিয়ান  এয়ার  এ  টিকিট  করলাম  । এই  রুটে  ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সও  আছে  তবে  কেনিয়ান  এয়ারে  ভ্রমন  সবদিক  থেকে  ভাল  এবং  তুলানামূলক  ভাবে  নিরাপদ  বলেও  এর  সুখ্যাতি  আছে  ।  আবিদজান  থেকে  বিকাল  ৫ টার  দিকে  প্লেন  টেকঅফ  করল  ।  আমাদের  পরবর্তী  গন্তব্য  পশ্চিম  আফ্রিকার   ক্যামেরুনের  দোয়ালা  আন্তর্জাতিক  বিমান  বন্দর  ।  অনেক  আগে  ওয়ার্ল্ড  কাপ  ফুটবল  চলাকালে  ক্যামেরুনের  গোলকিপার রজার  মিলার এর  পারফরমেন্স  এর  কারণে ক্যামেরুনের  কথা  বাংলাদেশের  মানুষ  জানতে  পেরেছিল । দুই  ঘন্টা  পর  আমরা ক্যামেরুনের দোয়ালা  আন্তর্জাতিক  বিমান  বন্দরে  নামলাম  ।  খুব  সাদামাটা  বিমান  বন্দর  ।  আমাদের  ভিসা  নাই  তাই  এয়ার  পোর্টের  ট্রানজিট  এরিয়াতে  থাকতে  হলো  । প্লেনে  হালকা  নাস্তা  দিয়েছিল  ।  এই  ট্রানজিট  এরিয়াতে  প্রায়  ৪  ঘন্টা  থাকতে  হলো  ।  ২  ঘন্টা  পর সবাইকে  একটা  করে  ঠান্ডা  ড্রিংস  দিল  এয়ার  লাইন্স  এর  সৌজন্যে  ।  আফ্রিকার  বিভিন্ন  দেশ  থেকে  মানুষ  জন  এই  সব  এয়ার  লাইন্স  এ  করে  ডুবাই  যায়  অথবা  অন্য  কোন  দেশে  যাওয়া  আসা  করে  ।  
রাত  প্রায়  ১০-৩০  মিনিট  আমাদের  প্লেন  নাইরোবীর  উদ্দেশ্যে  ক্যামেরুন  থেকে  টেকঅফ  করল  ।  পশ্চিম  আফ্রিকা  থেকে  আমরা  পূর্ব  আফ্রিকার  পথে  উড়াল  দিলাম  ।  প্লেনটা  বেশ  ভাল  বোয়িং  ৭৩৭ । বসতে  তেমন  কোন  সমস্যা  নেই  ।  কেবিন  ত্র“ুরা  বেশ  প্রফেশনাল  ।  প্লেনে  আমাদেরকে  রাতের  ডিনার  খেতে  দিল  । বেশ  মজা  করে  খাবার  খেলাম  । ইনফা¬ইট  ম্যাগাজিন  দেখে  ও  মিউজিক  শুনে  কিছুক্ষণ  সময়  কাটালাম  ।  তারপর  ঘুম  দিলাম  সিটে  বসেই  ।  ক্যামেরুন  এয়ারপোর্টে  বেনিনে  কর্মরত  রুয়ান্ডার  অধিবাসী  মিস্্  আরিয়তার  সাথে  কথা  হলো । রুয়ান্ডার  যুদ্ধের  পর  ক্ষতবিক্ষত  দেশটাতে  চাকুরী  তেমন  ছিল  না ।  তাই  বেনিনে  কাজ  করে  ।  বেশ  ভাল  পোষ্টে  আছে  সেখানে । এন জি ও  কর্মকর্তা  মাস্টার্স  পাশ  করেছে । ফ্রেঞ্চ  ভাষাভাষী  তবে  অল্প  অল্প  ইংরেজী  বলতে  পারে  ।  হুটু তুতসী  এই  প্রশ্নটা  এড়িয়ে  গেল, বলল  এই  সমস্যার  কারণে  কত  রক্তপাত  হলো  রুয়ান্ডায়  ।  আমাদেরকে  ভিজিটিং  কার্ড  দিল  ।  বেনিনের  অবস্থা  সম্বন্ধে  তাকে  জিজ্ঞাসা  করলাম, বলল  বেশ  গরীব  দেশ তবে  তার  পছন্দ  ।  এছাড়াও  তার  কাজটা  বেশ  ভাল  লেগেছে  বলে  বেনিনে  থাকতেই  তিনি  স্বাচ্ছন্দ  বোধ  করেন  ।  ভাষা  নিয়েও  কোন  সমস্যা  নেই  কারন  বেনিনও  ফ্রেঞ্চ  কলোনী  ছিল  এবং  ভাষাও  ফরাসী  ।  সেখানেই  কথাবার্তার  ফাঁকে  স্যামুয়েল  গেলাম  নামে  ক্যামেরুনের  এক  মটর  পার্টস  ব্যবসায়ীর  সাথে  পরিচয়  হলো  । তিনি  ডুবাই  যাচ্ছেন  ।  ডুবাই  থেকে  গাড়ীর  যন্ত্রাংশ  আমদানী  করেন  । ক্যামেরুনে  প্রতিষ্ঠিত  ব্যবসায়ী  বলে  মনে  হলো  ।  কথাবার্তা  মার্জিত  এবং  দেশ  বিদেশ  সম্বন্ধে  ভাল  খোজখবর  রাখে  । বিদেশ  এসে  মানুষের  সংগে  কথা  বলার  ও  পরিচিত  হওয়ার  আনন্দই  আলাদা । ক্যামেরুন ও স্বল্পোন্নত  একটা  দেশ  ।  মানুষ  গুলোর  চাহিদা  তেমন  বেশী  না  । অন্যান্য  দরিদ্র  আফ্রিকান  দেশের  মত  চলে  যাচ্ছে  জীবন  ।  
প্লেনে  বসে  বেশ  আনন্দই  লাগছিল  ।  দেশে  যাচ্ছি  অনেক  দিন  পর  এবং  এই  সাথে  একটা  নতুন  দেশ  দেখা  । কেনিয়াতে  এর  আগে  কখনো  আসা  হয়নি  ।  কেনিয়া  এয়ার  এর  সৌজন্যে  নাইরোবিতে  এক দিনের  ট্রানজিট  সারা  দিন  নাইরোবি  শহর  দেখা  যাবে  ।  হোটেল  হিল্টন এ থাকা  ও  খাওয়ার  ব্যবস্থা  আছে  টিকেটের  সাথে । নাইরোবির  জম্মু  কেনিয়াত্তা  আন্তর্জাতিক  বিমানবন্দরে  যখন  আমাদের  বিমান  অবতরণ  করল  তখন  সকাল  হয়  হয়  । জোমো কেনিয়াত্তা স্বাধীন কেনিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তার নামানুসারে বিমান বন্দরের নাম রাখা হয়েছে। প্লেন  থেকে  নেমে  মালামাল  সংগ্রহ  করে  ভিসা  নেওয়ার  জন্য  ইমিগ্রেশনে  এলাম  ।  এখানে  ট্রানজিট  ভিসা  দেয়া  হয়  ।  জম্মু কেনিয়াত্তা বিমান বন্দরের  ভিসা নিতে হলে ফরম ফিলাপ করে ফি জমা দিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ যে প্রমান তারা চায় তা হলো এইচ আই ভি নেগেটিভ এর মেডিকেল সার্টিফিকেট। দেশে এইচ আই ভি আক্রান্ত বিদেশীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রনে নিঃসন্দেহে এটা একটা যুগোপযোগী পদক্ষেপ। টিকেট  ও  হেলথ  কার্ড  দেখিয়ে  ফর্ম  পুরণ  করে  জমা  দিলাম  কাউন্টারে  ।  কিছুক্ষণ  পর  পাসপোর্টে  ট্রানজিট  ভিসার  সিল  মেরে  দিল  ।  এয়ারপোর্টের  বাইরে  এসে  বেশ  ভাল  লাগল  । কেনিয়া  সাফারীর  জন্য  বিখ্যাত  ।  এটা  ঠিক  মরুময়  অঞ্চল  না  এখানে  গাছ  পালাও  আছে  । মরু  এলাকাও  আছে  ।  মাসাইমারা  কেনিয়ার  একটা  বেশ  প্রসিদ্ধ  জায়গা  ।  অনেক  পর্যটক  এখানে  বেড়াতে  আসে  । সকালে  হালকা  ঠান্ডা  বাতাস, সূর্য  উঠছে  পুর্ব  আকাশে। 
নাইরোবির  ভোরের  আলো  আমাদেরকে  মুগ্ধ  করল  । নাইরোবি শহরের পাশেই ন্যাশনাল পার্ক। এই পার্কে সিংহ, জিরাফ, গন্ডার এবং অন্যান্য অনেক পশুপাখি আছে। এটা অনেকটা অভয়ারণ্য, এয়ার পোর্ট থেকে আসার পথে দুরে জিরাফ,গন্ডার ইত্যাদি দেখা যায়। জনবসতি তেমন নেই এবং ফাঁকা ঘাষে ঢাকা জমিতে এসব প্রাণীরা স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়ায়। গাড়ীতে করে  আমাদেরকে  হোটেলে  নেওয়ার  ব্যবস্থা  আছে  ।  তবে  গাড়ীটা  কিছুক্ষণ  দেরী  করছে  ।  আমরা  বাইরে  এসে  অপেক্ষা  করছিলাম  । অবশেষে  বাস  এলো  আমরা  ১০/১২  জন  প্যাসেঞ্জার  মালপত্র  নিয়ে  বাসে  উঠলাম  ।  রাস্তা  বেশ  সুন্দর  ও  ফাঁকা  ৪০/৪৫  মিনিট  বাসে  চড়ে  আমরা  হোটেল  হিল্টন  এর  সামনে  এলাম  ।  পথে  কয়েক জন  যাত্রীকে  হোটেল  ইন্টারকন্টিনেন্টাল  এ  নামিয়ে  দিল  ।  রাস্তা  দিয়ে  আসার  পথে  আমরা  জিরাফ  ও  জেব্রা  দেখলাম  একটু  দুরে  হেটে  বেড়াচ্ছে।  এখানে  এ  ধরণের  দৃশ্য  প্রায়  দেখা  যায়  ।  দুরে  গন্ডারও  দেখলাম  ।  খোলা  জায়গায়  গন্ডার  এটাই  প্রথম  ।  এটা  যেন  খোলা  চিড়িয়াখানা  ।  পথে  অনেক  বড়  বড়  বিলবোর্ডে  স্ন্দুর  সুন্দর  এড। মোবাইল  ও  কম্পিউটার  কোম্পানী  গুলো  বেশ  ভাল  ভাবেই  তাদের  ব্যবসা  সম্প্রসারণ  করছে  ।  আফ্রিকার  এই  দেশটিতে  অর্থনীতির  অবস্থা  আস্তে  আস্তে  ভাল  হচ্ছে  ।  পর্যটন  ও  এ  সংক্রান্ত  অন্যান্য  ব্যবসায়  কেনিয়ার  উপার্জন  বেশ  ভাল  ।  শহরে  ঢুকার  সময়  তেমন  কোন  যানজট  নেই  দেশটাও  তেমন  ঘনবসতিপুর্ণ  না  ।  সকাল  বেলা  তাই  মানুষ  জন  ধীরে  সুস্থে  রাস্তায়  বেরুচ্ছে  ।  দোকান  পাট  খোলা  শুরু  হচ্ছে  তখন ।  
এয়ারপোর্টেই  কেনিয়া  এয়ারওয়েজ  এর  কাউন্টারের  টিকেট  দেখানোর  পর  আমাদেরকে  হিল্টন  হোটেলে  থাকা  ও  খাওয়ার  টিকেট  দিল  ।  সাফারী  দেখার  ইচ্ছা  ছিল  ।  ৪০  ডলার  চাইল  আমাদের  কাছে  ।  ভারতীয়  একজন  ছিল  সে  বলল  এদের  কথা  বা  কাজের  কোন  গ্যারান্টি  নেই  ।  পরে  কোন  ঝামেলা  হলে  বা  সময়মত  হোটেলে  ফেরত  আসতে  না  পারলে  প্লেন  মিস  হবে  ।  হোটেলে  এসে  রিসিপসনে  কথা  বললাম , তারা  বলল  হোটেল  থেকেই  ম্যানেজ  করা  যাবে  ।  মনে  হলো  সেটাই  ভাল  ।  তবে  শেষ  পর্যন্ত  সময়ের  অভাবে  আমাদের  সাফারী  দেখা  হলো  না  ।  
 
হিলটন  হোটেল  , নাইরোবী
হিলটন ৫ তারা  হোটেল  সব  আন্তর্জাতিক  সুবিধা  এখানে  আছে  ।  রিসিপশন  থেকে  টিকেট  ও  পাসপোর্ট  রেখে  রুমের  চাবি  দিয়ে  দিল  ।  ৭-৩০  বেজে  গেল  রুমে  যেতে  যেতে  ।  আবহাওয়া  একটু  ঠান্ডা  ফুল  শার্ট  থাকাতে  তেমন  কোন  সমস্যা  হলো  না  ।  রুমটা  বেশ  সুন্দর  টিভি , ফ্রিজ সব  আছে   সৌজন্যমুলক  খাবার  টেবিলে  দেয়া   আছে  ফল  ও  চকলেট  ।  এসেই  হট  এন্ড  কোল্ড  পানিতে  গোসল  করলাম  ।  রাতে  ভ্রমনের  ক্লান্তি  চলে গেল  । ফ্রেস  হয়ে  নাস্তা  খেতে বের  হলাম  ।  কফির  অর্ডার  দিলাম  প্রথমে ।  এক  কফি  পট  ভর্তি  কফি  দিল  সাথে  চিনি  ও  ক্রিমার । বুফে  সিস্টেমে  নাস্তা  লাগানো  আছে  । ফ্রেস  ফ্রুট  ,জুস  ,সিরিয়াল ,ব্রেড,বিন,টোষ্ট  ব্রেড,বিভিন্ন  ধরনের  ডিম , চিকেন ,বিফ  ইত্যাদির  ব্যবস্থা  আছে, এলাহি  কারবার  । নাস্তায়  এত  খাবার  খাওয়া  সম্ভব  না  । তাই  প্রথমে  একটা  সার্ভে  করে  নিলাম ।  পছন্দের  মধ্যে  জুস , ব্রেড, কাষ্টার্ড,  আইসক্রিম  ,ডিমভাজা  সহযোগে  ভারী  নাস্তা  হলো ।     ডাইনিং  রুমটা  বেশ  বড়  ও  চমৎকার  ভাবে  সাজানো , প্রত্যেক  টেবিলের  সামনেই  আফ্রিকান  বিভিন্ন  স্যুভেনির ,এর  সৌন্দর্য  দেখতে  দেখতে  নাস্তা  করছিলাম ।  নাস্তা  সেরে  রুমে  এসে  জিনিষ  পত্র  গুছিয়ে  হালকা  ঘুম  দিলাম  ।  লাঞ্চ  টাইম দুপুর  ২-৩০  পর্যন্ত  ।  ১২ টার  পর  থেকে  সময়  শুরু  হয়  ।  কিছুক্ষণ  বিশ্রাম  নিয়ে  ১০ টার  দিকে  ঘুম থকে  উঠলাম  । রেডি  হয়ে  ১২ টার  সময়  নীচে  এলাম  । অনেক  গেষ্ট  লাঞ্চ  শুরু  করে  দিয়েছে  । আমরা  নাইরোবি  শহরটা  একটু  দেখতে  বের  হলাম  । নাইরোবি কেনিয়ার রাজধানী ও সবচেয়ে বড় শহর। এটা পূর্ব আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহৎ জনবহুল শহর। ১৮৯৯ সালে মোম্বসা থেকে উগান্ডা যাওয়ার রেল রোডের পাশে রেল ডেপো হিসেবে নাইরোবি পরিচিতি পায়। নাইরোবি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে বিখ্যাত আফিকার একটা শহর। বহু আন্তর্জাতিক কোম্পানীর অফিস এ শহরে আছে। এয়ারপোর্ট থেকে নাইরোবির পথে বিশাল বিশাল বিলবোর্ডে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানীর পণ্যের ছবিতে ভর্তি। ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ প্রটেকটরেটের রাজধানী মোম্বাসা থেকে নাইরোবিতে সরে আসে। ১৯৬৩ সালে ব্রিটেন থেকে কেনিয়া স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর নাইরোবী দ্রুত উন্নত হতে থাকে। তবে পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা এখনো নাইরোবির বড় সমস্যা। 
হোটেল  থেকে  বের  হলেই  সিটি  সেন্টার  ।  এই  এলাকাটা  বেশ  ব্যস্ত  ও  ঘিঞ্জি , এখানে  অনেক  মানুষ,  আফ্রিকার  মানুষ  দেখতে  দেখতে  এখন  চোখ  সয়ে  গেছে  । তাই  তেমন  কোন  সমস্যা  হলো  না  ।  বাস  ষ্ট্যান্ড  এ  বাংলা  দেশের  মতই  কোষ্টার  ও  ম্যাক্সি  জাতীয়  যানবাহনে  মানুষ  গাদাগাদি  করে  যাতায়াত  করছে  বিভিন্ন  গন্তব্যে  ।  ভাল  বাসও  আছে  ।  এসব  এলাকা  তেমন  পরিচ্ছন্ন  না  ।  তাই  বেশীক্ষণ  থাকলাম  না  এখানে । হোটেলের  পাশেই  পর্যটকদের  জন্য  সুন্দর  একটা  মার্কেট  আছে  ।  এখান  থেকে  কেনিয়ার  কিছু  স্যুভেনির  কিনলাম  ।  আমার  ভ্রমণ  করা  দেশ  গুলোর  পতাকা  কিনলাম  কয়েকটা  ।  অনেক  দেশের    পতাকা  ছিল  সবগুলো  দেশের পতাকা খুজে  বের  করতে  পারিনি  ।  তাই  কেনা  হলো  না  ।  নাইরোবি  শহরের  কিছু  ছবি  তুললাম  আশেপাশে  গিয়ে । 
এরপর  হোটেলে  লাঞ্চের  জন্য  ফিরে  এলাম । আবার  সেই  পছন্দ  অনুযায়ী  খাবার  সিলেক্ট  করে  ধীরে  সুস্থে  ডাইনিং  হল  থেকে  বের  হয়ে  এলাম ।  আজকের  দিনটা  অপূর্ব  কাটল  খাওয়া  ও  থাকার  দিক  থেকে ।  এরপর  আবার  ঘুরতে  বের  হলাম  । কেনিয়া  ন্যাশনাল  আর্কাইভ  এর  সামনে  গেলাম  সেটা  বন্ধ  ।  আশেপাশের  এলাকা  ঘুরে  স্মৃতি  হিসেবে  কিছু  ছবি  তুললাম  ।  
 
কেনিয়া  ন্যাশনাল  আর্কাইভ
হোটেলে  ফিরে  যাত্রার  প্রস্তুতি।  ৫ টার  দিকে  সব লাগেজ নিয়ে  রুম  থেকে নীচে  এলাম  ।  আমাদেরকে  এয়ার  পোর্টে  নেয়ার  জন্য  বাস  চলে  এসেছে  ।  বাসে  যাত্রী  তেমন  বেশী  নেই  । ২৪/২৫  বছরের  একজন  উজ্জ্বল  ফরাসী  তরুন  আমাদের  সাথে  যাচ্ছে  ।  ২/৩  বছর  ধরে  ফিনল্যান্ডের  সংগীতের  উপর  পড়াশোনা  করছে  । ফিনল্যান্ড  প্রচন্ড  শীতের  দেশ  মেরু  অঞ্চলের  কাছাকাছি  । তার  প্রেমিকা  ফিনিস  তাই  প্রেমের  টানে  মাতৃভুমি  ছেড়ে  সুদুর  ফিনল্যান্ডে । পড়াশোনার  পাশাপাশি  সে  চাকুরীও  করছে  ।  তবে  সেদেশে  বিদেশীদের  জন্য  ভাল  চাকুরী  নেই  । আগে  নিজের  নাগরিক  তারপর  বিদেশীদের  সুযোগ । সে  কেনিয়াতে  এসেছে  ব্যান্ড  দলের  সাথে  গান  করতে  ।  ব্যান্ডদল  নিয়ে  এরা  পৃথিবীর  এক  জায়গা  থেকে  অন্য  জায়গায়  ঘুরে  ।  তার  আফ্রিকা  ভাল  লাগে,    বেড়ানো  এবং  কিছু  আয়  দুটোই  হবে  তাই  এখানে  এসেছে ।  আমরা  এ ধরনের  জীবনের  সাথে  তেমন  পরিচিত  নই  । বাস  কন্টিনেন্টাল  হোটেল  থেকে  কিছু  যাত্রী  নিল  তারপর  সোজা  এয়ারপোর্টের  উদ্দেশ্যে  রওয়ানা  হয়ে  গেল  ।  শেষ  বিকেলের  সূর্যের  আলো  রাস্তার  দুই  পার্শ্বের  তৃণভূমির  উপর  পড়ে  সুন্দর  দৃশ্যের  সৃষ্টি  করছিল  । বিশাল  ফাঁকা  এলাকা  দুপাশে,  এখানে  বন্য  প্রাণী  নির্ভয়ে  ঘুরে  বেড়াচ্ছে  । দুরে  হাতির  পাল, জেব্রা, জিরাফ  দেখতে  দেখতে  এয়ারপোর্টের  কাছে  চলে  এলাম  ।  রাস্তায়  গাড়ীও  তেমন  নেই  ।  জম্মু  কেনিয়াত্তা  আন্তর্জাতিক  বিমান  বন্দরের  ডিপারচার  লাউনজে  আমরা  নামলাম । কেনিয়ার  এয়ারওয়েজের  কাউন্টারে  গেলাম সেখানে আমাদেরকে  কি  কি  ফর্মালিটিজ  করতে  হবে  জানালো ।  লাগেজ  বুকিং  করে  দিলাম। পাসপোর্ট ,  টিকেট  নিয়ে  ইমিগ্রেশন  ফর্মালিটিজ  শেষ  করলাম  ।  হাতে  কিছুক্ষণ  সময়  ছিল  তাই  এয়ারপোর্ট  ডিউটি  ফ্রি  শপে ঘুরতে বের  হলাম । মোটামুটি  সুন্দর  করে সাজানো এর  ছোট্ট ডিউটি  ফ্রি  শপ ।  বিদেশীদের জন্য আফ্রিকার  স্যুভেনির  আছে  দামটা বাইরের  চেয়ে  অনেক  বেশী । ঘুরে  ঘুরে দেখলাম কেনা  হলো  না তেমন একটা । বোর্ডিং এর ডাক এলো  হ্যান্ড ব্যাগেজ স্কেন করে পাসপোর্ট বোর্ডিং কার্ড দেখিয়ে এনক্লোজারে এলাম । বিমানটা একটু ছোট মনে হলো তবে  বোয়িং ৭০০ সিরিজের কোন একটা । ৪ ঘন্টা ফ্লাইট টাইম শেষ করলে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ডুবাই  আন্তর্জাতিক  বিমান  বন্দর  ।  কেনিয়ার  নাইরোবির  শহরকে বিদায়  জানিয়ে  প্লেনটা  ডুবাই  এর  উদ্দেশ্যে  উড়াল  দিল  ।  
২| 
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩  দুপুর ২:৫০
বাংলাদেশী পোলা বলেছেন:  আপনার এই পোস্ট পড়ে ভিন দেশ সম্পর্কে অনেক অনেক কিছু জানতে পারলাম। ভ্রমন পোস্ট এমনই হওয়া উচিত যেখানে নানান তথ্য ও ইতিহাস বিষয়ে তুলে ধরে পাঠকদের জানার দড়জা খুলে দেওয়া হয়-আপনি তাই করেছেন পরিচ্ছন্ন ভাবেই।
ভাল লাগা ও শুভ কামনা। 
৩| 
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩  দুপুর ২:৫৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ  হোসেন বলেছেন: 
সুন্দর। 
+++
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩  দুপুর ২:৩৮
বাংলার নবাব নাজমুলউদ্দৌলা বলেছেন: ছবি কই ?