| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
                  ক্যারল জিজকা চোকেস্লোভাকিয়ার  ইউএন  এর  চেক কনসুলেটে কোড  ক্লার্ক  হিসেবে  কর্মরত  ছিল। ক্যারল ও  তার  স্ত্রী  ভেরা নিউইয়র্কে  বসবাস করত ।  আমেরিকার  মুক্ত স্বাধীন জীবন তাদের  হাতছানি  দিলেও  তারা  দলত্যাগ  করার  সাহস  পায় না। কারণ  চেক  রাজধানী  প্রাগে  তাদের  দুই  বাচ্চা  জিম্মি,বাবা মাকে  চাকুরীর  সুবাদে  আসতে  দিলেও  বাচ্চাদের  আমেরিকা  আসার  অনুমতি  ছিল  না। 
 অক্টোবর  মাস  থেকেই  নিউইয়র্কে  ক্রিসমাস  এর  কেনাকাটার  জন্য আকর্ষণীয়  সব  ধরণের  বিজ্ঞাপন  দেয়া  শুরু  হয়।  ভেরা  ভাবল  বাচ্চাদের  আমেরিকা  নিয়ে  আসার  জন্য ক্রিসমাস  একটা  ভাল  উপলক্ষ  হতে  পারে  ।  ভেরা  ও  জিজকা  তাদের  বাসায়  এ নিয়ে  মাঝে  মাঝে  আলোচনা  করত। দুজনেই  আমেরিকার  মুক্ত  আবহাওয়ায়  নতুন  জীবন  শুরু  করার  জন্য উন্মুখ  হয়েছিল এবং  প্রায়ই  ভাবত  কি ভাবে তা করা যায় ।  প্রতিদিন  সন্ধ্যায়  নিজেদের  বাসায়  বসে  তারা  এ  ব্যাপারে  আলোচনা করত ।  কিন্তু  প্রতি বারই  তাদের  চিন্তাকে  থামিয়ে  দিত  প্রাগে থাকা  তাদের  দু  সন্তান । জিজকা  তাদের  আলোচনার  সুত্র  ধরে  ক্রিসমাসে  বাচ্চদের  আনার  ব্যাপারে  পরদিন কর্তৃপক্ষের  কাছে  দরখাস্ত  করল। এই  দরখাস্ত  আর  আলোচনাই  তাদের  জীবনকে  যে  শেষ  করে  দিবে  তা  তারা  কখনো  ভাবেনি। দরখাস্তটা  কেজিবিকে  জিজকা  পরিবারের  দলত্যাগের সম্ভাব্য  দিন  তারিখ জানার  ব্যাপারে  সহায়তা  করেছিল  । কেজিবি  কিভাবে  তাদের  পক্ষত্যাগের  কথা  সম্বন্ধে নিশ্চিত  হয়েছিল তা সঠিক  ভাবে  জানা  যায় নি। ধারণা করা হয় তারা যে চেক  কুটনীতিক  হাউজিং  কমপ্লেক্সে  বাস  করত  সম্ভবত  তাদের  বাসায়  আড়িপাতা  যন্ত্র  লাগানো  থাকতে  পারে। 
 এই  তথ্য  কর্ণেল  মিলোস্লাভ  ভিভোদার  কাছে  সরাসরি  মস্কো  থেকে  জানানো  হয়। তথ্যের  সঠিকতা  নিশ্চিত  না  হয়ে  সাধারণত  এ  ধরণের  খবর দেয়া  হয়  না। এই  তথ্য খতিয়ে  দেখে সত্য প্রমাণিত হলে  জিজকাদেরকে  দায়িত্ব  থেকে  অব্যাহতি  দিয়ে  প্রাগে  দ্রুত  ফেরত  পাঠানো  হবে। ভিভোদা  যার  আরেক  নাম  বারতোস, সে  চেক  সিক্রেট  পুলিশ  ষ্টাটিনি  তাজনা  বেজপেকনষ্ট  এর  একজন  প্রধান  অনুগত  সদস্য । এর  আগে  সে  জেনেভাতে  চেক  পররাষ্ট্র  মন্ত্রনালয়ের  সহকারী  প্রশাসক  হিসেবে  কর্মরত  ছিল । ক্যারেল  ও  ভেরা  জিজকা  যখন  পক্ষত্যাগের  এই  পরিকল্পনা  করছিল তখন  সে  চেক  রিপাবলিকের  ইউ  এন  এর  প্রতিনিধি  হিসেবে  ওয়াশিংটনে  কর্মরত। ১৯৬২  সালের  ১৮  অক্টোবর  রাতে  জিজকার  নাইট  ডিউটি  ছিল  ।  সেই  সময়  কর্ণেল  ভিভোদা  ভেরার  বাসায়  সশরীরে  যায়।  সে  অবশ্য  একা  যায়নি। একজন  কেজিবি  এজেন্ট ও  তার  সাথে  যায় ।  যার  পরিচয়  জানাযায় নি  । এই  রাশিয়ান  এজেন্ট কেজিবির  নির্বাহী কার্যক্রম  ডিপার্টমেন্ট  বা  কিলার  সেকশন  এর  সাথে  সংযুক্ত  ছিল। এটা  কেজিবির  ফাষ্ট  ডাইরেকটরেটের  একটা  শাখা  । জিজকার  ডিউটি  ছিল  সকাল  ৯ টা  পর্যন্ত । কিন্তু  সে  নিয়ম  ভংগ  করে  ২  ঘন্টা  আগে  বাসার  উদ্দেশ্যে  রওয়ানা  হয়। ভিভোদা  ও  রাশিয়ান  হত্যাকারী  তাকে  বাসায়  আসতে  দেখে  অবাক  হয়  কারণ  তারা  তাকে  তখন  আশা  করেনি।  জিজকাও  তাদেরকে  দরজা  খুলেই বাসায়  দেখবে  ভাবতে  পারেনি। ক্যারেল  এর  প্রতিক্রিয়া  ছিল  আতংকের  কিন্তু  তা  সাথে  সাথেই  ঘটে।  তারা তাকে  ধলে ফেলার  আগেই  সে  পেছনফিরে  দৌড় দেয়। এপার্টমেন্ট  এর  বাইরে  দাড়ানো  গাড়ীর  কাছে  সে  পৌঁছুতে  সক্ষম  হয়  এবং  গাড়ীতে  উঠে  নিউইয়র্কের  রাস্তায়  হিস্টিরিয়াগ্রস্থ  রোগীর মত  গাড়ী  চালাতে  থাকে । সাথে  সাথে  পুলিশের  পেট্রোল কার  তার  গাড়ীর  পেছনে  ধাওয়া  করে  ।  কিছুক্ষণ  পরই  তার  গাড়ী  একটা  ব্রিজের  কলামের  সাথে  ধাক্কা  খায়  ।  পুলিশ  ঘটনা স্থলে পৌছানোর  আগেই  সে  নিজে গুলি  করে  আত্মহত্যা  করে ।  পুলিশ  তাকে  মৃত  অবস্থায়  পায়।  
 ভেরার  মেডিকেল  পরীক্ষায়  দেখা  যায়  যে  তাকে  বেদম  ভাবে  মেরে  চেহারা  থেতলে  দেয়া  হয়েছিল ।  পরবর্তীতে  ক্ষুর  দিয়ে  আস্তে  আস্তে  তার  মুখের  চামড়া  খুলে  নেয়া হয় এবং  মাংস  নরম  করার  ক্যামিকেল তার  ক্ষতস্থানে  ঢেলে  দেয়া  হয়েছিল  ।  ক্যারল  জিজকা  যখন  বাসায় এসে  পৌঁছেছিল  তখন  ডেরা  পরপারে  চলে  গিয়েছিল। অত্যাচার শেষে  ভেরাকে  মাথায়  গুলি  করে  হত্যা করা  হয়েছিল।  চেক  কর্তৃপক্ষ  জিজকার  মৃতদেহ  ডিপলোমেটিক  ইমিউনিটির  মাধ্যমে  ফেরত  চায়।  আমেরিকানরা  পোষ্টমর্টেম  না  করে  তা  দিতে অস্বীকার  করে । চেকরা  তাদের  দায়  এড়ানোর  জন্য ডিষ্ট্রিক  এটর্নির  লোকজন  ও  পুলিশকে ডিপ্লোমেটিক  এলাকার  মধ্যে জিজকার  এপার্টমেন্টে  যেতে  দেয় । তারা  টেবল ক্লথের  উপর  জিজকার  লিখা  একটা  সুইসাইড নোট  পায়।  সেখানে  লিখা ছিল আমি  পাগল  হয়ে  গেছি।  আমি  আমার  স্ত্রীকে  হত্যা  করেছি।  গুডবাই। 
 আমেরিকানদের  কাছে  এই  লিখার  অর্থ বুঝতে  তেমন  অসুবিধা  হয় নি। আপাততঃ নির্দোষ  জিজকা  তার  স্ত্রীকে  নির্মম  অত্যাচার  করে  হত্যা  করে  এবং  ইংরেজীতে  নোট  লিখে  যায় ।  একজন মানুষ কখনো এটা চিন্তাও  করতে পারে না এবং এটা বিশ্বাসযোগ্যও  হতে পারে না । পরবর্তীতে  আমেরিকানরা  ভেরার  মৃতদেহ  অটোপসী  করার  অনুমতি  চায় কিন্তু চেক  কর্তৃপক্ষ  সে  অনুমতি  দেয় নি। তাহলে  দেখা যেত  জিজকার  পিস্তলের গুলি  ও ভেরার  মাথার  গুলি  ক্যালিবার  আলাদা। সেই  ক্রিসমাসে  জিজকার  সন্তানদের  নিউইয়র্কে  আসা  হয় নি।  তারা  সে  সময়  প্রাগে  নিহত  পিতামাতার  অন্তেষ্টিক্রিয়া  অনুষ্ঠানে  যোগ  দিয়েছিল। 
 যখন কোন  সোভিয়েত  অথবা  এর  আধিপত্য  বলয় ভুক্ত  দেশের  কোন  নাগরিক  পক্ষত্যাগ  করে  বিদেশে  চলে  যায়  বা  যেতে  সমর্থ  হয়  তখন  তাকে  বিশ্বাসঘাতক  অপবাদ  দেয়া হয় । কালক্রমে  প্রহসনমূলক বিচারে  তারা  অবধারিত  শাস্তি  মৃত্যদন্ড  নির্ধারিত  হয়  । প্রতি  বছর  কেজিবি  প্রায়  ৪৬০  পৃষ্ঠার  মত  একটা  বিশাল  বই  প্রকাশ  করে  ।  এটা  কেজিবি  বিভিন্ন  দেশের  কনসুলেট  বা  সোভিয়েত  অ্যাম্বেসীর  লিগাল  রেসিডেন্সদের  কাছে  পাঠায়।  এটার  উপরে  অতি  গোপনীয়  সীলমারা  থাকে।  এখানে  প্রায়  হাজার  খানেকের মত  দলত্যাগী  ও  তথাকথিত  বিশ্বাসঘাতকদের  জীবনী  বিশদ  ভাবে  জানানো  থাকে। 
 এ  ধরনের  বইতে রুডলফ  নুরিয়েভের  নাম ছিল। সে একজন  বিখ্যাত  রুশ ব্যালে  তারকা,  তার  সম্বন্ধে  বলা  হয়েছে  যে  ১৬  জুন  ১৯৬১  সালে  সে  তার  দেশের  সাথে  বিশ্বাসঘাতকতা  করেছে। ব্যালে  দল  যখন  ফ্রান্সে  প্রদর্শনীর  জন্য  গিয়েছিল  তখন  সেখান  থেকে  সে পালিয়ে  যায়। ১৯৬২  সালে  লেনিনগ্রাডের  সিটি  কোর্ট  তাকে  তার  অনুপস্থিতিতে  সাত  বছরের  জন্য  ব্যক্তিস্বাধীনতা  হরণ  করার  রায়  দেয়। পালিয়ে তখন থেকে সে  লন্ডনেই  বসবাস  করছিল। 
 ভাদিমির  কোস্তভ  প্যারিসে  বসবাস  করে।  কোস্তভ  বুলগেরীয়  একজন  হোমরা  চোমড়া  ব্যক্তি।  তিনি  প্যারিসের  বুলগেরীয় জাতীয়  রেডিওর  প্রধান  হিসেবে  কর্মরত ছিল। একজন  রাজনীতি  বিশেষজ্ঞ  হিসেবে বিভিন্ন সময়ে  তিনি  রাশিয়া,মধ্যপ্রাচ্য  ও  ইউরোপেও  কর্মরত  ছিল।  
 ১৯৭৭  সালের  জুন  মাসে  কোস্তভ  তার  স্ত্রী  নাতালিয়াসহ  বুলগেরিয়া   থেকে  পালিয়ে ফ্রান্সে  রাজনৈতিক  আশ্রয়  প্রার্থনা  করে। কোস্তভের  পক্ষ  ত্যাগের  তিন  মাস  পর  আরেক  বুলগেরীয়  দলত্যাগী  মারকভ  তার  ভাই  নিকোলার  কাছ  থেকে  ইতালী  হতে  টেলিফোনে  জানতে  পারে  যে  বুলগেরীয়  কর্তৃপক্ষ  কোস্তভ  এর  দেশত্যাগের  জন্য  মারকভ  কে  দায়ী  করছে। প্যারিসের আর্ক ডি  ট্রায়মস্ফ  এর  কাছে  পাতাল  রেল  ষ্টেশন  থেকে  বের  হওয়ার  সময়  কোস্তভ  একটা  এয়ারগান  ফায়ারের মত  শব্দ  শুনতে  পায়  এবং  সাথে  সাথে  তার  পিঠে  একটা  খোঁচা  অনুভব  করে  । একটা  ক্লিনিকে  যাওয়ার  পর  ডাক্তাররা  তার  শরীরে  ছোট্ট একটা ধাতব  টুকরা  আবি¯কার  করে ও তা বের  করে। এই  টুকরাটা  ভাগ্যক্রমে  কোস্তভ  এর  শরীরে  ঠিকমত  ঢুকতে  পারে  নি।  এটা  কোস্তভ  এর  মোটা  কার্ডিগান  পরে  থাকার  কারনে  চামড়া  ভেদ  করতে  ব্যর্থ  হয়।  এই  একই  রকম  ধাতব  বল  দিয়ে  মার্কভকেও  হত্যা  করা  হয়েছিল।  ভাগ্যক্রমে  কোস্তভ  বেঁচে  যায় । ( গিয়র্গী  মার্কভকে  হত্যা  করার  তিন সপ্তাহ আগে এই ঘটনা  ঘটেছিল ) ।  কোস্তভের  শরীরে  পাওয়া  ছোট্ট  ধাতব  বলটা  লন্ডনে  পাঠানো  হয়  মার্কভের  দেহে  পাওয়া  বলের  সাথে  ফরেনসিক  ল্যাবে  মিলিয়ে  দেখার  জন্য ।  কোস্তভ  এর  বর্ণনা  অনুযায়ী  পুলিশ  তার  অনুমান  করা  আততায়ীর  একটা  সম্ভাব্য  স্কেচ  আঁকতে  সমর্থ  হয়।  মার্কভ  এর উপর  আক্রমনের  পর  ৪৫  বৎসর  বয়স্ক  এক  বুলগেরিয়ান  ডাক্তার  মিউনিক  শহর  থেকে  ১০০  কিঃমিঃ  দুরের  ওয়েসেনবাগ  শহরে  তার  কর্মরত  হাসপাতাল  থেকে হঠাৎ  লাপাত্তা  হয়ে  যায়।  সেও  মার্কভ  ও  কোস্তভ  এর  মত  পক্ষত্যাগী  ছিল। পরবতীতে  তাকে  আবার  খুজে  পাওয়া  যায়।  ফ্রান্স  ও  ব্রিটেন  এর  গোয়েন্দারা  ঐ  ব্যক্তিকে  জেরা  করে  কিন্তু  সে  কোস্তভ  বা  মার্কভ  এর  ঘটনার  ব্যাপারে  কিছুই  জানে  বলে  জানায়।  পরবর্তীতে  পুলিশ  কোস্তভকে  নিয়ে  শনাক্তকরণ  প্যারেড  করায়।  যেখানে  সেই  বুলগেরীয়  ডাক্তার  ছিল।  তবে  কোস্তভ  তাকে সনাক্ত  করতে ব্যর্থ  হয়  এবং  সেই  ডাক্তার  ছাড়া  পেয়ে  যায় ।
 পুলিশ    ঘটনার  সাথে ডাক্তারের সংশ্লিষ্টতা  বেশ  জোর  দিয়ে  প্রমান  করার  চেষ্টা  করে।  কারণ  মার্কভকে  ছাতার  সুচালো  অংশ  দিয়ে  আঘাত  করা  হয়েছিল  এবং  এ  ধরণের  আঘাত  সার্জিক্যাল  গান  যা  ছাতার  মধ্যে  লুকিয়ে  রেখেও  ব্যবহার  করা  যেতে  পারে।  এ  ধরণের  সার্জিক্যাল  ইমপ্লানটেশন  গান  চামড়ার  ক্যানসারের  রুগীদের  শরীরে  রেডিও  অ্যাকটিভ  সোনার  ক্ষুদ্র  পাত  স্থাপন  করার  জন্য  ব্যবহার  করা  হয়। সন্দেহ ভাজন ডাক্তার  যে  ওয়েসেনবাগ  হাসপাতালে  ছিল  সেই  হাসপাতালে  এ  ধরণের  গান  দিয়ে  চিকিৎসা  করা  হতো। ইংল্যান্ডে  ডরসেটে  মার্কভ  এর  শেষকৃত্যে  কোস্তভ  একটা  ফুলের  তোড়া  পাঠায়।  সেই তোড়াতে  “গিয়র্গী  মার্কভ  এর  আত্মত্যাগের  প্রতি  সম্মানে”  এই  কথাটা  লেখা  ছিল।  ১৯৩৭  সালে  পশ্চিম  ইউরোপের  সোভিয়েত  গোয়েন্দা  সংস্থার  প্রধান  ওয়াল্টার  কিরভিতস্কি  আমেরিকায়  পালিয়ে  যায়  ।  তার  লিখা  ‘আমি  ষ্টালিনের  এজেন্ট  ছিলাম’ বইয়ের  মাধ্যমে  পশ্চিমা  বিশ্ব  ষ্টালিনের  আদেশে  সোভিয়েত  ইউনিয়নের  অত্যাচারের  নৃশংস  রক্তক্ষরনের  হৃদয়  বিদারক ঘটনাগুলো  প্রথম  বারের মত জানতে  পারে।   পলায়নের  পর  কিরভিতস্কি  মাত্র  চার  বছর  বেঁচে  ছিল।  তাকে ওয়াশিংটনের  এক  হোটেলে  গুলি  করে  হত্যা  করা  হয়। কিম  ফিলবি  তার  লিখা  ‘মাই  সাইলেন্ট  ওয়ার’  বইতে  কিরভিতস্কি  আত্মহত্যা  করে  বলে  লিখেছিল। ফিলবি  বাহ্যত  নভোস্তি  প্রেস  এর  জন্য  কাজ  করলেও  তার  আসল  কাজ  ছিল কেজিবির  হয়ে  তথ্য  বিভ্রান্তি  ঘটানো।  সে  জানত  যে  ব্রিটিশ  গোয়েন্দারা  তার  চিঠি  খুলে  দেখে  তাই  সে  সব  সময়  তার  চিঠিতে  ব্রিটিশ  গোয়েন্দাদেরকে  বিভ্রান্ত  বা  হয়রানি  করার  জন্য  বিভিন্ন  ধরনের  ঘটনার  উল্লেখ  করত। ফিলবি  তার  বন্ধু  কিউবার  লেখক  গ্রাহাম  গ্রিন  এর  কাছে  পোষ্ট  কার্ড  পাঠাত  কারণ  সে  জানত  তার  এই  লেখাগুলো  প্রকাশিত  হবে।  কিরভিতস্কির  ব্যাপারে  ফিলবির  মতামত  সঠিক  ছিলনা  যা  পরে  উৎঘাটিত  হয়।  ষ্টালিন  এর  রোষানলে  পড়ার কারণে তাকে  হত্যা  করা  হয়। তাকে  কিজিবির  ফস্ট  চিফ  ডাইকেটরেটের  নির্বাহী  এ্যাকশন  ডিপার্টমেন্টের  লোক  হত্যা  করেছিল। কেজিবির  ট্রেনিং  প্রাপ্ত  খুনী  নিকোলাই  খোকলভ তার টার্গেট ওকলোভিচ কে  হত্যা  করতে এসে  নিজেই  দলত্যাগ  করে  ।  খোকলভ  তার  সাথে  একটা  স্বর্ণের  সিগারেটের  কেইস  নিয়ে  আসে  ।  যেটা  আসলে  একটা  বৈদ্যুতিক  পিস্তল  এবং  এটা  থেকে  বিষাক্ত  ডাম  ডাম  বুলেট  ফায়ার  করা যায়। তিন  বছর  ধরে  খোকলভ  একনাগারে  কেজিবির  বিভিন্ন  ধরনের  হত্যাকান্ড  ও  হত্যা  প্রক্রিয়া  সম্বন্ধে  বক্তৃতা  দিয়ে  বেড়ায়। হঠাৎ  সে  অসুস্থ  হয়ে  পড়ে,  তার  শরীর  ফুলে  যায়  চামড়ার  রং ফ্যাকাশে  হয়ে  পড়ে  ও  চুলপড়ে  যেতে  থাকে।  ডাক্তারী  পরীক্ষায়  দেখা  যায় যে  তার  শ্বেত  কনিকা  মরে  যাচ্ছে,  হাড়  ক্ষয়  হয়ে  যাচ্ছে  এবং  রক্ত  প্লাজমাতে  পরিনত  হচ্ছে। ডাক্তাররা  ধারনা  করেছিল  যে  তাকে  থ্যালিয়াম  বিষ  দিয়ে  হত্যা  করা  হয়েছিল। থ্যালিয়াম  এক  ধরনের  তেজষ্ক্রিয়  ধাতু  যা  আনবিক  বিকিরণ  এর  কাজে  ব্যবহার  করা  হতো। 
 রাশিয়া  থেকে  পালানো  মানে  রাশিয়ার  শত্র“তে  পরিনত হওয়া।  ষ্টালিন  এর  আদেশে  কেজিবি  এ  ধরনের  লোকদের  হত্যার  জন্য  সুযোগের  অপেক্ষায় থাকত। ষ্টালিন  বলেছিল  “তোমার  শত্র“র  সাথে  দেনা  পাওনা  পরিশোধের  পর  ঘুম  সবচেয়ে  আনন্দের ”  কাজেই  দলত্যাগীদের হত্যার  পরই  তারা  নিশ্চিত  নিদ্রা  উপভোগ  করত  পরবর্তী  দলত্যাগীদেরকে  হত্যার  আগ  পর্যন্ত । 
২| 
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩  রাত ৩:১২
নিষ্কর্মা বলেছেন: 
সাংঘাতিক লেখা। উপভোগ্য গুপ্তচর কাহিনী। 
 
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩  রাত ১০:৪৩
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ ++
৩| 
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩  রাত ১১:২১
মনিরা সুলতানা বলেছেন:  হু অনেক কিছু জানলাম 
ভয়াবহ  
 
 
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩  সকাল ৯:১৭
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩  রাত ১২:৪৪
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আর যারা আইনের ফাঁক গলে বেআইনি কাজে দক্ষ
তারা কোন পক্ষ