নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বস্ত বেঈমানের গল্প

shoytanlekhok

শয়তান সম্পর্কে কি বলার আছে? সবাই জানে সে আপনার প্রত্যক্ষ শত্রু। কিন্তু এখানে সে সবার বন্ধু।

shoytanlekhok › বিস্তারিত পোস্টঃ

Conflict of Interest in Medical Practice

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮

রফিকুল ইসলাম সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা। গত এক সপ্তাহ যাবৎ তিনি ঘাড়ের ব‍্যথায় ভুগছেন। প্রেশারটাও মেপে দেখেছেন- 160/110। বেশী দেরী না করে তিনি তার ছেলে নাজমুলকে ফোন করলেন। নাজমুলের এক বন্ধুর বাবা নামকরা কার্ডিওলজিস্ট। সে বন্ধুকে ফোন করে তাড়াতাড়ি একটা অ‍্যাপয়নমেন্ট ব‍্যবস্থা করে ফেললো।

রাতে হাসপাতালে গিয়ে দেখলো, ডাক্তারের চেম্বারে অনেক রোগীর ভীড়। আর তা তো হবেই। ডা. সেলিমুর রহমান একজন দেশসেরা কার্ডিওলজিস্ট। তার সিরিয়াল পেতেই এক মাস আগে থেকেই লাইন দিতে হয়। ভিজিটও খুব বেশি না- মাত্র 500টাকা। তার সমান একজন স্পেশালিস্ট বিদেশে ভিজিট নেন 300-500 ডলার। তিনি গরীব দেশের মানুষের সেবা করেন দেখে ভিজিটটা মানুষের সাধ‍্যের মধ‍্যেই রেখেছেন। তারপর কোন রোগী খুবই গরীব হলে তিনি ভিজিটও নেন না। অনেকের কাছেই তিনি ফেরেশতার সমান মানুষ।

ভীড় ঠেলে নাজমুল তার বাবাকে নিয়ে গেলো রিসিপশনে। নাম বলতেই জানতে পারলো তাদের সিরিয়াল আসতে রাত 11 টা বাজবে। প্রায় 4ঘন্টা অসুস্থ বাবাকে নিয়ে নাজমুল বসে থাকলো। 11.30 মিনিটে অবশেষে রফিকুল ইসলামের ডাক আসলো। ডা. সেলিমুর রহমান তাকে চেকাপ করে আট-নয়টা টেস্ট লিখে দিলেন। বলেলন চেম্বারের নিচের ডায়াগনস্টিনক সেন্টার খুবই ভালো। সেখান থেকে এই টেস্টগুলো করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আবার দেখা করতে। ততদিন পর্যন্ত 5টা ওষুধ খেতে বললেন। হঠাৎ রফিক সাহেব লক্ষ‍্য করলেন ডাক্তার সাহেবের পাশের চেয়ারে বসে থাকা একটা ছেলে সেই প্রেসক্রিপশনটির ছবি তুলছে। ব‍্যাপারটা রফিক সাহেবের কাছে কেমন যেন মনে হলো। একজন ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের ছবি কেন একটা ছোকড়া ছেলে তুলে রাখবে?

যাই হোক, প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে রফিক সাহেব ভিজিটের 500টাকা বের করতেই ড. সেলিম বলে উঠলেন, “আরে ভাই, কী করছেন? আপনার ছেলে আমার ছেলের স্কুলফ্রেন্ড। ইউ আর লাইক ফ‍্যামিলি। আই ডোন্ট টেক ভিজিট ফ্রম ফ‍্যামিলি!”

কিন্তু, রফিক সাহেব রাজি হলেন না। জীবনে প্রথম দেখা হওয়া একজন লোকের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে তার কেমন যেন লাগছিল। তিনি জোর গলায় বললেন, ভিজিট তিনি অবশ‍্যই দিবেন। ড. সেলিম সেটা বুঝতে পেরে প্রেসক্রিপশনটা আবার হাতে নিলেন। বললেন, “আপনি মোটামুটি সুস্থই আছেন। এতো টেস্ট না করলেও হবে। যান, মাত্র 3টা টেস্ট করে আবার আসবেন।” হত বিহবলের মতো রফিক সাহেব কিছুক্ষণ ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে থেকে কাগজটা হাতে নিয়ে 500টাকা দিয়ে বের হয়ে আসলেন।

ফেরার পথে বাসার পাশের ফার্মেসী থেকে ওষুধ কেনার জন‍্য থামলেন। ওষুধ গুলো হাতে নিয়েই দেখলেন তার উপর বড় করে লেখা “একমি ফার্মা”। হঠাৎ তার চোখ চমকে উঠলো। ডাক্তারের পাশের চেয়ারে বসে যে ছেলেটা ছবি তুলছিল তার শার্টের উপরও লেখা ছিল “একমি ফার্মা”। অথচ এর আগে তিনি এর নাম কখনো শোনেন নাই। রফিক সাহেব তখন সবই বুঝতে পারলেন। রোগীর কাছ থেকে নেয়া ভিজিটই ডাক্তার সাহেবদের একমাত্র আয়ের উৎস নয়। নিশ্চয়ই এই “একমি ফার্মা” তাদের ওষুধের নাম লেখার জন‍্য ডাক্তারকে কোন বিশেষ সুবিধা দেয়। তার মনে পড়লো সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কথা। ডাক্তার সেলিম তার কাছ থেকে ভিজিট না নিয়ে বেশি বেশি টেস্ট লিখে দিয়েছিলেন। নিশ্চয়ই সেই টেস্টের টাকার একটা অংশ ডা. সেলিমের পকেটে যায়। তাই, তো তিনি প্রথমে ভিজিট নিতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু, ভিজিট দেয়া মাত্রই টেস্টের সংখ‍্যা কমিয়ে দিলেন। তখন ঘটনার সত‍্যতা বুঝতে রফিক সাহেবের আর বেশি কষ্ট করতে হলো না। বুঝে পারলেন, দেশের নানা পেশার মানুষের মতো ডাক্তাররাও এখন দুর্নীতি করছেন। তবে, সেটা খুবই বুদ্ধিদীপ্ত উপায়ে।

উপায়টির নাম “assymetric information flow”. ডাক্তাররাই কেবল মেডিকেল সায়েন্স ভালো মতো জানেন। অন‍্যদিকে দেশের অধিকাংশ রোগীই অশিক্ষিত। অন্তত মেডিকেল সায়েন্সের জ্ঞান তাদের অতো ভালো করে নেই। এই অবস্থায় একজন রোগীকে অবশ‍্যই ডাক্তারের উপর অন্ধভাবে ঈমান আনতে হয়। ডাক্তার চাইলেই এই অবস্থার পুরো সুবিধা লুটে নিতে পারেন। যেমন, রোগীর কোন বড় ধরনের অসুবিধা নেই। তারপরও ডাক্তারের কাছে গেলে তাকে 15-20টা টেস্ট ধরিয়ে দেয়া হয়। ডাক্তারদের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে প্রথমে আপনাকে ঝাড়ি দিয়ে বলবেন, “আপনিই এসে আমার চেম্বারে বসে ডাক্তারি করেন! আপনি ডাক্তার থেকে বেশি বুঝেন?” তারপরও যদি জেকে ধরে বসেন তখন বলতে পারেন, “রোগীর কোন সিমটম নেই। বড় সমস‍্যা থাকার চান্স খুবই কম। তবুও তো চোখের দেখায় সব বুঝা যায় না। তাই সবধরনের টেস্ট করিয়ে সিওর হয়ে নিচ্ছি। তাছাড়া টেস্ট গুলো তো সস্তা। আর, আমি রেফার করে রোগী পাঠালে 30% ডিসকাউন্ট দিবে।”

সত‍্যিকথা হলো, একজন রোগীকে এই কথাগুলো বলা হলে সে অবশ‍্যই সেই টেস্ট গুলো করাবে। কারণ, সবাই নিজের জীবনকে ভালোবাসে। এবং, তারা ডাক্তারদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করেন। যদি ডাক্তার বলেন, “আপনি চাইলে টেস্টগুলো নাও করাতে পারেন।” তারপরও রোগী জমি বিক্রি করে হলেও সে টেস্ট করাবে। কারণ, জীবন নিয়ে কেউ ঝুকি নিতে চায় না। সত‍্যিকথা হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই “ঝুকি” আসলে একেবারেই কম। ডাক্তারগণ প্রায়ই এই ঝুকিকে অনেকাংশে বর্ধিত করে দেখান। তারপর ভালনারেবল একজন রোগীর মানসিক দূর্বল অবস্থায় তাকে ডিসিশনটা নিতে বলেন। অবশ‍্যই রোগী তখন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দিকে পা বাড়ান! এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই!

1971 সালের মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় হানাদার বাহিনী যুবক ছেলেদের ধরে নিয়ে যেত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেরাতেই তাদের মেরে ফেলার হতো। দুএকজন বেচে আছে এমন গুজব শোনা যেত। তখন এই অবস্থার ফায়দা নিতো বিহারীরা। তারা ভাব ধরতো যে, হানাদার বাহিনীর সাথে তাদের সুসম্পর্ক আছে। তাদেরকে টাকা দিলে তারা আটক ব‍্যক্তিকে ছেড়ে দেবার জন‍্য সুপারিশ করতে পারে। তবে, এর কোন গ‍্যারান্টি নেই। তারা বলতো-- “সত‍্যিকথা বলতে, চান্স খুবই কম। আমাকে ডিসিশন নিতে দেয়া হলে আমি অবশ‍্যই টাকা দিতাম না। তারপরও ডিসিশনটা আপনার। চাইলে একটা শেষ ট্রাই নিতে পারেন।”

“ডিসিশন”টা কখনোই আমাদের নয়। কারণ, সম্ভাব‍্য মৃত‍্যুর ভয় দেখিয়ে তারপর কাউকে একটা ডিসিশন নিতে বলা হলে অবশ‍্যই সে তার সেরা চেষ্টাটা করবে। যদিও সম্ভাব‍্য মৃত‍্যুটি আসলে ছিল সাধারণ সর্দি-কাশি।

এখন, আসা যাক এই অবস্থার জন‍্য “ডাক্তারদের কতটুকু দায়ী করা যায়?”-- সে প্রশ্নে। সত‍্যিকথা হলো, ডাক্তাররা আসলে এখানে নাচের পুতুল। মূল কল-কাঠি নাড়েন ফার্মা কম্পানি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। 2011 সালের ত‍থ‍্য অনুসারে এই কম্পানিগুলো ওষুধ আবিষ্কার গবেষণা থেকে মার্কেটিং সেক্টরে বেশি টাকা বরাদ্দ করেছে। এই টাকা তারা কীভাবে খরচ করে? উত্তর-- ডাক্তারের চেম্বারের প‍্যাড-কলম, স্টেশনারী, কখন কখনো তাদের নতুন ফ্ল‍্যাট, এসি, টিভি এমনকি তার মেয়ের বিয়ের খরচে। (শেষের উদাহরণটি সত‍্যি। আমি নিজে তা দেখেছি।) কিছুদিন আগে দেখলাম এক কম্পানি থেকে “সেলফি স্টিক” দেয়া হচ্ছে গিফট হিসেবে। এখন শুধুমাত্র ডাক্তারের মৃত‍্যুর পর কুলখানিটা স্পন্সর করাই তারা বাদ রেখেছে। হয়তো আমার এই নোট পড়ে সেটাও শুরু হতে পারে।

ডাক্তাররা বলতেই পারেন, “আমাদের কে তো অবশ‍্যই রোগীর জন‍্য ওষুধ লিখতে হবে। তাই কোন কোম্পানির সাথে আমাদের ভালো জানাশোনা থাকলে তাদের ওষুধ লেখাটা তো ভালো। কারণ, মাঝে মাঝে কম্পানি গুলো ডাক্তারদেরকে ফ‍্যাক্টরি ভিজিট করাতে নিয়ে যান। তাই, আমরা নিজের চোখে যে কম্পানির ওষুধ বানানো দেখে এসেছি তার নামটা লেখাই যুক্তিযুক্ত মনে করি। কারণ, আমরা জানি তাদের ওষুধগুলো ভালোমানের। আর, কিছু প‍্যাড-কলম নেয়াটাকে আপনারা এতো বাজে চোখে কেন দেখেন? এতো ওষুধের নাম মনে থাকে নাকি? প‍্যাডের গায়ে ব্র‍্যান্ডের নাম দেখলে নাম সহজে মনে পড়ে।”

কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধুর মাকে ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল একটা ওষুধ ফ‍্যাক্টরী পর্যবেক্ষণ করতে। সেই সফরের পুরো খরচ, থাকা খাওয়া তারা বহন করে। এমনিক আমার বন্ধুটিও তার মায়ের সাথে ফ্রিতে ফ্রান্স ঘুড়ে আসে ওষুধ কম্পানির টাকায়। আপনারা বলতে পারেন, এতে তোমার কি ক্ষতি বাবা? তোমার পকেটের টাকায় তো ঘুরে আসে নাই। নাকি তোমার যাওয়ার সুযোগ হয় নাই বলে তুমি হিংসা করছো?

আসুন এবার সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয়টি আলোচনা করে এর উত্তর দেই। “ডাক্তাররা ওষুধ কোম্পানির ফ‍্যাক্টরি দেখে এসে সে ওষুধের মান কতটা ভালো তা কি আসলেই বুঝতে পারে?” সোজা উত্তর হলো — “না” । (বেয়াদিব মাফ করবেন) ডাক্তারদের সেই জ্ঞানটুকু নেই। এবার “assymetric information” এর ফায়দা লুটবে ফার্মা কম্পানিগুলো। ড্রাগ ইনভেনশন, ডিজাইন, মোড অফ অ‍্যাকশন, মলিকুলার মডেলিং, ফার্মাকোকাইনেটিক্স, বায়োস্ট‍্যাটিসটিকস ইত‍্যাদি নানা শাখার জ্ঞানের দরকার হয় একটি ওষুধের কার্যকারিতা বুঝতে। যার অধিকাংশটাই ডাক্তারি পাশের সিলেবাসের অনেক অনেক উপরে। তবে, রিসার্চের সাথে সরাসরি যুক্ত কিছু ডাক্তার হয়তো বিষয়গুলো কিছুটা জানতে পারেন। তবে অধিকাংশই সবার মাথার উপর দিয়ে যাবে। এপর্যায়ে বলতেই হয়, “ফার্মাকম্পানি আমার বন্ধুর মাকে না নিয়ে আমার সে বন্ধুকে শুধু নিয়ে গেলেই একই লাভ হতো। কারণ, তারা দুজনই যা দেখতে যাচ্ছে তা নিয়ে মোটামুটি অজ্ঞ। কম্পানি তাদের যা বলবে এবার তারা তা অন্ধভাবে বিশ্বাস করবে। এখন ডাক্তারই রোগী। ফার্মাকম্পানি তাদের প‍্যাডের উপর যে ওষুধের নাম লিখে দিবে তারা তাই অন্ধভাবে রোগীর প্রেসক্রিপশনে সেটা লিখে দিবেন। তবে, এই রোগটা অনেক বেশি মারাত্মক। কারণ, এ রোগে আক্রান্ত ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলে ক্লাস এইট পর্যন্ত বায়োলজি পড়া মেডিক‍্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিসারগণ। তখন, কিন্তু ডাক্তারদের ইগোতে লাগে না। ডাক্তাররা টাকার রাজ‍্যে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আসুন নিজেদের স্বার্থে আমরা এর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিবাদ গড়ে তুলি। কাজটা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব না।ডাক্তারদের প্রতি আহবান: আপনার যত চান ফার্মাকম্পানির গিফট নিন, তাদের টাকায় মেয়ের বিয়ে দিন। শুধু একটাই আবেদন: নিজের সাইনবোর্ডে “conflict of interest” হিসেবে কোন কম্পানির সাথে আপনি তথাকথিত ‘পরামর্শদাতা’ হিসেবে কাজ করছেন তা উল্লেখ করুণ। যেমন:

ডা. সেলিমুর রহমান. এমিবিবিএস (ঢাকা মেডিক‍্যাল কলেজ), এফসিপিএস (ম‍্যানচেস্টার),
পরামর্শক: স্কয়ার ফার্মা।

তাহলে ওষুধ লেখার পর আমরা অন্তত জানতে পারবো কেন এতো গুলা আজাইরা নাম লিখলেন আর আমার কিডনীর 12টা বাজালেন। এই “conflict of interest” অংশটা এখন অনেক পেশাতেই আবশ‍্যক। নিচের লিংকটি দেখুন:

Click This Link

এটি একটি সায়েন্টিফিক রিসার্চ পেপার যার প্রথম পাতার নীচে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, প্রধান গবেষক চ‍্যাং সাহেব নভার্টিস কম্পানির টাকায় রিসার্চ করেন। তাই, সায়েন্টিফিক কমিউনিটি এই লেখাটি পড়ার সময় সতর্ক থাকবে।

আমি যে আবেদন করছি তা ডাক্তারগণ কখনই মানবেন না। আমি জানি। তাই সবচেয়ে বড় আবেদন রোগীর কাছে। আপনারা সচেতন হোন। ডাক্তার ওষুধ লিখে দিলেই কিনে ফেলবেন না। বাসায় আসুন। গুগলে যান। ওষুধের নামটা লিখে সার্চ দিন। যেমন- ওষুধের নাম লেখা আছে “Teviral”। সার্চ দিলে জানতে পারবেন এর জেনেরিক নাম: “Entecavir INN” এবার আবার লিখুন “Entecavir INN in Bangladesh” এবার চলে আসবে নানা কম্পানির বানানো এই একই ওষুধের নাম। যেমন: Cavir, Barcavir etc. তারপর দেখুন এর ডোজ কত। ডাক্তারগণ অনেক সময়ই বেশি ডোজ লিখেন যাতে বিক্রি বাড়ে। আরো দেখুন, এই ওষুধটা আপনার নেয়া অন‍্য কোন ওষুধের সাথে সাংঘর্ষিক কিনা? কারণ, ডাক্তারগণ চেম্বারের ভিড়ে আপনার ড্রাগ হিস্টরি জানতে পারেন না। অথচ তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিশেষে, ডাক্তার যে ব্র‍্যান্ডের নাম লিখেছে তা বাদ দিয়ে অন‍্য যে কোন ব্র‍্যান্ডের একই ওষুধটা কিনে ফেলুন। অন্তত আমরা ওই কম্পানিকে টাকা দিবো না। অন‍্য কম্পানিকে দিবো তা ঠিক, তবে কাকে সেটা নির্দিষ্ট নয়। যাতে করে, কম্পানি গুলো ডাক্তারদের দিয়ে প্রেসক্রিপশনে নাম লিখিয়ে সিওরা হতে না পারে যে, তাদের ওষুধই বিক্রি হবে।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অসৎ ব‍্যবসা বন্ধের উপায়:
1. ডাক্তার যে টেস্ট দিবে তার নাম একটা সাদা কাগজে লিখুন।
2. কাগজটির উপরে লিখুন আপনার নাম, বয়স, সেক্স।
3. তার পর বড় করে লিখুন: Self Diagnosis
4. তারপর সে কাগজটি নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। ডাক্তারের কাগজটি নিয়ে যাবেন না।

কারণ, লক্ষ‍্য করলেই দেখবেন, তারা রেফারেন্স হিসেবে ডাক্তারের নাম লিখে রাখে। ডাটাবেসে জমা হতে থাকে তাদের পার্টনার ডাক্তার কতগুলো টেস্ট করিয়েছেন। আপনি Self Diagnosis লিখলে কোন ডাক্তারই তার মুনাফা পাবে না। রিপোর্টেও কারো নাম লেখা থাকবে না। সে রিপোর্ট দেখতে আপনার ডাক্তার অস্বীকৃতি জানালে বুঝে যাবেন উনি ঝামেলার মানুষ।সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের সামান‍্য সর্দিকাশি হলেই আমরা স্পেশালিস্টের কাছে ছুটি। যদিও মোড়ে দোকানে বসা ডাক্তারই তার জন‍্য যথেষ্ট। তাদের উপর ভরসা করুণ। কারণ, নাহলে তরুণ ডাক্তারগণ রোগী পাচ্ছে না। তারা বুড়ো হয়ে যাবার পর আবার সেই মন্দ-চর্চায় লিপ্ত হচ্ছে। ডাক্তারদের কাছে উদাত্ত আহবান: Confilict of Interest সাইনবোর্ডে উল্লেখ করুণ। নতুবা ফার্মা কম্পানির গিফট নেয়া বন্ধ করুণ। ঢাকার আলিশান বাড়ি ফ্ল‍্যাট গিফট নয়, ঘুষ!

পরিশেষে: সকল ডাক্তার এক রকম নয়। ভালো মানুষ-ডাক্তার অবশ‍্যই অাছেন। তাদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা। অাপনারা অাসলেই ফেরেশতা।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন বিষয়ে খূব দারুন করে লিখেছেন। ধন্যবাদ।

আর আপনার পরার্মশক আর সেলফ ডায়াগনস্টিক এর ইউনিক আইডিয়ার জন্য ধন্যবাদ অনেক অনেক। এটলিষ্ট কিছূ তো চেষ্টা করা হলো বলে মনে আত্তৃপ্তি পাওয়া যাবে। :)

আসলেই এক ভীষম দুষ্টচক্রে বাঁধা পড়ে গেছে আমাদের প্রতিটা সেক্টর! চক্রবুহ্যের মতো! একটার সাথে একটা চক্রাকারে বাড়ছে!


২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: লাখ লাখ টাকা খরচ করে ডাক্তার হয়ে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বিনিময় নিয়ে কিংবা গরিবদের প্রতারিত (বেশি বেশি টেস্ট কিংবা ওষুধ লিখে) করে শোধ নেয় ।

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯

চলন বিল বলেছেন: সচেতনমূলক পোস্ট

৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫২

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের সামান‍্য সর্দিকাশি হলেই আমরা স্পেশালিস্টের কাছে ছুটি। যদিও মোড়ে দোকানে বসা ডাক্তারই তার জন‍্য যথেষ্ট। তাদের উপর ভরসা করুণ। কারণ, নাহলে তরুণ ডাক্তারগণ রোগী পাচ্ছে না। তারা বুড়ো হয়ে যাবার পর আবার সেই মন্দ-চর্চায় লিপ্ত হচ্ছে।

এটাই সকল সমস্যার মূল ।

৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

ধমনী বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন। কিন্তু ডাক্তারদের নৈতিক বোধ সংরক্ষিত না হলে অন্য পদ্ধতি খুব একটা কাজে লাগবে না। কারণ আপনি ঈমান আনেন কিংবা না আনেন অসুস্থ হলে সেই ডাক্তারের কাছেই যেতে হবে।

৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

দুষ্ট পন্ডিত বলেছেন: গণ সচেতন মুলক পোস্ট, ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ .

৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৯

আমি আবুলের বাপ বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে। আমি এক সময় নামকরা কোম্পানীতে মেডিক‍্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে চাকুরী করেছি।এক ডাক্তার তার বাপের কুলখানির খরচ আমার কোম্পানি থেকে নিয়েছে। :)

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৭

shoytanlekhok বলেছেন: ভাই অাপনি তো তাইলে অামার থেকে ভালো জানেন ব‍্যাপারটা!

৮| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৬

মোঃ-আনারুল ইসলাম বলেছেন: দারুণ লিখেছেন।

৯| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর পোস্ট| সেল্ফ রেফার্ডের ব্যাপারটা ভাল লেগেছে| অন্তত ওটা ট্রাই করা যাবে

১০| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৪

সোহেল শাহেদ বলেছেন: ডায়াগনস্টিনক সেন্টারে যে সকল ডাক্তারগণ বসেন তাহারা প্রচুর টেষ্ট দিতে বাধ্য হন। নতুবা তাদেরকে উচ্ছেদ করা হয়।

"হয়তো কিছু ডায়গনষ্টিক সেন্টার ব্যতিক্রম" - ভাবতে ভালই লাগে।

১১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৪

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা । ডাক্তার, ঔষধ কোম্পানি, ডায়াগনেস্টিক সেন্টার এদের যৌথ ব্যবসা দিনদিন প্রসারিত হচ্ছে ।

আপনার সৃজনশীল মতামত কাজে লাগবে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.