নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংসার...

০১ লা মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৪৩

প্রিয়'র চোখের পানিতে আমার দিন শুরু হয়।

প্রত্যেকদিন সে নানান বুদ্ধি করে বাবাকে আটকে রাখার।



গতদিন ঘুম ভে্ঙ্গেই সে কোল ছাড়ছেনা। কোলে থেকেই ইশারা দিলো বারান্দায় গ্রিল ধরবে। শক্ত করে গ্রিল ধরে আছে। কিছুতেই ছাড়ছেনা। এখনো এই বুদ্ধি হয় নাই, পিছন থেকে আমি সাপোর্ট ছেড়ে তার মা তাকে ধরলেইতো শেষ। আর তো আমাকে আটকানো যাচ্ছে না। কিন্তু প্রিয়'র যুক্তি নিশ্চয়ই ছিলো যে, বাবা তো আমাকে গ্রিলে ধরা অবস্থায় ছেড়ে যাবে না। তাই আমি তাকে এই অবস্থায় তার মা'র হাতে ছেড়ে দিলাম না। ধীরে ধীরে হাত ছাড়ায়ে তবেই তার মায়ের কোলে দিয়ে অফিসে রওয়ানা হলাম। ছেলেটার চোখ দিয়ে টসটস করে পানি পড়ছিলো :(



আজ সে আরেকটা বুদ্ধি করলো। গ্রিল বিদ্যায় কাজ হয় নাই তাই। সে আজ কোলে উঠেই মোচড়ামুচড়ি শুরু করলো সে দড়জার বাইরে যাবে। দড়জার বাইরে এসে কিছুক্ষণ কোলে রাখলাম। আজও জোর করে কোল থেকে নামিয়ে তার মায়ের কাছে দিয়ে আসলাম। আজও বাপ-পুতের বিদায় হলো পুত্রের চোখের জলে। বাবাকে সকালে বিদায় দিতে এত কষ্ট হয় ছেলেটার!



আমি জীবিকার প্রয়োজনে প্রিয়কে চোখের জলে রেখে চলে আসি অফিসে। সেও একদিন বড় হবে। তখন জীবনের প্রয়োজনে যদি বুড়ো বাপকে রেখে সে চলে যায় তখন? তখন হয়ত চোখের জলটা আসবে বাবার, পুত্র তখন বাস্তবতায় বন্দী।

-০-



গিন্নি শীতল কণ্ঠে আমাকে প্রায়ই বলে - তোমার ভালোবাসা হইলো লেখায়, বাস্তবে না। তাকে কি বুঝানো সম্ভব, অফিসে আসার পর মনটা কেমন করে পুত্রের জন্য?



গত দিনের কথাই বলি। সারা দিন মনে ছিলো, গিন্নির জন্ম দিন। বাসায় যাওয়ার পথে কেক নিতে হবে। কিন্তু দুপুর পার হতেই আমার মাথায় আর কিছুই নাই। কেবল ঘুরছে, বাসায় গেলে প্রিয় কিভাবে কোলে ঝাপায়ে পড়বে। অফিস শেষ হতেই দে দৌড়। প্রিয়কে নিয়ে খেলতে খেলতে যখন রাত ১১ টা তখন মনে পড়লো হায় হায় কেকতো আনি নাই!



বিয়ের পর পাঁচ বছরে এই প্রথম জন্মদিনের কেক রাত ১২টায় কাটা হলো না। পুত্র প্রিয়'র প্রতি তার বাবার ভালোবাসাই এই জন্য দায়ী। আর গিন্নির অর্ধাঙ্গ হিসাবে এই দায় অবশ্যই আমার। আর পুত্রটাতো আমার চেয়ে তারই বেশী! তাই গিন্নির কাছে এই অপরাধের ক্ষমা নিশ্চয়ই প্রিয়'র বাবা পাবে।



বউকে, শুভ জন্মদিন। প্রিয়কে, মিস ইউ কুতিসকুতিস...।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.