![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
ঈদ্রিস স্যার প্রায়ই আমাদের বাড়ী আসতেন। গেট থেকেই হুংকার দিতেন
- ভাবি চা, নাস্তার আয়োজন করেন। শুধু সেমাই না দিলেই হইলো।
মারাত্মক আড্ডাবাজ মানুষ ছিলেন। বলতেন
- সেমাই দেখলেই গুড়া কৃমির কথা মনে পইড়া যায় বাজান। তোর মারে সেমাই দিতে মানা কর।
নিজেকে, নিজেদেরকে নিয়ে যে রসিকতা করা যায় তা আমি শিখেছি ঈদ্রিস স্যারের কাছে। কথা বলার আগে একটু মুচকি হাসি দিতেন। এর পর কথা বলা শুরু করতেন
- বুচ্ছেন নি ভাবি, আমার মাইয়াগুলারে যখন পাত্রপক্ষ দেখতে আসে। আমিতো দুয়ায়ে ইউনুস পড়তে থাকি। আরে নিজের মাইয়া আমার নিজেরইতো পছন্দ হয় না, পাত্রপক্ষ পছন্দ করবো কী!
আরেক দিন বলা শুরু করলেন
- বুচ্ছেন নি ভাবি, এক ঘটক আইসা কয়, ভাই আপনের আর কোন মাইয়া আছেনি? আমি কইলাম, তাইত্তে বাড়া তাই, তাইত্তে বাড়া তাই।
ঘটকতো আর তাইত্তে বাড়া তাই বুঝে না ভাবি। খালি মাথা ঝাকায়।
মা বল্লেন, ভাই তাইত্তে বাড়া তই কী? ঈদ্রিস স্যার বল্লেন, আছে ভাবি গরু নিয়া একটা গল্প আছে পরে একদিন করবো নে।
ঠিকই তিনি কয়দিন পর এসে তাইত্তে বাড়া তাই এর গল্প বলে গেলেন।
যাই হোক, স্যারের গল্প শুনতাম আর উনার মেয়েদের জন্য মন খারাপ লাগতে। মনে হইতো, আহারে এত ভালো একটা মানুষের মেয়েগুলা না জানি কত কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তারা সুন্দর না বলে তাদের বিয়ে হচ্ছে না।
বড় হয়ে জানতে পারলাম, স্যারের মেয়েগুলা শুধু সুন্দরীই না, তারা গুনবতীও ছিলেন। এবং সবারই অনেক ভালো ভালো জায়গায় বিয়ে হয়েছে।
এক জীবনে আমার অনেক কিছু হতে ইচ্ছা হয়েছে। কোনটাই বেশীদিন স্থায়ী হয় নাই। তবে ঈদ্রিস স্যার হওয়ার ইচ্ছাটা এখনো আছে। ঈদ্রিস স্যারের মত প্রাণবন্ত মানুষ হয়ে সবাইকে হাসাতে ইচ্ছা করে, খুব।
©somewhere in net ltd.