![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পর্ব-১
আমরা প্রায়ই বলে থাকি যে, ত্রিশলক্ষ শহীদের রক্ত ও দুইলক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমাদের এই দেশ স্বাধীন হয়েছে । কথাটা ঠিক । কিন্তু এখানে দুইলক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে এই বার্তাটির মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নারীর অবদান সবটা প্রতিফলিত হয়না। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নারীর অবদান অনেক। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নারী কখনও গেরিলা যুদ্ধে ,কখনও সম্মুখ যুদ্ধে ,কখনও সেবিকাহিসেবে ,কখনও বা বার্তাবাহক হিসেবে অনেক অবদান রেখেছেন। আবার কখনওবা মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন, বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের খাদ্য,বস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও গান,কবিতার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের নৈতিক সাহস যুগিয়েছেন। এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক নারী শহীদ হয়েছেন,অনেকে তাদের স্বামী,সন্তান,বাবা,ভাই হারিয়েছেন,অনেকে নিজের সম্ভ্রম পর্যন্ত হারিয়েছেন। এরাও ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা।মূলত নারী পুরুষ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ । অথচ নারীদের অবদান স্বীকার করতেই আমাদের যতো কৃপণতা ।
যাইহোক আমি আমার এই লেখাতে যুদ্ধকালীন সময়ের কিছু নারীদের বীরত্বের কথা আপনাদের জানাতে চেষ্টা করব। আমার প্রতিটি পোষ্টে একজন করে নারীযোদ্ধার বীরত্বের বর্ণনা থাকবে।
শিরিন বানু মিতিল
এই মহিয়সী নারীর জন্ম ১৯৫১ সালের ২রা সেপ্টেম্বর পাবনা জেলায়। বাবা খোন্দকার শাহজাহান মোহাম্মদ ও মা সেলিনা বানু। বাবা ছাত্রজীবনে ও ১৯৫২ সাল পর্যন্ত কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত ছিলেন।মা পাবনা জেলার ন্যাপ সভানেত্রী এবং ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের এমপি ছিলেন। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হবার ফলে নিজেও ছিলেন রাজনীতি সচেতন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এছাড়াও ১৯৭০-১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলা ছাত্রইউনিয়নের সভানেত্রী এবং কিছু সময়ের জন্য পাবনা জেলা মহিলা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদিকা ছিলেন।
২৫শে মার্চ ১৯৭১ সালে দেশের অন্যান্য স্থানের মত পাবনা জেলাও পাকহানাদারদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। সাধারন মানুষের উপর নেমে আসে অবর্ণনীয় অত্যাচার। ২৭শে মার্চ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয় পাল্টা আক্রমণ ।২৭শে মার্চ পাবনা পুলিশলাইনে যে যুদ্ধ সংগঠিত হয় সেখানে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। তাই নারী হয়ে শত প্রতিকুলতার মাঝে তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। কাজিন জিঞ্জিরের কাছে মাত্র ত্রিশ মিনিটে থ্রি নট থ্রি চালনা শিখে ফেলেন। কিন্তু নারী হিসেবে সে সময়কার সমাজে সম্মুখ যুদ্ধে যাওয়া ছিল খুবই কঠিন ব্যাপার । তাই তিনি শহীদ বীরকন্যা প্রীতিলতাকে অনুসরন করে পুরুষের পোশাক পরিধান করে পুরুষবেশে যুদ্ধে যোগদেন। ২৮শে মার্চ টেলিফোন এক্সচেঞ্জে ৩৬ জন পাকসেনার সাথে জনতার এক তুমুল যুদ্ধ সংগঠিত হয় ।সেই যুদ্ধে তিনি ছিলেন একমাত্র নারী যোদ্ধা। এই যুদ্ধে ৩৬ জন পাকসেনা নিহতএবং ২জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়। এছাড়াও ৩১শে মার্চ পাবনার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপিত হয়। ৯ এপ্রিল নগরবাড়িতে এক প্রচণ্ড যুদ্ধ সংগঠিত হয়। সে সময় কন্ট্রোল রুমের পুরো দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
এরপর ভারতের স্টেটসম্যান পত্রিকার সাংবাদিক মানব ঘোষ মিতিলের ছবি সহ তার পুরুষ সেজে যুদ্ধ করার খবরটি পত্রিকায় প্রকাশ করেদিলে তার পক্ষে আর পুরুষ সেজে যুদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তার যুদ্ধ থেমে থাকেনি।পরবর্তীতে পাবনা শহর পাকবাহিনী দ্বারা দখল হলে তিনি ২০শে এপ্রিল সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন।সেখানে বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত একমাত্র নারীদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গোবরা ক্যাম্পে যোগদেন। পরবর্তীতে মেজর জলিলের নেতৃত্বে পরিচালিত ৯নং সেক্টরে যোগ দেন।
উৎস
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহন-আসমা পারভীন,পৃষ্ঠা-৯৬-৯৭
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীর অবদান-শাহনাজ পারভীন, পৃষ্ঠা-৭৮-৭৯
কালের কন্ঠ-১৯ শে ডিসেম্বর ২০১০ সংখ্যা
জনকন্ঠ-০৮ই মার্চ ২০১৩ সংখ্যা
শুভ,সিলেট
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩২
শুভ ৭১ বলেছেন: ভূলটা ধরিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।আমি জন্মের তারিখটা ঠিক করে দিয়েছি
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৪৫
আর কতো বলেছেন: শিরিন বানু মিতিলের জন্মের তারিখটা কি ঠিক আছে?