নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিথ্যার অন্বেষণে

অকৃতজ্ঞের চেয়ে অধম

এস কে এস আলী

আশায় আশায় বুক বেঁধে রই

এস কে এস আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৩৯ সালের রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৪৯



এস কে এস আলী

১৯৩৯ সালের ২৩শে আগস্ট সম্পাদিত রুশ-জার্মান অনাক্রম চুক্তি সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। ১৯১৭ সালের সফল সমাজতান্ত্রিক বিপ¦বের পর থেকে পশ্চিমাশক্তিগুলো এ বিজয়কে সহ্য করতে পারেনি। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার অর্জিত বিজয়কে ধরে রাখার জন্য, দেশীয় বিপ্লবকে আর্ন্তজাতিক বিপ্লবে রূপদানের জন্য পুজিবাদের বিরুদ্ধচারন করতে থাকে। এ সময় জার্মান ও রাশিয়া উভয়ে নিজস্ব স্বার্থে, মূলত নিরাপত্তার জন্য অনাক্রমন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়।

প্রেক্ষাপট :

১৯১৭ সালের বলশেভিক বিপ্লবের পর পাশ্চাত্যদেশ সমূহের সাথে রাশিয়ার শত্রুতাপূর্ন সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। কাল মার্কস পূর্বেই পুজিবাদের সাথে সাম্যবাদের সংঘর্ষের কথা বলছিলেন। এছাড়া কমিউনিস্ট মতবাদের বিশ্বাস ছিল যে, শান্তিপূর্ন উপায়ে পুজিবাদ ধ্বংস করা যাবেনা। এজন্য প্রয়োজন রক্তাক্ত বিপ্লব। এ ধারনার বশবর্তী হয়ে সমগ্র বিশ্বে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে তারা প্রচার-প্রচারনা শূরু করে। ফলে পুজিবাদী দেশ সমূহ রাশিয়া বিরোধী হয়ে ওঠে যাদের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন অসম্বভ ছিল।

দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকটে ১৯২১ সালে সোভিয়েত সরকার যে অর্থনৈতিক নীতি গ্রহনে করে তার প্রভাব পড়ে পররাষ্ট্রনীতির উপর। ইংল্যান্ডের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করলেও জার আমলের রিন পরিশোধ করতে অস্বীকার করায় ফ্রান্স ও বেলজিয়াম বন্ধুত্বপুর্ন সম্পর্ক স্থাপনে অনিহা প্রকাশ করে।এছাড়া এসময় জার্মানের সাথে র‌্যাপোলার সন্ধি আর্ন্তজাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

এর মধ্যে জার্মানিতে ১৯৩৩ সালে নাৎসিদল হিটলারের নেতৃত্বে ক্ষমতা দখল করলে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। রাশিয়ায় এই নাৎসি আগ্রসনের আশংকা দেখা দেয়। এজন্য রাশিয়া জামার্নির সাথে চুক্তির সুযোগ খুজতে থাকে।

পাশ্চাত্য শক্তির সাথে বৈরী সর্ম্পকের সৃস্টি হওয়ায় সোভিয়েত সরকার ক্রমেই পাশ্চাত্য শক্তি নীতিতে আস্থা হারাতে থাকে এবং ১৯৩৮ সালের মিউনিখ চুক্তি অনুযায়ী বৃটেন, ফ্রান্স ও ইতালি হিটলারকে চেকোশ্লাভিয়া অধিকার করার সুযোগ দেয়। তখন সোভিয়েত সরকার বুঝতে পারে যে, ইউরোপীয় শক্তিগলো তাদের স্বার্থ আদায়ে ব্যস্ত।

পাশ্চাত্য তোষননীতি ছিল হিটলার যেন রাশিয়া আক্রমন করে। এমতাবস্থায় রাশিয়া ফ্রান্স ও বৃটেনের সাথে সন্ধির মাধ্যমে ত্রিশক্তি গঠন করতে চাইলে উভয়ই দেশই অনীহা প্রকাশ করে। সুতরাং রাশিয়া আসন্ন আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে জার্মানীর সাথে সরাসরি আক্রমন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়।

রুশ- জার্মান অনাক্রমণ চুক্তির ক্ষেত্রে রাশিয়ার যুক্তি :

 আসন্ন জার্মানির আক্রমন প্রতিহত করার জন্য ও যুদ্ধের জন্য জনগনকে প্রস্তুত করতে রাশিয়ার সময়ের প্রয়োজন ছিল। এ চুক্তি করে রাশিয়া নিজেকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তু করার সুযোগ পেয়েছিল। এই চুক্তি তাদের সে সুযোগ করে দেয়। রাশিয়া জানত যে তাদের উপর জার্মানীর আক্রমন অবশ্যম্ভাবী। সুতারং বিশ্বের কাছে জার্মানীকে চুক্তি ভঙ্গকারী প্রতিপন্ন করার জন্যও এ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। উপরন্তু রাশিয়াকে আক্রমন করে জার্মানী যাতে সা¤্রাজ্যবাদী দেশ হিসেবে গণ্য হয় সেজন্য রাশিয়া চুক্তিতে সই করে।

 জামার্নীর প্রতি বৃটেনের তোষন নীতি , ফ্রান্সের ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থ্া ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দোদল্যুমান অবস্থার কারনে রাশিয়া অতিষ্ট হয়ে অনাক্রমন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

 রাশিয়া নাৎসিবাদ বিরোধী জোট গঠনের শত চেষ্টা ব্যর্থ হলে, জার্মানীর আক্রমনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য চুক্তিটি রাশিয়ার প্রয়োজন ছিল।

 রাশিয়ার ট্রাক্টর কারখানাগুলোকে অস্ত ও গোলাবারুদ তৈরির জন্য রুপান্তর করতে সময়ের প্রয়োজন ছিল। এ চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া সে সুযোগ গ্রহন করে।

 ইউরোপীয়দের মাঝে নাৎসিবাদ বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তোলার জন্য এ চুক্তি করা হয়।

 এ সময় রাশিয়ার পূর্ব সীমান্তে জাপান তীব্র সোভিয়েত বিরোধী মনোভাব গ্রহন করে। এ অবস্থায় রাশিয়া জাপানকে ভয় দেখানোর জন্য , সেইসাথে সম্ভাব্য জার্মান আক্রমন প্রতিহত করে জার্মানীকে পশ্চিম সীমান্তেনিক্ষেপ করার জন্য রাশিয়া এই চুক্তি করে।

স্বাভাবিক ভাবেই রাশিয়া জার্মানীর সাথে অনাক্রমন চুক্তি করে আসন্ন আক্রমন স্থগিত ও বিলম্ব করতে সমক্ষ হয়েছিল। এর ফলে রাশিয়া পেয়েছিল মহামূল্যবান সময় যার সদ্ব্যবহারের ফলে রাশিয়া তার অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিকে বহুগুনে বৃদ্ধি করতে পেরেছিল। অতি অল্প সময়েই রাশিয়া সামরিক ক্ষেত্রে বিরাট সফলতা অর্জন করতে পেরেছিল।

রুশ- জার্মান অনাক্রমণ চুক্তির ক্ষেত্রে জার্মানীর যুক্তি :

অনাক্রমন চুক্তিতে রাশিয়ার সাথে জার্মানীর আবদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষিতে জার্মানীর নিজস্ব কিছু চুক্তি বা উদ্দেশ্য ছিল। সেগুলো নিন্নে আলোচনা করা হল :

 জার্মানির উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়াকে ইউরোপীয় শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন করা অর্থাৎ তাকে মিত্রহীন করা এবং রাশিয়া যাতে ফ্রান্স ও বৃটে নের সাথে জোট গঠন করতে না পারে। এছাড়া ফ্রান্স ও বৃটেনকে মিত্রহীন করতে জার্মানী চুক্তিতে আবদ্ধ হয়।

 হিটলার বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার পক্ষে একই সাথে পুর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে যথাক্রমে রাশিয়া ও বৃটেন- ফ্রান্স এর সাথে সমান্তরাল যুদ্ধ করা সম্ভব নয়। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় পোল্যান্ড প্রশ্নে কোন বোঝাপড়া সম্ভব না থাকায় জার্মানী, বৃটেন ও ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধ অপরিহার্য বলে মনে করে। স্বভাবতই জার্মানী রাশিয়ার সাথে চুক্তি করে যেন যুদ্ধকে ঠেকিয়ে রাখা বা সীমিত পরিসরে রাখতে পারে।

 ফ্যাসিবাদ বিরোধী আতাত গঠনে রাশিয়া ছিল বলিষ্ঠ কন্ঠ। অনাক্রমন চুক্তির মাধ্যমে হিটলার ফ্যাসিবাদ বিরোধী আতাত গড়ে উঠতে বাধা দেয়।

 সাম্রজ্যবাদী জার্মানীদেরও একটি পুর্ণাঙ্গ যুদ্ধের প্রস্তত্তির জন্য সময়ের প্রয়োজন ছিল। এ শক্তির মাধ্যমে হিটল্রা সে সুযোগ পায়।

রুশ-জার্মান চুক্তির শর্তাবলী :

১৯৩৯ সালের ২৩ শে আগস্ট স্বাক্ষরিত রুশ-জার্মান চুক্তির দুটি অংশ ছিল ; একটি প্রকাশ্য এবং অপরটি চুক্তির গোপন অংশ। নিন্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হল :

প্রকাশ্য অংশ :

১.স্বাক্ষরকারী উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে একাকী অথবা অপরের সহযোগীতায় কোনরূপ শক্তি প্রয়োগ, আক্রমন কার্যকলাপ বা সরাসরি আক্রমন কাজে অংশগ্রহন না করার অঙ্গীকার করা হয়।

২. স্বাক্ষরকারী রাশিয়া ও জার্মান যে কোন দেশ তৃতীয় পক্ষদ্বারা আক্রমনের স্বীকার হলে স্বাক্ষরকারী অন্যপক্ষ কোন উপায়েই ঐ তৃতীয় পক্ষকে সাহায্য করবে না।

৩.স্বাক্ষরকারী সরকাদ্বয় ভবিষ্যতে এক অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং তাদের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য বিনিময় করবে।

৪.স্বাক্ষরকারী দুটি দেশের কোন পক্ষ এমন কোন জোটে যোগ দিবে না যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন এক পক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োজিত।

৫.উভয় দেশের মধ্যে যদি কোন কারনে ,মতোবিরোধ দেখা দেয়, তাহলে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা, প্রয়োজনবোধে সালিশি কমিশনের মাধ্যমে এইরূপ মতোবিরোধ মিটিয়ে ফেলবে।

৬.এ চুক্তির মেয়াদ দশ বৎসর এবং স্বাক্ষরকারী কোন দেশ এর মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর পূর্বে এর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না আনলে এই চুক্তির মেয়াদ আরো পাচ বছর বর্ধিত হয়ে যাবে।

৭.যথাসম্ভব অল্প সময়ের মধ্যে অত্র চুক্তি অনুমোদন করা হবে। অনুমোদনের দলিল পত্র বার্লিনে বিনিময় করা হবে। স্বাক্ষরের পর থেকে এ চুক্তি বাস্তবায়িত হবে।

গোপনীয় দলিল :

রুশ-জার্মান চুক্তির স্বাক্ষরকালে দুটি দেশের রাষ্ট্রদূতগন পূর্ব ইউরোপে তাদের নিজ নিজ প্রভাবের দেশ সম্পর্ক একান্ত গোপনীয় ভাবে আলাপ-আলোচনা করেন। এ আলোচনার ফলে নি¤œলিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১. পূর্ব ইউরোপে দুই স্বাক্ষরকারী দেশ নিজ নিজ প্রভাবাধীন অঞ্চল স্থির করে নেয়।

২. যদি ফিনল্যান্ড, পূর্ব পোল্যান্ড,সারভিয়া এ তিনটি বাল্টিক রাজ্যে কোন পরিবর্তন আনা হয় তাহলে রাশিয়ার অর্ন্তভুক্ত হবে।

৩. লিথুনিয়ার উত্তর সীমান্ত সোভিয়েত ও জার্মানীর প্রভাবাধীন অঞ্চলের সীমান্ত হবে।

৪. পোল্যান্ডে রুশ-জার্মান সীমান্ত সান,বিশুলা নদী ও নারার্ড দ্বারা চিহ্নিত হবে।

৫. এ শর্ত গুলো গোপন থাকবে।

এ চুক্তির তাৎপযর্ :

রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি নানাদিক দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। সামরিক দিক থেকে এ চুক্তিটি ছিল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি মাত্র ২২মাস স্থায়ী হয়েছিল।মূলত এটা ছিল স্ট্যালিনের যুদ্ধ বিজয়ের কৌশল এ চুক্তির মাধ্যমে সল্প সময়ের জন্য হলে ও রাশিয়া যুদ্ধ ও ধবংশের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন। এ চুক্তি অল্প সময়ের জন্য হলেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ স্থাপন করে। এ চুক্তির কূটনৈতিক তাৎপর্য গভীর অর্থবহ। ১৯৪১ সালের ২২ শে জুন জার্মানী এ চুক্তি ভঙ্গ করে রাশিয়া আক্রমন করে। রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি ভঙ্গ করে হিটলার জার্মানীর পতনের পথ প্রশস্ত করে। রুশ-জার্মান চুক্তি সম্পর্কে ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদক্ষেপ।

রুশ-জার্মান চুক্তির ব্যর্থতার কারন :

রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি ব্যর্থ হওযার পেছনে কয়েকটি কারনকে ঐতিহাসিকগন বিশেষ ভাবে দায়ী করেন। নিন্মে উপস্থান করা হল:

প্রথমত,বস্তুত পক্ষে,হিটলারের শ্লাভবিরোধী,ইহুদী বিরোধী ও সাম্যবাদ বিরোধী রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি ছিল বেমানান। স্বাভাবিকভাবেই রুশ অভিযান ছিল হিটলারের সম্প্রসারন নীতির মূল লক্ষে প্রত্যাবর্তন। হিটলারের রাশিয়া আক্রমন ছিল তাঁর রণনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

দ্বিতীয়ত,স্যালিন জার্মানীর সঙ্গে বোঝাপড়ার সুযোগ নিয়ে বল্কান অঞ্চলের তিনটি রাষ্ট্র ও বেসারাবিয়া দখল করে নেন।বল্কান অঞ্চলের উপর আধিপত্য নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানীর বিরোধ দেখা দেয়। রুমানিয়ার খনিজ তৈল হিটলারের জন্য জরুরী বিবেচিত হয়।

তৃতীয়ত, ১৯৪০ সালের শেষ দিকে বৃটিশ রাজনীতিবিদ স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রীপস রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কোতে আসেন।এতে হিটলারের এ আশঙ্কা হয় যে,শীঘ্রই হয়ত: রাশিয়া ও বৃটেনের মধ্যে মৈত্রী গড়ে উঠবে। সুতরাং ইঙ্গ-রাশিয়া মৈত্রীর সম্ভাবনা অঙ্কুরে বিনষ্ট করার জন্য হিটলার পশ্চিম রনাঙ্গনে যুদ্ধ সমাপ্ত রেখে রাশিয়া আক্রমন করেন। উপরোক্ত কারনে রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি ব্যর্থ হয়ে যায়। ফলে জার্মানী রাশিয়া আক্রমন করার মধ্য দিয়ে ২য় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়।

মূল্যায়ন :

নিরপেক্ষ ভাবে বিচার করলে ২য় বিশ্ব যুদ্ধের প্রাক্কালে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশ গুলোর মহাজোট গড়ে না উঠার কারন ছিল বৃটেন। রাশিয়া বার বার প্রস্তাব দিয়ে ও তাদের সাথে চুক্তি করতে পারেনি। উপরন্তু ইউরোপীয় পশ্চিমা শক্তিবর্গ রাশিয়াকে আক্রমনের জন্য প্রস্তুত নেয়।এমতাবস্থায় জার্মানীর সাথে রাশিয়া চুক্তি করা ছাড়া আর কি করতে পারে? একজন ঐতিহাসিকের মতে, স্ট্যালিন সোভিয়েত রাশিয়ার আত্মরক্ষার জন্য পূর্ব পোল্যান্ড এবং বাল্টিক রাষ্ট্র নিয়ে একটি নিরাপত্তা রক্ষা করতে চেয়েছেন। সার্বিক দিক পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ৩০শের দশকে ইউরোপের রাজনীতিতে ব্যপক পরিবর্তন আনে এ অনাক্রমন চুক্তি।

সমালোচনা :

১৯৩৯ সালের স্বাক্ষরিত রুশ- জার্মান অনাক্রমন চুক্তি নিয়ে যেমন বিতর্ক রয়েছে তেমনি এই চুক্তির কারনে রাশিয়ার তখনকার সরকার ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছে। সমালোচকদের মতে,

১. এই চুক্তি তৎকালীন রাশিয়ার সরকারের কাপুরুশতা আচারন বলে বিবেচিত। কারন ফ্যাসিবাদী,যারা সাম্যবাদের চির শত্রু রাশিয়া তাদের সাথে এই চুক্তি সম্পাদন করে।

২. শুধুমাত্র কৌশলগত সুবিধা আদায়ের জন্য রাশিয়া জার্মানীর সাথে আলোচ্য চুক্তি করে।

৩. আবার অনেকে মনে করেন, এই চুক্তি করে রাশিয়ার স্ট্যালিন সরকার হিটলারকে মনস্তাত্তিক ভাবে উগ্র হতে সহায়তা করে।

উপসংহার :

রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি আন্তর্জাতিক সর্¤úকের ইতিহাসে একটি সুদূর প্রসারী পদক্ষেপ। এই চুক্তি কূটনৈতিক ও সামরিক দু’দিক থেকেই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রভাবিত করেছিল। ক’টনৈতিক ক্ষেত্রে এই চুক্তি ছিল রাশিয়ার চুড়ান্ত বিজয়। এর দ্বারা স্ট্যালিন পাশ্চাত্য শক্তির সকল পরিকল্পনা ধ্বংস করেন যারা জার্মানিকে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে চেয়েছিল। রুশ-জার্মান অনাক্রমন চুক্তি বৃটেন ও ফ্রান্সের ভ্রান্ত পররাষ্ট্যনীতির ব্যর্থতা ও অন্ত:সারশূন্য প্রমান করে। মোটকথা রাশিয়া কূটনৈতিক পারদর্শিতা দেখিয়ে জার্মানীকে বৃটেন ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক বৃত্ত থেকে সরিয়ে এনে নিজেদির শক্তি বৃদ্ধি করে।









তথ্য সূত্র:

(১) ইউরোপের ইতিহাস(১৭৮৯-১৯৪৫)

- দিলিপ কুমার সাহা

(২) সোভিয়েত সমাজের ইতিহাস

(৩) উঁশবং.ঢ়. অ ঐরংঃড়ৎু ড়ভ জঁংংরধ

(৪) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাস

- আব্দুল হালিম

(৫) আধুনিক ইউরোপ(১৭৮৯-১৯৪৫)

- সুবেবি কুমার

(৬) ইন্টারনেট।

(৭) দুই বিশ্ব যুদ্ধের অন্তবর্তীকালীন ইউরোপ।

-এফ.এম সাইয়্যেদ





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.