নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজস্ব ভাবনা চিন্তা নিয়ে আমার ভার্চুয়াল জগত!

এস.এম. আজাদ রহমান

মানুষ

এস.এম. আজাদ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘বীজতত্ত্ব’ এর আবিস্কার- ম্যানহোল থেকে মন্ত্রিসভা

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪০



‘বীজতত্ত্ব’ এর আবিস্কার- ম্যানহোল থেকে মন্ত্রিসভা

চান্দের দেশের সেই চোরটি আসলে ভাগ্যবান ছিল-কারণ সে চুরি করেছিল ম্যানহোলের ঢাকনা, আর এ কারণে রায় হলো ফাঁসির, বিচারব্যবস্থা সে সময় বিশ্বাস করত, ছোট চোরের জন্য ফাঁসি, বড় চোরে জন্য ফুলের তোড়া।
মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর চোরটি যখন শেষ ইচ্ছা হিসেবে দেশ প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে চাইল, তখন মন্ত্রিসভা ভেবেছিল- এই চোর এমন কী-ই বা চাইতে পারে! একটু পানি? না-কি শেষবার সূর্য দেখার সুযোগ? কিন্তু লোকটা বের করল একেবারে ‘বীজতত্ত্ব’।
চোর বললো- “স্যার,” , “এটা এমন এক গাছের বীজ-যে গাছ মানুষের মনের সব ইচ্ছা পূরণ করে।”
মন্ত্রীদের চোখ চকচক করে উঠল। কেউ ভাবল ক্ষমতার মেয়াদ বাড়বে, কেউ ভাবল সুইস ব্যাংকের শাখা দেশে চলে আসবে, কেউ আবার ভাবল-সংবাদমাধ্যম চিরতরে বন্ধ করা যাবে কিনা।
কিন্তু সেই এই বীজ রোপণ করতে পারবে সেই মানুষ যেকিনা জীবনে চুরি করেনি, শুরু হলো অদ্ভুত এক অলিম্পিক-‘কে কম চুরি করেছে’ প্রতিযোগিতা।
অর্থমন্ত্রী বললেন,
“স্যার, দেশের টাকা সামলাতে গিয়ে দু’চারটা এদিক-সেদিক তো হতেই পারে। এটাকে চুরি বলা যায় না, এটা ‘অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা’।”
স্বস্থ্যমন্ত্রী বললেন,
“স্যার, এত লোকের ঔষধ, এত টেন্ডার—দুটো এতো বাণিজ্য এদিক-সেদিক হলে কি আর চুরি হয়?”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন,
“স্যার, বিদেশে গেলে তো উপহার-টুপহার আসেই। সেগুলো না নিলে কূটনীতি থাকে?”
এভাবে একে একে সবাই নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে গিয়ে প্রমাণ করে দিল—এই দেশে চুরি কেউ করে না, সবাই শুধু এদিক-সেদিক করে।
শেষমেশ সবাই যখন রাষ্ট্রপ্রধানের দিকে তাকাল, তিনি গম্ভীর স্বরে বললেন,
“আমার তো দায়িত্ব সবচেয়ে বড়। পুরো দেশ চালাতে গেলে একটু আধটু এদিক-সেদিক না হলে কি চলে?”
এই কথায় মন্ত্রিসভা হঠাৎ বুঝে গেল- সমস্যাটা চোরে না, মাত্রায় কে কত মাত্রায় এদিক সেদিক করতে পারে!
একজন সাহস করে বলল,
“স্যার, তাহলে এই লোকটা তো সামান্য ম্যানহোলের ঢাকনা চোর। একে ফাঁসি দেয়া কি একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?”
আরেকজন তৎক্ষণাৎ আপত্তি তুলল,
“না না, একে ছেড়ে দিলে বিপদ আছে। বাইরে গিয়ে বলবে-কীভাবে চুরি করলে মন্ত্রী হওয়া যায়!”
এই যুক্তিতে সবাই আবার দমবন্ধ।
অবশেষে এক বুদ্ধিমান প্রস্তাব এলো-
“স্যার, একে শাস্তি না দিয়ে বরং আমাদের সঙ্গে শামিল করে নিন। পদ দিলে আর কথা বলবে না।”
রাষ্টপ্রধান চোখ বন্ধ করে গভীর চিন্তা করলেন। তারপর বললেন,
“ঠিক আছে। লোকটা তো অভিজ্ঞ। ছোট দিয়ে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে বড় দায়িত্ব নিতে পারবে।”
এইভাবে সেই ম্যানহোলের ঢাকনা চোর শপথ নিল—
“আমি সততা, নিষ্ঠা ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করব… যতক্ষণ না এদিক-সেদিক করার সুযোগ পাই।”
আর বীজটা?
ওটা আজও রোপণ হয়নি।
কারণ—
এমন একজন মানুষ এখনো পাওয়া যায়নি,
যে সত্যিই চুরি করেনি মানে এদিক-সেদিক করেনি!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.