নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।
জন্ম ও বংশ পরিচিতিঃ
হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ তান্নুরী ওরফে হযরত মীরান শাহ্ (রহঃ) ছিলেন বড়পীর হযরত গাউসে পাক (রহঃ) (১০৭৭খৃঃ-১১৬৬খৃঃ) এর খাস আওলাদ হযরত সৈয়্যদ আজালা শাহ্ (রহঃ) এর পুত্র এবং রাজশাহীতে সমাহিত হযরত সৈয়্যদ আবদুল কুদ্দুস ওরফে শাহ্ মাখদুম রুপোশ (রহঃ) (১৪৭৫খৃঃ-১৫৯২খৃঃ) এর ভ্রাতা।১২৫৮ খৃষ্টাব্দে কুখ্যাত তাতার দস্যু হালাকু খান আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ আক্রমন ও লুন্ঠন করলে তাঁর পিতা হযরত সৈয়্যদ আজালা শাহ্ (রহঃ) সপরিবারের তদানীন্তন মুসলিম ভারতের রাজধানী দিল্লীতে এসে সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলক (১৩২৫খৃঃ-১৩৫১খৃঃ)এর সাদর আতিথ্য গ্রহন করেন।দিল্লীতেই হযরত সৈয়্যদ মীরান শাহ্’র (রহঃ) জন্ম হয়।বিজ্ঞ পিতার সযত্ন তত্তাবধানে তাঁর শিক্ষার পর্ব সমাপ্ত হয়।হালাকুর মৃত্যুর পর হযরত সৈয়্যদ আজালা শাহ্ (রহঃ) বাগদাদে ফিরে যান।হযরত মীরান শাহ্ (রহঃ) তাঁর বাল্যবন্ধু ও পরবর্তী সুলতান ফিরোজ শাহ্ তুঘলক (১৩৫১খৃঃ-১৩৮৮খৃঃ) এর অনুরোধে দিল্লীতেই থেকে যান। পরে বাংলার স্বাধীন সুলতান শামস উদ্দিন ইলিয়াস শাহ্’র (1342L„t -1358L„t) পুত্র সিকান্দার শাহ্’র সময়ে (1358L„t-1393L„t) হযরত বড়পীর সাহেবের (রহঃ) স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাঁরা উভয়েই একমাত্র বোন সৈয়্যদা মাযজুবা বিবিকে (রহঃ) সাথে নিয়ে w`ল্লx †_‡K বাংলাদেশ অভিমুখে যাত্রা করেন। c‡_ পথে c‡_ ইসলামের বাণী প্রচার করতে করতে তাঁরা বর্তমান নোয়াখালী জেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে এসে পৌঁছান। মীরান শাহ্ (রহঃ) তাঁর ভগিনী সৈয়্যদা মাযজুবা বিবিকে (রহঃ) সাথে নিয়ে এখানে আস্তানা গাড়েন।
বড়পীর হযরত গাউসে পাক (রহঃ)এর খাস আওলাদ হযরত সৈয়্যদ আজালা শাহ্ (রহঃ) এর কনিষ্ঠ পুত্র হযরত সৈয়্যদ মীরান শাহ্ (রহঃ) দিল্লী হতে বাংলায় ইসলাম প্রচারার্থে শুভাগমনের সময় তাঁর সাথে দ্বাদশ সংখ্যক সঙ্গী ছিলেন।এরা বারো আউলিয়া নামে জন সমক্ষে সুপরিচিত।
এদের নাম হলো-
১। হযরত সৈয়্যদ আজালা শাহ্ (রহঃ) এর জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন হযরত সৈয়্যদ শাহ্ মাখদুম রুপোশ (রহঃ) এবং এসূত্রে তিনি ছিলেন হযরত মীরান শাহ্র (রহঃ)জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। হযরত সৈয়্যদ শাহ্ মাখদুম রুপোশ (রহঃ) কাঞ্চনপুরে কিছুদিন অবস্থানের পর রাজশাহীতে গিয়ে ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত হন।দীর্ঘদিন সেখানে ইসলাম প্রচারের পর ১৩৩০ খৃষ্টাব্দে ১১৭ বছর বয়সে (১২১৩খৃঃ-১৩৩০খৃঃ) রাজশাহীতে তিনি ওফাত বরণ করেন। তাঁকে রাজশাহীতেই সমাহিত করা হয়েছে।
২। হযরত মাযযুবা বিবি (রহঃ)- ইনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর ভগিনী ও শিষ্য ছিলেন।ইনি দরবারে আগত মহিলাদের মধ্যে ইসলাম ধর্ম প্রচারের দায়ীত্ব পালন করতেন বলে জানা যায়।হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ)এর পবিত্র মাজারের পাশেই এ মহান ও বিদুষী সাধিকা চির নিদ্রা্য় শায়িত রয়েছেন।
৩। হযরত বখতিয়ার মাইসুরী(রহঃ)- হযরত মিরান শাহ্(রহঃ)তাঁর এ প্রিয় শিষ্যকে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে পূর্ব ঊপকুলবর্তী দ্বীপ এলাকার সন্দীপে প্রেরণ করেছিলেন।সন্দীপের রোহিনীতে এ মহান সাধকের পবিত্র মাজার অবস্থিত।
৪। হযরত শাহ্ মুহাম্মদ ইউসুফ (রহঃ)- ইনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন বলে জানা যায়।চৌমুহনী রেল ষ্টেশনের পূর্ব দিকে তিন মাইল দূরে কিতাবপুর নামক স্থানে মহান সুফী সাধক চির শান্তির নিদ্রা্য় শায়িত রয়েছেন।
৫।হযরত শাহ্ মুহাম্মদ ফজলুল্লাহ্ (রহঃ)- ইনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন বলে জানা যায়।রায়পুরে তাঁর পবিত্র মাজার বিদ্যমান।
৬।হযরত শাহ্ নুর উদ্দিন (রহঃ)- ইনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন। ভাটুইয়া গ্রামে হযরত শাহ্ নুর উদ্দিন(রহঃ)এর পবিত্র মাজার বিদ্যমান।
৭।হযরত শাহ্ আবদুল্লাহ্ (রহঃ)- ইনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন। নোয়াখালী শহরে হযরত শাহ্ আবদুল্লাহ্(রহঃ)এর পবিত্র মাজার বিদ্যমান।
৮।হযরত মাওলানা শাহ্ ইয়াকুব নুরী (রহঃ)- ইনিও হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন। নোয়াখালী শহরের পশ্চিম প্রান্তে তাঁর পবিত্র মাজার মুবারাক বিদ্যমান।
৯।হযরত শাহ্ ইমাম উদ্দীন (রহঃ)- ইনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন।সাদুল্লাপুরে হযরত শাহ্ ইমাম উদ্দীণ(রহঃ)এর পবিত্র মাজার শরীফ বিদ্যমান।
১০।হযরত শাহ্ বাদশাহ্ মিয়া (রহঃ)- ইনিও হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ) এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন।দলীলপুর টঙ্গীর পাড় গ্রামে হযরত শাহ্ বাদশাহ্ মিয়ার (রহঃ) পবিত্র মাজার শরীফ রয়েছে।
১১। হযরত মিয়া সাহেব বাগদাদী(রহঃ)- হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ)এর শিষ্য, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন।হরিচর মিয়া বাড়ীতে হযরত শাহ্ মিয়া সাহেব বাগদাদী’র (রহঃ)পবিত্র মাজার শরীফ রয়েছে।
১২। অজ্ঞাতনামা দরবেশ বজরা রেল ষ্টেশনের উত্তর পাশে একটা পুকুরের মধ্যে এক নাম না জানা দরবেশের মাজার রয়েছে।তিনি হযরত মিরান শাহ্ (রহঃ)এর অনুচর, একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক ও সুফী সাধক ছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ-
১। বাংলাদেশের সুফী সাধক ও অলী আউলিয়া-পৃঃ১৩৮-১৪১। লেখক- সাদেক শিবলী জামান, প্রকাশক- রহমানিয়া লাইব্রেরী নর্থব্রুক হল রোড,ঢাকা-১১০০। নবম সংস্করণ-২০০৩ খৃষ্টাব্দ।
২। বাংলাদেশের সূফী-সাধকঃ-পৃঃ১০০-১০২। লেখক- ডঃ গোলাম সাকলায়েন, প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা।ষষ্ঠ সংস্করণ-২০০৩ খৃষ্টাব্দ।
©somewhere in net ltd.