নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসৎ

ঘরের শত্রু নই

বিভীষণ

খারাপ কে খারাপ বললেই যদি আমি খারাপ হই তবে আমি তাই, স্রোতে গা ভাসানো আমার কাজ নই দেখি স্রোতের বিপরীতে কতদিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারি.।

বিভীষণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি কুত্তার গল্প!!!

২৬ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১৭

এই কুত্তা!তুই আমার সাথে এমন কেন করলি?

যেহেতু আমি কুত্তা সেহেতু মানুষ সমাজে কথা বলার নিয়ম নেই!তাই দুইবার ঘেউ ঘেউ করলাম।

সে কি বুঝল কে জানে?বলল,কি করেছিস মানে?

আমি আবার ও দুইবার ঘেউ ঘেউ করলাম।এই পর্যায়ে সে কিছু না বলে চুপ করে রইল!







ঘটনার সূত্রপাত!

ব্যক্তিঃদোস্ত দেখ এই মালটা জটিল না?

কুত্তাঃহুমম!খুবই জটিল!মেয়ে মানুষ সব সময় আমার কাছে জটিল মনে হয়,এইটারে আরো জটিল মনে হচ্ছে!

ব্যক্তিঃফাইজলামি করছিস?এই মেয়েটার সাথে কিছুদিন হল যোগাযোগ হয়েছে,ভালোই!এর বাপ অনেক বড় সরকারি কর্মকর্তা!

কুত্তাঃফাইজলামি কেন করব!অতীব সুন্দরীদের সাথে জটিলতার একটা সম্পর্ক থাকে তাই বললাম!তা,জটিল মেয়েদের বাবারা কি খুব বড় সরকারি কর্মকর্তা হয়?জানা ছিল না!যাই হোক এই মেয়ের সাথে তোর প্রেম হয়েছে?

ব্যক্তিঃনা এখনো হয় নি!আর এত বড়লোক মেয়ের সাথে প্রেম করতে মেলা যোগ্যতা লাগে।দেখি সরকারি চাকরী যদি করি তাইলে এই মেয়ের বাপ কিছু করতে পারে কিনা!

কুত্তাঃও আচ্ছা!

কথাবার্তা আর এগুনো গেল না,ব্যক্তি পর্যায়ের লোকটির নতুন জোটানো গারলফ্রেন্ড চলে আসল।ব্যক্তিটি বরাবরের মতোই কুত্তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঘণ্টা রেটে রিকশা করে সন্ধ্যার অন্ধকারে হারিয়ে গেল।কারন ব্যাক্তিটি এখনো বেকার কিন্তু কুত্তা এঁটো কুড়িয়ে খায় ফলে তাঁর কিছু টাকা পয়সা আছে।আর ব্যক্তিটির যতদিন কোন চাকরি হচ্ছে না ততদিন এই কুত্তার কাছ থেকেই এঁটো খাবে তা এক প্রকার নিশ্চিত।কারন কুত্তারা সবসময় দাতা স্বভাবের হয়।যাক সে কথা,কুত্তা পর্যায়ের ব্যক্তির রাস্তায় ঘুরাঘুরি ছাড়া যেহেতু আর কাজ নেই তাই সে আবার রাস্তায় নেমে পড়ল!





ঘটনার প্যাচ!

কুত্তার মনে কেন যেন মেয়েটির ছবি একবার দেখেই সেটে গেছে।সে অনেক না ভেবে মেয়েটিকে ফেইসবুকে একটা বন্ধু আহবান পাঠিয়ে দিল।কুত্তার আহবানে মেয়েটি সাড়া দিল এবং বলল আচ্ছা আমি কি আপনাকে চিনি?

কুত্তা কিছুক্ষণের জন্য মানুষ হয়ে গেল এবং ফেইসবুকে চ্যাট করতে আরম্ভ করল!তারপর শীতে কত গাছের পাতা ঝড়ে বসন্তে আবার নতুন কুড়ি নিয়ে আসল,কত নদীর জল গিয়ে পড়ল সমুদ্রে,কত কত সেকেন্ড মিনিট ঘণ্টা দিন পার হয়ে গেল,কিন্তু কুত্তা এবং ব্যাক্তি দুজনেই যে মেয়েটির সাথে কথা বলে তা একমাত্র কুত্তায় জানে।আর মেয়েটি দুজনের সাথে কথা বললেও দুজনের পরিচয় জানে না।একপর্যায়ে মেয়েটির সাথে কুত্তার প্রেম হয়ে গেল!কুত্তা ব্যাক্তিটিকে জিজ্ঞেস করল তুই কি মেয়েটিকে ভালোবাসিস?

ব্যক্তিটি বলল না,আমি এখন যে পজিশনে তাঁতে এই মেয়ের সাথে আমার যায় না।যদি পজিশন কক্ষনো ভাল হয় তাহলে ভেবে দেখব।

কিন্তু ততদিন পর্যন্ত যদি মেয়েটি অপেক্ষা না করে,অন্য কোন ছেলের সাথে যদি লুটপুটি খায়?

তাঁতে আমার সমস্যা নেই,আমিও তো এইদিকে দুইটা মেয়ের সাথে প্রেম করি।

ও তাইলে এক কাজ করি,এই মেয়ের সাথে আমি প্রেম করি।সেইফ থাকবে,তোর কোন রিস্ক থাকল না।আর বাইরের কারো সাথে প্রেম করলে তো রিস্ক থেকে যায়!

এই মেয়ে তোর সাথে প্রেম করবে না,কারন মেয়েটা মনে হয় আমাকে ভালবাসে।

কুত্তা বলল যদি আমি প্রেম করতে পারি তাইলে তুই কি রাজি আছিস?

আরে বললাম না এই মেয়ে তোর সাথে প্রেম করবে না,মেয়ে অনেক হাই ক্লাস ফ্যামিলির।আমার সাথে মেয়ের নিয়মিত কথা হয়।আর ও এখন আর কারো সাথে প্রেম করবে না।

কুত্তা বলল ও আচ্ছা।





প্যাচের প্যাচাপ্যাচি!

যেহেতু কুত্তা মেয়েকে ভালবেসে ফেলেছে কিন্তু ব্যক্তির জন্যও তাঁর খারাপ লাগছে তাই সে মেয়েটির কাছ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিল।অনেক চেস্টার পরেও চেষ্টাটা সফল হল না।

কুত্তা ব্যক্তিটিকে অনেক বার অনেক ভাবে বলতে চাইল যে সে মেয়েটিকে ভালবাসে কিন্তু সব চেস্টায় ব্যর্থ হল।কারন মেয়েটিকে সে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলেছে।কুত্তা হয়ে মানুষের সাথে প্রেম যদিও বেমানান কিন্তু তবুও কেন যেন মেয়েটির চোখের দিকে তাকালে সে কোথায় হারিয়ে যায়!কোথায় হারিয়ে যায় তা কে বলতে পারে?

যেহেতু সে কুত্তা ফলে সে মেয়েটির কাছে তাঁর পরিচয় গোপন করে গেল।কুত্তার সাথে নিশ্চয়ই কোন মেয়ে প্রেম করতে রাজি হবে না।তাই সে নিজেকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে,নিজেকে মানব সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে মেয়েটির প্রেমে সাড়া দিল।

কিছু কিছু মেয়ে থাকে যাদের প্রেমে পড়ার জন্য প্রকৃতিও মুখিয়ে থাকে,এই মেয়ে সেই ধরনের!আর এ তো নিতান্তই এক কুত্তা।কুত্তাও ধপাস করেই প্রেমে পড়ে গেলো।উথাল পাতাল প্রেম!রাতে কথা,সারাদিন টেক্সটিং।একটু অবসর পেলেই দেখা।কুত্তার দিন কি সুখেই যে কাটছিল তা বলে বোঝাবার নয়।

কিন্তু মানুষের কপালেই নাকি সুখ বেশিদিন সয় না,আর এ তো কুত্তা!সইবে কি করে।কোন একদিন কোন এক ভ্রমণ বেলায় কুত্তার ফোনে ব্যক্তিটি ঐ মেয়ের নাম্বার দেখল।দেখেই ব্যক্তিটি পাগল হবার দশা।

সে তৎক্ষণাৎ কুত্তার একটা ছবি মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বলল এই কুত্তাকে তুমি চেন?ছবিতে দেখা যাচ্ছে কুত্তা বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে সিগারেট টানছে।

মেয়েটি বলল হ্যাঁ চিনি।কিন্তু তুমি কিভাবে কুত্তাটাকে চেন?

ব্যাক্তিটি বলল এ আমার বন্ধু!

ব্যক্তিটি কুত্তাকে বলল তুই এমন করলি কেন?

কুত্তা কোন কথা বলছে না দেখে,ব্যক্তিটি আরো দুই একজন বন্ধুর কাছে নালিশ দিল।বন্ধুরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেল,এক দল বলল যেহেতু কুত্তার সাথে মেয়েটির প্রেম সেহেতু আমরা খারাপ কিছু দেখছি না।আর যেহেতু ব্যক্তিটির সাথে মেয়ের প্রেম নেই,ফলে এইখানে অসুবিধা কোথায়?

আরেক দলে ব্যক্তি নিজে,সে রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলল কিন্তু মেয়েটিকে আমি ভালবাসি।আর ও আমার কাছ থেকেই মেয়ের ফেইসবুক আইডি পেয়েছে,ফলে আমি এই মেয়ের সাথে প্রেম করব।

ততক্ষণে সকলে শহর পেরিয়ে একটা নদীর ধারে এসে পৌঁছেছে।ভ্রমণের অংশ হিসেবে নৌকা ভ্রমণ যে বাকী আছে।

কুত্তা এবার বলল ঠিক আছে ও যেহেতু মেয়েটিকে চায় সেহেতু এইখানে আমার কিছু বলার থাকে না।দুই একজন বলল কিন্তু মেয়ে তো তোকে ভালবাসে।এখন ব্যক্তি চাইলেই মেয়ে কেন ব্যক্তির সাথে প্রেম করবে?

এবার ব্যক্তিটি বলে উঠল,আমি মেয়ের কাছে বলেছি আমার এক বন্ধু আছে যে হিন্দু একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে।

সবাই বলল কে সেই বন্ধু?

ব্যক্তিটি বলল আমি ছোটবেলায় যে হিন্দু মেয়েটিকে ভালবাসতাম সেই মেয়েটিকে কল্পনায় বিয়ে দিয়ে এই মেয়েকে ভালবাসার কথা বোঝাতাম।ভালবাসার গভীরতা বোঝাতে আমাকে এমনটি করতে হয়েছে আর তোরা তো জানিসই ঐ হিন্দু মেয়েটিকে আমি কত ভালবাসতাম।

সবাই বলে উঠল কিন্তু এখন তুই কি করতে চাইছিস?

ব্যক্তিটি বলল আমি মেয়েকে বলব কুত্তায় আমার সেই বন্ধু যে ঐ হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করেছে।

এবার ব্যক্তিটি মেয়েকে ফোন দিয়ে সমস্তটা বলল।মেয়েটি কুত্তার সাথে কথা বলতে চাইল।

ব্যক্তিটি হেডফোনের এক প্রান্ত নিজের কানে নিয়ে আরেক প্রান্ত কুত্তার কানে দিয়ে বলল কথা বল!ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসছে...

এই কুত্তা!তুই আমার সাথে এমন কেন করলি?

যেহেতু সে কুত্তা সেহেতু মানুষ সমাজে কথা বলার নিয়ম নেই!তাই সে দুইবার ঘেউ ঘেউ করল।

সে কি বুঝল কে জানে?বলল,কি করেছিস মানে?

কুত্তা আবার ও দুইবার ঘেউ ঘেউ করল।এই পর্যায়ে সে কিছু না বলে চুপ করে রইল!



কুত্তার কেবলই মনে হতে থাকল যে মেয়ের সাথে রাতে,দিনে কথা বলা,রাত ৩টা পর্যন্ত ফেইসবুকে চ্যাট সেই মেয়ে কিভাবে বিশ্বাস করল যে আরেকটা মেয়ে তাঁর স্বামীকে এভাবে আরেক মেয়ের সাথে কথা বলতে দেয়।

কুত্তার কোথাও কেন যেন মনে হয়েছিল,যে মেয়েটি তাঁকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালবাসে সে অন্যের কথা বিশ্বাস করবে না!কিন্তু একি হল!

হঠাৎ করেই মেঘ ভেঙ্গে বৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করল।সবাই দৌড় দিয়ে পাশের দোকানের ঝাপের মধ্যে আসতে থাকল কিন্তু একটা কুকুর বাইরে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকল।আশ্চর্যের বিষয় বৃষ্টির পানির মধ্যেও তাঁর চোখের পানি ঠিক আলাদা করা যাচ্ছে।প্রকৃতি বড়ই রহস্যময়।



বিঃদ্রঃকারো জীবনের সাথে এই গল্পের মিল নিছক কাকতালমাত্র!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.