নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা নিরাশার দোলনায় আপনাকে স্বাগতম

চরম নৈরাশ্যবাদী ও আশাবাদী দুটোর সংমিশ্রনে আমি সৈকত বলছিঃ সমস্যা ছুড়ে ফেলে ধূর ধূর জ্বালা বলে দেখইনা রুখে তুমি দাড়িয়ে,কেটে যাবে আধার,ছুড়ে ফেল সংস্কার দেখবে জীবন হাত বাড়িয়ে...............।।

আমি সৈকত বলছি

নিজেকে খুজে ফিরি সারাক্ষন।এই পৃথিবীর রাজ পথে,অলি গলি আর চোরা চিপা গলিতে খুজে ফিরি নিরন্তর।এ আমার আত্মার কথাঃ \"হারিয়ে খুজি নিজেকে\" নিজের মাঝেই খুজি নিজেকে।।খুব সাধারন একটা মানুষ,লিখতে ভালোবাসি বলেই লিখি অন্যের লিখা পড়তে ভালোবাসি বলেই পড়ি।ব্লগের সকল লেখকের প্রতি রইলো অজস্র শুভ কামনা ও অগ্রজদের জন্য রইলো স্পেশালি বিনম্র শ্রদ্ধা।♥ভালোবাসি সবাইকে♥

আমি সৈকত বলছি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মা\'কে ঘিরেই আমার পৃথিবী........

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৩৪

-সৈকত তোর মরন হয়না কেন???
এত মানুষ মরে তুই কেন মরিস না!!!
-আমি মরলে কি তুমি খুব খুশি হবে??
-অন্তত আমি জ্বালা যন্ত্রনা থেকে রেহাই পেতাম।
-আচ্ছা আমি মরে যাবো..
-হ্যাঁ হ্যাঁ তাই কর..

এতো গেলো প্রথম দৃশ্য,
এবার চলুন দ্বিতীয় দৃশ্যে...

কাঁদতে কাঁদতে ডাঃ রাজুকে ফোন করছেন..
-হ্যালো ভাবী
-রাজু রেএএএএএএ (কান্নার দমকে কথা বের হচ্ছে না)
-ভাবী আপনি কান্না বন্ধ করে কি হইছে বলেন..
-আমার সৈকতটা যেন কেমন করছে রে রাজু
-কি হইছে ভাবী?
-সৈকতের আগের বুকের ব্যাথাটা উঠছে..
-আচ্ছা ভাবী আপনি সাগরকে জীবনের কাছে পাঠান আমি জীবনকে ঔষুধের কথা বলে দিচ্ছি আপাতত এটা খাওয়ান বাকীটা আমি আসলে দেখবো..

ফোনের অপর প্রান্তের মানুষটা তখন কান্না চাপার প্রানান্তকর চেষ্টার গলায় "আচ্ছা আচ্ছা" বলছে..

হ্যাঁ এটাই হচ্ছেন আমার মা।

কি ভাবছেন??
এসব কি বললাম তা??

হ্যাঁ আমার মা'কে আমি এতটাই জ্বালাতাম যে,এতটাই জ্বালাতাম যে-সেই জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে আমার মরন কামনা করতেন....

আবার আমার যখন কিছু হতো তখন আবার আমার এই মা'ই উতলা হয়ে উঠতেন সবার চেয়ে বেশি,কেঁদে কেঁটে নাক চোখ মুখ সব ফুলায় ফেলতেন এবং এখনো তাই করেন...

আমার মা,
আমার সব অন্যায় কে নিজ আঁচলে গোপন করে যাচ্ছেন আজ অবধি,
কিন্তু কখনো আমাকে তা নিয়ে প্রশ্ন বিদ্ধ করেন নি...

আমার মা,
আমার জন্য জীবনে এত কষ্ট সহ্য করেছেন কিন্তু সেই কষ্টের আঁচ কখনো আমার গায়ে লাগতে দেননি...

আমার মা,
আমার সকল অপকর্মের ভার আমার মায়ের উপর পড়তো...

ছোট্ট একটা ঘটনা বলি,
আমি ছোট বেলায় কতটা দুষ্ট ছিলাম আর আমার দুষ্টামি গুলো কতটা ভয়ানক আকৃতির হতে পারে তার কিছুটা ধারনা পাওয়া যাবে এই ঘটনা থেকে..

আমার যে কোন মুরুব্বি যদি আমার সাথে কোন উল্টা পাল্টা করেছেন তো তাহলে আমি যা বলতাম..

-একধম গুলি/ছুরি মেরে দেবো,
কবরেও নিতে দেবো না,
যে নিতে আসবে তাকেও গুলি/ছুরি মেরে দেবো.. (ছুরি/গুলি যখন যা মনে আসতো তাই বলতাম)

আর আমি চলতাম সেরকম।

যারা মোটামুটি গ্রাম্য অবস্থানের সাথে পরিচিত তারা চিনবেন।
গ্রামে একধরনের একটা গাছ আছে যার নাম "পাতা গাছ"..

আমি সেই পাতা গাছ কেটে,তা দিয়ে গুলি/পিস্তল বানাতাম,
আর গাছের ডালা কেটে তা দিয়ে ছুরি বানাতাম এবং সেগুলো কোমরে ঝুলাতাম অথবা হাফ পেন্টের সামনে পেছনে রাবারের মধ্যে গুঁজে রাখতাম...

এবার বুঝুন আমার অন্যান্য দুষ্টামি গুলো কতটা ভয়ানক ছিল..

যাইহোক,
আমার সেই দুষ্টামি গুলোর ভার বহন করতে হতো আমার মা'কে...

লোক মুখে একটা কথা বেশ প্রচলিত আছে..
মা বাবার এক মাত্র সন্তান অথবা ছোট/মেঝো সন্তান হয় আবোঝা বা অবুঝ..
কিন্তু আমি বড় সন্তান হয়েও আমার মায়ের কাছে আমি আজীবনই আবোঝা আর অবুঝ থাকতাম এবং এখনো তাই থাকি যখনই মায়ের কাছে যাই....

আমি খাওয়া দাওয়া করি অনেক বেছে বেছে,সেই জন্য আমার মা থাকতেন সব সময় সজাগ।
যেমন,
আমি মোরগ খাইনা,
বাসায় যেদিন মোরগ পাক করা হচ্ছে সেদিন আমার মায়ের একটা বাড়তি টেনশন থাকে-আমার সৈকত কি খাবে!!!

ব্যাস আমার জন্য কিছু না কিছু করে রাখবেনই তিনি এবং সেই খাবার পরিবারের আর কারো ছোঁয়াও নিষেধ...
যে ধরেছে,
তার আর নিস্তার নাই,
আমার মা রেগে মেগে অগ্নিশর্মা..সে যেই হোক না কেন,ছাড় নাই কোন।
চারটি খানি কথা,
তার সৈকতের খাবারে হাত দিয়েছে!!!!

আমি আমার মা'কে ভালোবেসে ডাকতাম-'রঙিন টেলিভিষন'
আসলেই তাই,
আমার মা আমার রঙিন টেলিভিষন।
আমার সুখ দুঃখ হাসি কান্না সব কিছু জুড়েই আমার মা...

আমি ফেনীতে যেতাম,
বাজারে যেতাম,
কাজে যেতাম বা খেলতে যেতাম বা ঘুরতে যেতাম,
যেখানেই যেতাম,
ঘরে পা দেওয়ার সাথে সাথে আম্মু আম্মু করে ঘর মাথায় তুলতাম,
যতক্ষন আমার আম্মুকে আমি না দেখছি ততক্ষন আমার শান্তি নাই..
ঘরে এসে প্রথমে ওনাকে দেখবো তার পর যা কিছু করার করবো তার আগে না..
কিন্তু আজ সেই আমি,
বাসায় আসি ঠিকই কিন্তু আমার মাকে খুজে পাইনা কোথাও,
কোথাও দেখি না আমার মাকে,
আমার জন্য ভাত বেড়ে আজ আর কেউ টেবিলে সাজিয়ে রাখে না কেউ অপেক্ষা করে বসে থাকে না আমার জন্য ভাতের প্লেট সামনে নিয়ে।

আমি যখনই খেতে বসতাম,
আমার মা'কে সামনে বসাই রাখতাম..
মা মাঝে মাঝে রেগে যেতেন,
তখন আমি বলতাম,
মা একদিন তুমি এই সময়টাতে আমাকে অনেক মিস করবে,
খাবার খাওয়ার সময় সামনে বসিয়ে রাখার জন্য যখন এই পাগল ছেলেটা থাকবে না।

আমি সুন্দর না কিন্তু আমার মা বলেন,
-পৃথিবীতে যদি কোন স্মার্ট ছেলে থাকে তবে সেটা হচ্ছে আমার ছেলে,প্রকৃত সুন্দর্য্যের উদাহরন যদি দেখাতে হয় তবে সেটা আমার ছেলেকেই দেখাতে হবে...
অথচ সবাই বলে,
আমাদের পরিবারের সবাই সুন্দর শুধু আমি ছাড়া।

যাইহোক,
আমার জীবনে যত গুলো সফলতা তার সব কৃতিত্ত্ব আমার মায়ের প্রাপ্য..
অবশ্য একটা অর্জনে আমার বাবার কৃতিত্ত্ব অনস্বীকার্য আর সেটা হচ্ছে এস এস সি পরীক্ষার সময়কার।
যদিও শুরুটা আমার মা'র জন্যই....

মা,
ও মা,
মা গো...
সারা পৃথিবীর মানুষের ভালোবাসা এক পাল্লায় রাখা হলে আর তোমার ভালোবাসার একাংশ যদি এক পাল্লায় রাখা হয় তবুও তা সমান তো দূরের কথা কাছাকাছিও হবে না...

দ্বিধাহীন চিত্তে,
উন্মুক্ত কন্ঠে আমি চিৎকার করে বলতে পারি-
আমার বাবা মায়ের মত বাবা মা পাওয়াটা যেকোন সন্তানের জন্য কয়েক জনমের ভাগ্য...
কারন উনারা দুজনই আমার সর্ব শ্রেষ্ঠ ফ্রেন্ড..

আচ্ছা আপনার পিতা কখনো আপনার সাথে আপনার গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকা নিয়ে কথা বলেছে??

জানিনা বলেছে কিনা..
কিন্তু জানেন??
আমার বাবা আমার সাথে বলতেন এবং কখন কোন সময়টা প্রেম করার জন্য উপযুক্ত জীবনের কোন পর্যায়ে গিয়ে প্রেম করাটা উচিৎ সব বলতেন..
কারন আমরা শুধু পিতা পুত্র না আমরা বন্ধুও বটে...

আমার মা,
আমার পেটে এমন কোন কথা থাকতো না যা আমি আমার মা'কে বলতাম না..
উনি হচ্ছেন,
এই পৃথিবীতে আমার সব চেয়ে নিরাপদ কথার ব্যাংক,
যেই ব্যাংক থেকে কথা ফাঁস বা উন্মুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নাই....

*******
আসলে আমার জন্য কোন বিশেষ একদিনের জন্য মাতৃ দিবস নাই প্রতিটা দিনই আমার মাতৃ দিবস তবুও সবাই পালন করে এবং করছে সেই সূত্রেই সকলের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে বলছি-

"শুভ মা দিবস"

জগতের সকল মায়েদের স্থান হোক সন্তানদের ছত্রছায়ায় যেমনটি সন্তানরা ছিলো মায়েদের ছত্রছায়ায়।

মায়েদের আশ্রমের স্থান সন্তানাশ্রম পরিবর্তন হয়ে যেন বৃদ্ধাশ্রম না হয়।
-এই কামনা করি....

পরিশেষে,
তোমার কাছে কোন কিছু চাইবো না তো কভু,
আমার মা'কে আমার আগে নিও না গো প্রভু......
********

বিঃ দ্রঃ লিখাটি মা দিবসের দিন লিখা কিন্তু সময় এবং সুযোগের অভাবে ব্লগে পোস্ট করতে পারি নাই......
আজ করলাম। :)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪০

শায়মা বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা ভাইয়া।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: ধন্যবাদ বোনটি..

শুভ কামনা আপনার জন্য দোয়া রাখবেন আমার জন্য.. :)

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪২

যোগন বলেছেন: Touching.................

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: আমার ব্লগে স্বাগতম... :)

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

অর্বাচীন পথিক বলেছেন: ঘরে পা দেওয়ার সাথে সাথে আম্মু আম্মু করে ঘর মাথায় তুলতাম,
যতক্ষন আমার আম্মুকে আমি না দেখছি ততক্ষন আমার শান্তি নাই.


সব সন্তানের কি এই একই অবস্তা। বাড়ি ঢুকে আগে মা কে খোঁজা ?

৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: হয়ত তাই..

সব সন্তানই এমন হওয়া উচিত......

ধন্যবাদ
শুভ কামনা সতত। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.