নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধ্যানে সর্বদায় এগিয়ে

Md.Raihan sheikh

সাংবাদিক

Md.Raihan sheikh › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভিযোগ আছে ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জন করা জাতীয় সংগীত নিয়ে

১৯ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩১

একটি দুটি নয়, শত নয়, হাজারও নয় ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে যে মহান অর্জনগুলো আমরা অর্জন করেছি তার মধ্যে আমাদের জাতীয় সংগীত। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি.......। এটি একটি মহাকাব্য সমতুল্য। জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে প্রতিটি মুহূর্তে এই গান আমাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। গানটি আপদে বিপদে সাহস ও প্রেরণা যুগিয়েছে এবং যোগাচ্ছে আমাদের। এই গান বিশ্ব সভায় আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটি কোটি মানুষের সামনে আমাদের শিল্পীরা, ক্রিড়াবিদরা মাথা উঁচু করে গলা ছেড়ে গান গায় এই ভাল লাগার গান। ভালোবাসার গান। আমাদের জাতীয় সংগীতের গীতিকার ও সুরকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি এই গানটি রচনা করেছিলেন ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময়। গানটি তিনি রচনা করেছিলেন বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। তবে মূল পান্ডুলিপি না পাওয়ায় গানটি রচনার সঠিক তারিখ পাওয়া যায় নি। রবীন্দ্রনাথের জিবনিকার প্রশান্তকুমার পালের মতে, গানটি প্রথম গাওয়া হয়েছিল ১৯০৫ সালের ২৫ আগস্ট কলকাতার এক অনুষ্ঠানে। রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরযুক্ত গানটি প্রথম প্রকাশিত হয় সঞ্জীবনী পত্রিকায়। গানটি রবীন্দ্রনাথের রচিত গীতবিতানের স্বদেশ পর্বে অন্তর্ভূক্ত। এর চরনসংখ্যা ২৫টি। জাতীয় সংগীত হিসাবে কোনো দ্বিরুক্তি ছাড়া ''আমার সোনার বাংলা'' আমি নয়ন জলে ভাসি পর্যন্ত প্রথম ১০ চরন গাওয়া হয়। প্রথম চার চরনের যন্ত্রসংগীত বাজানো হয় বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানে গানটি গাওয়া হয়। জমিদারি বংশের সন্তান হিসেবে এবং জমিদারি দেখাশুনার কাজে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নওগাঁর পতিসর, কুষ্টিয়ার শিলাইদহে এবং পাবনায় এসেছেন। তখন পূর্ববাংলার জারিসারি, বাউল গানের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। পরে স্বদেশী আন্দোলনের সময় তার নিজের লেখা অনেক গানে পূর্ব বাংলার লোকগানের সুর ব্যবহার করেছেন। আমার সোনার বাংলা গানটিতে তিনি সুর প্রয়োগ করেছেন কুষ্টিয়ার ডাকপিয়ন গগন হরকরার "আমি কোথায় পাবো তারে, আমার মানুষ যে রে" গানটির সুরের অনুষঙ্গে। রবীন্দ্রনাথের নিজের লেখা ও সুর করা এই গানটি জাতীয় সংগীত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবার ঘটনা সম্পর্কে জানা যায় ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রষ্টকে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া এক সাক্ষাৎকার থেকে। সেই সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেন, ''৭ মার্চ রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) ময়দানে আমি যখন শেষবারের মতো জনসভা করি, সেখানে ১০ লাখ লোক হাজির হয়েছিল আর ''স্বাধীন বাংলা'' স্লোগান দিচ্ছিল, তখন ছেলেরা গানটি গাইতে শুরু করে। আমরা সবাই, ১০ লাখ লোক দাঁড়িয়ে গানটিকে শ্রদ্ধা জানাই। তখনই আমরা আমাদের বর্তমান জাতীয় সংগীতকে গ্রহণ করে নিই। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ''আমার সোনার বাংলা'' গানটি জাতীয় সংগীত হিসাবে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে গাওয়া হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। মেহেরপুরের মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। তবে তার আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীকার ও স্বাধীনতার দাবিতে পূর্ব বাংলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক অনুষ্ঠানে গানটি পরিবেশিত হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরো ১৯৭১ সালে তো বটেই, এর আরও অনেক আগে থেকেই গানটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও সভা সমাবেশে গাওয়া হয়েছে। গানটি উদ্দীপ্ত করেছে, প্রেরণা জুগিয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এ সকল জাতীয় সংগীত পরিবেশন পরিবেশের ভাবগাম্ভীর্য, সুর, তাল, উচ্চারণ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ আছে। এই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও অন্যান্য শিক্ষকমন্ডলীর উচিত জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় অবশ্যই ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে অবস্থান করা এবং তত্ত্বাবধান করা। আবার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত জাতীয় সংগীত পরিবেশন করানোর ব্যবস্থা করেন না। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বিভিন্ন জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন না। সিনেমা হলগুলোতে জাতীয় সংগীত যথাযথ নিয়মের মাধ্যমে পরিবেশিত হয় না। দর্শকরাও সবাই দাঁড়িয়ে পতাকার বা জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন না। আমাদের প্রতিটি অভিভাবকের উচিত আমাদের প্রতিটি সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে জাতীয় সংগীত শেখানো। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এই জাতীয় সংগীতকে কখনো কেউ যেন অবহেলা না করে, জাতীয় সংগীতকে নিয়ে কেউ যেন কোন ষড়যন্ত্র না করে তার প্রতি সবার সজাগ থাকা উচিত। সবাইকেই নানা অনুষ্ঠানে মাথা উঁচু করে গাওয়া উচিত- ''আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি''।লেখক: সাংবাদিক রায়হান শেখ মোবাইল নং:০১৭৫০-২৮১০৫৯

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.