নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রায়হান শেখ : দেশে এখন অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংখ্যা কত তার সঠিক কোন তথ্য আছে কিনা আমার জানা নেই? নামে বেনামে আর জনপ্রিয় অনেক অনলাইন নিউজ পোর্টালের নাম এবং ডিজাইন নকল করে নতুন অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু হয়েছে। অনেকে এখন অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু করে সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতা করছেন।
ফেসবুক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সাংবাদিক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়ে তরুণ-তরুণীসহ অনেকের সাথে করছেন প্রতারনা। সাংবাদিক নিয়োগের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে।
দেশের প্রথম শ্রেণি ও শীর্ষ অনলাইন নিউজ পোর্টালে আপলোড হওয়া নিউজের বানান, দাড়ি, কমা ঠিক রেখে ঐ নিউজ পোর্টালের কথিক সম্পাদক, সংবাদকর্মী ও ডেস্কে যারা কাজ করেন তাদের সংবাদ লেখার ক্ষমতা না থাকলেও “কপি টু পেস্ট” করে নিজের নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করে আসছেন।
কোন দিনেও সাংবাদিকতা করেননি অথচ অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক/মালিক হয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে কোন অনলাইন নিউজ পোর্টাল বা প্রিন্ট পত্রিকায় লেখালেখি না করলেও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লোভে রাতারাতি সম্পাদক/মালিক হয়েছেন।
অপরদিকে অনেক টাউট বাটপার ও বখাটে ছেলেরা ফেসবুকে আইডি বা পেজ খুলে বিভিন্ন ধরণের সংবাদ ভিত্তিক সাইট তেরি করেছেন। ফেসবুকে অসংখ্য আইডি ও পেজ খোলা হয়েছে। জেলার প্রকৃত ও দক্ষ সংবাদ কর্মীদের পাঠানো নিউজ তাদের পোর্টাল থেকে কপি করে নিয়ে নিজের নামে পোস্ট করছেন এসব আইডি বা পেজে। অনেক এলাকার নাম, সংবাদের সাথে মিল রেখে নাম দিয়ে এসব পরিচালনা করছেন।
এসব কর্মকান্ড জেলা ও উপজেলার কিছু নামধারি সংবাদকর্মী জড়িত। তাদের কর্মকান্ড নিয়ে জেলার প্রকৃত সংবাদকর্মী ও প্রবীন সাংবাদিকদের মধ্যে শুরু হয়েছে কানাঘুষা। তারা কি করেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি, কেন সংবাদপত্র জগতে এমন প্রশ্নও উঠছে।
এছাড়া বিভিন্ন পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুকে দেখা যায় জেলা, উপজেলা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদদাতা নিয়োগ করা হবে। প্রতিটি বিজ্ঞাপনে মোবাইল ফোন নম্বর ও মেইল দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এসব বিজ্ঞাপন দেখে সাংবাদিক হওয়ার আশায় তরুণ-তরুণীসহ অনেকে যোগাযোগ করেন। তাদের জানানো হয়, ‘আপনারা আসেন কিছু খরচাপাতি (অর্থ) আপনাদের দিতে হবে, আপনাদের সঙ্গে সঙ্গে আইডি কার্ড দেওয়া হবে’। আবার অনেকে বলেন আমারদের নাম্বারে বিকাশ করে টাকা পাঠান, আপনার ঠিকানায় আইডি কার্ড পাঠানো হবে।
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির এ উন্নয়নের সময়ে কিছু কিছু অনলাইন নামসর্বস্ব প্রতিনিধি নিয়োগ করে দিন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর যারা নিউজ পাঠাচ্ছেন তাদের কিছু নিউজ আপলোড হলেই মনে করেন, আমি তো সাংবাদিক ঠিক আছি, এই তো আমার নিউজ আপলোড হয়েছে। আসলে তারা সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেয়ার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। অনেককে আবার নিয়োগ দেয়া হলেও তাদেরকে জড়ানো হচ্ছে প্রতারণামূলক বিভিন্ন ধরণের কর্মকান্ডে।
অভিযোগ উঠছে, প্রতারণা আর চাঁদাবাজি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে অর্থের বিনিময়ে পরিচয়পত্র প্রদান করছে সাংবাদিকতার নামের এই প্রতারক চক্রটি। দিনে দিনে বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম। মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধড়া পড়লেও থেমে নেই কথিত এসব সাংবাদিকদের তৎপরতা। বিব্রত হচ্ছেন পেশাদার সংবাদকর্মীরা।
এ বিষয়ে দৈনিক সাথমাথা প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এসব বিজ্ঞাপন দেখে তরুণ-তরুণীরা বিভ্রান্ত হতে পারে। এর বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
শ্রীঘ্রই এই ধরণের প্রতারক চক্রের চক্রান্ত নস্যাৎ করতে হবে। নয়তো তারা সহজ সরল মানুষকে সাংবাদিকতার লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেবে।
তবে এসব অপসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নিয়ে প্রকৃত সাংবাদিকদের মান-মর্যাদা রক্ষা করতে তথ্য মন্ত্রনালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি দেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন বলে দাবী করেন সচেতন সাংবাদিক মহল।
©somewhere in net ltd.