![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সিঁদুর দান : বিবাহের শেষ রীতি হল বর কন্যার কপালে সিঁদুর লেপন করেন। তবে হিন্দুদের মধ্যে সিন্দুর দান নিয়ম সব জায়গায় একরকম নয়। বাঙালি হিন্দুদের মধ্যেই তিনরকম সিন্দুর দানের নিয়ম লক্ষ করেছি। (১) বিয়ের পরদিন অর্থাৎ বাসি বিয়ের দিন বর কনের সিঁথিতে সিন্দুর তুলে দেয়, (২) বউভাতের দিন বর-কনে ফুলশয্যার জন্য ঘরে ঢোকে এবং বন্ধ-ঘরে বর কনের সিঁথিতে সিঁদুর তুলে দেয় এবং (৩) বর কনের দিকে না তাকিয়ে সিঁথিতে সিঁদুর পরাবে। সিন্দুর দানের মধ্য দিয়েই বাঙালি হিন্দুদের বিবাহ সম্পূর্ণতা পায়। বাঙালি হিন্দু নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদুর পরেন।
সপ্তপদী : সপ্তপদী হচ্ছে পবিত্র আগুনের চারদিকে বর ও কনেকে সাতপাক ঘোরানো। এ সময় পুরোহিতের মাধ্যমে বর-কনেকে মিলিতভাবে দাম্পত্য জীবনে পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য বিয়ের অঙ্গীকার করানো হয়। সাতপাক ঘোরা মাত্র বিবাহ আইনত সম্পন্ন হয়ে যায়। মন্ত্র : প্রথম চরণ – “ওঁ ঈশে একপদী ভব, সা মামনুব্রতা”। অর্থাৎ, প্রথম চরণ ফেলো, তুমি আমার অনুব্রতা হও। দ্বিতীয় চরণ – “ওঁ উজে দ্বিপদী ভব, সা মামনুব্রতা ভব”। অর্থাৎ, দ্বিতীয় চরণ ফেলো, সমস্ত কর্মে আমার অনুব্রতা হও। তৃতীয় চরণ – “ওঁ রায়স্পোষায় ত্রিপদী ভব, সা মামনুব্রতা ভব”। অর্থাৎ, তৃতীয় চরণ ফেলো, সম্পদে হও আমার অনুব্রতা। চতুর্থ চরণ – “ওঁ মায়োভব্যায় চতুষ্পদী ভব, সা মামনুব্রতা ভব”। অর্থাৎ, চতুর্থ পদ ফেলো, সকল আনন্দে আমার অনুব্রতা হও। পঞ্চম চরণ – “ওঁ প্রজাভ্যঃ পঞ্চপদী, সা মামনুব্রতা ভব”। অর্থাৎ, পঞ্চম পদ ফেলো, পুত্রবতী হয়ে হও আমার অনুব্রতা। ষষ্ঠ চরণ – “ওঁ ব্রতেভ্যঃ ষট্ পদী ভব, সা মামনুব্রতা ভব”। অর্থাৎ, ষষ্ঠপদ ফেলো, সকল ব্রতে হও আমার অনুব্রতা। সপ্তম চরণ – “ওঁ সখে সপ্তপদী ভব, সা মামনুব্রতা ভব”। অর্থাৎ, সপ্তম ফেলো, সখ্যতায় হও আমার অনুব্রতা।
কনকাঞ্জলি : বিয়ে করতে যাওয়ার সময় কোথাও বররূপী পুত্র সোনা বা রূপো সহ সতন্ডুল মায়ের আঁচলে দান করার আঞ্চলিক অনুষ্ঠান। উত্তরবঙ্গে কোন কোন সমাজে বরকে যখন বরণ করা হয় ,তখন বর শাশুড়ীর আঁচলে এক মুষ্ঠি পান সুপারী ও একটি টাকা ফেলে দেয় ,এইপ্রথাটিও কনকাঞ্জলি নামে পরিচিত। কন্যা অবস্থায় পিতার কাছে অন্নঋণ থাকে।ঋণী ব্যাক্তিকে দান করা শাস্ত্রে নিষিদ্ধ, তাই বিয়ের আগে পিতার হাতে একমুঠো ধুলো দিয়ে বলে সোনামুঠো নিয়েছিলাম,ধুলোমুঠো দিয়ে শোধ করলাম। কোথাও কোথাও মা মেয়ের ঠিক পেছনেই আঁচল পেতে থাকেন, মেয়ে মাথার ওপর দিয়ে চাল পিছনে ফেলে, মায়ের আঁচলে চাল পড়ে। তিন বার ফেলতে হয়। উভয়েই হাপুস ক্রন্দনরত,আশপাশে প্রচুর সান্তনাদাত্রী। তবে অনেক আধুনিকমনস্করা এই কুৎসিত আচারটিকে বাতিল বা বর্জন করেছেন। সম্প্রতি “মন নিয়ে কাছাকাছি” বাংলা ধারাবাহিকের একটি বিয়ের দৃশ্যে কনকাঞ্জলি আচারটি বাতিল করা প্রদর্শন করেছে।
এছাড়া আছে অধিবাস, নান্দীমুখ, জল সওয়া, ছাদনাতলা, বাসরঘর, বাসি বিয়ে, বধূবরণ, কালরাত্রি, ভাত-কাপড়, বউভাত, ফুলশয্যা, দ্বিরাগমন ইত্যাদি স্ত্রী-আচার।
স্ত্রী-আচারে ভরপুর যৌনতা : হিন্দু বিবাহ জুড়ে যৌনতা এবং যৌনমিলনের প্রস্তুতি বিদ্যমান। শুধু নির্ভেজাল অনুষ্ঠান নয়, প্রতিটি স্ত্রী-আচারে অর্থবহ ইঙ্গিত। যৌনতারই প্রতীক ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। যেমন – ছাউনি নাড়া = আচ্ছাদন নাড়া, অর্থাৎ সতীচ্ছদ নাশ। পরামাণিক = প্রামাণিক বা নাপিত, অর্থাৎ যিনি কন্যার অক্ষত যোনি প্রমাণ করে। পান = সতীচ্ছদ, যোনি।কড়ি = যোনি। লাজ বা খই = যোনি। কুলো = যোনি । ঘি = বীর্য। আংটি = যোনি। মাল্যদান = মৈথুনক্রিয়া। মালা = যোনি। বরের মুকুট = অণ্ডকোশ সহ পুরুষাঙ্গ। কনের সিঁথিমৌড় = স্ত্রীযোনি (উলটো করে পড়লে যেমন দেখায়)। শমী = গর্ভপাতের প্রতিষেধক। শিল বা শিলা = স্ত্রীযোনি। নোড়া = পুরুষাঙ্গ। তত্ত্বের রুইমাছ = পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ ইত্যাদি। এছাড়া বিয়ে-অনুষ্ঠান চলাকালীন বিভিন্ন মন্ত্র পড়তে পড়তে পাত্র এবং পাত্রীর একে-অপরের শরীর ছোঁয়াও যৌনতার দিকে ঠেলে দেওয়া স্পষ্ট।
অগ্নিসাক্ষী করে বা ধর্মীয় বিবাহই হিন্দুসমাজে সর্বাধিক সমাদৃত। এর সঙ্গে আইনের বিবাহও যুক্ত হয়েছে। আইনর যুক্ত হলেও ভারতে বহু মানুষ আইনের বিয়ে করেন না নানা কারণে। তাঁরা শুধু ধর্মীয় আচরণ মেনেই বিয়ে সাঙ্গ করেন। অনেকে আবার শুধুমাত্র আইনের বিয়ে (Registry Marriage) করেই ঘরসংসার শুরু করে দেন। কেউ কেউ অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে এবং আইনের বিয়ে দুটোই করেন। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের আইনি বিবাহ : হিন্দু বিবাহ বিধি (হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৯৫৫) আইন জন্মু ও কাশ্মীর ছাড়া ভারতের অন্য সব জায়গাতেই প্রযোজ্য। কোনও হিন্দু যদি এই আইনের আওতায় পরে এমন কোনও স্থানে বসবাস করেন - তাহলে তিনি বাইরে থেকে এলেও এই আইন তাঁর প্রতি প্রযোজ্য হবে। অহিন্দু, অর্থাৎ, খ্রিস্টান, মুসলমান, ইহুদি, পারসিদের জন্য এই আইন প্রযোজ্য নয়। হিন্দু ও অহিন্দুর মধ্যে বিবাহ একমাত্র সম্ভবপর "সিভিল ম্যারেজ"-এর সাহায্যে। ১৯৫৪ সালের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রদেশ সরকারের নিয়োজিত ম্যারেজ রেজিস্ট্রাররা এই বিয়ে দিতে পারেন।
হিন্দু বিবাহ বিধিতে সামাজিক প্রথা ও নিয়ম অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ সম্পন্ন হলে তাকে বৈধ হিসাবে গণ্য করা হয় এবং সপ্তপদী যেসব বিয়ের একটি অঙ্গ, অগ্নিসাক্ষী করে সপ্তপদী হয়ে যাওয়ার পরেই বিয়ে সম্পূর্ণ হয়েছে বলে ধরা হয়। হিন্দু আইনে কোথাও বলা হয়নি যে, উভয়পক্ষের সন্মতি না-থাকলে বিয়ে অসিদ্ধ হবে। কিন্তু যদি কোনও পক্ষের সন্মতি অসৎ উপায়ে বা জোর করে নেওয়া হয়, তাহলে সেই বিয়ে অবৈধ ঘোষিত হতে পারে।
বৈধ বিবাহের শর্ত: (১) হিন্দু হতে হবে। (২) ন্যূনতম বয়স পাত্রের ক্ষেত্রে ২১ ও পাত্রীর ক্ষেত্রে ১৮ বছর হতে হবে (এর থেকে কম বয়সে বিবাহ করা দণ্ডনীয় অপরাধ, যদিও তার জন্য বিবাহটি অবৈধ নাও হতে পারে)। (৩) বিবাহকালে পাত্রীর অন্য স্বামী বা পাত্রের অন্য স্ত্রী জীবিত থাকলে চলবে না। (৪) পাত্র ও পাত্রী পরস্পরের নিকট আত্মীয় (যা আইনত নিষিদ্ধ) হবেন না। (বিভিন্ন লোকাচার অনুয়াযী এগুলি শিথিলযোগ্য। যেমন দক্ষিণ ভারতের অনেক জায়গায় মামা তাঁর ভাগ্নীকে বিবাহ করতে পারেন)। (৫) উভয়ের কেউই সপিণ্ড হবেন না। কারোর সপিণ্ড সম্পর্ক বিচার করতে হলে প্রথমে দেখতে হবে সেই সেই ব্যক্তিকে প্রথম প্রজন্ম হিসেবে ধরে তার মায়ের দিক থেকে তিনটি প্রজন্ম (Generation) আগে এবং বাবার দিক থেকে পাঁচটি প্রজন্ম আগে কারা ছিলেন। দুজনকে তখনই সপিণ্ড বলা হবে যদি একজনের সপিণ্ড সম্পর্কের কেউ অন্য জনের সপিণ্ড সম্পর্কের হয় অথবা একজন অন্যজনের সপিণ্ড সম্পর্কের কেউ হয়।
নিষিদ্ধ সম্পর্কগুলির বিবরণ : আপন সন্তান। পুত্রবধূ, জামাতা, পিতার স্ত্রী, মাতার স্বামী। সহোদরা ভাই, বোন, মামাতো, মাসতুতো, পিসতুতো, খুড়তুতো, জ্যাঠতুতো সবাই। মেয়েদের মামা, কাকা, ও জ্যাঠা। ছেলেদের মাসি ও পিসি।
হিন্দু বিবাহ বিধিতে অসিদ্ধ (Void) এবং অসিদ্ধ-সম্ভব (Voidable) বিবাহের কথা বলা হয়েছে। বিবাহ অসিদ্ধ হবে যদি প্রাক্বিবাহ বাধা সত্ত্বেও বিবাহ সংঘটিত হয়। এই বাধাগুলিকে আবার দুটো ভাগে ভাগ করা যেতে পারে -- (১) নিরঙ্কুশ বাধা : এই বাধা সত্ত্বেও কেউ বিবাহ করলে সেটি প্রথম থেকেই অবৈধ। যে-কোনো পক্ষ আবেদন জানালে এটি অসিদ্ধ বলে জারি করা হবে। (২) আপেক্ষিক বাধা : এক্ষেত্রে বিবাহ অসিদ্ধ বলে ঘোষিত হতে পারে, যদি কোনও পক্ষ তার জন্য আবেদন করে।
বিবাহকালে পাত্রের অন্য স্ত্রী বা পাত্রীর অন্য স্বামী জীবিত থাকলে চলবে না। পাত্রপাত্রী সপিণ্ড হবে না। পাত্রপাত্রী সম্পর্ক নিষিদ্ধ সম্পর্কের মধ্যে পড়বে না। এছাড়াও অন্য কারণে বিবাহ অসিদ্ধ হতে পারে, যেমন, বিবাহঅনুষ্ঠানের আবশ্যকীয় অংশগুলি পালন না করা। অসিদ্ধ (void) বিবাহের সঙ্গে অসিদ্ধ-সম্ভব (voidable) বিবাহের তফাত্ হল অসিদ্ধ-সম্ভব বিবাহ বৈধ বলে ধরা হবে যদি না কোনও এক পক্ষ এটি অসিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য আবেদন জানায় এবং সেই আবেদন গৃহীত হয়ে বিবাহ বাতিল করা হয়। সেক্ষেত্রে বিবাহের দিন থেকেই এই বিবাহ অসিদ্ধ বলে ধরা হবে। অসিদ্ধ-সম্ভব বিবাহের মূলে চারটি কারণ থাকতে পারে : (১) স্বামী যদি পুরুষত্বহীন হয়। (২) বিবাহের সময়ে কোনও পক্ষ পাগল বা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। (৩) বিবাহে সম্মতি আদায় করেছে শঠতার আশ্রয় নিয়ে বা জোর করে -- এক্ষেত্রে (ক) শঠতা ধরা পরার বা বলপ্রয়োগের (যা শারীরিক মানসিক দুই হতে পারে) এক বছরের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে এবং (খ) বলপ্রয়োগের বা শঠতা আবিষ্কৃত হওয়ার পর আবেদনকারী স্বেচ্ছায় অন্যপক্ষের সঙ্গে সহবাসে লিপ্ত হননি: (৪) বিবাহের পূর্বে পাত্রী যদি অন্য পুরুষের দ্বারা গর্ভবতী হয়ে থাকে। -- এক্ষেত্রে (ক) বিবাহের সময়ে পাত্রীকে গর্ভবতী থাকতে হবে, (খ) গর্ভধারণ ঘটেছে স্বামী ছাড়া অন্য কোনও পুরুষের দ্বারা; (গ) আবেদনকারী বিবাহের সময়ে এই গর্ভধারণের কথা জানতেন না; (ঘ) স্ত্রী গর্ভবতী জানার পর স্বামী স্বেচ্ছায়ে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হননি; (৫) গর্ভবতী জানতে পারার এক বছরের মধ্যে স্বামীকে আবেদন করতে হবে।
বিবাহ-বিচ্ছেদ : অর্থশাস্ত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা উল্লিখিত হয়েছে । স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনের অমিল হলে এবং উভয় পক্ষ রাজি হলে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যেত । স্বামী দুশ্চরিত্র, চিরপ্রবাসী, রাজদ্রোহী বা ক্লীব হলে স্ত্রী তাকে পরিত্যাগ করতে পারত। স্ত্রী যদি পুত্রসন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম হত, তাহলে আট বছর অপেক্ষা করবার পর স্বামী তাকে ত্যাগ করতে পারত । এসব ক্ষেত্রে স্ত্রী ভরণপোষণ দাবি করতে পারত । হিন্দু বিবাহ বিধিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করা চলতে পারে এবং উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে আদালত তা মঞ্জুর করতে পারে। কিন্তু বিবাহ হবার পর থেকে তিন বছরের মধ্যে এই আবেদন করা চলবে না। নিম্নলিখিত কারণগুলি উপযুক্ত কারণ হিসেবে গণ্য করা হবে : হিন্দু বিবাহ আইনের ফলে কোনো পুরুষ স্ত্রীর জীবদ্দশায় অথবা বিবাহ বিচ্ছেদের আগে অন্য বিয়ে করতে পারেন না। তবে এই আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী যে-কোনো হিন্দু বিবাহই এই কারণগুলির জন্য বাতিল করা যেতে পারে – (১) যেখানে স্বামী হীনবল, পুরুষত্বহীন অর্থাৎ ইংরেজিতে যাকে বলে ইম্পোটেন্ট।(২) যেখানে স্ত্রী বিয়ের আগেই অন্য কারোর ঔরসে গর্ভবতী হয়েছেন। (৩) যেখানে পাত্র বা পাত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে হয়, অথবা ২১ বছরের নীচে পাত্র এবং ১৮ বছরের নীচে পাত্রীর অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে হয়। ছলনা, প্রতারণা বা প্ররোচনা করে যেখানে বিয়ে হয়। (৩) যেখানে বিয়ে হিন্দু বিবাহ আইনের পঞ্চম ধারা অর্থাৎ ‘প্রোহিবিটেড ডিগ্রিজ’-এর বাধা লঙ্ঘন করে হয়। ‘প্রোহিবিটেড ডিগ্রিজ’, অর্থাৎ যে বৈবাহিক সম্পর্ক খুব নিকট আত্মীয়, ব্লাড রিলেশনসদের মধ্যে হয়, তা বাতিল করানো সম্ভব।
বিয়ে বাতিল যদি করাতে হয় তাহলে তার জন্য দরখাস্ত বা আবেদন করতে হবে ছলনা বা প্রতারণা আবিষ্কৃত হওয়ার এক বছরের মধ্যে, অথবা সেই প্রভাব বর্তমান থাকাকালীন সময়ে। আদালত এই আবেদন গ্রাহ্য করবেন যদি বিয়ের আগে আবেদনকারী এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল না হয়ে থাকেন এবং সেই আবেদন বিয়ের এক বছরের মধ্যে উপস্থাপন করা হয় এবং ওই প্রতারণা সম্পর্কে জানার পর যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো যৌন সম্পর্ক না হয়ে থাকে।অপরদিকে হিন্দু বিবাহ আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী যে-কোনো বিয়ে ওই আইন প্রবর্তিত হওয়ার আগে বা পরে যখনই সম্পন্ন হোক না-কেন এই কারণগুলির জন্য বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য আবেদন করা যায় – (১) বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার পরে স্ত্রী বা স্বামী নিজের সঙ্গী বা সঙ্গিনী ছাড়া অন্য কোনো পুরুষ বা মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে। (২) বিবাহের পর অত্যন্ত নিষ্ঠুর ব্যবহার করলে।(৩) আবেদন পেশ করার আগে আবেদনকারীকে যদি ২ বছর ধরে তাঁর স্বামী বা স্ত্রী ত্যাগ করে থাকেন। (৪) স্বামী বা স্ত্রীর মস্তিষ্ক বিকৃতির ফলে তাঁর সঙ্গে আবেদনকারীর জীবনযাপন অসহনীয় হয়ে উঠলে। মস্তিষ্কের বিকারের মধ্যে নানান মানসিক ব্যাধি, অপরিণত বুদ্ধি। (৫) মানসিক অসুস্থতা বা অপূর্ণতা বোঝায়। (৬) স্বামী বা স্ত্রী কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্ত হলে। (৭) স্বামী বা স্ত্রী সংক্রামক যৌনব্যাধিতে আক্রান্ত হলে। (৮) স্বামী বা স্ত্রী সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করলে। (৯) ৭ বছর তাঁর কোনো সন্ধান না পেলে।
উপরের কারণগুলি ছাড়াও যেখানে আইন অনুমোদিত বিচ্ছেদের (জুডিশিয়াল সেপারেশন) ডিক্রি জারি হওয়ার পরই স্বাভাবিক বিবাহিত জীবন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় না অথবা সে ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ আবেদন করা সম্ভব। আবার স্বামী যদি বিয়ের পর বলাৎকার বা ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন, অথবা অন্য পুরুষের সঙ্গে ‘অস্বাভাবিক’ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন এবং তা প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রেও স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা রজু করতে পারেন।
হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের ২৪ ধারা অনুযায়ী ইন্টেরিম অ্যালিমনি বা অন্তর্বর্তীকালীন খোরপোশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ যতদিন বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা চলবে, ততদিন স্ত্রীর খোরপোশের জন্য টাকার কী ব্যবস্থা হবে তা আদালত দুই পক্ষের অবস্থা বুঝে নির্ধারণ করবেন। বাদী ও প্রতিবাদীর আর্থিক সংগতির বিবেচনা করে আদালত মামলার খরচের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময় আদালত পাকাপাকি খোরপোশ অর্থাৎ পারমানেন্ট খোরপোশের ব্যবস্থা করে।
ইসলামী বিবাহরীতি : ভারতবর্ষে মুসলিম আইন সৃষ্টি হয়েছে মূলত কোরানের নির্দেশ থেকে (তবে নির্দেশগুলি সংশোধিত হয়েছে বিধানসভা ও লোকসভায় গৃহীত বিল এবং কোর্টের বিভিন্ন রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে)। মুসলিম আইন (শরিয়ত) অনুসারে বিবাহ বা নিকা হল পরস্পরের উপভোগের জন্য এবং বৈধ সন্তান উত্পাদনের জন্য স্বেচ্ছায় চুক্তিবদ্ধ হওয়া। ইসলামী বিবাহরীতিতে পাত্র-পাত্রী উভয়েরই সম্মতি এবং বিয়ের সময় উভয়পক্ষের বৈধ অভিভাবক বা ওয়ালির উপস্থিতি ও সম্মতির প্রয়োজন। ইসলামী বিবাহে দহেজ বা যৌতুকের কোনো স্থান নেই। বিয়ের আগে পাত্রের পক্ষ থেকে পাত্রীকে পাত্রীর দাবি অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বা অর্থসম্পদ বাধ্যতামূলক ও আবশ্যকভাবে দিতে হয়, একে দেনমোহর বলা হয়। এছাড়া বিয়ের পর তা পরিবার পরিজন ও পরিচিত ব্যক্তিবর্গকে জানিয়ে দেওয়াও ইসলামী করণীয়গুলির অন্তর্ভূক্ত। ইসলামে বিবাহ-পূর্ব ও বিবাহ-বহির্ভূত যৌনতা নিষিদ্ধ। ইসলাম ধর্মে বিয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র নারী ও পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্কের অনুমতি আছে। সমকামিতা ও সমকামী বিয়ে উভয়েই প্রকৃতিবিরুদ্ধ ও বিকৃত যৌনাচার হিসাবে ইসলামে অবৈধ ও নিষিদ্ধ|
বিবাহের বিধান : ইসলামী বিধান অনুযায়ী, একজন পুরুষ সকল স্ত্রীকে সমান অধিকার প্রদানের তার চাহিদা অনুসারে সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে (এক স্ত্রীর বর্তমানে আর-একটি বা একাধিক বিবাহ করাকে বহু বিবাহ বলে। ইসলামী আইনে বলা হয়েছে, কেউ যখন বস্তুগত দিক দিয়ে এবং স্নেহ ভালবাসার দিক দিয়ে প্রত্যেক স্ত্রীর সঙ্গে সমান আচরণ করতে পারবে কেবলমাত্র তখনই সে চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পারবে। তবে বাস্তবে এটা কখনও সম্ভব নয়। কারণ যে স্বামী নিজের স্ত্রীকে ভালোবাসে তার দ্বিতীয় বিবাহ করার ইচ্ছেই হবে না। কাজেই পবিত্র কোরান শরিফে বহু বিবাহকে অনুমতি দেওয়ার চেয়ে একটি বিবাহ করাই উত্তম বলে উল্লেখ করেছে। যদিও মুসলিম সমাজে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের আইনগত অধিকার স্বামীদের থাকলেও নারীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিধান নেই। বহুবিবাহের আর্থসামাজিক বাস্তবতা ইসলামে বহুবিবাহের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ইসলাম আবির্ভাবের প্রথমদিকে একটি ভিন্ন আর্থসামাজিক ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক বাস্তবতায়। মূলত বিধবা, এতিমদের নিরাপত্তা ও রক্ষার জন্য ইসলামে এ ধরনের প্রতিকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেই সময়কার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ওহুদের যুদ্ধে বহু মুসলিম পুরুষ শাহাদত বরণ করেন, ফলে স্বাভাবিকভাবে অভিভাবক ও স্বামীহীন নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে। এসব নারীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার জন্য বহুবিবাহ প্রথা চালু হয়।) করতে পারে। আর সমান অধিকার দিতে অপারগ হলে শুধু একটি বিয়ে করার অনুমতি পাবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে একাধিক বিয়ের অনুমতি নেই। একজন মুসলিম পুরুষ মুসলিম নারীর পাশাপাশি ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান নারীকে বিয়ে করতে পারবে। কিন্তু মুসলিম নারীরা শুধু মুসলিম পুরুষের সঙ্গেই বিয়েতে আবদ্ধ হতে পারবে। ইসলামে বিবাহ বাধ্যতামূলক বা ফরজ নয়, এটি একটি নবির সুন্নত। একজন মুসলমান চাইলে বিয়ে না-করে সে সারাজীবন একা একা থাকতে পারবে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বাবলম্বী মুসলমানকে বিবাহ করায় উৎসাহিত করে ইসলাম।
ইসলাম ধর্মে বিবাহ হল বিবাহযোগ্য দুজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রণয়নের বৈধ আইনি চুক্তি। ইসলাম ধর্মে পাত্রী তার নিজের ইচ্ছানুযায়ী বিয়েতে মত বা অমত দিতে পারে। একটি আনুষ্ঠানিক এবং দৃঢ় বৈবাহিক চুক্তিকে ইসলামে বিবাহ হিসাবে গণ্য করা হয়, যা পাত্র ও পাত্রীর পারষ্পারিক অধিকার ও কর্তব্যের সীমারেখা নির্ধারণ করে। বিয়েতে অবশ্যই দুজন মুসলিম সাক্ষী উপস্থিত থাকতে হবে।
চুক্তিভিত্তিক বিবাহ : চুক্তিভিত্তিক বিবাহ পদ্ধতিতে কনে বর ও কনের পরিবারের মধ্যে বিয়ে ও বৈবাহিক রীতিনীতির ব্যাপারে বহুবিধ চুক্তি হত। যেমন মেয়েরা একই ধর্মের হলেও নিজ গোত্র ব্যতীত বিয়ে করতে পারবে না, সন্তান জন্মের পর কনের পিতৃগৃহে প্রতিপালনের জন্য প্রেরিত হবে প্রভৃতি।
যুদ্ধবন্দি বিবাহ : যুদ্ধবন্দি বিবাহ পদ্ধতিতে গোত্রে গোত্রে সংঘটিত লড়াই বা যুদ্ধে এক গোত্র অপর গোত্রের মেয়েদের বন্দি করে নিজেদের বাজারে নিয়ে আসত এবং তাদেরকে স্ত্রী বা দাসী হিসাবে বিক্রি করা হত।
যৌতুকের বিবাহ : যৌতুকের বিবাহ পদ্ধতিতে বিয়ের সময় কনেপক্ষ বরপক্ষকে যৌতুক প্রদান করত।
উত্তরাধিকার সূত্রে বিবাহ : উত্তরাধিকার সূত্রে বিবাহ পদ্ধতিতে পিতার মৃত্যুর পর পুত্র তার মাকে বিয়ে করতে পারত।
ইসলাম আগমনের পর বৈবাহিক প্রক্রিয়ার পূনর্গঠন : ইসলাম আবির্ভাবের পর নবি প্রচলিত বৈবাহিক রীতির পুনর্গঠন করেন। তিনি চুক্তিভিত্তিক বিবাহ এবং যৌতুকের বিবাহের পুনর্গঠন করে পাত্রীকে মত প্রকাশের অধিকার দেন এবং যৌতুক বা পণ পাত্রীপক্ষ থেকে পাত্রকে দেওয়ার পরিবর্তে পাত্রপক্ষ বা পাত্র থেকে পাত্রীকে পণ দেওয়ার বিধান চালু করেন যাকে দেনমোহর নামে নামকরণ করা হয়। এর পাশাপাশি সম্পত্তি বিবাহ ও বন্দিকরণ বিবাহ চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেন। কোরানের অনেক আদেশ-নিষেধ সম্পর্কিত আয়াত তখন এ বিষয়ে নাজিল হয়।
শর্ত : ইসলামী বিবাহে বর, কনে এবং কনের অভিভাবকের(ওয়ালি) সম্মতির(কবুল) প্রয়োজন হয়| বৈবাহিক চুক্তিটি অবশ্যই কনের অভিভাবক (ওয়ালি) এবং বরের দ্বারা সম্পাদিত হতে হবে, বর এবং কনের দ্বারা নয়। ওয়ালি সাধারণত কনের পুরুষ অভিভাবক হন, প্রাথমিকভাবে কনের বাবাকেই ওয়ালি হিসাবে গণ্য করা হয়। মুসলিম বিয়েতে ওয়ালিকেও অবশ্যই একজন মুসলিম হতে হবে। বৈবাহিক চুক্তির সময় চাইলে কনেও সে স্থানে উপস্থিত থাকতে পারে, তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। বিয়ের পর ঘোষণা করে বা অন্য যে-কোনো পন্থায় সামাজিকভাবে তা জানিয়ে দিতে হবে, যাকে "এলান করা" বলা হয়।
রক্তসম্পর্কের ভিত্তিতে বিবাহে নিষেধাজ্ঞা : পুরুষের জন্য : মা, সৎ মা, বোন, সৎ বোন, দাদি (দিদিমা), বড়োদাদি এবং তাদের মাতৃসম্পর্কের পূর্বসূরী নারীগণ; নানি (ঠাকুরমা), বড়োনানি এবং তাদের মাতৃসম্পর্কের পূর্বসূরীগণ; কন্যা সন্তান, নাতনি, নাতনীর কন্যাসন্তান এবং জন্মসূত্রে পরবর্তী প্রজন্মসমূহের নারীগুণ (উদাহরণ -- নাতনীর কন্যার কন্যা ও তার কন্যা ইত্যাদি); ফুফু (পিসি), খালা (মাসি), সৎ মেয়ে, ভাইয়ের মেয়ে, বোনের মেয়ে, দুধ-মা (কোন পুরুষ-সন্তান জন্মের প্রথম দু-বছরের মধ্যে আপন মা ছাড়া রক্ত সম্পর্কের বাইরে যদি কোনো মহিলার স্তন্যদুগ্ধ পান করে থাকে তবে তাকে ওই ছেলে সন্তানের দুধ-মাতা বলা হয়। বিবাহের ক্ষেত্রে আপন মায়ের মতো ওই মহিলার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তাই একজন পুরুষের জন্য তার দুধ-মাতার সঙ্গে এবং দুধ-মাতার বোন ও মেয়ের সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধ।), দুধ-বোন দুধ-মায়ের বোন, আপন পুত্রের স্ত্রী, শাশুড়ি, সমলিঙ্গের সকল ব্যক্তি অর্থাৎ সকল পুরুষ। নারীর জন্যেও বিপরীতভাবে লিঙ্গীয় বিবেচনায় উপরোক্ত একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
মুসলিম বিবাহ বাতিল এবং বিচ্ছেদ : মুসলিম বিবাহ আইনে অনেক অবৈধ বিবাহ বৈধ হয়ে যায় যখন অবৈধতার কারণ লুপ্ত হয়। যেমন, চারটি স্ত্রী বর্তমান থাকলেও কেউ যদি আবার বিবাহ করে, তাহলে সেই বিবাহ অবৈধ (আয়াত-৩, সুরা- নিসা)। কিন্তু সে যদি একজন স্ত্রীকে তালাক দেয় (বা পরিত্যাগ করে), তাহলে তার অবৈধ বিবাহটি বৈধ হয়ে যায়। কোনো নারীর ইদ্দতের সময়কালে তাকে বিবাহ করলে সেই বিবাহ অবৈধ, আবার ইদ্দতের সময়ে পার হয়ে গেলেই সেটি বৈধ বলে গণ্য হবে। [ইদ্দত: স্বামীর মৃত্যুর পর বা বিবাহ-বিচ্ছেদের পর মুসলিম নারী যে সময়ের জন্য (মোটামুটিভাবে তিনমাস বা তার অধিক) একা থাকে]। সুন্নি পুরুষ যদি কোনো মুসলিম নারী বা কিতাবিয়াকে [অর্থাৎ, যে ধর্মে ঈশ্বরপ্রদত্ত বাণী পুস্তকাকারে (বাইবেল, কোরান, ইত্যাদি) আছে - সেই ধর্মাবলম্বীকে] বিবাহ করে, তাহলে সুন্নি আইন অনুসারে সেটি বৈধ হবে। কিন্তু যে ধর্মে পৌত্তলিকতা আছে (যেমন, হিন্দু ধর্ম), সেই ধর্মাবলম্বী নারীকে বিবাহ করতে পারে না। করলে সেটিকে নিয়ম বহির্ভূত বা অনিয়মিত বলে গণ্য করা হবে। শিয়া আইনে এটি শুধু অনিয়মিত নয়, এটি হবে অবৈধ। সুন্নি ও শিয়া -- কোনো আইনেই মুসলিম নারী কোনো অমুসলিম পুরুষকে (সে কিতাবিয়া হলেও) বৈধভাবে বিবাহ করতে পারে না। সুন্নি আইন অনুসারে সেটি হবে নিয়ম বহির্ভূত বিবাহ। শিয়া আইন অনুসারে সেটি হবে অবৈধ। যদিও কোরান ও হাদিসে এ বিষয়ে সমর্থন নেই, তবুও অন্যান্য চুক্তির মত বিবাহ চুক্তিও যাতে ভঙ্গ করা যায়, তার ব্যবস্থা ভারতবর্ষের মুসলিম আইনে রয়েছে। “The Dissolution of Muslim Marriage Act, 1939” অনুসারে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে নারীর পক্ষে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আদালতে যাবার কয়েকটি শর্ত আছে – (১) চার বছর যাবৎ স্বামী নিখোঁজ হলে, (২) দুই বছর যাবৎ স্বামী তাকে অবহেলা করছে বা ভরণপোষণ দেয়নি, (৩) স্বামী সাত বছর বা তার চেয়ে বেশি কালের জন্য কারাদণ্ড পেয়েছে, (৪) তিন বছর যাবৎ কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া দাম্পত্য কর্তব্য করেনি, (৫) দুই বছর যাবৎ স্বামীর মাথা খারাপ কিংবা কুষ্ঠরোগগ্রস্ত বা দুরারোগ্য যৌনব্যাধিতে আক্রান্ত, (৬) বিবাহের সময় স্বামী অক্ষম ছিল এবং এখনও অক্ষম আছে, (৭) ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগে যে বিবাহ হয়েছিল, ১৮ বছর বয়সের আগেই সে বিবাহকে স্বামী অস্বীকার করেছে এবং দাম্পত্য সম্পর্ক ঘটেনি, (৮) স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করছে, যেমন-- তাকে প্রহার করছে বা মানসিকভাবে নিপীড়ন করছে, স্ত্রীকে জোর করে অসামাজিক অবৈধ জীবনযাপন করতে বাধ্য করছে, ধর্মীয় আচরণে হস্তক্ষেপ করছে, স্ত্রীর আইনসংগত অধিকারে বাধা দিচ্ছে, কোরানের অনুশাসন অনুযায়ী সকল স্ত্রীদের সঙ্গে সম-আচরণ করছে না ইত্যাদি।
পুরুষদের ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের একক ইচ্ছার আইন আছে। যে-কোনো পুরুষ তিনবার তালাক উচ্চারণ করে স্ত্রীকে পরিত্যাগ করতে পারে। যার উদ্দেশে তালাক দেওয়া হল, সে সেখানে না-থাকলেও এই বিচ্ছেদ স্বীকৃতি পাবে। তবে তালাক দেওয়া স্ত্রীকে সেই পুরুষ আবার বিবাহ করতে পারবে না। তালাকপ্রাপ্তা সেই মুসলিম নারী যদি অন্য কোনো পুরুষকে বিবাহ করে এবং সেই বিবাহ ভেঙে যায়, তখনই আবার তাকে বিবাহ করা যাবে। শরিয়ত আইনে স্ত্রীকে বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার দেওয়া হয়েছে দুটি ক্ষেত্রে। এক হল জিহার, অর্থাৎ স্বামী যদি নিষিদ্ধ সম্পর্কের কোনো স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হয় এবং তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে রাজি না হয়। সেক্ষেত্রে স্ত্রী আবেদন করলে আদালত বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ দেবে। স্ত্রী স্বামীকে মুক্তিমূল্য (স্বামীর শর্ত অনুযায়ী ‘খুলা’) দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের সন্মতিতেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়, একে বলা হয় ‘মুবারাত’।
ভারতে মোহম্মদ আহমেদ খান ও শাহবানু মামলায় সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়েছিল যে, বিবাহ বিচ্ছেদের পরে যদি মুসলিম নারী যদি নিজের ভরণপোষণ চালাতে পারে, তবে পুরুষের দায়িত্ব ইদ্দতের (ইদ্দতকাল হল বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনটি ঋতুকালের পর্যন্ত আর যদি ঋতুর অবস্থা না থাকে তাহলে তিনটি চান্দ্রমাস পর্যন্ত।) পরেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু সেই নারী যদি নিজের ভরণপোষণ চালাতে সক্ষম না-হয়, তাহলে ক্রিমিনাল কোডের ১২৫ ধারা অনুযায়ী তার ভরণপোষণের দায়িত্ব প্রাক্তন স্বামীর থাকবে । এরপর মুসলিম স্বামীদের প্রাক্তন স্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে নানান বাদ-প্রতিবাদ শুরু হয়। মুসলিম নারী (বিবাহ বিচ্ছেদের পর অধিকার রক্ষা আইন), ১৯৮৬ পাশ করানো হয় সুপ্রিমকোর্টের এই রায়ের প্রযোজ্যতা সীমিত করার জন্য। সাধারণভাবে ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, যদি-না সেই নারী ও তার প্রাক্তন স্বামী যৌথভাবে বা আলাদা ভাবে কোর্টে ঘোষণা করে বা স্বীকৃতি দেয় যে তারা ফৌজদারী আইনের ১২৫ থেকে ১২৮ ধারা মেনে চলবে। প্রসঙ্গত ১২৫ ধারার প্রযোজ্যতা সম্পর্কে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। কলকাতা হাইকোর্ট ২০০১ সালে রায় দিয়েছে যে, মুসলিম মেয়েদের ১২৫ ধারায় আবেদনের পথ খোলাই রয়েছে, কারণ ১২৫ ধারা একটি ধর্ম নিরপেক্ষ আইন। তাঁরা ইচ্ছে করলে এই আইনের সুযোগ নিতে পারবেন। ১২৫ ধারা বেশ কঠোর আইন। এই ধারায় টাকা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলে, সেই টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না দিলে, ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবে। সময়মত টাকা না-দিলে একমাসের বা যতদিন টাকা না-দেওয়া হচ্ছে ততদিন কারাদণ্ডের আদেশ দিতে পারবে।
তালাক : ‘তালাক’ শব্দের অর্থ ‘বিচ্ছিন্ন’, ‘ত্যাগ করা’ ইত্যাদি। ইসলাম ধর্মে আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদকে ‘তালাক’ বলা হয়। স্বামী সর্বাবস্থায় তালাক দিতে পারেন। স্ত্রী শুধুমাত্র তখনই তালাক দিতে পারবেন, যদি বিয়ের সময় এর লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়। মুসলিম পারিবারিক আইনে বলা হয়েছে -- "কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে তাহকে মুসলিম আইনে অনুমোদিত যে-কোনো পদ্ধতিতে ঘোষণার পরই তিনি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন এ মর্মে চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদান করবেন এবং স্ত্রীকেও সেগুলির নকল দেবেন" অর্থাৎ তালাক প্রদান বা ঘোষণার ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়তের প্রবর্তিত পদ্ধতিই হচ্ছে মুসলিম পারিবারিক আইনের পদ্ধতি। তাই শরিয়ত প্রবর্তিত তালাক সংক্রান্ত বিধানাবলি ভালোভাবে জানা ও বোঝা খুবই জরুরি। বিশেষ করে নিকাহ রেজিস্ট্রারদের এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি।
তালাকের উদ্দেশ্য : তালাক দেওয়ার উদ্দেশ্য হল অন্যায়, জুলুম ও নিদারুণ কষ্ট, জ্বালাতন ও উৎপীড়ন ইত্যাদি অশান্তি থেকে মুক্তি লাভ করা। প্রকৃতপক্ষে ইসলামে তালাক প্রদানের যে উদ্দেশ্য তা হল স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে যে সমস্ত অশান্তি সৃষ্টিকারী কারণগুলি আছে তা সংশোধনের চেষ্টা করা। তালাক শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নবি তালাক সম্পর্কে বলেছেন, তালাক অপেক্ষা ঘৃণার জিনিস আল্লাহ তায়ালা আর সৃষ্টি করেননি। হজরত আলি বর্ণিত বাণী হল : তোমরা বিয়ে করো, কিন্তু তালাক দিয়ো না। কেন-না, তালাক দিলে আল্লাহর আরশ (সিংহাসন) কেঁপে উঠে।
পদ্ধতিগত দিক দিয়ে তালাক তিন প্রকার : (ক) আহসান বা সর্বোত্তম তালাক (তালাকে হাসানা তাকে বলে, যে তুহুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহবাস, জায়েজ অবস্থা কিংবা গর্ভাবস্থা নেই। উল্লেখিত অবস্থাসমূহ নেই এমন তুহুর অবস্থায় শুধু মাত্র এক তালাক দিয়ে ইদ্দত পূর্ণ হতে দেওয়া। অর্থাৎ তিন তুহুর অতিক্রম করলে তালাকটি কার্যকর হয়ে যায়। এমতাবস্থায় স্ত্রী ইচ্ছা করলে অন্য যে-কোনো পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে কিংবা তালাক প্রাপ্তা স্ত্রী ইচ্ছা করলে এবং স্বামী চাইলে তারা পুনঃবিবাহে আবদ্ধ হতে পারে। এই ধরনের তালককে বলা হয় তালাকে আহসান।) ; (খ) হাসান বা উত্তম তালাক (হাসান তালাক হল প্রত্যেক তুহুরে একটি করে তালাক দেবে। এই নিয়মে তিন তুহুরে তিন তালাক দেওয়ার নিয়মকে তালাকে হাসান বলে। তালাকে হাসান দিলে অর্থাৎ তিন তুহুরে তিন তালাক দিলে সেই স্ত্রী তার স্বামীর জন্য চিরতরে হারাম হয়ে যাবে। সে তার স্বামীর নিকট রেজাত বা পুনঃবিবাহে আসতে পারবে না। তবে স্ত্রীর যদি অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে বিবাহ হয় এবং দ্বিতীয় স্বামী যদি কোনো দৈবাৎ কারণে তালাক দেয় অথবা মৃত্যুবরণ করে, তবে ইচ্ছা করলে পূর্বের স্বামীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।) এবং (গ) বিদই বা শরিয়া বিরূদ্ধ তালাক (বিদই বা বিদায়াত তালাক হল কোনো ব্যক্তি একসঙ্গে তিন তালাক দিয়ে দেওয়া বা হায়েজ অবস্থায় তিন তালাক দেওয়া অথবা যে তুহুরে সহবাস করেছে সেই তুহুরে তিন তালাক দেওয়া। উল্লেখিত যে-কোনো প্রকারে তালাক দেওয়া হোক না-কেন তালাকদাতা গুনাহগার হবে গর্ভাবস্থা প্রকাশ পাইনি এমন সন্দেহজনক অবস্থায় তিন তালাক প্রদান করাও বিদায়াত বা হারাম। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ তালাক অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত মুসলিম পারিবারিক আইন অথবা শরিয়ত প্রবর্তিত পদ্ধতি কোনোটাই অনুসরণ করা হচ্ছে না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে চেয়ারম্যান, মেম্বার বা কোনো গণ্যমান্য ব্যক্তি তালাকের নোটিশ সই বা স্বাক্ষর করলেই তালাক হয়ে গেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। তারা তালাকের ঘোষণা দেন না, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় তালাকের নোটিশে লেখা হয় এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক ও বাইন তালাক। এমন ধরনের তালাক প্রকাশ্য তালাকে বিদয়ীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং যারা এ ধরনের তালাক অনুষ্ঠিত করে থাকেন তারা সবাই গুনাহগার হবেন।)
ক্ষমতা বা এখতিয়ার গত দিক দিয়ে তালাক পাঁচ প্রকার : (১) তালাকে সুন্নাত (২) তালাকে বাদী (৩) তালাকে তাফবিজ (৪) তালাকে মোবারত ও (৫) খোলা তালাক। কার্যকর হওয়ার দিক দিয়ে তালাক প্রধানত দুই প্রকার : (১) তালাকে রেজি ও (২) তালাকে বাইন। তালাকে বাইন আবার দুই প্রকার : (১) বাইনে সগির এবং (২) বাইনে কবির। মর্যাদা ও অবস্থানের দিক থেকে তালাক চার প্রকার : (১) হারাম (২) মাকরুহ (৩) মুস্তাহাব এবং (৪) ওয়াজিব।বিস্তারিত আলোচনা থেকে বিরত থাকলাম কলেবর বৃদ্ধির আতঙ্কে।
তালাকের পর পুনর্বিবাহ : তালাকের পর স্বামী ও স্ত্র্রী পুনর্বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে তবে তা শর্তসাপেক্ষ। শর্তটি এই যে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে অন্য কারো সঙ্গে শরিয়া অনুসরণপূর্বক যথাযথভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে এবং নতুন স্বামী তালাক প্রদানের পর আগের স্বামীর সঙ্গে পুনর্বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এই শর্তটি কঠিন, কারণ ইসলাম সামান্য অজুহাতে বা রাগের মাথায় উত্তেজনাবশত তালাক দেওয়ার বিপক্ষে।
কোরানের ৬৬৬৬ টি আয়াতের মধ্যে প্রায় ২০০টি আয়াতে মুসলিম আইনের সাধারণ নীতিমালার বর্ণনা আছে। কোরানে উত্তরাধিকার, বিবাহ, তালাক, দেনমোহর, ভরণপোষণ, হিবা, এতিমের মাল রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কিত আইন এবং জুয়াখেলা, সুদ গ্রহণ, নরহত্যা ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কিত আইন প্রায় ৮০টি আয়াতে লিপিবদ্ধ আছে।
বহু তথ্য সরবোরাহ সংক্রান্ত বিষয়াদির জন্য আরো একটি পোস্ট বাড়ানো হলো ।।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:০৪
লাডল্লা পোলা বলেছেন: ক্লান্তিময় দেহে নিদ্রা ভালো হয়। মন্তব্য ও পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৫২
শ্রাবণধারা বলেছেন: বাইছাব মনে হয় এখনও বিবাহ করেননি !!! করিলে বিবাহকে "অবাধ যৌনাচারের বৈধ ছাড়পত্র" মনে হইবে না, মনে হইবে "কঠোর নিয়ন্ত্রনের ক্রোড়পত্র । ফূর্তি নয় রে বাই শুধু যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা ।
তো বাইচাব, "অবাদ যৌনাচার" বিষয়টা কি ? যৌনাচার যেখানে আবাদ করা হয়, সে রকম কিছু? তো শুধু স্বামী বা স্ত্রীর সাথে শারীরিক মিলন "অবাদ" হয় কি করে ? বাই কি স্বরচিত নতুন বাংলা অভিধান রচনা করছেন না কী?
৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪
লাডল্লা পোলা বলেছেন: মানবের জন্য মানবতার সৃষ্টি যদি হয়েছে তবে যৌনতা মানুষের মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত। যৌনতার বিধিবিধান বা শর্ত তৈরির দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সকল উপাদানের লক্ষ্য মানুষের জন্য উন্নততর সুখের সন্ধান, উন্নততর সমাজ ও জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কিন্তু দেখা যায় প্রচলিত বিশ্বাসের ওপর গড়ে ওঠা এসব শর্ত পদে পদে স্বাধীনতাকে খর্ব করছে। পাশ্চাত্যে প্রাপ্তবয়স্ক অবিবাহিত প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে যৌন সম্পর্ককে কোনও অপরাধ হিসেবে দেখা হয় না। অনেক দেশেই নর-নারীর যৌন সম্পর্ক একেবারেই জৈবিক, স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত ব্যাপার । বাংলাদেশে যুবক-যুবতীর জন্য যৌন অবদমনই একমাত্র নিয়তি। কারণ বিয়ের আগে যৌনতা নয়। আইনে বাধা নেই। কিন্তু সমাজে বাধা আছে, ধর্মে বাধা আছে, লালিত মনস্তত্ত্ব ও মূল্যবোধে বাধা আছে। ভাইজান বিয়ে মানিনা সেটা ভুল যেহেতু ইহা দিল্লীর লাড্ডু সেহেতু খেয়েই পস্তাবো কিন্তু আবিবাহিত থেকে কঠোর নিয়ন্ত্রনের মধ্যেদিয়ে জিবনের যেই উন্নতি ও সুখ সাধন করতে পারবেন বিয়ের পর সেটা কেবলই ক্রোদপত্র ও যন্ত্রণা। ভাইজান বহু প্রচলিত সীলমারা যখন তখন শারীরিক মিলনকে (বিয়ে) এখানে অবাদ অর্থে বুঝানো হয়েছে । অতিশয় পুনঃরায় পাঠের অনুরোধ রইলো।
মন্তব্যে জন্য ধন্যবাদ ।
৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: খুব মনযোগ দিয়ে লিখাটি পড়লাম । সংক্ষেপে খুব সুন্দর করে প্রাঞ্জল ভাষায় হিন্দু ও মুসলিম বিবাহ রীতি তুলে ধরা হয়েছে । লিখাটি প্রিয়তে গেল । এর বহুল প্রচার কাম্য । বিবাহ সম্পর্কিত খুটি নাটি অনেক বিষয় অনেকেই জানেন না এমনকি শিক্ষিতদের মধ্যেও নয় । পোস্ট এর টাইটেল দেখে অনেকেই এটাকে হয়ত হালকা ভাবে নিয়েছেন, আমিও গতকাল একে প্রথম দর্শনে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে গিয়েছিলাম সময় অভাবে । (সম্ভবত নিকটি দর্শনেও এই লিখায় প্রবেশে পাইনি উৎসাহ , ভেবেছিলান এমন একটি নিকের ভিতরের লিখা হয়ত এমনই হবে, এমন সুন্দর মুল্যবান লিখা নাম ও নিকটা আরো একটু অন্যরকম হলে নামের নামের সাথে ব্যক্তিত্বের প্রকাশটা হতো দারুনভাবে , যাহোক , এটা আপনার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় ।) আজ এসে খুটি নাটি পড়লাম বিষদভাবে । এলিখাটির একটি কপি বাংগালী হিন্দু মুসলিম পরিবারে থাকা উচিত বলে মনে করি , তাহলে হয়ত ছোট খাট মতবিরোধ দুর করে দাম্পত্য জিবনে সুখ শান্তি বজায় রাখা রাখা যাবে ধনী গরীব নির্বিশেষে ।
ধন্যবাদ শুভেচ্ছা রইল ।
৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:৫৮
লাডল্লা পোলা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। মূলত সামাজিক ব্যধিগুলো দূর করার জন্যই লিখা মাত্র।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৩৭
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: পড়তে পড়তে হাপায় গেছি! ঘুম ধরছে! ঘুমাই শুভ রাত্রি।