![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুব্রত দেব নাথ ।। মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হয় কীভাবে! নিছক চুরি সন্দেহে রাজনকে ঠান্ডা মাথায় যেভাবে হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে; যেভাবে ওই নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়েছে; যেভাবে মৃত্যুর আগে শিশুটির পানি খাওয়ার আকুতি উপেক্ষা করে ‘ঘাম খা’ বলা হয়েছে; যেভাবে তার কান্না ও কাতরানোর বিপরীতে ঠাট্টা-তামাশা করা হয়েছে; তাতে করে হত্যাকারীদের পৈশাচিক মনোবৃত্তি সম্পর্কে আমরা নিঃসন্দেহ।
সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকালে খন্ডকালীন সবজি বিক্রেতা শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে কয়েকজন পাষন্ড যেভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা আমাদের যেমন ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত, তেমনই স্তম্ভিত না করে পারে না।
এরা সভ্য সমাজে বাস করলেও পশুরও অধম, আমরা নিশ্চিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী যে ঘৃণা ও ধিক্কারের ঝড় উঠেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির যে গণদাবি উচ্চারিত হচ্ছে, আমরা তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। বস্তুত এর বিকল্পও নেই। শিশু রাজনের হত্যাকারীরা যদি বিন্দুমাত্র ছাড় বা অনুকম্পা পায়, সেটা হবে মানবতার জন্য গ্গ্নানিকর ও অপমানজনক।
একই সঙ্গে শিশুটির হত্যাকান্ড যে আমাদের অনেক প্রশ্নের সামনেও দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, স্বীকার করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে হত্যাকারীরা তাদের ঔদ্ধত্যের চূড়ান্ত দেখালেও এর মধ্য দিয়ে খবরটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম, পুলিশ, প্রশাসন ও বৃহত্তর জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, স্বীকার করতেই হবে।
আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, শিশু রাজনকে যখন পিটিয়ে মারা হচ্ছিল, তখন ওই জনপদে একজনও কি ছিলেন না যিনি এর প্রতিবাদ করতে পারতেন? মানুষের কাছে মানুষের জীবনের দাম কি এতটাই কমে গেছে? হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বুধবার সকালে; ফেসবুকে ভিডিওচিত্রটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শনিবার। ‘প্রভাবশালী’ হত্যাকারীদের রোষানলে পড়ার ভয় থাকলেও এই তিন দিনের মধ্যে কেউ কি পারতেন না থানায় খবর দিতে?
এখন তো হাতে হাতে সেলফোন; তাদের কেউই কি এই হত্যাকাণ্ডের খবর উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে দেওয়ার সামাজিক দায় অনুভব করলেন না! স্থানীয় থানার পুলিশও কেন তাদের এলাকায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের খবর ফেসবুক সূত্রে পেল, তাও ভাববার বিষয়। রাজনকে কেন চতুর্থ শ্রেণির পর আর পড়াশোনা না করতে পেরে খন্ডকালীন সবজি বিক্রেতায় পরিণত হতে হয়েছিল, তাও কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র, শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজের জন্য প্রশ্ন হিসেবে থাকতে পারে।
হত্যাকাণ্ডের হোতা ‘সৌদি প্রবাসী’ কামরুল ইসলামের নিষ্ঠুরতার কারণও আমাদের সমাজপতিদের অনুসন্ধান করতেই হবে। কয়েক দিন আগে চট্টগ্রামে হরিণ হত্যার ভিডিওচিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন যিনি, তিনিও ‘প্রবাসী বাংলাদেশি’। সাম্প্রতিককালে অর্থবিত্তশালী প্রবাসীদের আরও কিছু নিষ্ঠুরতার চিত্র সংবাদমাধ্যমে আসছে।
রেমিট্যান্সের সঙ্গে সঙ্গে কি বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বর্বরতাও দেশে প্রবেশ করছে? আমাদের ভাবতেই হবে। তবে সবকিছুর আগে রাজনের হত্যাকারীদের সবাইকে শনাক্ত, আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মন্দের ভালো যে, লাশ গুমের আয়োজন করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে আটক হয়েছেন একজন হত্যাকারী।
অন্তত আরও তিনজনকে স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা গেছে। এদের একজন ইতোমধ্যে সৌদি আরবে পালিয়ে গিয়েও সেখানে আটক হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, কর্তৃপ আন্তরিক হলে অন্যদেরও অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা কঠিন নয়। রাজনের খুনিরা ছাড় পাবে না বলে সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। শুধু প্রতিশ্রুতি বা প্রত্যয় নয়; আমরা কাজেই এর প্রমাণ দেখতে চাই।
সুব্রত দেব নাথ ।। মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হয় কীভাবে! নিছক চুরি সন্দেহে রাজনকে ঠান্ডা মাথায় যেভাবে হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে; যেভাবে ওই নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়েছে; যেভাবে মৃত্যুর আগে শিশুটির পানি খাওয়ার আকুতি উপেক্ষা করে ‘ঘাম খা’ বলা হয়েছে; যেভাবে তার কান্না ও কাতরানোর বিপরীতে ঠাট্টা-তামাশা করা হয়েছে; তাতে করে হত্যাকারীদের পৈশাচিক মনোবৃত্তি সম্পর্কে আমরা নিঃসন্দেহ।
সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকালে খন্ডকালীন সবজি বিক্রেতা শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে কয়েকজন পাষন্ড যেভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা আমাদের যেমন ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত, তেমনই স্তম্ভিত না করে পারে না।
এরা সভ্য সমাজে বাস করলেও পশুরও অধম, আমরা নিশ্চিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী যে ঘৃণা ও ধিক্কারের ঝড় উঠেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির যে গণদাবি উচ্চারিত হচ্ছে, আমরা তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। বস্তুত এর বিকল্পও নেই। শিশু রাজনের হত্যাকারীরা যদি বিন্দুমাত্র ছাড় বা অনুকম্পা পায়, সেটা হবে মানবতার জন্য গ্গ্নানিকর ও অপমানজনক।
একই সঙ্গে শিশুটির হত্যাকান্ড যে আমাদের অনেক প্রশ্নের সামনেও দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, স্বীকার করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে হত্যাকারীরা তাদের ঔদ্ধত্যের চূড়ান্ত দেখালেও এর মধ্য দিয়ে খবরটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম, পুলিশ, প্রশাসন ও বৃহত্তর জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, স্বীকার করতেই হবে।
আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, শিশু রাজনকে যখন পিটিয়ে মারা হচ্ছিল, তখন ওই জনপদে একজনও কি ছিলেন না যিনি এর প্রতিবাদ করতে পারতেন? মানুষের কাছে মানুষের জীবনের দাম কি এতটাই কমে গেছে? হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বুধবার সকালে; ফেসবুকে ভিডিওচিত্রটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শনিবার। ‘প্রভাবশালী’ হত্যাকারীদের রোষানলে পড়ার ভয় থাকলেও এই তিন দিনের মধ্যে কেউ কি পারতেন না থানায় খবর দিতে?
এখন তো হাতে হাতে সেলফোন; তাদের কেউই কি এই হত্যাকাণ্ডের খবর উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে দেওয়ার সামাজিক দায় অনুভব করলেন না! স্থানীয় থানার পুলিশও কেন তাদের এলাকায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের খবর ফেসবুক সূত্রে পেল, তাও ভাববার বিষয়। রাজনকে কেন চতুর্থ শ্রেণির পর আর পড়াশোনা না করতে পেরে খন্ডকালীন সবজি বিক্রেতায় পরিণত হতে হয়েছিল, তাও কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র, শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজের জন্য প্রশ্ন হিসেবে থাকতে পারে।
হত্যাকাণ্ডের হোতা ‘সৌদি প্রবাসী’ কামরুল ইসলামের নিষ্ঠুরতার কারণও আমাদের সমাজপতিদের অনুসন্ধান করতেই হবে। কয়েক দিন আগে চট্টগ্রামে হরিণ হত্যার ভিডিওচিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন যিনি, তিনিও ‘প্রবাসী বাংলাদেশি’। সাম্প্রতিককালে অর্থবিত্তশালী প্রবাসীদের আরও কিছু নিষ্ঠুরতার চিত্র সংবাদমাধ্যমে আসছে।
রেমিট্যান্সের সঙ্গে সঙ্গে কি বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বর্বরতাও দেশে প্রবেশ করছে? আমাদের ভাবতেই হবে। তবে সবকিছুর আগে রাজনের হত্যাকারীদের সবাইকে শনাক্ত, আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মন্দের ভালো যে, লাশ গুমের আয়োজন করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে আটক হয়েছেন একজন হত্যাকারী।
অন্তত আরও তিনজনকে স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা গেছে। এদের একজন ইতোমধ্যে সৌদি আরবে পালিয়ে গিয়েও সেখানে আটক হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, কর্তৃপ আন্তরিক হলে অন্যদেরও অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা কঠিন নয়। রাজনের খুনিরা ছাড় পাবে না বলে সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। শুধু প্রতিশ্রুতি বা প্রত্যয় নয়; আমরা কাজেই এর প্রমাণ দেখতে চাই
লেখক: সুব্রত দেব নাথ
২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৪০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শুধু প্রতিশ্রুতি বা প্রত্যয় নয়; আমরা কাজেই এর প্রমাণ দেখতে চাই ...
লেখাটা রিপিট হয়েছে!!! একটা অংশ মুছে দিন!!
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:০০
প্রামানিক বলেছেন: যে দেশে পুলিশকে ৬ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে অপরাধী পালিয়ে সৌদী যায় সে দেশে বিচার কি হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়- - --