![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুব্রত দেব নাথ || ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রবিববার হিন্দুপল্লিতে হামলা, নির্যাতন ও প্রতিমা ভাঙচুরের পর এবার দেওয়া হয়েছে বাড়িঘরে আগুন। এই পরিস্থিতি আমাদের দেশ ও রাষ্ট্রের একটি ভয়ঙ্কর অবস্থা আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। যা আমাদের জন্য ভীষণ নেতিবাচক।
গত ৩০ অক্টোবর ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে প্রায় ১৫টি মন্দির ও ৬০-৭০টি হিন্দু বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার এই খবর এক স্থানেই আর সীমাবদ্ধ থাকেনি, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তড়িৎ গতিতে আরো বেশ কয়েকটি জেলায় একই ঘটনা ঘটতে থাকে। হবিগঞ্জের মধুপুরে মন্দির এবং বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের একটি মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হামলাকারীদের বিচার দাবিতে সারা দেশে সোচ্চার হয় মানুষ। হিন্দু সম্প্রদায়ে বিভিন্ন সংগঠন রাজপথে নামে। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা। সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারাও বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়। কিন্তু কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই ঘটনার পাঁচদিন পর আবারো নাসিরনগরে আগুন দেয়া হয় হিন্দুদের বাড়িতে। উপজেলার বণিকপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নমঃশূদ্রপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও ঠাকুরপাড়া নতুন করে সহিংসতার শিকার হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নাসিরনগরের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।
নাসিরনগরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পরও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, মন্দিরে একের পর এক হামলা চালানো যে উদ্দেশ্যমূলক তা সহজে অনুমেয়। এসব ঘটনা ঘটার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। এর আগে ফেসবুকের পোস্টকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে রামুর বৌদ্ধ বসতিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল। একইভাবে ফেসবুকের কথিত পোস্টকে কেন্দ্র করে যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, তখনই প্রশাসনের আগাম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। আক্রান্তদের অভিযোগ, পুলিশকে একদিন আগে হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হলেও তারা কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসন আবার ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে সমাবেশের অনুমতি দেয়, যা উত্তেজনা বাড়াতে সহায়তা করে। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। উল্লেখ্য, এ বছরের গোড়ার দিকে একই এলাকায় এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হামলা চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছিল। একের পর এক এ ধরনের ঘটনা থেকে সহজেই ধারণা করা যায় যে, একটি উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী ওই অঞ্চলে সক্রিয়। স্থানীয় প্রশাসনের সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকার কথা নয়। কিন্তু তাদের যথোপযুক্ত ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। সংখ্যালঘুদের ওপর এরকম আক্রমণ জাতীয় সংহতির ওপর বিরাট আঘাত। এই হামলার ফলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু স¤প্রদায় আরো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে না পারলে বাংলাদেশে মিলেমিশে বসবাসের যে সংস্কৃতি তা বাধাগ্রস্ত হবে এবং মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা হারাবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নাসিরনগরের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে আইনের আওতায় আনা হোক।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১
মিঃ বলদ বলেছেন: নিশ্চিতে ঘুমানো উচিত আমাদের। আশহত হইয়েন না। আমগো হাসিনা আপা আছেন না?
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৯
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সহমত