নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিরাজগঞ্জে জন্ম, পৈতিৃক নিবাস মাগুরা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি। সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলাম। কবিতা, গল্প ও ফিচার লিখি।

সুদেব চক্রবর্তী

ঢাকা।

সুদেব চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেটিয় সম্পর্ক

৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫২

বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট খেলার সেই দিনটি এখনো চোখের সামনে ভাসে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মত দুই বাঙালি অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় ও সৌরভ গাঙুলি টস করতে নামেন। প্রতিদ্বন্দিতা থাকলেও দারুন প্রীতি ছিল উভয় সমর্থকদের মধ্যে। এবং বলা চলে খোদ ভারতের পরে একমাত্র বাংলাদেশেই তাদের সমর্থক বেশি। তাহলে সেই সম্পর্ক তিক্ততায় রূপ নিলো কেন ? কারণ হিসেবে কতকগুলো বিষয় তুলে ধরছি-
১. ভারত বেশকিছু কাল ধরেই বাংলাদেশকে খাটো করে দেখেছে। বাংলাদেশের মাটিতে তাদের সিরিজ খেলতে দারুন অনিহা, পাশাপাশি অপমানসূচক মন্তব্য করেছে। এমনকি বাংলাদেশের সাথে খেলার কথা বললেই তারা তাচ্ছিল্য করে অপমান করেছে। আবার মাঠেও ভারতীয় খেলয়াড়রাই বাংলাদেশি খেলয়াড়দের সাথে অসৌজন্য দৃষ্টি দিয়ে তাকায়।
২.২০০৭ বিশ্বকাপে ভারত বাংলাদেশের কাছে হেরে বাদ পড়লে তাদের টিভি চ্যানেলগুলোর দর্শক কমে যায়, তাই এবারের বিশ্বকাপে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নীল নকশা প্রণয়নে ঐ টিভি চ্যানেলগুলোও ভূমিকা রাখে। আইসিসিতে আধিপত্য থাকায় ম্যাচের ভেন্যু, তারিখ, আম্পায়ার পরিবর্তনসহ মাঠে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত অব্যাহত রেখে ভারত প্রতারণা করে বাংলাদেশকে পরাজিত করে।
৩. এবারের বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় মিডিয়া আমাদেরকে খাটো করে বিজ্ঞাপন তৈরি করে, যদিও বাংলাদেশেও তার জবাব দিতে পাল্টা বিজ্ঞাপন বানায়, যেন একে অপরকে খাটো করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা ! যা ভারতই প্রথম শুরু করেছে।
৪. ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটাররাও পিছিয়ে নেই আমাদেরকে অপমান করতে। তারাও বিভিন্ন সময়ে আমাদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেছে যা এদেশের মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি করেছে।
৫. বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরমেন্স যথেষ্ট ভাল ছিল। পাকিস্তানকে শূণ্য হাতে ফেরত পাঠিয়েছে। এতকিছুর পরও চলতি সিরিজের আগে অহংকারী মেজাজে আবারও বি-টিম পাঠাতে চেয়েছে তারা, অবশেষে বোর্ডের চাপে ধোনী-কোহেলিরা আসতে বাধ্য হয়। বলা চলে বাংলাদেশকে এখনো ওরা খাটো করে দ্যাখে।
৬.সর্বশেষ ভারতীয় দর্শক সুধীর গৌতমকে নিয়ে মিথ্যাচার করে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করেছে।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে মনে রাখি। কিন্তু প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে কতটা বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে ভারত ? সীমান্তে হত্যা, একতরফা বানিজ্য সুবিধা আদায়, পানি বিষয়ক একতরফা চুক্তি, কৌশলে আমাদের রাজনীতিবিদদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সুন্দরবন ধ্বংসের পায়তারাসহ বিভিন্ন আচরণ খুবই হিংসাত্বক। তবে রাজনৈতিক নানা বিরোধ থাকলেও ক্রিকেটের কল্যানে বাংলাদেশ ও ভারতের দারুন সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ক্রিকেটেও ভারতের নোংরামি আজ দু দেশের সমর্থকদের সামনাসামনি দাঁড় করিয়েছে। আবার দেখুন ভারত মনে করে তারা বাংলাদেশকে সৃষ্টি করেছে। আজকে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতে গেলেও ভারতীয়রা এসব প্রসঙ্গ টেনে আমাদের ছোট করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি ভারত না থাকলেও আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পারতাম। হয়তো নয় মাসের পরিবর্তে আঠারো মাস লাগত। কিন্তু তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে বলে আমাদের নিয়ে যাচ্ছে তাই করবে তা কি মেনে নেয়া যায় ? নিশ্চয়ই না। আর এ কারণেই আজ বাংলাদেশিরা যেমন পাকিস্তানকে ঘৃণা করে তেমনি ভারতকেও অপছন্দ করে। এটা কোন দেশের জন্যই সভ্যজনক নয়। তবে এই অবস্থার জন্য ভারতই দায়ী।
তবে বাংলাদেশ কতটা এগিয়েছে তা অন্তত ভারত টের পাচ্ছে। এবং বাংলাদেশের উন্নতি হঠাৎ নয়, বরং ধারাবাহিক প্রক্রিয়া ছিল, মাঝে মাঝে ছন্দপতন হয়েছে ঠিক, কিন্তু বাংলাদেশ একেবারেই ফেলনা ছিল না। বাংলাদেশেরও কেউ একটানা বিশ্বসেরা হতে পারে, বিভিন্ন সময়ে রেকর্ড গড়তে পারে তা এখন প্রমাণিত। যাহোক ভারতের অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। পুঁজিবাদের আগ্রাসী মন্ত্রে ভারত ক্রিকেট বিশ্বে আধিপত্য দেখাতে মরিয়া এখন। কিন্তু মাঠের খেলার ফলাফল, ওয়ানডে র‌্যাংকিং, একে একে পরিবর্তন হবে । কিন্তু ক্রিকেট কেন্দ্র করে উভয়ের প্রতি উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হতে কত সময় লাগবে ? কারণ খেলা একটি বিনোদন, একটি শিল্প, একটি প্রতিযোগিতা। আর সেটা হোক সুস্থ ধারায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.