![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।
আমার কথাটা অত্যন্ত রূঢ় মনে হতে পারে। কিন্তু যা ঘটেছে এবং যা ঘটতে যাচ্ছে তার নিরিখে কি খুবই অপ্রাসংগিক ? যারা আমার এই লেখাটা পড়বেন তারা অন্তত দয়া করে আমার এই প্রশ্নের উত্তরটা দিবেন আশা করি।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অপশক্তি হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলাম এবং সদ্য গজিয়ে উঠা হেফাজতে ইসলাম এর রাজনৈতিক মতাদর্শের কথা আমরা সবাই জানি। প্রতিক্রিয়াশীল এই দল দুটো নারীর অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে দেশকে পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টায় সর্বদা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। সর্বশেষ হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফা দাবীতে নারী নীতির বিরোধীতা করে দেশে মধ্যযুগীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার হীন মনোবৃত্তির প্রকাশ ঘটিয়েছে। এই দুটি দল সুযোগ পেলেই যে কোন প্রকারে নারীদের চরিত্র হননের চেষ্টায় লিপ্ত হবে এমনটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সমাজের সর্বস্তরের প্রগতিশীল ব্যক্তিমাত্রই এর বিরোধতা করছে এবং করবেও, এটা খুবই স্বাভাবিক।
কিন্ত প্রথম আলোর মতো একটি প্রগতিশীল পত্রিকা যখন এদের মতোই নারীর চরিত্র হননে লিপ্ত হয়, তখন এটাকে শুধু ভুলের মাপকাঠিতে বিচার করলেই কি সব চুকে বুকে যাবে ? হাসনাত আবদুল হাইয়ের মতো লেখকরা যখন একাজে কলম ধরেন, তখন একজন লেখক হিসেবে আমার নিজকে বড় তুচ্ছ, বড় হীন মনে হয়। মানছি প্রথম আলো তাদের এ ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছে, তাদের পত্রিকায় প্রকাশিত হাসনাত আবদুল হাইয়ের লেখা গল্পটাও প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু তাতে কি হয়েছে ? নারীর যে সম্মান এতে ভুলুন্ঠিত হয়েছে তা কি আর ফিরে আসবে ? যে জঘন্য ও হীনভাবে ঐ গল্পে নারীকে উন্মোচিত করা হয়েছে, তা যে কোন বর্বরতাকে ছাড়িয়ে গেছে।
তবে কি আমরা ঐ জায়গাটায় ফিরে যাব যে, যিনি গল্পটা লিখেছেন তিনি একজন পুরুষ আর যিনি পত্রিকার প্রকাশক, তিনিও একজন পুরুষ এবং দুজনই ঐ পুরুষ যারা লোলুপ হায়েনার মতো সুযোগ খুঁজে নারীর ইজ্জত লুন্ঠনের? একটা কথা সত্যি যে, যারা নারীর ইজ্জত-আব্রু নিয়ে ব্যবসা করে তাদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ব্যবসা হচ্ছে পত্রিকার মাধ্যমে নারীর ইজ্জত হনন। প্রথম আলো সেই সহজ ব্যবসাটা করে অত্যন্ত হীন মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে, শুধু ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে যে অপরাধের সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব নয়।
জানিনা প্রথম আলো কাকে বা কোন গোষ্ঠীকে খুশী করার জন্য একাজটি করেছে। এ প্রসংগটি টানলাম। কারণ বর্তমানে ঘোরপ্যাঁচ রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে নারীদের নিয়ে অত্যন্ত সুকৌশলেএকটি ইস্যূ তৈরী করে দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এদেশের সুযোগ সন্ধানী কিছু রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম সেই ইস্যূতে রসদ যোগাচ্ছে। লেখক হাসনাত আবদুল হাইয়ের কথাটা আমি জানিনা। তবে প্রথম আলোকে আমরা এই ইস্যূতে রসদ যোগানদারদের বাইরে ভাবতাম। কিন্তু আমাদের সেই ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করেছে প্রথম আলো নিজে।
এখন কি এটা ভাবা খুব অস্বাভাবিক যে, জামায়াতে ইসলাম, হেফাজতে বাংলদেশ, লেখক হাসনাত আবদুল হাই এবং প্রথম আলো-- এরা সবাই আদর্শিক ভাবনায় এক ও অভিন্ন। প্রতিক্রিয়াশীল গণমাধ্যমের তালিকায় প্রথম আলো যেমন নতুন সংযোজন তেমনি লেখক হিসেবে হাসনাত আবদুল হাইও তাই। এদেশের প্রগতিশীল নারী সমাজের আন্দোলনের লক্ষ্যশক্তি হিসেবে এখন থেকে যোগ হলো লেখক হাসনাত আবদুল হাই ও প্রথম আলো।
©somewhere in net ltd.