নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার একটি লেবেনচুস চাই বাবা !

২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১৮

আমার একটি লেবেনচুস চাই বাবা !





অধো আধো বোলে মিষ্টি সুরে

বায়না ধরেছিলে বাবার কাছে

সেই কবে, মনে পড়ে ?



‘আমার লেবেনচুস চাই বাবা।’



বাবার পকেটে তখন মায়ের দেয়া ফর্দ

আর টাকার দোস্তর টানাটানি।

তবু একটি ফুটবল মাঠের মতো

প্রশস্ত হয়ে গেল বাবার বুকখানি।



সোনামণি তার বায়না ধরেছে

পাঁচ পয়সার লেবেনচুস খাবে

বাজারফর্দ না হয় মিটবে না আজ

তাতে কি এমন হবে ?



ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে সোনামণি অপেক্ষায় থাকে

কখন তার বাবা ফিরবে হাট থেকে।

অন্য কোনদিন তো এরকম দেরী হয়না !

ধ্যাৎ, আজ যেন ঘুমও আমার দু’চোখে দিয়েছে ধর্ণা।



অবশেষে বাজারের থলে হাতে ঘটে বাবার আগমন

সোনামণির ঘুম জড়ানো চোখে আনন্দের বিস্ফোরণ।

পকেট থেকে বাবার হাত বের হতে না হতেই

ছো মেরে নিয়ে লেবেনচুস মুখে পুড়ে নেয় সোনা।



চোখেমুখে তার উপচেপড়া খুশীর ঝিলিক

এতটুকু মুখ, তার ভিতর লেবেনচুস

দেখতে লাগছে যেন বইয়ের কীট।



বাবা চেয়ে দেখেন আর ভাবেন

এ শুধু সুখ নয়, স্বর্গ থেকে নেমে আসা প্রশান্তির খোশ

এ মুহূর্তে তিনি সেটা তার সন্তানের হাতে তুলে দিয়েছেন।

যুদ্ধক্ষেত্রে লক্ষ সৈনিকের বিপরীতে একাই তিনি যোদ্ধা

জয় করে এনেছেন তার সন্তানের সুখ

তিনি এখন সুখী পিতা।





আজ বহুকাল পর তার সেই সোনামণি

তারই অবস্থানে দাঁড়িয়ে।

সেই প্রশস্ত খেলার মাঠ আর

সেই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে ছিটকে পড়েছেন বাবা।

বিছানায় কড়িকাঠের শরীর

নিষ্পলক চেয়ে থাকা উঠোন কোণ

ক্রমশ: ছোট হয়ে আসে তার চোখের সামনে

তবু অপেক্ষায় থাকেন বাবা

তার সোনামণি একটিবার এসে বসবে তার পাশে।



লেবেনচুস দেয়ার ক্ষমতা আজ আর তার নেই

তবে সুযোগ পেলে তিনিই বায়না ধরবেন

একখানি লেবেনচুসের জন্য কিংবা

তার চেয়েও দরকারী চশমার কাঁচটি ঠিক করে দেয়ার জন্য।



কিন্তু এত সময় কোথায় তার সোনামণির

বৃদ্ধ বাবার প্রলাপ শুনার ?

তার তো সময় বাঁধা ঘড়ির কাঁটার সাথে

বিজনেস ডিলটা সময়মতো সই করতে না পারলে

নতুন ব্যবসাটা হাতছাড়া হয়ে যাবে।

পাঁচতলা বাড়ির ফাউন্ডেশনের কাজটা আজই শেষ করতে হবে।

স্ত্রীর বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টিতে আজ না গেলেই নয়।

অতসব ব্যস্ততার মাঝে তার চেয়ে এই ভালো

বাবাকে খাঁচায় পুরে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা।





বাবা, আমি তোমার সেই খুকী

লেবেনচুসের বায়না ধরতাম তোমার কাছে অহরহ

তোমার ক্ষমতা-অক্ষমতার কথা না ভেবেই।

তুমিও আমার সেই বায়না পূরণ করতে

বুকের রক্ত দিয়ে হলেও।



কেউ হয়তো আজ তোমাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছে জঞ্জাল ভেবে

অথবা ভাগ্য-বিধাতা তোমার প্রতি আর একটু প্রসন্ন হয়ে

হয়তো মুক্তি দিয়েছে তোমাকে বৃদ্ধাশ্রমের বন্দিত্ব থেকে।

তবে তুমি যেখানেই থাকো না কেন ?

তোমার কাছে আমার দাবী কিন্তু রইলই বাবা !

আমি লেবেনচুস চাই তোমার কাছে

চাইব সারাজীবন, যতদিন বেঁচে থাকব

দেবেনা বাবা তুমি আমায় একটি লেবেনচুস ?



মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৯

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: :D

২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

সুফিয়া বলেছেন: অর্থ বুঝলাম না তবে ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৫

বটের ফল বলেছেন: একগুচ্ছ প্লাস।
+++++++++

১ম ভালোলাগা। অন্তর নিংরানো কথা। আমরা অতীতগুলোকে কেন এমন ভুলে যাই??

ভালো থাকবেন। অনেক ভালো।

২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩০

সুফিয়া বলেছেন: অতীতকে ভুলে যাই বলে স্মৃতি রোমন্থন এত মধুর লাগে।

ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

সোহাগ সকাল বলেছেন: লেবেনচুস কবিতা, অনেক সুন্দর লিখেছেন।

২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩২

সুফিয়া বলেছেন: শুধু লেবেনচুস হিসেবে দেখলে বোধহয় কবিতার মূল বোধটাকে খাটো করে দেখা হবে। একজন বাবার সাথে সন্তানের শৈশবের স্মৃতিটাই এখানে প্রাধান্য পেয়েছে।

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন:
তবু একটি ফুটবল মাঠের মতো
প্রশস্ত হয়ে গেল বাবার বুকখানি।


খুব সুন্দর লিখেছেন! হৃদয় ছুঁয়ে গেল!

২৮ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৮

সুফিয়া বলেছেন: সন্তানের জন্য বাবার বুকের প্রশষ্ততা আসলে পরিমাপ করার মতো নয়। সেই বাবা যখন সন্তানের অবহেলার শিকার হয় তখন এর চেয়ে মর্মান্তিক বোধহয় আর কিছু হয়না।

ধন্যবাদ।

৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আপ্নের ব্লগে আয়া পড়লাম প্রথমবারের মত ।
মিষ্টি কই ?
আব্বা - আমগো লাথি - পিছা মারনই হইছে আধুনিক যুগের কাম ।
কবিতা শেষের দিক দিয়া ভালা লাগছে বেশি।
+++++++ দিয়া গেলাম ।

২৮ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১০

সুফিয়া বলেছেন: আমার ব্লগে এসেছেন আপাতত কথার মিষ্টি দিয়ে চলুন সৃষ্টি করি উদাহরণ। আমাদের বাবারা কোনদিন আমাদের দ্বারা অবহেলিত হবেন না।

ধন্যবাদ। আবার আসার আমন্ত্রণ রইল আমার ব্লগে।

৬| ৩০ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫২

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: কিন্তু এত সময় কোথায় তার সোনামণির
বৃদ্ধ বাবার প্রলাপ শুনার ?
তার তো সময় বাঁধা ঘড়ির কাঁটার সাথে
বিজনেস ডিলটা সময়মতো সই করতে না পারলে
নতুন ব্যবসাটা হাতছাড়া হয়ে যাবে।
পাঁচতলা বাড়ির ফাউন্ডেশনের কাজটা আজই শেষ করতে হবে।
স্ত্রীর বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টিতে আজ না গেলেই নয়।
অতসব ব্যস্ততার মাঝে তার চেয়ে এই ভালো
বাবাকে খাঁচায় পুরে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা।

৩০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭

সুফিয়া বলেছেন: বর্তমান সময়ের এমন নিস্ঠুর যাঁতাকলে পড়ে আমি আজও আমি আমার বাবার হাতের সিই লেবেনচুস চাই। আমার মনে হয় এরচেয়ে মহামূল্যবান সম্পদ এই সময়ে আর হতে পারেনা। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার ! সেই সুযোগ আমি চিরতরে হারিয়ে বসে আছি।

৭| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১৮

গ্রীনলাভার বলেছেন: ‘আমার লেবেনচুস চাই বাবা।' - আমিও বাবার কাছে চাইতাম একটু ভয় নিয়ে। যদি মাইর দেয়। কিন্তু ঠিকই কিনে দিতেন।

বাবা কত দিন কত দিন দেখি না তোমায়.........

চমৎকার লিখেছেন।

০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৪

সুফিয়া বলেছেন: একটু ভাবুন তো, এখন যদি সত্যিই বাবার হাত থেকে একটি লেবেনচুস পেতাম তাহলে কেমন লাগত ? আমার তো মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত সুখ এসে ধরা দিত আমার হাতে।


আপনার কেমন লাগত জানিনা।

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.