![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।
ত্রিপুরা বালিকা নৃত্যের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে
বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষ বা ১লা বৈশাখই হচ্ছে একমাত্র অসাম্প্রদায়িক জাতীয় উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, ধনী-গরীব নির্বিশেষে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ এইদিন প্রাণের উদ্দীপনায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে আনন্দে মেতে উঠে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে। পুরাতন বছরের সমস্ত জীর্ণতা ও ব্যর্থতাকে প্রাণের উচ্ছাসে ভাসিয়ে দিয়ে বাঙালী এইদিন নতুন বছরকে বরণ করে নেয় নতুন করে বাঁচার অঙ্গীকারে। দিন যতই যাচ্ছে বাঙালীর বর্ষবরণ ততই নতুন আঙ্গিকতায় প্রকাশ পাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে দূরবর্তী জনপদেও আজকাল ১লা বৈশাখ পালিত হয় বাঙালীর চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায়।
ত্রিপুরা শিশু
তবে বাঙালীর এই চিরায়ত সংস্কৃতির মধ্যেও ভিন্নতা দেখা যায়। তার কারণ, বাংলাদেশে রয়েছে ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বাস। এরা সবাই নিজস্ব ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ১লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ পালন করে থাকে। কিন্তু প্রাণের উচ্ছাস বা উদ্দীপনা সব ক্ষেত্রে এক, ভিন্নতা কেবল আনুষ্ঠানিকতায়।
ট্রাডিশনাল ড্রেসে ত্রিপুরা কিশোরী
বাংলা নববর্ষ পালনের এমনই এক অন্যরকম আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে বৈ-সা-বি বা বৈসাবি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে বসবাসরত তিন উপজাতীয় স¤প্রদায় অর্থাৎ ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি বৈ-সা-বি বা বৈসাবি নামে পরিচিত। ১লা বৈশাখের দিনে এই তিন আধিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা একসাথে বৈ-সা-বি উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে থাকে। তবে এই তিন সম্প্রদায়ের লোকেরা পৃথক পৃথক ভাবে বর্ষবরণের জন্য যে উৎসব পালন করে থাকে সেগুলো ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন
ট্রাডিশনাল পোশাকে এক ত্রিপুরা দম্পতি
মারমাদের জলনৃত্য
ত্রিপুরা আধিবাসীদের বৈশাখ উৎসবের নাম বৈশুখ (Boisuk)
মারমাদের বৈশাখ উৎসবের নাম সাংগ্রাই (Sangrai) ও
চাকমাদের বৈশাখ উৎসবরে নাম বিজু (Biju or Bizu) ।
মারমাদের বাড়ি
ত্রিপুরাদের বৈশাখ উৎসব বৈশুখ প্রধানত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক পালিত বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আদলে সাজানো। হিন্দু স¤প্রদায়ের নববর্ষ উৎসবের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠানের প্রতিফলন দেখা যায় ত্রিপুরাদের নববর্ষ পালনের অনুষ্ঠানে।
মারমা নারী
মারমাদের বাংলা বর্ষবরণ উৎসব সাংগ্রাই এর মূল আকর্ষণ হচ্ছে জল উৎসব বা ওয়াটার ফেষ্টিভল (Water Festival)। আমরা প্রায়ই টেলিভিশনে উপজাতীয়দের এই জল উৎসব দেখে থাকি।
চাকমাদের বৈশাখী উৎসবকে বলা হয় বিজু, যার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে বিজু নৃত্য। চৈত্রের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির দিনে এই বিজু নৃত্য শুরু হয়ে চলে তিনদিন পর্যন্ত। তিনদিনের এই নৃত্যানুষ্ঠানকে তিনটি নামে ডাকা হয়।
প্রথম দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির দিনের নাম পুল বিজু (Phool Bizu)। এই দিন ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সবকিছু ধোয়া-মোছা করা হয় এবং ঘরবাড়ি নানারকম ফুল ও লতাপাতা দিয়ে সাজানো হয়। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১লা বৈশাখের দিনকে বলা হয় মুল বিজু (Mul Bizu)। মুল বিজুর দিন চাকমারা নতুন কাপড় চোপড় পরে বিভিন্ন বাড়িতে বেড়াতে যায়। এদিন চাকমাদের ঘরে বিভিন্ন প্রকার সব্জি রান্না করা হয়। আমাদের চিরাচরিত নিয়মের মতো মেলা ও বিভিন্ন প্রকার দেশীয় খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় দিনকে বলা হয় গজ্জিপজ্জি (Gojjipojji)। এইদিন চাকমারা বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা পালনের মাধ্যমে বৈ-সা-বি উৎসবের সমাপ্তি ঘটায়।
চাকমাদের হস্তশিল্প মেলা।
তবে যেভাবেই পালন করা হোক না কেন ১লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালীর চিরায়ত আবেগ ও উদ্দীপনার স্থানটি দখল করে আছে বহুদিন ধরে। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এই স্থানটিতে আমরা বরাবরই আপসহীন। যতই বাধা-বিপত্তি এসেছে ততই যেন গতিময়তা পেয়েছে বাঙালীর জাতিগত সংস্কৃতির মূল শেকড় প্রোতিত এই উৎসবটি। কিন্তু একটি জায়গায় আমরা পারিনা এই উৎসবের প্রবাহমান ধারাকে ধরে রাখতে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বাংলা নববর্ষ পালনের মূল উৎসব আমাদের জন্য শ্রেণীগত বৈষম্যের উর্ধ্বে উঠে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথ চলার শিক্ষা দেয়। আমরা এক দিনের জন্য সেপথে পথ চললেও বাকী দিনগুলোতে ভুলে যাই সেই শিক্ষাকে। ব্যক্তিগত স্বার্থে মেতে নানা দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়ি আমরা। ১লা বৈশাখের একদিনের শিক্ষাকে আমরা যদি সারা বছর ধরে রাখতে পারি আমাদের দৈনন্দিন জীবনাচারে তাহলেই কেবল বাংলা নববর্ষ বা ১লা বৈশাখ পালনের মূল আনুষ্ঠানিকতা সার্থক হতে পারে বলে আমি মনে করি।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:২৫
সুফিয়া বলেছেন: আপনার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় অনেকদিন থাকার সুযোগ হয়েছিল আমার। তখন তখন অনেক উপজাতীয় সম্প্রদায়ের কাছাকাছি যাবার, তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ারও সুযোগ হয়েছিল। তখন দেখেছি নিজেদের সংস্কৃতি ও সামাজিক-ধর্মীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতার প্রতি ওরা কতটা নিষ্ঠাবান। এমনটা আমাদের মধ্যে সব সময় দেখিনা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:২৮
আমিনুর রহমান বলেছেন:
চমৎকার পোষ্ট !
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:২৫
সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক ভালো থাকুন।
৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
চমৎকার পোস্ট +++
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
সুফিয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। নতুন বছরের জন্য অসংখ্য শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।
৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আহ্ কী চমৎকার একটা পোষ্ট। ভালো লাগল। ++ দিলাম।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩
সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। বাংলা নতুন বছরের প্রথম পোস্ট আমার। আপনার সহযোগীতা পেয়ে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হলাম। নতুন বছর আপনার জন্য অনেক অনেক সফলতা বয়ে আনুক।
৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
মুদ্দাকির বলেছেন: আবার নতুন করে জানলাম
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪
সুফিয়া বলেছেন: আমিও নতুন করে জানলাম। তাই শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে।
ধন্যবাদ আপনাকে আমার ব্লগে সময় দেয়ার জন্য। ভালো থাকবেন। নতুন বছর আপনাকে সমস্ত হতাশা আর ব্যর্থতা থেকে দূরে রাখুক, সফলতায় ভরিয়ে দিক আপনার চারপাশ।
৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭
নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: কখনও যাওয়া হয়নি , ইচ্ছা আছে ।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯
সুফিয়া বলেছেন: আপনার ইচ্ছাটা পূরণ হোক।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:০০
সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কাল বিজুর নিমন্ত্রন ছিল । যেতে পারিনাই।
তবে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে।
তবে ওদের স্ব-সংস্কৃতির প্রতি যেই টান দেখলাম, সত্যিই ভাল। আর আমরা সব গ্রহন করতে যেয়ে বুঝি নিজেরটাই হারিয়ে ফেলার অবস্থায়!!!!!
স্বকীয়তা বজায় রেখে গ্রহন বর্জনে আপত্তি নেই। কিন্তু মূলচ্যুত যেন না হই।