![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।
মাকে নিয়ে মা দিবসে মনে রাখার মতো তেমন কিছু কখনও করা হয়নি। তবে মা দিবস আসলে মনে হতো মা নামক অমূল্য সম্পদটা তো আমার রয়েছেই। বিশেষ দিবস লাগবে কেন? আমার মা আমার জন্য সব সময় বিশেষ উপহার। মাকে নিয়েই আমার হাসি-আনন্দ-গর্ব। কড়ি কাঠের জীবনভূমে মা-ই আমার বেঁচে থাকার রঙিন আলপনা।
২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে আমার মা ছিলেন শয্যাবন্দী। মাকে শয্যা থেকে তুলে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর আমাদের সীমিত সাধ্য সাধনার প্রতি বিধাতা আমল দেননি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে পারেননি আমার মা। তাকে সুস্থ করে তুলতে না পারার আমাদের ব্যর্থতা বোধহয় মাকেও ব্যথিত করে তুলেছিল। তাই বিধাতার সাথে বুঝাপড়াটা তিনি নিজেই সেরে নিয়েছিলেন। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের আট তারিখে আমাদেরকে সমস্ত ব্যর্থতার হাহাকার থেকে মুক্তি দিয়ে চলে গেলেন মা। মায়ের এই চলে যাওয়ায় শুধু তার বিছানাটা কিংবা হুইল চেয়ারটাই শূন্য হয়ে যায়নি। বুঝলাম আমার চারপাশের পৃথিবীটাও শূন্যতার হাহাকারে ডুবে গেছে মায়ের মৃত্যুর সাথে সাথে।
মায়ের শেষ জীবনের আশ্রয় হয়েছিল আমার বাবার স্মৃতি বিজড়িত গ্রামের বাড়ি। এতেই যেন শান্তি পেতেন মা। চাকুরী জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে প্রতি মাসেই একবার করে বাড়ি যেতাম মাকে দেখতে। শুক্রবার আসলেই মা খোঁজ নিতেন আমি বাড়ি যাচ্ছি কিনা। বাড়িতে গিয়ে ঘরে ঢুকেই শুনতাম মা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন আমি কখন পৌছুবো। কেমন আছো মা-জিজ্ঞেস করতেই মা জবাব দিতেন, আমি কি আর ভালো হবো রে? আমার ভিতরটা হাহাকার করে উঠতো। মনে মনে বিধাতাকে বলতাম, বিধাতা তুমি তো সব পারো। শুকনো কাঠে ফুল ফোটাতে পারো। তবে কেন সুস্থ হবার আকুলতা নিয়ে আমার মা বার বার তোমার দুয়ারে মাথা ঠুকে মরবে? কেন সন্তান হয়ে চোখের সামনে মায়ের এই বিছানাবন্দী অসহায় দৃশ্য আমাকে দেখতে হবে? কিন্তু শুনলোনা বিধাতা। আমাদেরকে সব ধরনের অনুযোগ-অভিযোগের দায় থেকে মুক্তি দিয়ে মাকে তুলে নিলেন আমাদের মাঝ থেকে। মনে মনে শুধু বললাম, এ শুধু তুমিই পারো বিধাতা। সন্তান যখন হৃদয়ের সমস্ত আরতি উজাড় করে দিয়ে তোমার কাছে তার মায়ের সুস্থতা ভিক্ষে চাইছে তখন সেই মাকেই তুমি উঠিয়ে নিয়ে গেলে।
মা-হীন পৃথিবীটা এত কঠিন ও রূঢ় হতে পারে তা আমি এই প্রথম বুঝলাম। মা আমার কাছে থাকতো না। কিন্তু সব সময় মনে হতো আমার সবটা জুড়ে আছে মা। মায়ের কাছে না থেকেও টের পেতাম মা যেন সব সময় আমার কাছে কাছেই রয়েছে। আজ আমার চারপাশটা বড় নিঃসঙ্গ মনে হয়। বড় অরক্ষিত মনে হয় নিজকে। অসুস্থ হবার পর থেকে মা শাড়ি পরতে পারতেন না। তবু ঈদের কেনাকাটায় সবার আগে মায়ের শাড়িটা কিনতাম। শাড়ি দেখেই মা কাঁদতেন। বলতেন, আমার জন্য শাড়ি কিনেছিস কেন? খোদা তো আমার শাড়ি পড়ার সুযোগ কেড়ে নিয়েছে। আমি বলতাম, ঈদের দিন একটু ক্ষণের জন্য পরে কাউকে দিয়ে দিবেন। মাকে শাড়ি পরানো মানে ভাঁজ করে ওড়নার বদলে গায়ে জড়িয়ে রাখা। মা কান্নাকাটি করলেও খুশী হতেন। ঈদের দিন যারা মাকে দেখতে আসতো তাদের সাথে গল্প করতেন কে শাড়িটা দিয়েছে। আমার তখন মনে হতো মায়ের এক একটি কথা থেকে আমার জন্য শতগুণ আশীর্বাদ বর্ষিত হচ্ছে। আজ আমি সেই আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত। আমার চারপাশটা তাই শূন্যতার বিক্ষুব্ধ আবর্তে বার বার খাবি খায়।
নগর জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে আকাশটাকে আপন করে দেখার সুযোগও হয়না আমাদের। আজ ওই আকাশটাকেই আমার একমাত্র আশ্রয় মনে হয়ে। অফিস থেকে ফেরার পথে বাসে জানলার পাশে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি মায়ের মুখটি খুঁজি। মনে মনে বলি, একটিবার দেখা দাও মা। তোমার শীর্ণকায় হাতটি বাড়িয়ে একটিবার আমায় ছুঁয়ে যাও মা। তোমার পবিত্র স্পর্শে আমি সমস্ত পঙ্কিলতার বেড়াজাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসব মা। কিন্তু আমার হতাশা আমাকে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে। বুকের ভিতর জমে থাকা কষ্টের পাহাড়টা আরও ঘনিভূত হয়। এক সময় প্রচন্ড ধাক্কায় চোখের কোণ ভিজিয়ে নেমে আসে। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে বুক ছিঁড়ে। সাথে সাথে মনে হয় পৃথিবীতে আমি একা, বড় একা।
আমার জন্য কেউ আর অন্তর বাড়িয়ে অপেক্ষা করে থাকবে না। মায়ের কথাগুলো মনে পড়ে। বাড়ি গেলেই জিজ্ঞেস করতো কয়দিনের ছুটি নিয়ে এসেছি। ছুটি নেই, পরদিনই চলে যেতে হবে শুনে কেমন যেন দমে যেত মায়ের মনটা। আসার সময় জিজ্ঞেস করতেন, আবার কবে আসবা? সব সময় পরের যাওয়ার তারিখটা মাকে বলে আসতে হতো। মা সেই তারিখটার কথা ঠিক মনে রাখতেন এবং অপেক্ষায় থাকতেন। বিদায় নেয়ার সময় হুইল চেয়ারটায় করে মাকে এনে সামনের বারান্দায় বসাতে হতো। যতক্ষণ দেখা যেত আমার চলে আসা পথের পানে তাকিয়ে থাকতেন মা। মায়ের কান্নাভেজা সেই অসহায় মুখের দিকে বার বার পেছন ফিরে তাকাতাম আমি।
মায়ের সাথে আমার এমনি শেষ বিদায়পর্ব ছিল ২০০৬ সালের জানুয়ারীর সতেরো তারিখ। বিশ ফেব্রুয়ারী আমার বাড়ি যাবার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আমার মা চলে গেলেন এই পৃথিবী ছেড়ে।
মাসের যে দিনটায় আমি মাকে দেখতে যেতাম সেই দিনটাই ছিল আমার জন্য মা দিবস। মায়ের পছন্দমাফিক নানা রকম শুকনো খাবার নিয়ে যেতাম আমি। মা হয়তো একটু খেতেন। এতেই ছিল আমার আনন্দ। বছরে একবার ঘটা করে মা দিবস পালন করার চেয়ে ঐ দিনটাই ছিল আমার কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। মা দিবসে সবাই মাকে এটা ওটা উপহার দেয়। এবারও দিবে। আমার সময় এসেছে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখার। আমি এখন মায়ের জন্য কিছু কেনার আনন্দ থেকে বঞ্চিত। এখন মা দিবসের আনন্দ আমার বুকে অর্ন্তভেদী হাহাকার হয়ে বাজে। আমার মাকে খুঁজবো আমি পৃথিবীর সকল মায়ের মধ্যে। প্রতি মাসে একবার করে বাড়ি যাবার পিছুটান আর আমার ভিতরে নেই। তাই আমার জীবন থেকে মা দিবস চিরতরে হারিয়ে গেছে।
১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:১৫
সুফিয়া বলেছেন: আপনার সাথে একমত। বিশ্বের সকল মা তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক অনেক অনেক দিন।
২| ১১ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫
শুভ্র৯৫রকস বলেছেন: 'মা' লিখে গুগলে সার্চ দিয়ে যা দেখি,আসুন মা দিবসের আগে সে সব মুছে মাকে নতুন করে সাজাই
মা দিবস নিয়ে বিস্তারিত জানতে গুগলে মা লিখে সার্চ দিলাম।যা দেখেছি তা ভয়ানক ছিল।মানুষ কেমনে পারছে এসব লিখতে? আসুন মুছে দেই সব নোংরা গল্প। মাকে নিয়ে হাজার হাজার সুন্দর গল্প ছড়াই সার্চ ইঞ্জিন গুগলে।
১।গুগল রিপোর্ট করার নিয়মঃ
ফার্স্ট এ মা লিখে google সার্চ দিন।
এরপর একদম নিচে থাকা প্রতিক্রিয়া /feedback য়ে চাপ দিন। এরপর অত্যন্ত অসন্তুষ্ট বাটন টি নিন। তারপর নিজের প্রতিক্রিয়া জানান।
কিছু কাজ তো হবে।
প্রতিক্রিয়া এমন হতে পারেঃ
The word মা (Mother) is one of the most heavenly words in all of the languages in the world. we never want to see any porn or চটি (choti) sites which are relating মা (mother) with these kind of odious groups, blogs, or websites.
It is a kind request to our lovely GOOGLE authority to have a careful eye on the fact and remove these groups, blogs, and websites to maintain google's clean image to its users...
Thank you...
প্রতিক্রিয়া লিখার পর বাজে লিখাগুলি হাইলাইট করে স্ক্রিনশট জমা দিন।
২।ফেসবুকে রিপোর্ট করার নিয়মঃ
1. প্রথমে একদম নিচে যান।দেখুন settings & privacy, tarms and policies এইগুলার সাথেই report a problem আছে।
এটায় ক্লিক করুন।দেখবেন নতুন একটা পেজ আসবে।
2. সেখানে 1st box এ select a product লেখা আছে। ক্লিক করুন সেখনে।কিছু অপসন পাবেন।সেখান থেকে pages সিলেক্ট করুন।
3. তারপর নিচে একটা বড় box আছে।সেখানে যে পেইজের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করবেন সে পেইজের আই ডি নাম্বার copy করে ওই box এ পেস্ট করে দিন।
মনে রাখবেন প্রত্যেক টা পেইজে একটা করে আইডি নাম্বার থাকে সেটা বের করে
[***********:]
লিখে মেনশান করতে হয়
রিপোর্ট করার জন্য ডক ফাইল লিঙ্ক -
http://goo.gl/QRLcxY (এই লিঙ্কে ছবিসহ রিপোর্ট করার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে)
ফেসবুক ইভেন্টে জয়েন করেন সবাইঃ Click This Link
১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:১৯
সুফিয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। এত সুন্দর করে প্রক্রিয়াটি বলার জন্য।
মা শব্দটি নিয়ে যারা নোংরামি করে আসুন আমরা সবাই মিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। মাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর লেখা বেশী বেশী পোস্ট দিয়ে ঐসব নোংরা মনের মানুষগুলোকে কোনঠাসা করে ফেলি। মায়ের মর্যাদা রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার থাকব আমরা।
৩| ১১ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬
শুভ্র৯৫রকস বলেছেন: ফেসবুক ইভেন্টে জয়েন করেন সবাইঃ Click This Link
১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:২০
সুফিয়া বলেছেন: অবশ্যই জয়েন করব। নীতিগতভাবেই আমাদের তা করা উচিত।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৪| ১১ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:১১
নীল জোসনা বলেছেন: মা তুমি যেখানেই থাক ভালো থেকো ।
১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:২২
সুফিয়া বলেছেন: পৃথিবীর সব মায়ের জন্য একই কামনা, তারা জীবিত থাকুক অথবা মৃত।
মায়েরা ভালো থাকলে তার সন্তানরা অবশ্যই ভালো থাকবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৫
এহসান সাবির বলেছেন: বিশ্বের সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা।