![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।
ভাল আছি বলি কি করে ?
একটা ঈদ গেল। এর রেশ এখনও কাটেনি। পাহাড়সম বাধা-বিপত্তি আর প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে মানুষ ছুটে গেছে প্রিয়জনের কাছে একসাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করবে বলে। ঈদশেষে ফিরেও আসছে তারা। চোখে-মুখে প্রিয়জন সান্নিধ্যের সুখ উপচে পড়ছে। আমরা যারা শহর ছেড়ে যাইনি বা কোন কারণে যাওয়া হয়নি তারাও চেষ্টা করেছি প্রায় ফাঁকা হয়ে যাওয়া শহরে নানাভাবে আনন্দে মেতে ঈদ উদযাপন করতে। করেছিও তাই।
কিন্তু সব মিলিয়ে যতটা ভাল থাকার কথা ছিল আমাদের এই সময়ে ততটা ভাল কি আমরা আছি ? না কি বলতে পারছি খুব ভাল আছি ? কি করে বলব ?
এবারের ঈদকে ঘিরে যেন দুর্ঘটনা আর মৃত্যুর মিছিল নেমে এসেছে পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের এই জনপদের সর্বত্র। অবাক বিস্ময়ে খেয়াল করলাম প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক দুর্ঘটনায় একের পর এক মারা যাচ্ছে মানুষ। টেলিভিশনের যে কোন একটা চ্যানেলের অর্ধেকটা জুড়ে রয়েছে দুর্ঘটনা আর মৃত্যুর খবর। এই যে এত প্রাণ ঝরছে, হাহাকারে পুড়ছে তাদের স্বজনদের বুকের কড়িকাঠ, সেখানে কি নিরব দর্শক হয়ে আনন্দে সময় কাটাতে পারি আমরা ? মনুষত্ব আর বিবেকের সবটুকু তো আর আমরা ধূয়ে-মুছে সাফ করে ফেলিনি যে এত মৃত্যু দেখেও আনন্দের সাগরে ভাসতে পারব আমরা।
সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মালিকের ব্যাংক-ব্যালেন্সকে ফাঁপিয়ে তুলছে যে শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য পাওনাটুকু পাওয়ার জন্য তাদেরকে আন্দোলন করতে হবে কেন ? সবার জন্য যখন ঈদ এসেছে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ নিয়ে তখন সেই আনন্দের দিনে এইসব শ্রমিকদেরকে কেন অনশন করতে হয় তাদের পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্য আদায় করার জন্য। এমনটা কি হবার কথা ছিল ? ঈদকে ঘিরে খুশীর আমেজে প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোর স্বপ্ন তো ওরাও দেখেছিল। তাহলে কেন ঈদের দিনে প্রিয়জনের কাছে না গিয়ে না খেয়ে এভাবে পড়ে থাকতে হয়েছে তোবা গার্মেন্টস এর শ্রমিকদের ?
ইসরাইলী নাসারাদের বর্বরোচিত হামলায় গাজা আজ মুত্যুপুরী। লাশ আর রক্তের হোলিখেলা চলছে সেখানে। আর্ন্তজাতিক রীতি-নীতি ও মানবিক বোধের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একের পর এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হচ্ছে গাজাকে। টিভি খুললেই গাজায় ইসরাইলী নৃশংসতা দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি আমরা। বাবা দৌড়াচ্ছে তার সোনামণির নিথর দেহ নিয়ে হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছুতে পৌঁছুতে সেই নিথর দেহ কখন লাশ হয়ে ছেছে টেরও পায়নি। পৃথিবীর সবচেয়ে ভারবাহী জিনিসের মতো বাবা তার কাঁধে তার সন্তানের লাশ নিয়ে গিয়ে সমাহিত করে আসতে না আসতে লাশ হয়ে যাচ্ছে সেই বাবা নিজেই। এভাবে অকাতরে গাজায় অহরহ আমার মুসলিম ভাই-বোনদের প্রাণ ঝরছে। সেখানে ঈদের আনন্দ তো দূরের কথা। মাথার উপর এক টুকরো নিরাপদ আশ্রয় কিংবা নিঃশঙ্কচিত্তে এক ঢোক পানিও পান করতে পারছে না গাজাবাসীরা। ইসরাইলের র্ববরতার চরম মূল্য যখন দিচ্ছে গাজাবাসীরা, মানবিক বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন এই আমরা আনন্দে গা ভাসাই কি করে ?
এখানেই শেষ নয়। ঈদের সমস্ত আনন্দ-আয়োজনকে একপাশে রেখে দেশবাসী বর্তমানে দিন কাটাচ্ছে অনিশ্চয়তা আর শংকার মধ্য দিয়ে। কারণ একটাই। রমজানের প্রায় শুরু থেকে বিরোধী দল খুব জোড়ে-সোড়ে প্রচার করছে যে ঈদের পর তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হবে। সরকারী দল থেকে বলা হচ্ছে বিরোধী দল সহিংস কোন কর্মকান্ড করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বিরোধী দল থেকে আবার বলা হচ্ছে যদি সাহস থাকে সরকার যেন র্যাব- পুলিশকে সাথে না নিয়ে নিজেরাই আসে বিরোধী দলকে মোকাবেলা করতে। দুই দলের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে দেশটা যেন একটা মল্ল যুদ্ধের ক্ষেত্র। দুই দল মল্লযুদ্ধ খেলতে নামবে জনগণকে সামনে রেখে। দুই দলের এমন অবস্থান আমরা অতীতেও দেখেছি। ফলাফল একটাই কিছু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাবে, জ্বলেপুড়ে অঙ্গার হবে, ধ্বংস হবে দেশের অমূল্য সম্পদ। আবারও যখন ঢাক-ঢোল পিটিয়ে পরস্পরকে আহবান করে এমন একটা পরিস্থিতির সৃস্টি করা হচ্ছে তখন স্বাভাবিকভাবে আমাদের জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে সীমাহীন শংকা ও ভয়ের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে আমাদেরকে।
সব মিলিয়ে সময়টাই এমন যে ইচ্ছে করলেই ভাল থাকতে পাচ্ছিনা আমরা। মন উজাড় করে বলতে পাচ্ছিনা ভাল আছি।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৩৯
সুফিয়া বলেছেন: এখানে মৃত্যু আসে মিছিলে মিছিলে/দুর্ঘটনার হাত ধরে, সেখানে আমরা ভাল থাকি কি কে ?
এই দেখুন না। এই লেখাটা পোস্ট দেয়ার কিছুক্ষণ পরই টিভি খুলে দেখি রাজধানীর শ্যামলীতে এক্সিডেন্টে এক দম্পতি মারা গেছেন।
এই হলো আমাদের নিত্যকার ভাল থাকর চিত্র।
ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটা পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।
২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৪৬
লেখোয়াড় বলেছেন:
সুন্দর লেখা।
ভাল আছি বলতে পারাটা আসলেই কঠিন।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩
সুফিয়া বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। আসলেই আমরা ভালো নেই। আজও টিভি খুলে দেখলাম সবজীর ট্রাক উল্টে মারা গেছে সাতজন।
আমাদের জীবনের মূল্য এত কম কেন?