![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।
একজন ডাক্তার এবং আমি যখন তার রুগী-- কিছু সত্য কথন।
বাংলাদেশের ডাক্তারদের বিষয়ে তিক্ত-মিষ্ট অভিজ্ঞতা নেই এমন মানুষ খুব কমই আছে। সত্যি কথা বলতে গেলে তিক্ত অভিজ্ঞতাধারী মানুষের সংখ্যাই বেশী। তাই বলে ডাক্তারকে এড়িয়ে চলব এমন সুযোগ তো আমাদের নেই। এমন সুযোগ যদি থাকত তাহলে হলফ করে বলতে পারি সবার আগে আমি এই সুযোগটা সানন্দে গ্রহণ করতাম। কিন্তু না ! শরীর যেহেতু আছে রোগ-ব্যাধি সেখানে বাসা বাধবে এটাই স্বাভাবিক। আর তা থেকে উপশমের জন্য ডাক্তারের দ্বারস্থ হতেই হয় সবাইকে।
আমি এ পর্যন্ত বাংলাদেশে যত ডাক্তারের মুখোমুখি হয়েছি, খুব পরিচিত বা কাছের জন ছাড়া বাকী সবার কাছ থেকে যে ব্যবহার বা অভিজ্ঞতা পেয়েছি সেগুলোকে কোনমতেই সুখকর বলে চালিয়ে দিতে পারিনা। পারলে আমার ভাল লাগত। এসব অভিজ্ঞতার মধ্যে সর্বশেষ অভিজ্ঞতা যা আমি রুগী হিসেবে অর্জন করেছি তা এখানে শেয়ার করতে চাইছি। আমি জানি আমার মতো ভুক্তভোগী অনেকেই আছেন।
যাই হোক। গত ৭ আগষ্ট তারিখে পিঠে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে আমি ফার্মগেটের আল রাজী হাসপাতালে একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। ডাক্তার সাহেবের নাম বললে হয়তো সকলেই চিনবেন। সেটা না হয় না-ই বললাম। শুধু বলে রাখি যে উনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের একজন প্রফেসর। এবার আসি মুল কথায়। আমার সিরিয়াল আট নম্বর। সাত নম্বর রুগী ঢুকার পর এটেনডেন্ট আমাকে দরজার কাছে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলল, এরপর বেল বাজলে আপনি ঢুকবেন। আমিও তাই করলাম। বেল বাজার সাথে সাথে ভিতরে ঢুকলাম। সালাম দিলাম ডাক্তার সাহেবকে। কিন্তু উনি তখন আগের দুই রুগীর সাথে নানা গল্পে ব্যস্ত। বুঝলাম উনারা ডাক্তার সাহেবের খুব পরিচিত। পিঠে প্রচন্ড ব্যথার যন্ত্রণা নিয়ে আমি প্রায় আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে উনাদের খোশগল্প শুনলাম অনিচ্ছাসত্ত্বেও। এরপর বসার সুযোগ পেলাম। সমস্যার কথা বললাম। জানালাম আমি ব্যাংকে চাকুরী করি। সারাদিন কম্পিউটারে কাজ করতে হয়। ডাক্তার সাহেব আমার ব্লাড প্রেসার চেক করে দেখলেন ১৬০/১০০। বললেন, আপনি তো হাই রিস্কে আছেন। আসলেন কি করে ? আমি জানালাম, আমার বাসা কাছেই, হেঁটে এসেছি এবং আজকে আমি অফিসও করেছি। ডাক্তার যেন একটু অবাকই হলোন। বললেন, আপনার প্রেসারের ওষধ বদলানো দরকার,র ওষুধ খেয়ে ঘুমাবেন। তাহলে প্রেসার কমে আসবে। সাথে কিছু ব্যথা নাষক ওষূধ এবং এক্সরে করতে দিলেন।
আমি যথারীতি ৯ তারিখে এক্সরে রিপোর্ট নিয়ে দেখা করতে গেলাম উনার কাছে । চেম্বারে ঢুকতেই উনার প্রথম কথা, এরমধ্যে প্রেসার মাপিয়েছেন ? আমি বললাম, আপনার কাছে আজ আসব তাই আর মাপাইনি। উনার উত্তর, মাপাননি কেন ? আমি আজ আবার আপনার প্রেসার মাপব নাকি ? আমি বললাম, তাই তো করার কথা। আপনি মেপে দিন। এরপর কপালে বিরক্তির রেখা ফুটিয়ে তোলে উনি আমার প্রেসার পলেন। ১৪০/৯০। তারপর এক্সরে রিপোর্ট দেখে বললেন, যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই । অত্যন্ত বিপদজনক অবস্থা আপনার। ইংরেজী পড়তে পারেন ? এই দেখেন লেখা রয়েছে। আমি বললাম, আমি একটা ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ । ইংরেজী পড়তে পারব না কেন ? তাই বলে আপনাদের লেখা ইংরেজী বুঝা আমার কাজ নয়। তারপর বললেন, আপনাকে কিছুদিন বেড রেস্টে থাকতে হবে। আমি বললাম, আমি তো চাকুরী করি। আপনি একটু লিখে দিন, তাহলে আমার ছুটি নিতে সহজ হবে। উনি বললেন, এখানে আবার আমি এটা লিখব নাকি ? আমি সাথে সাথে বললাম, আজকে আপনাকে কত টাকা দিতে হবে ? বললেন, তিনশ টাকা। আমি সাথে সাথে ব্যগ থেকে তিনশ টাকা বের করে দিতেই উনি প্রেসক্রিপশনের এক কোণায় লিখে দিলেন রেস্ট পর ফাইভ ডেইজ।
পাঠক এই লেখা এখানেই শেষ করলাম। এরপরের সিদ্ধান্ত বা মন্তব্য আপনাদের। আর এই ব্লগে যারা ডাক্তার আছেন তারা বিষয়টি কিভাবে নিবেন তা তাদের উপরই ছেড়ে দিলাম।
শুধু বলে রাখি, এরপর আমি আমার পরিচিত এক ডাক্তারের সাথে দেখা করে জানতে চাই আমার প্রকৃত অবস্থা। উনি বললেণ, এই বয়সে এটা কমন ব্যাপার। তেমন কিছু নয়। নিয়মিত ওষুধ খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:০০
সুফিয়া বলেছেন: এসবের মধ্যে ব্যতিক্রমী উদাহরণও আছে সে কথা আমরা ভুলতে চাইনা। কিন্তু একজন রোগাক্রান্ত ব্যক্তির সাথে তার চিকিৎসকের এহেন আচরণ সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায়। রোগ উপশমের পরিবর্তে মনে হয় যন্ত্রণা অনেক বেড়ে যায়। নিজকে ঐ মুহূর্তে বড় অসহায় লাগে। মনে হয় একটা জিম্মি সময় অতিবাহিত করছি আমরা রুগীরা যতক্ষণ ডাক্তারের সামনে উপস্থিত থাকি। অথচ এমনটি হবার কথা ছিলনা। একজন ডাক্তার তার রুগীকে চিকিৎসার মাধ্যমে যতটুকু সুস্থ করে তুলবেন ঠিক ততটুকুই সুস্থ করে তুলবেন নিজের ব্যবহারের মাধ্যমে-- এমনটাই সেবা প্রদান এই পেশাটার মূূল উদ্দেশ্য বলে আমরা জানি। কিন্তু বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ঘটছে এর উল্টো ঘটনা। মূল কারণ একটাই। ঐ যে আপনি বললেন সেবা প্রদান এই পেশাটাকে টাকা কামাবার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা।
যাক। অনেক কথা বলে ফেললাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭
বিষক্ষয় বলেছেন: you need to adjust your computer monitor and chair. Also take a break every 45 minutes and do some stretching exercise. Do not slump when working in the computer. Get a good ergonomic chair whose height can be adjusted and which has good back support and arm rest. Do not rely on pain killers. If you do not address the source of the problem (computer work station) you will just get stomach ulcer from the pain killers but the pain will keep getting worse and worse
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:০৩
সুফিয়া বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন। একই উপদেশ দিয়েছে আমার ফিজিও।
অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি আমার সমস্যাটা উপলব্ধি করার জন্য এবং যথোপযুক্ত পরপমর্শ প্রদান করার জন্য।
৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০
মুদ্দাকির বলেছেন:
আপা কিছুই বলার নাই। আমারা কেউ কেউ ভালো ব্যাবহারও করি। আসলে অনেকের অনেক টাকা দরকার, টাকার প্রেম সব কিছুকেই ভুলিয়ে দেয়, ইদানিং তাই মনে হয়।
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:১২
সুফিয়া বলেছেন: আমি আপনার সাথে একমত। কিছু কিছু ডাক্তারের ব্যবহার রুগীকে অর্ধেক সুস্থ করে তোলে। এমন ঘটনার সাক্ষী আমি নিজে। কলকাতায় একবার আমার একটা অপারেশন করতে হয়েছিল। ঘটনাচক্রে আমার সাথে তখন কেউ ছিলনা। আমার হাজব্যন্ড সরকারী চাকুরে বিধায় প্রটাকল মেইনটেইন করে কলকাতায় পৌঁছাতে দেরী হচ্ছিল। অথচ নির্দিস্ট তারিখে অপারেশন না করলেই নয়। সে সময় আমার ডাক্তার, তার নামটি স্মরণ না করলে অন্যায় হবে, তিনি যেভাবে আমাকে সহযোগীতা করেছিলেন তা বলে বুঝানোর মতো নয়। আমার টাকাকড়ি, পাসপোর্ট সব উনার কাছে জমা ছিল। তারপর সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করেছিলেন আমার হাজব্যন্ডের সাথে সে কলকাতা না পৌঁছা পর্যন্ত।
৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪
মুদ্দাকির বলেছেন:
আর আপা আপনি যদি আগে থেকেই প্রেশারের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে এই ব্যাপারে যত্ন বান হন। আর ব্যাথার কারনে অনেক সময় প্রেসার এমনেতেই অনেক বেরে যায়, যা ব্যাথা কমার সাথে সাথে কমে যায়। তাই আদৌ আপনার প্রেশারের ঔষধ খেতে হবে কিনা, ইভেলুয়েট করিয়ে নিবেন। সুস্থ থাকুন, ডাক্তারের কাছে না যেতে হোক, এই কামনাই থাকল।
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:১৫
সুফিয়া বলেছেন: আপনি ঠিকই ধরেছেন। আমি হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যায় ভুগছি। সেজন্য কার্ডিজেম এসআর ৯০ খাচ্ছি প্রতিরাতে ১টি করে। তবে ইদানীং প্রেসারটা খুব আপ-ডাউন করছে।
৫| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৪
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: আপঅনার লিখাটি পড়ে সান্তনাও সমবেদনা জানাচ্ছি। আল্লাহ আপনার সহায় থাকুন কামনা করি। আপনার যে অসুখের কথা এখানে বিবারন দিলেন সে অসুখ আমার ও আছে। আর এখানে ডাক্তার যেভাবে আচরন করল তা দঃখজনক।
আপনার চাকুরীর কাজের সাথে আপনার শারিরীক অসুখ বিপদের আসংখ্যা সচেতনার একান্ত প্রয়োজন। এর আগে ব্লগার মুদ্দাকির যে অভিমত দিয়েছেন তা খুবই প্রয়োজন। তার পরেও বলবো প্রতিদিন সকালে ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে খালি হাতে ৩০ মিঃ থেকে ৪৫ মিঃ শারিরীক ব্যায়াম খুবই প্রয়োজন। আমি করি এবং সল্প ঔষধে ভালই আছি।
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৩৮
সুফিয়া বলেছেন: আসলে মনের খেদটাকে হজম করতে না পেরে কথাগুলো বলেছি। আমার মনে হয় আমার মতো ভূক্তভোগী এদেশে অনেকেই আছেন।
যাক গে সেকথা। আমার মনোকষ্টটা উপলব্ধি করার জন্য আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। নিজকে অনেকটা রিলাক্স মনে করছি এখন। আপনাদের উপদেশ আমার অনেক কাজে লাগবে। চেষ্টা করব মেনে চলতে। ডাক্তারের উপদেশও প্রায় সেরকমই। কাজেই মানতে আমাকে হবেই।
আবারও ধন্যবাদ।
৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫০
আহমেদ জী এস বলেছেন: সুফিয়া ,
শিরোনামে " ডাক্তার" শব্দটি দেখে ঢুকতে হলো । আপনার অভিজ্ঞতা তিক্ত সন্দেহ নেই ।
অপ্রাসঙ্গিক হবে কিনা জানিনে তবে আমার লেখা - "চিকিৎসক- রোগী: একটি জটিল মনঃস্তত্ব " পোষ্টটি এই দু'টি লিংকে গিয়ে দেখতে পারেন - আপনার আক্ষেপ কিছুটা হলেও কমতে পারে -
Click This Link
Click This Link
ভালো হয়ে উঠুন আর ভালো থাকুন ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩
সুফিয়া বলেছেন: আমি বুঝতে ভুল করে না থাকলে আপনি একজন ডাক্তার হবেন। আমার লেখায় মনে কিছু করবেন না আশা করি। সব ডাক্তার যে এক রকম সেটা আমি বলছিনা। তবে কিছু কিছু ডাক্তারের ব্যবহার রুগীকে খুব আহত করে। সে বিষয়ে তাদের সচেতন হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।
এ প্রসংগে আমাদের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর কথা বলতে উচ্ছে করছে। আমি তখন রোকেয়া হলে থাকি। প্রচন্ড গ্যাসট্রিাকের সমস্যা নিয়ে উনার শরণাপন্ন হয়েছিলাম। উনার চেম্বার ছিল সম্ভবত মগবাজারে ওয়ারলেস গেটে। সত্যি বলতে কি আমাকে পরীক্ষা করার আগে উনি যেভাবে কথা বলেছিলেন তাতেই মনে হয়েছিল যে আমি সেরে উঠেছি।
আপনার লেখাটা আমি অবশ্যই পড়ব। সেটা নিয়ে পড়ে না হয় কথা বলব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:২৮
ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: টপিকটা ভালোই টানছেন, এটা নিয়ে বলতে গেলে রীতিমত পূঁথি পাঠ করা যাবে মনে হয়।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলা শুরু করি ডাক্তার ভাইরা আমাকেে তেড়ে আসতে পারে।যেহেতু স্টিল রুগী আছি সেহেতু এতবড় রিস্ক নেবোনা।
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭
সুফিয়া বলেছেন: আমি কোন মন্তব্য কুড়ানোর আশায় বিষয়টিকে টপিক হিসেবে টেনে আনেনি। অসুস্থ শরীরে অনাকাংখিত পরিস্থিতিটিকে হজম করতে পারিনি তাই শেয়ার করলাম। এটাও ঠিক যে এ ধরনের বিস্তর অভিজ্ঞতা অনেকের আছে। সে নিয়ে লিখতে গেলে পুঁথি পাঠ হয়ে যাবে। আপনার রিস্কি ব্যাপারটা না হয় আপনার কাছেই থাকল।
ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন কামনা করি।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: আসলে আমরা মানে এদেশী মালেরা একেকটা চীজ! শুধু ডাক্তার না সব পেশাদাররাই আল্লাহর অদ্ভুত সৃস্টি! মন্ত্রী আমলা ইন্জিনায়ার ব্যাবসায়ী বুদ্ধিজীবি সবাই একেকজন দ্শনীয় বস্তু! কেউ কাজ করেনা কাজ জানেনা ফাঁকিবাজ, দুর্ণীতিবাজ ইত্যাদি... আর এই নিয়েই থাকতে হবে।