নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার প্রথম লেখা-পেছন ফিরে দেখা সময়ের পটভূমিতে আজকের আমি।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

সেই আশির দশক থেকে লিখছি। গল্প-উপন্যাসের চরিত্র সৃষ্টিতে লেখনী ও মননের যে বাধাহীন গতি সেটা কতটা শাণিত হয়েছে সেটা একটু ঝালাই করে নেয়ার জন্যই এই উদ্যোগ। তাই করতে গিয়ে মনে পড়ে গেল আমার প্রথম লেখার কথা। নিতান্ত খেয়ালের বশে একটি কবিতা লিখে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ময়মনসিংহের একটি আঞ্চলিক পত্রিকায়। অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম আমার কবিতাটি ছাপা হয়েছে। লেখার প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেলেও লেখনী আর সচল হবার সুযোগ পেল না। কারণ, তখন আমি ক্লাস নাইনের ছাত্রী। কবিতাটির নাম-বিষয়বস্তু আজ আর কিছুই মনে নেই। পত্রিকাটিও বহুদিন সংগ্রহে থাকার পর হারিয়ে গেছে।



যাই হোক। লেখনী থামল তো থামল। আবার সচল হলো যখন তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স এর ছাত্রী। রোকেয়া হলের বার্ষিক ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল ‘সেই দিনের সেই ছেলেটি’ নামের একটি কবিতা। এরপর থেকে টুকটাক চলছিল। এই ফাঁকে মাস্টার্স শেষ করে বিয়ে করে সংসার করতে গেলাম চট্রগ্রামে। হাতে অঢেল সময় পেয়ে লেখার প্রতি আমার ঝোঁক বেড়ে গেল। দেখলাম কবিতার মধ্য দিয়ে আমার যে লেখক সত্তার যাত্রা শুরু তা অবলীলায় গদ্যের বুননে সক্রিয় হয়ে উঠল। সংবাদে প্রথম ছাপা হলো ছাত্র রাজনীতির উপর আমার কলাম লেখা। আমি অসম্ভব রকম অনুপ্রাণিত হলাম। সংবাদের সাথে সখ্যতা বাড়ালাম। লেখাও ছাপা হলো বেশ কয়েকটি। এরই মধ্যে সদম্ভ ঘোষণায় দৈনিক জনকন্ঠ এলো বাজারে। ভালো লাগল আমার। আমিও নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করলাম লেখা দিয়ে। সেটা সম্ভবত ২০০০ কিংবা ২০০১ সালের কথা। তখন আমি সিলেটে। জনকন্ঠে ছাপা হতে লাগল আমার লেখা।



এরই মধ্যে ব্যাংকের চাকুরী নিয়ে ঢাকায় এলাম। জনকন্ঠে লেখা চলল। পাশাপাশি বাড়ল লেখার ক্ষেত্র ও পরিধি। গল্প লিখতে শুরু করলাম আমি। কিছু শুভাকাংখী বন্ধুর পরামর্শ ও উদ্যোগে ১০টি গল্প নিয়ে আমার প্রথম বই ‘রাতের সূর্যমুখীরা’ প্রকাশিত হলো ২০০২ সালে। একজন লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশের এই অনুভূতিই আলাদা। এর আগে গল্পগুলো বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও বই আকারে ছাপার অক্ষরে এই প্রথম। আমি নতুন করে আবারও অনুপ্রাণিত হলাম। এরপর থেকে আর থামেনি আমার গল্প লেখা। আজও লিখে চলেছি। সে এক মজার অভিজ্ঞতা। চিন্তা-ভাবনা করে গল্পের একটা প্লট দাঁড় করিয়ে শুরু করতে পারলেই হলো। তারপর কে যেন এমনিতেই টেনে নিয়ে যায়।



সেই অদৃশ্য শক্তি টানতে টানতে আমাকে এক সময় দাঁড় করিয়ে দিল উপন্যাসের প্ল্যাটফরমে। আমি ‘ধুসর ক্যানভাসে ৭১’ নামে আমার প্রথম উপন্যাস লিখলাম। প্রকাশিত হলো ২০০৩ সালের একুশে বই মেলায়। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত এই উপন্যাসটির বর্ধিত আকারে নতুন সংস্করণও বের হয়েছে পরবর্তীতে একেবারে নতুন আঙ্গিকে। বের করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ।



যাই হোক, দৈনিক পত্রিকায় কলাম লেখা থেকে এভাবে গল্প-উপন্যাস অর্থাৎ নিখাঁদ সাহিত্য রচনায় জড়িয়ে যাই আমি। ইতোমধ্যে দৈনিক জনকন্ঠের বিভিন্ন পাতায় বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ঠিক এখানটাতে এসে আমি অনুভব করলাম যে, পেশাগত ব্যাংকিং জীবন আর পত্রিকায় লেখালেখির সাথে ঠিক কুলিয়ে উঠতে পারছে না আমার সাহিত্যিক সত্তাটি। কিন্তু চাকুরী তো আর ছাড়তে পারব না। তাই আস্তে আস্তে দূরত্ব বেড়ে গেল দৈনিক পত্রিকার সাথে। সম্পর্ক নিবিড় হলো সৃজনশীল সাহিত্য রচনায়। সেই হিসেবে উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, শিশুতোষ রচনা, ভ্রমণ কাহিনী মিলিয়ে আমি এখন ২৩টি বই এর লেখক।



পেছন ফিরে সেই শুরুর দিকে তাকালে মনে হয় অনেক দূর হেঁটে এসেছি। কিন্তু আসলেই কি তাই? সাহিত্যের বিশাল বিস্তৃত অঙ্গনকে বিবেচনা করলে আমার এই পদচারণা সমুদ্রের তীরে নুরী কুড়ানোর চেয়েও মূল্যহীন বলে মনে হয় আমার কাছে। লিখতে লিখতে লেখায় কিছুটা হলেও উৎকর্ষতা এসেছে একথা সত্যি। কিন্তু কিছু দুর্বলতা, যা ছিল শুরুতে, তা আজও কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমি। লেখালেখিতে আমার পছন্দের প্ল্যাটফরম হচ্ছে গল্প। ৫০টিরও বেশী গল্প লিখেছি আমি আজ অবধি। কিন্তু আজও গল্পের থিম বা চরিত্রের সাথে মিল রেখে যুৎসই একটি নাম ঠিকভাবে নির্বাচন করতে গিয়ে অদক্ষতার পরিচয় দেই আমি। আজও আমার মনে হয় আমার গল্পের চরিত্রগুলো একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে আটকে আছে। আমি দক্ষতার সাথে এদেরকে সেই গন্ডী থেকে বের করে আনতে পারছি না। এই বিষয়গুলো আমার লেখাকে এক সময় পাঠকের কাছে একঘেঁয়ে করে তুলতে পারে বলে আমার মনে হয়। গল্প বা উপন্যাসের একটি চরিত্র সৃষ্টির সময় আমি সেই চরিত্রের সাথে একাত্ম হয়ে যাই। কিন্তু আজও আমি আমার কাংখিত চরিত্রকে সাহিত্যের মোড়কে উপস্থাপন করতে পারিনি।



যে কোন লেখকের ভাল লেখা আমাকে আকৃষ্ট করে। আমি লেখাটা নিয়ে ভাবি, নিজের লেখক সত্তাকে এর পাশে দাঁড় করিয়ে বিচার করার চেষ্টা করি। তখন আমি নিতান্তই পাঠক। কিন্তু আমার পাঠক যারা তাদের কেউ কেউ যখন আমার কোন লেখার প্রশংসা করে তখন আনন্দে উজ্জীবিত হওয়ার সাথে সাথে আমার মনে প্রশ্ন জাগে, সত্যিই কি তারা ভাল লাগা থেকে এই প্রশংসা করছে ? আমি জানি, আমার এই জিজ্ঞাসার উত্তর আমি না পেলেও আমার লেখার উৎকর্ষতা সাধনের জন্য এর মূল্য অপররিসীম। আমার চিন্তা ও মননে এই ধরনের অনুভূতি সর্বদা ক্রিয়াশীল বলে আমার লেখার ভুল-ত্র“টি বা দুর্বল দিকগুলো যারা আমার সামনে তুলে ধরেন তাদের প্রতি আমি সব সময় সকৃতজ্ঞ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে থাকি।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

না পারভীন বলেছেন: জেনে ভাল লাগলো আর শুভ কামনা রইলো :)

২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫৯

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.