![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।
পারিবারিক সহিংসতা, সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা ও আমার কিছু কথা।
ইদানীং একটি কথা আমার বারবার মনে হচ্ছে। আমার কেবলই মনে হচ্ছে যে, আমাদের চারপাশের বহমান সময়টা আমাদের নয়। সময়টা ক্রমেই চলে যাচ্ছে অন্য কারও হাতে। এখানে আমাদের বলতে আমি সেইসব মানুষদেরকে বুঝাতে চাচ্ছি যারা অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়,যে কোন সহিংসতার উর্ধ্বে থেকে একটি প্রশান্তিময় জীবন যাপন করতে চায়। এই শ্রেণীর মানুষদের জন্য সময়টা যে কতটা ভয়াবহ ও হিংস্র হয়ে উঠেছে তা অতি সহজেই বুঝা যায় আমাদের চারপাশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার দিকে তাকালে। খুন-ছিনতাই-ধর্ষন-নির্যাতন-আগুনে পুড়িয়ে মারা, সব মিলিয়ে এক ভীবৎস সমাজচিত্র আমাদের সামনে উপস্থিত। সমাজের সুশীল শান্তিপ্রিয় মানুষ মাত্রই এই ভীবৎসতার ঘোরতর বিরোধী। এমন একটা সময় প্রবাহ কখনও তাদের কাম্য নয়। তাই বলছিলাম যে, সময়টা আমাদের কারও কারও জন্য পর হয়ে গেছে।
যে ভীবৎসতার কথা বললাম, যেমন খুন-ছিনতাই-ধর্ষন-নির্যাতন-আগুনে পুড়িয়ে মারা ইত্যাদি অপরাধের অনুষংগগুলো আমাদের পারিবারিক পরিবেশকে যেমন কলুষিত করছে তেমনি সমাজের ভারসাম্যকেও নড়বড়ে করে তুলছে। অর্থাৎ আমরা বলতে পারি যে এ ধরনের পারিবারিক সহিংসতা সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কলুষিত করছে, হুমকির সম্মুখীন করছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রণালীকে। পেছনদিকে খুব বেশী দূরে যাবার দরকার নেই। বিগত কিছুদিন ধরে আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া পারিবারিক সহিংস ঘটনাগুলোর কথা মনে করলে শরীর শিউরে উঠে। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে বা বিয়ে করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে এসিড নিক্ষেপ কিংবা আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা, যৌতুক কিংবা পরকীয়ার কারণে স্ত্রীকে হত্যা করা ইত্যাকার ঘটনা যেন সমাজের গতানুগতিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইদানীং অত্যন্ত উদ্বেগজনকভাবে স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যার ঘটনাও ঘটছে। কারণ সেই একটাই -– পরকীয়া। এগুলোকে ছাপিয়ে সমাজকে ভীবৎসতম অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে যে ঘটনা তা হলো বাবা বা মা কর্তৃক সন্তানকে হত্যা। সমাজ-সভ্যতার এতদূর অগ্রগতির পরও আইয়ামে জাহেলিয়া যুগের এসব ঘটনার পুণরাবৃত্তি যে কোন মানুষের সুস্থ মননশীলতা তথা মননশীল অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করছে নিঃসন্দেহে।
সে কারণে এসব দেখে আজকাল একটা ভাবনা আমার মনে খুব করে কাজ করছে। আমার কেবলই মনে হচ্ছে আমরা যতটা না সভ্য হচ্ছি তার চেয়ে বেশী বর্বরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই এগিয়ে যাওয়া এতটাই দ্রুত ও সহিংস যে, তা অতি সহজেই আমার মনের ভিতরকার সভ্যতার অনুষংগগুলোকে নির্বিচারে হত্যা করে চলছে। আমাদের ব্যর্থতা এখানেই যে, আমরা এগুলোকে প্রতিহত করতে পারছি না। অধিকন্তু যেন আত্মসমর্পন করে বসে আছি এসব সহিংসতার কাছে। অথচ আমরা একটুও ভেবে দেখি না যে, এসব সহিংস ঘটনা প্রতিনিয়ত সমাজ ও রাষ্ট্রের ভারসাম্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমাজের সুশীল মানুষের ব্যক্তিগত উদ্যোগ তো দূরের কথা, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রসমূহও যেন এসব ঘটনার কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে।
তবে যদি শুধু পারিবারিক সহিংসতার কথা যদি বলি তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে রাষ্ট্র ও সমাজের প্রশাসন যন্ত্রসমূহ এসব সহিংসতা দূর করতে কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম ? কারণ, এসব ঘটনার পেছনের কারণ অত্যন্ত ষ্পর্শকাতর, এক কথায় মনোগত। মানুষের মনোগত দিক, সেটা ভাল হোক বা মন্দ হোক, বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কারও নেই যতক্ষণ না পর্যন্ত এর স্বরূপ বাইরে প্রকাশ পায়। আমি মনে করি সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রসমূহের এর পরের ভূমিকা হওয়া উচিত অত্যন্ত কঠোর ও যথোচিত। দ্রুততম সময়ে এসব ঘটনার কঠোর ও কঠিন শাস্তি হলে আরও কিছু ঘটনা ঘটাবার আগে একটু হলেও ভাবত ঘটনার হোতারা।
বলছিলাম আমাদের সংবাদ মাধ্যমসমূহের ভূমিকার কথা। যে কোন ঘটনা বা দুর্ঘটনার খবর আমাদের মাধ্যমগুলো যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে আমাদের সামনে তুলে ধরছে এব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ আছে বলে আমি মনে করিনা। তবে একথা সত্য যে সমাজকে পীড়িত করে, মানুষের সুস্থ মননশীলতাকে কলুষিত করে এমন সব খবর যতটা প্রকাশিত হয়, তার চেয়ে বেশী অথবা সম পরিমাণ হয়তো অপ্রকাশিত থেকে যাচ্ছে। টেলিভেশন চ্যানেলগুলো আজকাল এসব ঘটনা নিয়ে আলাদাভাবে অপরাধমূলক তথ্যনির্ভর অনুষ্ঠানও প্রচার করছে। এসব অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া যে কোন অপরাধমূলক ঘটনার পূর্বাপর সবকিছুর সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। আমার সাধারণ হিসেব বলে অপরাধীকে শনাক্ত করে দ্রুততার সাথে আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত শাস্তি দানের ক্ষেত্রে এসব অনুষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত যথেষ্ট সহায়ক ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে এবং বিচারের প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে পারে।
কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছেনা। এর কারণ কি ? এক কথায় এর উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে আমার কিছু ব্যক্তিগত মতামত এখানে তুলে ধরতে চাই।
প্রথমত ঃ- যে কোন অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে যাবার পর টেলিভিশন বা অন্য যে কোন সংবাদ মাধ্যমে যতটা গুরুত্বের সাথে ও বিস্তৃত আকারে প্রচার করা হয়, পরবর্তীতে এসব ঘটনার বিচার সংক্রান্ত অগ্রগতি ততটা গুরুত্বের সাথে প্রচার করা হয়না। এমন কি কোন খোঁজ-খবরও নেয়া হয়না। বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবার পেছনে এটাও একটা কারণ হিসেবে কাজ করে।
দ্বিতীয়ত ঃ- নিজের সন্তান হত্যাকারী পিতা-মাতাকে গতানুগতিক বিচার প্রক্রিয়া থেকে আলাদা করে বিশেষ ধারায় বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে।
তৃতীয়ত ঃ- নারী ও শিশু নির্যাতনবিরোধী প্রচলিত আইনগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনবাধে এসব আইন সংশোধন করতে হবে। অপরাধের ধরন পরিবর্তনের সাথে সাথে আইনকে যুগোপযোগী না করতে পারলে সেই আইন প্রয়োগের মাধমে অপরাধের যথোচিত বিচার করা সম্ভব নয়।
চতুর্থত ঃ- অপরাধী যেই হোক, তার অপরাধকে শুধুই অপরাধ হিসেবে দেখতে হবে। সেই ব্যক্তি কে, কার কি হয় ? এসব বিবেচনায় না এনে তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সর্বোপরি আমি মনে করি যে, মানুষে মানুষে পারষ্পরিক সহমর্মিতা, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসবোধ না থাকলে এ ধরনের সহিংস অপরাধমুলক ঘটনার পুণরাবৃত্তি কোনমতেই রোধ করা সম্ভব নয়।
১১-১১-২০১৪
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৪৫
সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। বিষয়টার উপর আপনাদের সুচিন্তিত কিছু মতামত আশা করেছিলাম।
২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কিন্তু আপনার চাওয় বাস্তবায়িত হবে কিভাবে?
এর গোড়াতেই যে গলদ!
জীবনবোধের যে আকাশ পাতাল ব্যবধার হয়েগেছে বা বানানো হয়েছে, আত্মকেন্দ্রিকতার যে সংস্কৃতি আজ নগরে বিকশিত...সাংস্কৃতিক যে আগ্রাসন মন-মগজ নিত্য ধোলাই করছে, ধর্মহীনতার, ধর্মের ভুল উপস্থাপন থেকে যে ধর্ম বিমূখ শ্রেনী তৈরী হচ্ছে তাদেরকে কিভাবে টেকল করবেন???
শুধূ আইন দিয়ে?
আত্মা যখন দায়হীন হয় তখন আইন প্রশাসন তাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা। শেষ বেলায় হয়তো তাকে ফাসি দিতে পারে- কিন্তু ততদিনে অনেক ধ্ভংস আর অপকর্ম ঘটে যায়-যা ফেরানো যায়না।
আমাদের চিরায়ত যে সামাজিক সম্পর্ক, শ্রদ্ধা ভালবাসা আর আন্তরিকতার তাকে ফিরিযে আনতে পারলে আশা করা যায় কিছূটা। নির্মোহ জীবন বোধকে হাইলাইস করবেন কিভাবে?
পূজিবাদের মরণ যে তাতে! তাই স্পন্সর পাবেন না ভাল জীববোধের নাটকে..
ভোগ, পরকীয়া আর এসবের পেছনে যতটা বিনিয়োগ পাবেন-ন্যায়-নীতি মূলৌবোধর উপস্থাপনায় ততটাই পেছনে হাটতে হয়!!
এক জটিল সমীকরণের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে সময়। মুক্তির পথ কোথায়???
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৩
সুফিয়া বলেছেন: খুব ভাল লাগছে আপনার সুচিন্তিত মতামত। সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি ঠিকই বলেছেন যে,সামাজিক সম্পর্ক, শ্রদ্ধা, ভালবাসা আর আন্তরিকতা ফিরিয়ে আনতে পারলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ কিছুটা আশা করা যায়।
আমিও ঠিক এটাই উপলব্ধি করেছি। তাই তো প্রবন্ধের সর্বশেষে বলেছি যে,মানুষে মানুষে পারষ্পরিক সহমর্মিতা, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসবোধ না থাকলে এসব ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।
আপনার আরও একটা কথা ভীষণ ভাল লেগেছে। ভোগ, পরকীয়া -- এসবের পেছনে যতটা বিনিয়োগ পাওয়া যাবে ন্যায়নীতি-মূল্যবোধের প্রশ্নে ততটাই পেছনে হাঁটতে হবে আমাদেরকে।
আমি বলব চরম এই সত্যটার জন্যই আজ সমাজের এই অধঃপতন।
আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল এই সব কিছুর পেছনে কারন একটাই... ভিসন এন্ড মিসন বিহীন অন্তঃসার শুন্য যান্ত্রিক জীবন ব্যবস্থা। যেখানে কেউ জানেনা গন্তব্য কোথায়।
আপা ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা জানবেন।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৮
সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
আপনি যেভাবে বলছেন সেটাকে আমি একটু অন্যভাবে বলতে চাই। ভিসন এন্ড মিশনবিহীন না বলে আমি এদিকটাকে বলতে চাই মিসমিসন এন্ড মিসভিসন। অর্থাৎ জীবনের যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে এরা এগিয়ে যায় এবং সেটা পাওয়ার জন্য সহিংস কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, সে লক্ষ্য তাদের ভুল নির্বাচন। কিন্তু এরা সেটাকে পাওয়ার জন্য এতই মত্ত থাকে যে ঠিক-ভুলের পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়।
তাই তো সমাজে ও পরিবারে এই অস্থিরতা।
৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৫০
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: প্রবন্ধ ভালো লাগল।
লেখিকার প্রতি সুভেচ্ছা রইল।
৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৯
সুফিয়া বলেছেন: আপনার প্রতিও অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। ভাল থাকবেন আপনি।
৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০০
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ভাল প্রস্তাবনা, কিন্তু বাস্তবায়ন কি হবে?
লেখায় ++
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৬
সুফিয়া বলেছেন: এখানেই তো আমাদের অসহায়ত্ব। প্রচলিত আইনগুলোর বাস্তবায়নও যদি নিশ্চিত করা যেত তাহলে এসব ঘটনার পুণরাবৃত্তি কিছু হলেও রোধ করা যেত।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৮
কলমের কালি শেষ বলেছেন: দুঃখজনক । এখন তো এইসব অপরাধের ধরনও চেঞ্জ হয়ে গেছে । খুবই নংরাজনকভাবে সংঘঠিত হয় নতুন নতুন নিয়মে । সমাজ দিন দিন বিকৃত হয়ে যাচ্ছে ।
আপনার মতামতের সাথে একমত ।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৮
সুফিয়া বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন। অপরাধের ধরন বদলায়, কিন্তু সেই সাথে আমাদের আইনের ধারাগুলোকে সময়োপযুগী করা তো হয়ই না, প্রচলিত আইনের ব্যবহারও সঠিকভাবে করা হয়না।
যার কারণে অপরাধীরা উৎসাহী হয় অপরাধ সংঘটনে।
ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: চমৎকার একটি লেখা । চমৎকার কিছু ভাবনা আপু +
শুভেচ্ছা নিরন্তর ।