নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাহিত্যের মাধ্যমে বিশ্বায়ন

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাহিত্যের মাধ্যমে বিশ্বায়ন

লেখার জন্য বিষয়বস্তুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যাপক। কারণ, শিরোনামের প্রতিটি শব্দ আলাদা আলাদাভাবে ব্যাখ্যার দাবী রাখে এবং এই ব্যাখ্যা যথেষ্ট বিস্তৃত পরিসরে হতে পারে। কিন্তু সেই বিস্তৃত ও গুরুগম্ভীর ব্যাখ্যায় আমি যাব না। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলা যায় যে, শব্দগুলো নিয়ে বিস্তৃত পরিসরে আলোচনা করার মতো যথেষ্ট প্রজ্ঞা আমার আছে বলে আমি মনে করিনা। তাই আমার অবস্থানের ক্ষেত্র থেকে এই বিষয়গুলোকে আমি যেভাবে দেখি কিংবা এগুলোকে নিয়ে যেভাবে ভাবি, তাই তুলে ধরার চেষ্টা করছি এখানে।

আমি মনে করি ধর্মান্ধতা কখনও সাহিত্য কিংবা সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নে সহায়ক হতে পারেনা। বরং এটা সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রসার ও অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করে সব সময়। একইভাবে আধুনিক মৌলবাদের যে ধরনের প্রকাশ ও কর্মকান্ড আমরা অহরহ জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে দেখছি তাতে এটা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয়না যে, ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদ শব্দ দুটি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। মৌলবাদ সেই সমাজেই অতি সহজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে এবং কাজ করতে পারে যে সমাজে অশিক্ষা ও ধর্মন্ধতার উপস্থিতি ব্যাপকতর। একটা সমাজে বিদ্যমান অশিক্ষা, কুসংস্কার ইত্যাদি মিথগুলোকে পুঁজি করে সেই সমাজে মৌলবাদ সহজে তার ভয়ংকর থাবা বিস্তার করে থাকে এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। আর এর কুফল ভোগ করতে হয় গোটা সমাজ তথা দেশ তথা বিশ্বকে। তাই সার্বজনিন শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে একটা সমাজের মুখ থুবড়ে পড়া বিবেকবোধগুলোকে জাগিয়ে তুলতে পারলে সেই সমাজ থেকে ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদকে সহজে নির্বাসনে দেয়া যেত। আমাদের ব্যর্থতা এখানেই। আমরা সেটা করতি পারি না।

আসলেও কি তাই যে, আমরা সেটা করতে পারি না ? না-কি সেটা করতে চাইনা ? মৌলবাদের যে ভয়ংকর তান্ডব আমরা আমাদের চারপাশে অহরহ দেখছি তাতে একথা বলতে পারিনা যে ‘আমরা সেটা করতে চাইনা।’ আমাদের ভিতরে যদি সামান্যতম মানবিক চেতনা ও বিবেকবোধ এর তাড়না থেকে আমরা অত্যন্ত জোড় দিয়ে চাই যে, সমাজ থেকে ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদ নামক অপশক্তি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দূর হোক। মানুষ স্বস্তি পাক, শান্তিতে বসবাস করুক। সভ্যতার অগ্রযাত্রার সাথে সমাজের সম্পৃক্ততা বাড়–ক। তানাহলে উন্নয়নের মূল ¯্রােত থেকে পিছিয়ে পড়বে সেই সমাজ তথা দেশ। এই পিছিয়ে পড়া সমাজকে বিশ্ব-উন্নয়নের মূল ¯্রােতে ধরে রাখতে হলে সর্বস্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে। রাজনীতিবিদ-অর্থনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক, বুদ্ধিজীবি, লেখক ও সাহিত্যিক তথা সমাজের সাধারণ মানুষ সবাইকে একযোগে-একলক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

সাাহিত্যের মাধ্যমে বিশ্বায়নের প্রসঙ্গটা এভাবেই এসে পড়ে। সাহিত্য মানে মুক্ত বিহঙ্গ, মানচিত্রের গন্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে ইচ্ছেমতো ডানা মেলা যখন তখন। যে কোন ধরনের ভৌগলিক সীমারেখা কিংবা কৃষ্টির যে কোন ধরনের ভিন্নতার উর্ধ্বে সাহিত্যের স্থান। কাজেই সাহিত্যের মাধ্যমে আমাদের বিশ্বায়নের স্বপ্ন যত সহজে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, অন্য কোন মাধ্যে সেটা কতটা সহজে বাস্তবায়ন করা সম্ভঊম নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। সাহিত্য সময়ের দর্পন, সমাজের দর্পন। একটা যুগোপযোগী ভাল সাহিত্য, সেটা যে দেশেই রচিত হোক না কেন, মানচিত্রের বেড়াজাল ডিঙিয়ে সর্বত্র অতি দ্রুত ্রপৗঁছে যেতে সক্ষম। শুধু যে কোন দেশের সমাজের অন্ধ গলিপথে উন্নয়নের আলো ছড়িয়ে দিতে পারে সেই সাহিত্য। সাহিত্যের সব্যব্যাপী এই শক্তির কারণেই আজ সর্বত্র জোড়েসোড়ে সাহিত্য-সংস্কৃতির মাধ্যমে বিশ্বায়নের কথা শুনা যাচ্ছে। যদিওএই প্রক্রিয়ায় বিশ্বায়নের শ্লে¬াগানটা এখনও ততটা শক্ত ভিতের উপর দাঁড়াতে না পারেনি তথাপি আমরা যারা সাহিত্যকে লালন করি নিজের সবটুকু চেতনাবোধ দিয়ে, এর পরিস্ফুটন ঘটাতে বুকের সবটুকু উত্তাপ ঢেলে দেই পরম মমতায়, তারা বিশ্বাস করি এই শ্লে¬াগান একদিন বাস্তবায়িত হবেই। সেদিন বিশ্বজুড়ে সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক সহাবস্থানের পটভূমিতে সাহিত্য প্রেমিক ও সাহিত্য সেবিরা নতুন এক সমাজের নেতৃত্বে এগিয়ে আসবে।

শুধু তাই নয়। সাহিত্য তার ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে সামাজিক অগ্রযাত্রার পথে সব ধরনের অপশক্তির বিরুদ্ধে হতে পারে শক্তিশালী প্রতিবাদী শক্তি। আমরা জানি সাহিত্য মাত্রই মুক্তচিন্তা, বাধাহীন এগিয়ে যাওয়া আলোর পথে। তাই বোধহয় ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী ও মৌলবাদী শক্তির সাহিত্যকে দেখে তাদের প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে। সে কারণেই দশে দেশে বড় বড় ও প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্যিকসহ সকল মুক্তচিন্তার মানুষেরা সব সময় মৌলবাদীদের তোপের মুখে পড়ছে এবং তাদের হিং¯্রতার শিকার হয়ে নৃশংসভাবে জীবন দিচ্ছে। তাদের প্রতি ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের এই কোপানল এটাই প্রমাণ করে যে, এইসব মুক্তচিন্তার মানুষেরা সমাজকে বিশ্বাœয়নের ধারায় শরীক করতে যথেষ্ট সক্ষম, যা প্রকারান্তরে ধর্মান্ধ মৌলবাদীদেও জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই ধর্মান্ধ মৌলবাদীদেরা যে কোন মূল্যে সমাজে মুক্তচিন্তার মানুষদের অগ্রযাত্রা রোধ করতে বদ্ধ পরিকর।

একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদের মূলে রয়েছে সমাজে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা প্রাগৈতিহাসিক অপসংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারা। এর একটা বড় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে শিক্ষাক্ষেত্রে পশ্চাৎপদতা। কাজই আমাদেরকে প্রথমেই অশিক্ষা নামক অবরুদ্ধতার দেয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসতে হবে যে কোন মূল্যে। এজন্য আমাদের চিন্তা-চেতনা ও বিবেকবোধকে জাগিয়ে তুলতে হবে। মনের মধ্যে ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার জোড় তাগিদ সৃষ্টি করতে হবে। আর এজন্য আমাদেরকে চিন্তায় ও কাজে প্রগতিশীল মানসিকতার পরিচয় দিতে হবে। শিক্ষা-সংস্কৃতির সর্বক্ষেত্রে নতুনকে গ্রহণ করতে হবে পুরাতনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যম। আর এটাকে সম্ভব করে তোলার একটা বড় মাধ্যম হতে পারে সাহিত্য।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: চমৎকার লেখা। প্রথম ভাল লাগা।




ধর্মান্ধতা থেকেই মৌলবাদ এর জন্ম। আর এর থেকে মুক্তির উপায় ধর্ম ভিত্তিক আধুনিক শিক্ষা, যা চলমান সমাজ ব্যবস্থাকে মানিয়ে চলতে পারে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০২

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ইমতিয়াজ লেখাটা পড়ার জন্য। ভাল থাকবেন।

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৭

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লিখেছেন আপু ++++++++++++


অনেক শুভকামনা রইল :)

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ বন্ধু অপূর্ব। ভালো থাকবেন।

৩| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩০

অন্তু নীল বলেছেন: ভালো লিখেছেন। বাস্তব চিত্র.।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৪| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৫

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: শুধু ধর্মান্ধতাই নয়, দলান্ধতা, মতান্ধতাও সাহিত্যের জন্য ক্ষতিকর :)

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১০

সুফিয়া বলেছেন: ঠিক বলেছেন তহসিনুল। দলান্ধতা, মতান্ধতা -- এই দুটো শব্দ প্রথম শুনলাম। আমার এই টপিকস এর জন্য বেশ উপযোগী।

ধন্যবাদ আপনাকে।

ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.