নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

"প্রত্যেক সত্ত্বাকে মৃত্যু আস্বাদন করতে হবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, নিঃসন্দেহে সে হল সফল। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়।" আল ইমরান,আয়াত ১৮৫

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম

সুস্থ মানসিকতা এবং সুন্দর মনের মানুষদের বন্ধু হিসেবে পেতে চাই...

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু থেকে কি আমাদের পরিত্রাণ নেই??

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪


আজকে প্রথম আলোতে দু'টো খবর দেখলাম। ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌপথে ২৬৫ জনের মৃত্যু আর বাড়ির ভেতর বাস ঢুকে কেড়ে নিল ঘুমন্ত স্বামী–স্ত্রীর প্রাণ! নিহত দম্পতির ছোট ছোট তিন ছেলে মা-বাবাকে হারিয়ে পথের ধারে বসে কাদছে! :(

আমাদের যোগাযোগ মন্ত্রীও সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, পাখির মত, মাছির মত সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে! মহাসড়কে (যদিও বাংলাদেশে প্রকৃত অর্থে কোন মহাসড়ক নেই, আছে মৃত্যু ফাদ!) নামলেতো এখন শুধু আল্লাহ আল্লাহ করি, যাতে জান নিয়ে ঘরে ফিরতে পারি। তা এই পরিস্থিতি থেকে কি আমাদের মুক্তি নেই?

একটা দুঃখজনক সত্য কথা, যেটা আমরা আসলে চিন্তাই করি না, গাড়ী দুর্ঘটনা হলেই আমরা চালককে দোষ দিয়ে আমাদের মনের ঝাল মিটিয়ে নেই (আমাকে ভুল বুঝবেন না, চালকের ভুল হতেই পারে), কিন্তু এর পরে আমরা আমাদের মাথা আর খাটাই না! অনেকগুলো সমস্যা আছে যেগুলোর সঠিক পরিকল্পনার অভাবে আমাদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষয়- ক্ষতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

১। দুনিয়ার আর কোন দেশে মহা সড়কের ঠিক পাশেই ঘর বাড়ি আছে কি না সন্দেহ! এটা সুস্পষ্ট পরিকল্পনার অভাব।
২। মহাসড়কের ডিজাইন হতে হবে বিপজ্জনক বাক মুক্ত। বিপজ্জনক বাক পাহাড়ী এলাকায় থাকতে পারে, সমতলে নয়।
৩। মহাসড়ক হতে হবে ২ থেকে ৩ লেইন প্রতি পাশে, মাঝখানে ডিভাইডার থাকতে হবে। পাশে সার্ভিস এরিয়া থাকতে হবে যেখানে গাড়ী নষ্ট হলে বা কোন জরুরী প্রয়োজনে পার্ক করা যাবে।
৪। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে (শহরের কাছাকাছি এলাকগুলোতে বিশেষ করে) সড়ক বাতি থাকতে হবে।
৫। মহাসড়কে নির্ধারিত গতি উল্লেখ থাকতে হবে, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হবে যার মাধ্যমে উচ্চ গতির গাড়ীকে জরিমানা করা হবে।
৬। সিট বেল্ট পড়া বাধ্যতামূলক করতে হবে, মহাসড়কে একটু পর পর এ সংক্রান্ত নির্দেশনা থাকতে হবে।
৭। মহাসড়কে সুস্পষ্ট রোড সাইন থাকতে হবে।
৮। দ্বিমুখী চলাচলের মহাসড়কে ওভারটেকিং নিষিদ্ধ এলাকার সুস্পষ্ট রোড মার্কিং থাকতে হবে।
৯। চালকদের যথাযথ পরীক্ষার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে যাতে তারা ট্রাফিক সাইন বোঝে এবং সেটা মেনে চলার যোগ্যতা রাখে। শুধু গরু ছাগল চিনলে হবে না।
১০। মহাসড়কে পথচারীরা শুধু মাত্র ফুট ওভার ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হবেন। শহরের মধ্যে পথচারী ফুট ওভার ব্রিজ ছাড়া নির্ধারিত জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হতে পারেন।
১১।পথচারীর মধ্যে এই সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, হঠাৎ করে লাফ দিয়ে রাস্তা পারাপার নয়। নির্ধারিত ফুট ওভার ব্রিজ/জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হতে হবে। দ্রুত গতির একটি গাড়ীকে হঠাৎ ব্রেক করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।
১২। চালককে বোঝাতে হবে, জেব্রা ক্রসিং দিয়ে যখন কেউ রাস্তা পার হতে চাইবে, তখন চালককে গাড়ীর গতি কমাতে হবে বা ব্রেক করে থামাতে হবে। এজন্য প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।


এরপরেও চালকের ভুলেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, কারণ তারা রোবট নয়, মানুষ। কিন্তু উপরে আমি যা উল্লেখ করেছি, সেটাই হল মহাসড়কের নূন্যতম স্ট্যান্ডার্ড যেটা আমাদের দেশে কোথাও নেই। আর সেকারণে দুর্ঘটনা ঘটলে তার ইমপ্যাক্টটা হয় বেশী। আমি ওপরে যা বলেছি সেটা যদি কার্যত আমাদের দেশে থাকত, তাহলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষয়ক্ষতি অনেক অনেক কম হত। এছাড়া বাস কোম্পানির মালিকরা তাদের চালকদের কিভাবে ব্যবহার করছেন, সেটাও বিবেচ্য বিষয়। তারা কি তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিচ্ছেন কিনা সেই সচেতনতা বাস মালিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের সংস্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অডিট টিম থাকতে হবে, যারা এই ব্যাপারগুলো পরীক্ষা নিরিক্ষা করবে মাঝে মাঝে।

আমি বিশ্বাস করি না, মহাসড়ক নির্মানের সামর্থ্য আমাদের নেই। যেটা আছে সেটা হল আমাদের কর্তাব্যাক্তিদের সদিচ্ছার অভাব। তারা নিজেরা দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ান, কিন্তু নিজের দেশকে উন্নত করার ইচ্ছে তাদের অধিকাংশেরই নেই, দুঃখজনক হলেও সত্য।

আমি ওপরে যা উল্লেখ্য করলাম, সেগুলো বাস্তবায়ন না করে আমরা যতই গলা ফাটাই, এই পরিস্থিতির উন্নতি কখনোই হবে না। আমরা শুধু কেদেই যাব, পত্রিকা/ব্লগ ভরে ফেলব আলোচনা সমালোচনায়, কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হবে না... :|

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


সরকারের মন্ত্রী ও যোগাযোগের ইন্জিনিয়ারেরা ছাত্র রাজনীতিবিদ

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: হুম, সমস্যাটা ওখানেই।

আপনিতো দেশের বাইরে থাকেন, আমিও গত তিন বছর হল বাইরে আছি, সেখানেও তো রাজনীতিবিদরাই মন্ত্রী হয়, কিন্তু যোগ্য লোক মন্ত্রী হয় বা মন্ত্রীর যোগ্যতা থাকে তার কাজ বোঝার এবং যোগ্য লোককে কাজে লাগাবার।

আমাদের মন্ত্রী, সচিব, আমলারা কি সেই যোগ্যতাটি একেবারেই রাখেন না? না কি এটা আমাদের জাতিগত সদিচ্ছার অভাব? খালি লুটে পুটে খাব, দেশের জন্য কিছুই করব না!! X((

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮

আবু ইশমাম বলেছেন: প্রতিবছর ঈদের একই চিত্র। সমাধান হবে যে কবে তাই তো বুঝতেছি না

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: সমাধানের পথ তো উপরেই বাতলে দিলাম, এখন কর্তা ব্যাক্তিরা যদি সেটা করতে চান! :|

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০

ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার উপরের প্রথমে যে কয়টা সমস্যার কথা বললেন তা সমাধান বাংলাদেশে হবেনা। সুতরাং ওর মধ্যেই করতে হবে। বিদ্যমান সড়ক আর অবকাঠামোতে চলতে গেলে প্রথম দরকার ড্রাইভারদের নিয়ন্ত্রন, গতি নিয়ন্ত্রন। গত ঈদের নয়দিনে যে কয়টা মৃত্যু হয়েছে তার সবগুলোই ১০০% চালকের দোষে। ওসব রাস্তায় চালকদের ঐ দক্ষতা নিয়ে (৭৫% এর যথাযথ লাইসেন্স নেই) ঐ শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ( ৫০% পড়তে জানেনা) ঐ গাড়ী নিয়ে (৫০% গাড়ি আনফিট কিন্তু ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে!) ১২০- ১৪০ কি.মি. স্পীডে চালালে একসিডেন্ট হবেই, একশোবার হবে। পারবেন একটা ড্রাইভারের একটা চুল বাঁকা করতে? না,কারণ ওদের রক্ষা করার জন্য কয়েকজন মন্ত্রী আছেন। সুতরাং মরতেই হবে!

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকাবাসী আপনার মন্তব্যের জন্য। বটম লাইন হল, আমাদের মরতেই হবে... :(

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
যতই রাস্তাঘাট প্রশস্ত করুক, পরিকল্পনা করে নিয়মনীতি তৈরি করুক, জনগণ সাবধানে চলুক - কোন কিছুতেই কোন লাভ হবে না।
যতদিন না চালকদের রোড পারমিট দেওয়া কর্মকর্তাগুলো সচেতন না হবে - ততদিন পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ কমবে না।
সরকারকে সবার প্রথমে উচিৎ এই দিকটায় নজর দেওয়া। চালকদেরকে ভাল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, অভিজ্ঞ হতে হবে। মাঝে মাঝে নিশ্চিত দুর্ঘটনাও এড়িয়ে দিতে পারে ভাল চালকেরা।
কিন্তু রাস্তায় নেমে গতির ঝড় তুলে ওভারটেক, বাঁক ঘোরানোর সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চিন্তা না করে চালালে তো দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব না।

শুধু এই একটা জায়গায়ই হাত দিক শুধু সরকার। দেখবেন - সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক কমে যাবে।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:০১

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাই, ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।

তবে আপনি যদি আমার পয়েন্টগুলো লক্ষ করেন, সেখানে এই ড্রাইভারদের ব্যাপারটা কিন্তু আমি উল্লেখ্য করেছি। তবে শুধু চালকের ওপরেই সব ছেড়ে দিলে হবে না। চালককে সঠিক পরিবেশ দিতে হবে গাড়ি চালানোর। চালকের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা কি কখনো আমরা চিন্তা করে দেখেছি? ধরুন, ঢাকা - টাংগাইল মহাসড়কে গাড়ি জ্যামে আটকে আছে। নন এসি গাড়ি হলে যাত্রী হিসেবে আপনি হাসফাস করছেন, কিন্তু যেই ব্যাক্তি বাসের স্টিয়ারিং ধরে আছে তার অবস্থাটা কখনো বোঝার চেষ্টা করেছেন? ম্যানুয়াল গিয়ার এই বাসে যদি একটু পর পর থেমে থেমে চলে, তাহলে তার হাত পা সব সময় ব্যস্ত থাকে। এরপর যখন সে মুক্তি পায় এই যানযট থেকে, তখন তার মানসিক অবস্থাটা কেমন হয়, সেটা তার জায়গায় নিজেকে বসিয়েও চিন্তা করতে হবে। ফলাফাল, বেপরোয়া ড্রাইভিং!

আসলে এই ব্যাপারগুলো একটা আরেকটার সাথে জড়িত। ইরানে আমি গাড়ি চালিয়েছি ২ বছর, প্রায় ৩৫০০০ কি.মি.। সেখানে কি পরিবেশে গাড়ি চালিয়েছি আর বাংলাদেশে রাস্তার কি অবস্থা! এজন্য এই ব্যাপারগুলো হয়ত ঠিকমত অনুধাবন করতে পারছি। সুতরাং যেকোন একটা বিষয় ঠিক করলেই সমাধান হবে না, এটা অনেকটা চেইনের মত, আপনাকে ক্রমান্বয়ে সবগুলোতেই হাত দিতে হবে, তবেই আপনি নিরাপদ সড়ক পাবেন। :)

৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১২

এমএল গনি বলেছেন: যথার্থ বলেছেন |

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২২

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:৩৪

চানাচুর বলেছেন: ১০ আর ১১ নং পয়েন্ট পড়ে অত্যন্ত শান্তি লেগেছে :#)

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২৮

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: শান্তি লাগলে কি হবে বইন, রাস্তায়তো অশান্তি লেগেই আছে! কারো কি এসব বোঝার, মানার টাইম আছে??!! :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.