![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্ষমা চাওয়া সাহসীর কাজ
এ রাষ্ট্রের ক্ষমতা উৎস জনগন। যাদের দায়িত্ব দিয়েছি তারা দায়িত্ব পালণ করেনি। রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে একবার প্রশ্ন করিনি, কেন দায়িত্ব পালণ করলেন না? কেন ব্যর্থতা? কেন আলী আকবার চিকিৎসা পাননি? আমি ক্ষমা চাইব হাত জোর করে, মাথা নিচু করে। এ ক্ষমা বিবেকের কাছে নিজের জন্য!
আমরা ক্ষমা চাইব অকৃতজ্ঞতার জন্য, আমরা ক্ষমা চাইব দায়িত্ব হীনতার জন্য, ক্ষমা চাইব নিস্ত্রিয়তার জন্য। ক্ষমা চাইব দায়িত্ববান হওয়ার জন্য। যাতে আগামী দিনে আলী আকবর ভাইয়ের মতো কাউকে বিনা চিকিৎসা বিদায় নিতে না হয়।
এদিক ওদিক অনেক প্রশ্ন করা যাবে। অনেক কথা বলে দায়িত্ব এড়ানো যাবে। তবে একবার বিবেকের ডাক শুনুন। যা বলে তাই করুন.... কাল ১৭ নভেম্বর বিকাল ৪ টায় রাজু ভাস্কর্
---
কত সভা,সমাবেশ-ই নাহ হয় এই শহরে। আগামীকাল ১৭ নভেম্বর আমরা আমাদের নিস্ত্রিয়তা, উদাসীনতা আর আমাদের নিলজ্জতার জন্য ক্ষমা সভায় আসার আবাহন করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবরে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু কারণে। তার কাছে ক্ষমা চাইতে এক হচ্ছি আমরা আগামীকাল বিকাল ৪.টায় রাজু ভাস্কর্য এর পাশে। ক্ষমা চাইব ব্রাক্ষণবাড়ীয়া জেলার সুহিলপুরে গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবরের কাছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি আকবর পাগলা হিসেবে পরিচিত। গৃহহীন আকবর পাগলা ৪২ বছর সুহিলপুর-তেলিয়াপাড়ার রাস্তার ধারে জীবন কাটিয়েছেন। নির্জন রাতে আকবর পাগলা ছিল এই রাস্তা পারাপারকারী হাজারো মানুষের সঙ্গী।
গত ৪২ বছরে আকবর পাগলার ভাত কাপড়ের অভাব হয়নি।গ্রামের যার বাড়িতে আকবর পাগলা গেছে তারাই তাকে খাবার দিয়েছে।
দিনকয়েক আগে অসুস্থ আলী আকবর ব্রাক্ষণবাড়ীয়া হাসপাতালে আসেন। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা ছাড়াই তিনি তিনদিন হাসপাতালের মেঝেতে পড়েছিলেন। কিছু তরুন তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তার জানা জরুরি ভিত্তিতে তাকে আইসিইউ-তে নিতে হবে। কিন্তু প্রায় ৭০ বয়সি পাগলার জন্য আইসিইউ যোগাড় করা এই শহরে কত কঠিন তা উপস্থিত সবাই জানেন। শহরের সকল সরকারী হাসপাতাল ঘুরে একটি হাসপাতাল সিরিয়াল রাখলেন। তবে কথা একটাই সকাল ৯টায় মধ্যে বিশেষ সুপারিশ লাগবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ফ্যাক্স ও ইমেইল এবং শতাধিকবার ফোন দিয়ে উত্তর মেলেনি। আলী আকবরের জন্য সুপারিশ আসেনি।
১৪ নভেম্বর ২০১৩ বেলা ১২.৩০টায় আলী আকবর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে জানাজার শেষে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় তার প্রিয় ভূমিতে। সুহিলপুরবাসীরা তাদের আকবর পাগলাকে সমাধিত করে।
দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আছে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার নানা সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু কোন সুবিধাই পৌছানো যায়নি আলী আকবরের মতো মানুষের কাছে।
যে স্বাধীনতা আমাদের গর্ব, যাদের ত্যাগের কারণে আজ দেশ এত সমৃদ্ধ। তাদের বিনা চিকিৎসা মৃত্যু আমাদের জন্য লজ্জার। আমাদের অক্ষমতার, নিস্ত্রিয়তা, উদাসীনতা, অবজ্ঞার আর আমাদের নিলজ্জতার জন্য আমাদের ক্ষমা চাইতে হবে। আমাদের দায়িত্ব পালন করেনি। তাই ক্ষমা প্রার্থনা করব।
দেশে এই আলী আকবরের মতো অনেক আলী আকবর আলী এখনো আছেন। আমরা তাদের খাদ্য, চিকিৎসা আর বাসস্থানের নিশ্চিয়তা চাই।আর কোন মুক্তিযোদ্ধার যেন এভাবে বিদায় নিতে না হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর-র প্রতি ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে আমরা এ কাজের সূত্রপাত করতে চাই।
জানি অনেক ব্যস্ততা আপনার।তারপরও আসুন না একবার, অল্প সময়ের জন্য। শোক জানাতে নয়, নিজের বিবেকের সামনে দাড়িয়ে ক্ষমা চাইতে আলী আকবরদের কাছে।
Click This Link
©somewhere in net ltd.