![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।
এবার ইউরোপে ঘুরতে যাওয়ার মেইন কারনটা ছিল পর্তুগালে রেসিডেন্সির জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়া।
প্রতিবার ভিসা করে যাওয়ার ঝামেলা থেকে বের হওয়াটাই ছিল মেইন কারন, আর যেহেতু পর্তুগালে বেশি সময় থাকা সম্ভব না তাই আমাকে বেছে নিতে হইছে ডি৭ ভিসা ক্যাটাগরি। জব ভিসা বা অন্য কোন ভিসায় গেলে নিয়মিত টেক্স এবং মিনিমান একটা সময় পর্তুগালে অবস্থান করতে হবে যা আমার পক্ষে একেবারেই সম্ভব না।
.
ফেব্রুয়ারিতে ভিসার জন্য এপ্লিকেশন করি, যদিও বলাছিল ৬০ দিনের মধ্যে ডিক্লারেশন আসবে কিন্তু আমি হাতে পেয়েছি প্রায় ৬ মাস পর। এই দীর্ঘ্য সময়ে এম্বাসিতে থেকে অনেকবার কল পেয়েছে বিভিন্ন ইনফর্মেশন আপডেট দেয়ার জন্য, কখনো মেইল করেছে এক্সট্রা ডকুমেন্ট দেয়ার জন্য। কখনো মেইল করেছে আমার এপ্লিকেশনের জন্য স্ট্রং এক্সপ্লেনেশনের জন্য।
আমি খুবই দৈর্য্য নিয়ে প্রতিটা মেইলের উত্তর দিয়েছি, সুন্দর করে ডকুমেন্ট পাঠিয়েছে। অফিসারে মনমত না হলে সুন্দরভাবে এক্সপ্লেইন করতে হয়েছে।
ডি৭ যেহেতু পেসিব ইনকামের জন্য ভিসা, তাই সবচেয়ে বড় সমস্যায় পরে গেলাম আমার বয়স নিয়ে। এই বয়সে অবসরে যাবো তার পিছনে অনেক যুক্তি দেখাতে হয়েছে। ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এপ্লিকেশন করে ভিসা পেয়েছি ১৯ই আগষ্ট ২০২৫, ৬ মাস ৬দিন সময় লেগেছে পুরো প্রসেসটার জন্য।
.
ডি৭ ভিসার সবচেয়ে সুবিধা হলো আপনাকে কোন প্রকার টেক্স দিতে হবেনা, কোন জব দেখাতে হবেনা।
কিন্তু সমস্যা হলো এই ভিসার জন্য রিকয়ারমেন্ট অনেক বেশি, সাধারনত নিজে নিজে এপ্লিকেশন করে এই ভিসা এপ্রুভ হওয়ার সম্ভবা একেবারে শূন্য বলা চলে।
আমি একজন পর্তুগীজ লয়ারের সাথে কথা বলেছিলাম কিন্তু উনারা প্রায় ১০ হাজার ইউরো চার্জ করবে শুধু এপ্লিকেশন জমা দেয়া পর্যন্ত। আমার যেহেতু সব ডকুমেন্ট আছে তাই ভাবলাম নিজে নিজে এপ্লিকেশন করি, নাহলে পরে লইয়ার দিয়ে করা যাবে।
কি কি ডকুমেন্ট লাগবে -
১. পর্তুগালের NIF নাম্বার
২. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (যে দেশ থেকে এপ্লিকেশন করবেন)
৩. পর্তুগালে একটা বাসা, মিনিমাম ১ বছরের চুক্তিপত্র থাকতে হবে
৪. পর্তুগালে ব্যাংক একাউন্ট এবং ১৬ হাজার ইউরো থাকতে হবে
৫. ট্রাভেল ইন্সুরেন্স
৬. ফ্লাইটের টিকিট
৭. যে দেশ থেকে এপ্লিকেশন করবেন সেই দেশের রেসিডেন্ট কার্ড (ওয়ার্ক পার্মিট এমন কিছু)
৮. আপনার পার্মানেন্ট ইনকাম, যা প্রতি মাসে আপনার একাউন্টে জমা হচ্ছে এবং পর্তুগালে যাওয়ার পরও জমা হবে।
আরও এডিশনাল ডকুমেন্ট, তবে এইগুলি থাকলেই আপনি ভিসা এপ্লিকেশন করতে পারবেন।
.
ডকুমেন্ট কিভাবে ম্যানেজ করা যায়
১. NIF নাম্বার - আপনার পরিচিত কেউ পর্তুগালে থাকলে তার মাধ্যমে ১০০/২০০ ইউরো খচর করে ম্যানেজ করতে পারবেন। আমার NIF নাম্বার করা ছিল ২০২৩ সালে, তাই ঝামেলায় পরতে হইনি।
২. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স - আপনি এপ্লিকেশন করলেই পাবেন, সিঙ্গাপুর থেকে করলে ৫৫ ডলার লাগবে। আমিও অনলাইনে এপ্লিকেশন করে ১৫/১৬ দিন পরে পেয়েছিলাম, আগে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়ার জন্য যেতে হতো এখন আর যেতে হয়না। ই-কপি পাঠিয়ে দেবে আপনার ইমেইলে।
৩. বাসা - পর্তুগালে এখন বাস পাওয়া টা সোনার হরিনের মত, আপনি উপস্থিত থেকেই বাসা পাবেন না আর দূর থেকে বাসা পাওয়া টা অসম্ভবই বলা চলে। এই জায়গাটাতেই লয়ারের খুববেশি দরকার হয়, ১২ মাসের টেক্স (মোট ভাড়ার ২৩%) এবং ২/৩ মাসের ডিপোজিট সাথে ২/৩ মাসের অগ্রিম ভাড়া দিতে হবে। নিজের বাসা থাকায় আমার বাসার ঝামেলাও ছিলনা তাই কোন টাকা পয়সা খরচ করতে হইনি।
৪. ব্যাংক একাউন্ট - ২০২৩ সালে বাসা কিনতে গিয়ে একটা ব্যাংক একাউন্ট করেছিলাম যা এই এপ্লিকেশনে কাজে লাগছে, শধু এপ্লিকেশনের আগে সিঙ্গাপুর থেকে ১৬/১৮ হাজার ইউরো একাউন্টে পা ঠিয়ে স্টেটমেন্ট প্রিন্ট করে নিয়ে ছিলাম। ভিসা অফিসার ব্যাংকে ভেরিফিকেশন করবে, আপনার একাউন্টে মিনিমাম টাকা আছে কিনা। সুতারং ভুল ডকুমেন্ট জামা দেয়া যাবেনা। আপনি যদি লইয়ার দিয়ে এপ্লিকেশন করেন, তারা নির্দিষ্ট একটা এমাউন্টের বিনিময়ে ব্যাংকে একাউন্ট করে দিতে পারে আপনার অনুপস্থিতে।
৫. ট্রাভেল ইন্সুরেন্স - যেহেতু একটু বেশি ট্রাভেল করি তাই আমার সব সময় ট্রাভেল ইন্সুরেন্স কেনা থাকে, যেকোন দেশের ভিসা এপ্লিকেশন করতে গেলেই এই ডকুমেন্ট লাগে। আমি শধু অগ্রিম ১ বছরের কিনে জমা দিয়েছিলাম। বছরে ২৭০ ডলার লাগে।
৬. ফ্লাইট টিকিট - যেকোন ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ২০/৩০ ডলার দিয়ে ম্যানেজ করতে পারবেন, আমি নিজের ট্রাভেল থেকে করেছিলাম যারজন্য কোন টাকা লাগেনি।
৭. রেসিডেন্ট পার্মিট - সাধারনত এটা সবারই থাকে, আমিও সিঙ্গাপুরের পাশ জমা দিয়েছিলাম
৮. পার্মানেন্ট ইনকাম - এটা খুবই কমপ্লিকেটেড, আপনি দেশের ইনকাম দেখালে ভিসা রিজেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৫ ভাগ। কেননা অফিসার সরাসরি প্রশ্ন করবে "বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে ইউরোপে টাকা নেয়ার কোন চ্যানেল নাই, পড়াশোনার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পা ঠানো গেলেও বসবাসের জন্য আপনি কোন টাকা পা ঠাতে পারবেন না। সুতরাং আপনি পর্তুগালে কিভাবে টাকা নেবেন এটা একটা এক্সপ্লেনেশন চাইবে) আমি যেহেতু সিঙ্গাপুর এবং পর্তুগালের ইনকাম দেখিয়েছি তাই এই ঝামেলাতে পরতে হইনি।
.
আজকে এই পর্যন্তই, অন্য একদিন সময় করে ভিসা ইন্টার্ভিও থেকে শুরু করে অফিসারের সাথে মিটিং এবং ক্লারিফিকেশন নিয়ে ডিটেইলস লিখবো। চেষ্টা করবো ভিসা পাওয়া এবং রেসিডেন্ট কার্ড পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত শেয়ার করতে।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।