নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মাঝেই স্বর্গ নরক

সব কিছুকে সহজ ভাবে নিতে চেষ্টা করি

ত্বাকী’র মোড়

সব কিছুকে সহজ ভাবে নিতে চেষ্টা করি

ত্বাকী’র মোড় › বিস্তারিত পোস্টঃ

না মিটিতে আশা

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৪:৫৬

দিলরুবা আহমেদ

ক্লাসের সব ছেলেমেয়ে আজকে বেশ সাজ সাজ রব তুলে চারদিকে ছোটাছুটি করছে। ঢাকা থেকে একটা দল আসবে। চট্টগ্রাম শহরের কলেজ পরিদর্শনে আসছে তারা। শাহানা বেশ করিৎ কর্মা বেগে ছুটে বেড়াচ্ছে। সেজুতী, রায়না, কাজলী সবাই বেশ ব্যস্ত। শাহানা এক পর্যায়ে ছুটে এস লিসাকে বললো, : এই যে ঝগড়ী, তোকেই তো খুজছিলাম, রেবা ম্যাডাম ডাকছে তোকে। বলতে না বলতেই হাই-হিলে শব্দ তুলে গ্যালারীর ভেতরে এসে ঢুকলেন রেবা ম্যাডাম। চোখে চশমা, চুলগুলো উচু করে বাঁধা। সাদা কালো চেক চেক শাড়ীটা একটু উচু করে পরা। ভারী সুন্দর লাগছে ম্যাডামকে। : লিসা শুনে যাও। : জী ম্যাডাম। : ঢাকা থেকে ডেলিগেশন আসবে। তুমি এই কাশের প থেকে ফুল দেবে। সবার দিকে চেয়ে বললেন, : উনারা যখন ঢুকবে তোমরা গ্যালারির দুপাশে সুন্দর করে উঠে দাড়াবে। লিসা শুধু বের হয়ে আসবে। ফুল দেবে। উনি আরো ইনস্ট্রাকশন দিয়েই চললেন। মাহদী এসে ঢুকলো। হাতে ফুলের তোড়া। রেবা ম্যাডাম বললেন,





: ওটা লিসাকে দাও। ও ফুল দেবে পুরো সাইন্স-আটর্সের প থেকে।

: জি ম্যাডাম, ফুল মেয়েরা দেওয়াই ভাল।

লিসার দিকে সে এগিয়ে আসছে। কিন্তু লিসার ওর ব্যাপারে কোনো আগ্রহ ফিল করছে না।

একদম ব্লাংক, শূন্য অনুভূতি।

লিসা খুব সাবধানে মাহদীর হাত থেকে ফুলটা নিলো। এতটুকু ছোঁয়াও যেনো না লাগে এভাবে। এই ছেলে বদের বদ। মেয়েদের ফোন করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে।

সেজুতী টিটকারী দিলো,

: বেচারা এতো কষ্ট করে ফুল যোগাড় করলো, আর দিচ্ছে কে?

: ফুল আসলে ফুলের হাত দিয়েই দেওয়া ভালো।

: তোমার হাত কি পাথরের

: অফকোর্স, পুরুষ মানুষের হাত বলে কথা।

শোহানা এসে মাহদীকে বললো,

: এ্যাই, তোকে ম্যাডাম ডাকছে।

বাহ্, তুইতেও নামা হয়ে গেছে। এই মেয়ে পারেও বটে। ম্যাডাম নিজেই এগিয়ে আসছেন।

: ম্যাডাম, অতিথিদের উদ্দেশ্যে কি কোনো ভাষণ দিতে হবে।

: দিতে চাও? কি দেবে?

: এই যেমন, পাহাড়ে হেলান দিয়ে ঘুমায় যে কলেজ, প্রকৃতির কোলে দোলা খাচ্ছে যে কলেজ অথবা পর্বতের পাদদেশে ইটপাথরের এই জ্ঞানের বৌদ্ধ ভূমিতে স্বাগতম।

মাহদীর কথায় সবাই খুব হাসছে। ম্যাডামও, লিসা শুধু চুপ করে আছে। তার হাসতে ইচ্ছে করছে না। ন্যাকামী মনে হচ্ছে। এতো সুন্দর একজন ম্যাডাম মাহদীর কথায় হাসছে দেখে তার আরও বিরক্তি লাগছে। এই ছেলে সবাইকেই পটায়। ম্যাডামদেরও বাদ দেয় না। সে নাকি আবার এই ম্যাডামের প্রিয় ছাত্র। ম্যাডামও আর ছাত্র খুজে পেলেন না।

: তোকে আজকে ভূতের মতোন লাগছে। দাঁড়িয়েও আছিস ভূতের মতোন করে। একটু হাস। সবাই হাসছে, মজা করছে, কত কি।

মাহদীকে শুনিয়ে বলা না! আমি থোড়াই কেয়ার করি মাহদী-টাহদীদের। ফালতু, একদম ফালতু একটা ছেলে। শোহানাটাও কম যায় না। তাকে ফুল দিতে বলেছে বলেই ভূতের মতোন লাগছে বলা। সবই সে বুঝে। মনে মনে বলে,

জাহান্নামে যাও তোমরা। আমার তোমাদের কারও জন্য কোনো ভাবনা-চিন্তা নেই।

: এই তুই পেতœীর মতোন সং সেজেছিস কেনো?

সেজুতীটাও এমন করছে কেনো, ওর সমস্যাটা কী? লিসা মনে মনে গজগজাতে থাকে।

সেজুতী ব্যাগ থেকে ছোট একটা আয়না বার করে লিসার মুখের উপর ধরলো।

: ওহ্,সীট।

নাকে, কপালে কালো কালো ছোপ। জানালা দিয়ে একটু আগে বাহিরে দেখছিল। নেটের থেকে ময়লাটুকু লেগেছে। ধ্যাৎ, এতোণ এই চেহারা নিয়ে সে সবার সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল!

দ্রুত হাত দিয়ে মুছতে মুছতে দেখলো বেশ দূরে দাড়িয়ে মাহদী আর শোহানা আলাপ করছে, বেশ গম্ভীরভাবে। যেনো বিশ্ব প্লানার। পৃথিবীর সব পরিকল্পনাই ওরা এখনই তৈরি করে ফেলবে। সায়েন্সের ছাত্র, থাকবে সায়েন্সের ছেলে মেয়েদের সাথে, তা না, আর্টসের কাশে ঘুরঘুর করবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.