নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তাকিউর আরজু

তাকিউর আরজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাগ্রত হোক বিবেক

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:১৮

গতবছরের কথা,রাত প্রায় সাড়ে ১২টা।মতিঝিল এক আংকেলের বিয়ে খাইয়া ৬ নাম্বার বাসে উঠলাম ফুফাতো ভাই বাপ্পির সাথে । গন্তব্য ফার্মগেটে আমার হোস্টেলে ।



ফাকারাস্তায় জ্যাম ছাড়াই দ্রুত নেমে পড়লাম আনন্দ সিনেমাহলের সামনে।

হাটতে হাটতে ইন্ধিরা পার্কের সামনে এসে থামলাম। অনেকের কাছে শুনেছি রাতে নাকি এখানে কিসব হয়। লোহার প্রাচীরের ফাঁক গলে আমার দৃষ্টি চলে গেল ভেতরে ।নাহ কিছুই নাই। হঠাৎ একটা মেয়ে কন্ঠস্বর আমাকে ভয় পাইয়ে দিল :-স্লামালিকুম মামা।আজকে আমি আছি।আর কেউ আহে নাই,আহেন আমার লগে।

-না,না।আমি ওরকম না ।

বলেই দ্রুত হাঁটা শুরু করলাম ।



হঠাৎ মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে পুলিশবক্স থেকে দুই পুলিশ এসে আমার গতি রোধ করল:

-এই দাড়া,এদিকে ঘোর ।

-কি হইছে?(ভয়ে ভয়ে)

-স্যরি বস । আপনারে চিনতে পারি নাই।মাফ দেন

আমি প্রকান্ড রকমের অবাক হয়ে আবারো হাঁটা শুরু করলাম । আর ঐ পতিতার প্রতি মনে মনে বলতে লাগলাম,,(শালা জাহান্নামের আগুন ।আবার সালাম দেয়,এদের জন্যে ঠিকমত একটু পার্কেও বসা যায় না ।সরকার যে ক্যান এগুলারে বাচায় রাখছে)



মনিপুরীপাড়া ১নং গেইট দিয়ে ঢুকেই ২নাম্বার বিল্ডিংটাই আমার হোস্টেল । দেখলাম মেইন গেইট তালাবদ্ধ।অনেক ডাকাডাকি করেও দারোয়ানকে জাগানো গেল না।এখন এই উচু দেয়াল টপকাতে হবে।মামাতোভাই নাজিবকে ফোনে বললাম একটা চেয়ার নিয়ে নিচে নেমে আসতে।

হঠাৎ এক অপরিচিত কিন্তু মনহরণ করা ঘ্রাণ পেলাম। পিছনে ফিরতেই এক অতীব সুন্দরী লাল পোশাক পরা ললনাকে দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।তাকে আমার কাছে খুব পরিচিত মনে হল।হঠাৎ সে হাটা শুরু করল।আমিও তার পিছু নিলাম আর ভাবতে লাগলাম এই রাত প্রায় দেড়টার দিকে এই মেয়ে এখানে কি করছে?



হাটতে হাটতে কখন যে খামারবাড়ীর পাশে ২নং গেটে চলে আসছি বুঝতে পারলাম না।২নং গেটের দারোয়ান আমার দিকে তাকিয়ে উপহাসের হাসি হাসছে।এই গেটে আমি আগে কখনো দারোয়ান দেখিনি ।আর আশ্চর্যের বিষয় হল সে আমার নাম ধরে ডাকছে

-আরে নীল মামা যে,এত রাতে এখানে ক্যান?

-না এমনি।এখানে একটু আগে একটা মেয়ে ছিল।ও কোনদিকে গেল?

-এত রাতে মেয়ের খোঁজে আসছেন?

-না,মানে।

বলেই হোস্টেলের দিকে হাটা শুরু করতেই দারোয়ান আমার পিছু নিতে গেল । অমনি আমি ঘুরে দাড়িয়ে দারোয়ানকে কিছু কড়া কথা বলতে যাব এবং ঠিক তখনই দেখলাম দারোয়ান আমার অতীব পরিচিত আর তার পেছনে সেই রুপবতী মেয়েটা। এতো সেই পতিতা !!



-আপনি?এখানে?এত রাতে?দারোয়ানের বেশে!!?

-নীল তুমি কাকে ঘৃণা করছিলে?ওদেরকে এই অবস্থায় নেওয়ার জন্য একমাত্র তোমরা দায়ী।তোমাদের সমাজ দায়ী।আর ওরাই তো তোমাদের,তোমাদের সমাজের সকল পাপকে নিজের মাঝে নিয়ে নিচ্ছে। তবে এদের দেখে কেন এত ঘৃণা? কই সানি লিওনের বেবি ডল দেখে তো এত ঘৃণা আসে না?তখন তো তৃপ্তির ঢেকুর তোলো।

তবে যাও ঐসব হোটেল ব্যবসায়ীদের ঘৃণা করো,যারা এদের দিয়ে ব্যবসা করিয়ে টাকা কামাচ্ছে।যাও ঐসব সুশীলদের কাছে,যারা এদের সম্ভ্রম নিয়ে এই অবস্থায় এনে এদের পুনর্বাসনের কথা বলে ।যাও ঐসব উচ্চবিত্তদের কাছে যারা চাকুরিদেবার প্রলোভনে এদের ভোগ করে ।

আমি মাথা নিচু করে সব কিছু শুনলাম।কিছু বলতে যাব এমন সময়

#সাকিব_ভাইয়া(দারোয়ান­) বললো

-না তুমি কিছু দেখো নাই।ফিরে যাও।

বলেই উনি উধাও হয়ে গেলেন ।আমি আমার ফোন হাতড়ে সাকিব ভাইয়ার কোন নাম্বারই পেলাম না!!

এক দৌড়ে চলে আসলাম হোস্টেলের গেটে।নাজিব ততক্ষণে চেয়ার নিয়ে চলে এসেছে

-এই তুই কোথায় ছিলি? ফোন উঠাচ্ছিস না ক্যান?কোনসময় থেকে চেয়ার নিয়ে দাড়িয়ে আছি ।আমি ফোন চেক করে দেখলাম ১০২ টা মিসকল।কোন জবাব না দিয়ে বললাম

-চেয়ারটা দে,লাফ দেবো

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.