নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
তাঁকে চিনি যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশের উত্থানপর্ব থেকেই। তখন তিনি মুক্ত স্বদেশের খ্যাতির গগনে উজ্জ্বল তারকা। সেই সময়ে আমরা যারা পায়ের নিচে শক্ত মাটি খুঁজছি, তাদের অনেকের কাছেই তখন তিনি অনুকরণীয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর যখন দিশেহারা দল, নেতৃত্ব দিশেহারা, তখন তিনি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। সেদিন তাঁর ভূমিকা দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর তাঁকে অনুসরণ করে অনেক প্রতিভাবান তরুণ দেশত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তিনি সমালোচিত হতে থাকেন। বেরিয়ে আসে তাঁর স্বরূপ। নেতৃত্বের শীর্ষস্থানে নিজের অবস্থান নিরঙ্কুশ করতে তিনি যে কতটা নিষ্ঠুর হতে পারেন, তা অনেকের কাছেই অকল্পনীয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের প্রতিবাদে ভারতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাওয়া এই মুক্তিযোদ্ধার সাম্প্রতিক কর্মকা-ও তো সমালোচনার দাবি রাখে। আজকের কর্মকা-ের সঙ্গে অতীতের কিছু রেকর্ড মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, তাঁর অতীতের সব কর্মকা-ই ব্যক্তিস্বার্থ সংক্রান্ত। সন্দেহ হয়, নেতৃত্বের শীর্ষস্থানটি নিরঙ্কুশ করতেই বুঝি তিনি সেদিন বিদ্রোহী হয়েছিলেন। দেশ ছেড়েছিলেন। তখন তাঁকে চরম প্রগতিশীল মানুষ বলে ধারণা হলেও তাঁর আজকের ভূমিকা এক অন্ধ প্রতিক্রিয়াশীলের। এক সময় আওয়ামী লীগের ঝা-াধারী হলেও আজ তাঁর অবস্থান আওয়ামী লীগের বিপরীত মেরুতে। রাজনীতিতে আদর্শগত মতপার্থক্য থাকে। থাকে নেতৃত্বের শীর্ষে ওঠার প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেই ‘র্যাট রেসে ট্র্যাক’ থেকে বিচ্যুত হলেই কি এভাবে নীতিভ্রষ্ট হওয়া যায়? নাকি তা সাজে? বিশেষ করে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কি রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন? এদেশের নব্য রাজাকারদের ভূমিকা যে একাত্তরের রাজাকারদের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে, কাদের সিদ্দিকী তারই যথাযথ উদাহরণ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করছেন প্রতিদিন। বীর উত্তম মুক্তিযোদ্ধা তিনি। পিতৃজ্ঞানে ভক্তি করতেন বঙ্গবন্ধুকে। বঙ্গবন্ধুকন্যা, আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একদা ‘আওয়ামী লীগের টয়লেট পরিষ্কার করার’ ইচ্ছে প্রকাশ করে আজ তিনি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিদ্বেষে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সমালোচনার উর্ধে নয়। প্রধানমন্ত্রী কিংবা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সব কাজ প্রশংসনীয় হবে, এমন নয়। কিন্তু কাদের সিদ্দিকী যে ভাষায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সমালোচনায় মুখর, বিশেষ করে তাঁর ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ বলে দেয় ব্যক্তিগত ঈর্ষা তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই ঈর্ষার বিষ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নামিয়ে এনেছে নব্য রাজাকারের আঁস্তাকুড়ে। শুধু আওয়ামী লীগ তাঁর আক্রমণের শিকার নয়। শেখ হাসিনাকে যেমন আক্রমণ করছেন তিনি, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটাক্ষ করতেও পিছপা হচ্ছেন না কাদের সিদ্দিকী।
একটি ছোট উদাহরণ তুলে ধরা যাক। গত ৭ অক্টোবর আমাদের সময় ডট কমের প্রচ্ছদের ডেস্ক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ‘বাগেরহাটের স্বাধীনতা উদ্যানে অনুষ্ঠিত বিকল্পধারা বাংলাদেশের কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আমি যুদ্ধ না করলে শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হতেন না।’ কী বলবেন একে? কাদের সিদ্দিকীর প্রলাপ, বিলাপ নাকি সত্যের অপলাপ? শেখ মুজিবুর রহমান কবে কোথায় কিভাবে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন সেটা সবার জানা আছে। ইতিহাসের পাতায় সেই দিনটির কথা লেখা আছে স্বর্ণাক্ষরে। একাত্তরে আমাদের দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল। সেই যুদ্ধকে দিন দিন সংগঠিত করার কাজটি যে মহান পুরুষ করেছিলেন তিনি বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান। জাতিকে মুক্তি মন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি, এক মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর অবদান বা অংশগ্রহণকে মোটেও খাটো করে না দেখে বলা যেতে পারে, সেদিন কাদের সিদ্দিকী মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিলেও ইতিহাসের অমোঘ পরিণতি হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেমে থাকত না। যেমন থেমে থাকেনি স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেকোন মুক্তিযোদ্ধার সামান্যতম অবদানও এদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অসামান্য ভূমিকা রেখেছে। এ ইতিহাসও তো অনেকের জানা যে, একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগেই শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর প্রাণের নেতা হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন। অনেক আগেই তিনি বঙ্গবন্ধু হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত পেয়েছেন। ঊনত্তরের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ লিখেছেন, শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গবন্ধু হিসেবে উত্তরণের সেই দিনটির কথা। ২৪ জানুয়ারি ২০১৩, দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘...২১ তারিখ আবার পল্টনের মহাসমুদ্র থেকে সরকারের উদ্দেশে আল্টিমেটাম দিয়ে বলি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেখ মুজিবসহ রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। ভাবতে কত ভাল লাগে আমাদের বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধুসহ সব রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে সরকার বাধ্য হয়। লাখ লাখ জনতা তখন ছুটে যায় পল্টনে তাদের প্রিয় নেতা শেখ মুজিবকে দেখতে। কিন্তু শিক্ষা ভবনের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুকে আমরা ধানম-ির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়িটিতে নিয়ে যাই। পরে পল্টনে অধীর আগ্রহে থাকা জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে পৌঁছে বলিÑআজ নয়, ২৩ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। সেদিনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল জনতার বাঁধভাঙ্গা জোয়ার। ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করলেও রীতিভঙ্গ করে নেতার আগেই বক্তৃতায় হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারণ করি, যে নেতা তাঁর জীবনের যৌবন কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে। ফাঁসির মঞ্চে বাঙালীর মুক্তির কথা বলেছেন, সে নেতাকে কৃতজ্ঞচিত্তে জাতির পক্ষ থেকে একটি উপাধি দিতে চাই। ১০ লাখ লোক ২০ লাখ হাত উঁচিয়ে সম্মতি জানিয়েছিল। কৃতজ্ঞচিত্তে সেদিন জাতির পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনজোয়ারই শুধু নয়, সমগ্র জাতি তখন আনন্দ আর কৃতজ্ঞতায় আবেগাপ্লুত হয়েছিল।’
অর্থাৎ তোফায়েল আহমেদের এই স্মৃতিচারণমূলক নিবন্ধটি সাক্ষ্য দিচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হতে কাদের সিদ্দিকীর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি। বরং যুদ্ধের ময়দানে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সব মুক্তিযোদ্ধার জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর ৭ মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সবাইকে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দিয়েছে। না, কাদের সিদ্দিকী বা কোন মুক্তিযোদ্ধাকে খাটো করার জন্য এই নিবন্ধের অবতারণা নয়। অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, মুক্তিযোদ্বারা জীবনবাজি রেখেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু ফিরে আসতে পেরেছিলেন স্বাধীন দেশে। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের ভালবাসতেন, মুক্তিযোদ্ধারাও বঙ্গবন্ধুকে যথাযথ শ্রদ্ধার চোখে দেখেন।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি এখন ক্ষমতায়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী। দেশের উন্নয়নে তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কাজ করছেন দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে। গত পাঁচ বছরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন তো একটু দৃষ্টি দিলেই দেখা যায়। সবাই তা দেখতে পেলেও দেখতে পান না কাদের সিদ্দিকী। বাগেরহাটের ওই সভায় তিনি আরও বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য কখনও কিছু করেননি, ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেখানে যা ঘটুক যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচালের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান।’
১১ অক্টোবরের আমাদের সময় ডট কমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, ‘নাটোরে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায় আর না থাকলে মুক্তিযোদ্ধা হয় রাজাকার।’ তাঁর ভাষ্য, ‘আওয়ামী লীগ নয় এখন যারা দেশ চালায় তারা হাসিনা লীগ। তারা নিজেদের জমিদার আর জনগণকে প্রজা মনে করে।’
শুধু তাই নয়, ‘আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা একা নির্বাচন করলেও ফেল করবেন’Ñএমন সম্ভাবনাও দেখেন তিনি। বোধকরি তাই বাংলাভিশনের ফ্রন্টলাইন অনুষ্ঠানে কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, গণজাগরণ মঞ্চ করে যে কাজগুলো আওয়ামী লীগ করেছে তাতে আগামী নির্বাচনে দলটি ৩০ আসন পেয়ে দেখাতে পারলে দলটির ‘গোলামী’ করবেন তিনি। যিনি এককালে দলীয় প্রধানের নির্দেশে ‘আওয়ামী লীগের টয়লেট’ পরিষ্কার করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চেয়েছিলেন, তাঁর আজ এই উপলব্ধি কেন?
গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩, দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত নিবন্ধে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লিখেছেন, কাদের সিদ্দিকীর রাজনীতির এখন একমাত্র লক্ষ্য হাসিনা-বধ। ফলে শুধু হাসিনাবিরোধীদের সঙ্গে নয়, স্বাধীনতার চিহ্নিত শত্রুদের সঙ্গে তিনি হাত মিলিয়েছেন এবং হাসিনা-সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত-শিবির থেকে যে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়, সেই প্রচারও এখন তাঁর কণ্ঠে।’
কেন তাঁর এই হাসিনা-বিদ্বেষ? বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে রাজনীতি সচেতন মহলের জানা আছে, আশির দশকে কলকাতা থেকে দেশে ফেরার আগে লন্ডনে গিয়েছিলেন। লন্ডনের পরিচিতজনদের কাছে শুনেছি, সেখানে তিনি প্রকাশ্যেই বলতেন, ‘হাসিনা কেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের অধিকার তাঁর।’ এই ইচ্ছা পূরণ না হওয়াতেই কি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কাদের সিদ্দিকীর এত ঈর্ষা ও ক্রোধ?
অথচ আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও প্রবীণ নেতৃত্ব তো বটেই সবাই জানেন, শেখ হাসিনার সুবাদেই তিনি ভারতে আদর-আপ্যায়ন পেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার কল্যাণে শুধু তাঁর প্রাণই রক্ষা পায়নি, দেশের রাজনীতিতে আশ্রয় নিতে পেরেছিলেন। ভারতে অবস্থানের শেষ দিকে তাঁর কার্যকলাপে ইন্দিরা সরকারও তাঁর ওপর রুষ্ট হয়ে উঠেছিল এবং মোরারজী দেশাই ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বজিৎ নন্দীর মতো কাদের সিদ্দিকীকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন-এ ঘটনাও অনেকের জানা। তেমনটি ঘটলে বিশ্বজিৎ নন্দীর মতো, হয়ত বাংলাদেশে তাঁর ফাঁসির আদেশ হতো। শেখ হাসিনার অনুরোধ-উপরোধে মোরারজী দেশাই সরকার যে তাঁকে বাংলাদেশের সামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়নি এবং হাসিনার চাপেই সামরিক কর্তৃপক্ষ দেশে ফিরে আসার পর কয়েকদিন কারাগারে রেখে তাঁকে মুক্তি দেয়, এ কথা কাদের সিদ্দিকী বিস্মৃত হয়েছেন। হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতায় নত হওয়ার কথা তাঁর। হননি। উল্টো নিত্য বিষোদ্গারে নিয়োজিত রেখেছেন নিজেকে। কাদের সিদ্দিকী ভুলে গেছেন মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকার কথাও। বোধকরি সে কারণেই তিনি খালেদা জিয়া সরকারের আমলে ব্রিজ তৈরির কন্ট্রাক্টরি নিয়ে নানা অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির দায়ে বাঘা সিদ্দিকী থেকে ব্রিজ সিদ্দিকী নামে পরিচিত হন।
এ নিবন্ধের শুরুর দিকে উল্লেখ করেছি, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য কাদের সিদ্দিকী ভারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের নেতৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে তিনি কতটা নিষ্ঠুর হতে পারেন, তার উদাহরণ আমাদের হাতে আছে। তাঁর ব্যক্তিগত অসততার উদাহরণ আর দিলাম না।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি কাদের সিদ্দিকীর বিদ্বেষ এ কারণেই। নিজেকে ক্ষমতার শীর্ষে দেখতে চান বলেই তিনি প্রগতির পথ ছেড়ে বেছে নিয়েছেন প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির পথ। বীর উত্তম মুক্তিযোদ্ধা থেকে নিজেকে নামিয়ে এনেছেন নব্য রাজাকারের ঘৃণ্য সারিতে। লক্ষ্য একটাই ‘যেনতেন প্রকারেণ’ ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ কিংবা ক্ষমতার ভাগীদার হওয়া। তাতে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত করতেও দ্বিধাহীন তিনি। এটাই নব্য রাজাকারদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সুত্র
©somewhere in net ltd.