নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ নয়?

১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৩



জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের মাধ্যমে করা ভিন্ন নামের সশস্ত্র জঙ্গী সংগঠন জেএমবি’র জন্য ২০০১ থেকে ২০০৬ অবধি বাংলাদেশ ছিল একটি উর্বর ভূমি। এ সময় নিজামী-খালেদা সরকার পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার ট্রেনিং ও মদদে এসব জঙ্গী সংগঠনকে সব ধরনের কাজ করতে দিয়েছিল। তবে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল, শেখ হাসিনাকে হত্যা করা ও দেশের সংবিধান বদলে ফেলে পাকিস্তান বা তালেবানি আফগান স্টাইলের একটি দেশ তৈরি করা। এ জন্য তারা ২০০৪ সালে সারাদেশের ৬৩ জেলার ৫২৭ স্থানে যে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় ওই বোমা হামলার সঙ্গে প্রতিটি স্থানে কিছু লিফলেট বিতরণ করে। ওই লিফলেটে অন্যতম দাবি ছিল দেশের সংবিধানকে বদলাতে হবে। সেদিন মূলত নিজামী-খালেদা জেএমবির মাধ্যমে এই দাবি তুলেছিল বা কার্যক্রম শুরু করেছিল। অন্যদিকে জামায়াতের গঠনতন্ত্রে পরোক্ষভাবে সংবিধান বদল করে ইসলামী মৌলবাদী সংবিধান তৈরির কথা ছিল। বিএনপি সেদিন তাদের এ কাজ করতে দিলেও প্রকাশ্যে তখনও সংবিধানের বিরুদ্ধে কোন কথা বলেনি। কিন্তু ২৭, ২৮ ও ২৯ তারিখ হরতালের পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি যে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ওই সমাবেশে তাদের প্রত্যেক নেতাই কম-বেশি সংবিধানের বিরুদ্ধে কথা বলেন। যেমন এমকে আনোয়ার বলেন, বর্তমান সংবিধান আফ্রিকান জংলীদের জন্যও প্রযোজ্য হতে পারে না। এমনই বাজে একটি সংবিধান এটা। বিএনপির দা, কুড়াল, বল্লম (ছিনতাই করার সময় গাল কাটা চাকুটার কথা উনি সাবধানে এড়িয়ে গেছেন) নেতা সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, বর্তমান সংবিধান পাড়ায়-মহল্লায় যে সব ক্লাব আছে তাদের সংবিধানের থেকেও বাজে সংবিধান। তার মানে এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বিএনপি নেতারা বর্তমান সংবিধানের বিরুদ্ধে বললেন। বর্তমান সংবিধান প্রায় ৯০ ভাগ ১৯৭২-এর সংবিধান। অর্থাৎ যে সংবিধান আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছিলাম।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ১৯৭২-এর সংবিধানকে সব থেকে কাটাছেঁড়া করেন। এবং সংবিধানকে ধীরে ধীরে পাকিস্তানের সংবিধানের কাছে নিয়ে যাবার সব ব্যবস্থা পাকাপাকি করেন। অন্যদিকে তিনিই জামায়াতে ইসলামীকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অনুমতি ও গোলাম আযমকে দেশে ফেরার অনুমতি দেন। আর এখন সেই জামায়াতে ইসলামী ও তাদের যত গোপন জঙ্গী সংগঠন আছে তার দায়িত্ব প্রকাশ্যে কাঁধে তুলে নিয়েছেন খালেদা জিয়া। দেশের মানুষ কেউ যদি চোখ বুজে না থাকেন তিনি নিশ্চিত জানেন যে, নিজামীরা যুদ্ধাপরাধে গ্রেফতার হবার পর থেকে ধীরে ধীরে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের দায়িত্বভার বেগম জিয়া নিজেই গ্রহণ করেছেন এবং এখন আর তিনি কোন রাখঢাক না করে জামায়াতে ইসলামীর যা কর্মসূচী সেগুলোই বাস্তবায়ন করছেন। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের গোপন যত জঙ্গী সংগঠন আছে তাদের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সংবিধান অর্জন করেছে ওই সংবিধানকে বদলে ফেলা। বিএনপি এই সংবিধান বদলে ফেলার জন্য যথেষ্ট কাজ করলেও জনসভায় প্রকাশ্যে বলে এর আগে কখনও এই সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। কিন্তু এখন তারা প্রকাশ্যে এই সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপির এই সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবার ভেতর দিয়ে একটা বিষয় স্পষ্ট হলো, বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও প্রায় এক শ’র মতো গোপন যে জঙ্গী সংগঠন আছে তাদের সঙ্গে এখন আর বিএনপির কোন পার্থক্য প্রকাশ্যেও নেই। তাই এখন থেকে বিএনপি যতই প্রকাশ্যে রাজনীতি করুক না কেন, তারা সংবিধানের বিরুদ্ধে একটি জঙ্গী সংগঠন।

বিএনপি যে সংবিধানের বিরুদ্ধে একটি জঙ্গী সংগঠন সেটা নিয়ে গত দুটি ৬০ ঘণ্টার হরতালের পর নিশ্চয়ই কারও কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়। গত সপ্তাহে এই কলামে লিখেছিলাম, বাংলাদেশের নব্য আলবদর বাহিনীর সুপ্রীম কমান্ডার এখন বেগম জিয়া এবং এই সুপ্রীম কমান্ডের নেতৃত্বে শিবির নামক নব্য আলবদর বাহিনী গত দুটি ৬০ ঘণ্টার হরতালে কত নিরীহ মানুষ এমনকি শিশুকে বোমার আঘাতে জখম করে হত্যা ও পুড়িয়ে হত্যা করেছে সেটা এখন আর বিস্তারিত বলার কিছু নেই। দেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী বাংলাদেশ ও বিশ্ব মিডিয়ার কল্যাণে সেটা দেখতে পাচ্ছে। বেগম জিয়ার এই নব্য আলবদর বাহিনী যে ১৯৭১-এর নরপিশাচ হিসেবে আবার বাংলার বুকে নেমেছে তার প্রমাণন এখন আর কারও কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন নেই। ওরা যে ঘাতক তার একটি ছোট্ট উদাহরণ হলো হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা শরীরের নব্বইভাগ পুড়ে যাওয়া টঙ্গীর কিশোর মুনিরের বক্তব্য যে, ‘ওরা আমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেবার পরে যখন আমি পুড়ে যাচ্ছিলাম তখন ওরা আনন্দে হাসছিল।’ এই হচ্ছে বেগম জিয়ার নব্য আলবদর বাহিনী এবং এই তাদের কাজ। গত ১২০ ঘণ্টার হরতালের নামে বেগম জিয়া তাঁর নব্য আলবদর বাহিনীর মাধ্যমে যে পৈশাচিক নরহত্যা এ দেশে করেছেন এর পর তিনি আর নরহত্যার অপরাধের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন না। আমাদের একজন সম্মানিত সম্পাদক এই নরহত্যায় বিচলিত হয়ে সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্টের কাছে বিনীত আপীল করেছেন, মহামান্য আদালত যেন আমাদের এই নরহত্যা থেকে বাঁচান। অন্যদিকে দেশের আরেকজন সম্মানীয় ব্যক্তি সুলতানা কামাল বলেছেন, আমাদের সব রাজনৈতিক দলগুলো এ কাজ করে।

বাংলাদেশের সম্মানিত সকল ব্যক্তির মনে হয় এখন আর এভাবে মাঝখান দিয়ে কথা বলার সময় নেই। কারণ, যখন নব্য আলবদর বাহিনী ঘাতক হিসেবে, হায়েনা হিসেবে নেমেছে। অন্যদিকে দেশের বিরোধীদলীয় নেত্রী সেই ঘাতকদের নেতৃত্ব নিজ হাতে তুলে নিয়েছেন শুধু নয়, তাঁর নিজস্ব সংগঠন ব্যবহার করে ঘাতকদের এই নরহত্যা করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। বেগম জিয়ার এখন যে আর কোন নির্বাচন মাথায় নেই, কোন সমঝোতা মাথায় নেই সেটা তাঁর গত কয়েকদিনের আচরণে স্পষ্ট। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি যে ভাষায় কথা বলেছিলেন ওই ভাষা শোনার পরেই দেশের মানুষের সকল মোহ ভঙ্গ হবার কথা ছিল। এমনকি গত ১০ মাসে দেশজুড়ে শিবির যে হত্যাকা- করেছে তার পর প্রকাশ্যে জনসভায় দুইবার সেই শিবিরের সভাপতির মুক্তি দাবি করার পরও দেশের মানুষ নিশ্চয়ই বুঝেছেন, আসলে বেগম জিয়া কী চান? আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ কেন বুঝতে পারছেন না সেটাও অতি সহজ। সে বিশ্লেষণে গেলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে যেতে হবে। সে আলোচনায় গিয়ে লেখার মূল্য-উদ্দেশ্য ব্যাহত করতে চাই না। তবে শুধু এটুকুই বলব, আমাদের সমাজে একটি তথাকথিত সুশীল সমাজ আছে যারা গ্রামের সাধারণ মানুষের উন্নতির চেয়ে নিজের সুখ-সুবিধাকে বড় মনে করেন। বেগম জিয়া তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করেন বলেই কিন্তু তাঁরা বেগম জিয়ার পক্ষে থাকেন। যেমন ডঃ ইউনূস দরিদ্র মানুষ নিয়ে ব্যবসা করলেও উনি থাকেন বেগম জিয়ার পক্ষে। কারণ, গ্রামীণ ব্যাংক ওনাকে অনেক সুখ-সুবিধা দিয়েছে। অনেক পুরস্কার দিয়েছে। তার বদলে গ্রামীণ ব্যাংকের দরিদ্র সদস্যদের কিডনি বিক্রি করে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ নিয়ে বিবিসি রিপোর্ট করার পরও কিন্তু তার কিছু যায়-আসে না। এই হচ্ছে আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজের চরিত্র। যার সঙ্গে বেগম জিয়ার মিল আছে। এদের উভয়ের কাছে সাধারণ মানুষের জীবন ও সুখ-সুবিধা মূল্যহীন।

যাহোক, বেগম জিয়া এখন যেভাবে দেশে নরহত্যা করাচ্ছেন তাঁর নব্য আলবদর বাহিনীকে দিয়ে এর পর আর মনে হয় দেশের মানুষের চুপ থাকার কোন সুযোগ নেই। মাঝখান দিয়ে কথা বলারও কোন সুযোগ নেই। সর্বোপরি, সরকার যদি এই ধারাবাহিক নরহত্যা চলতে দিতে থাকে তাহলে সরকারও কিন্তু বেগম জিয়ার মতো সমদোষে দোষী হবে। কারণন, অন্যায় যে করে ও অন্যায় যে সহে দুজনেই সমান দোষী। তাছাড়া দেশের মানুষ তিন-চতুর্থাংশ মেজরটি বর্তমান সরকারকে দিয়েছে কিন্তু মা সন্তান হারা হবে, স্ত্রী স্বামী হারা হবে, পিতার সামনে সন্তান পুড়ে মরবে, কৃষকের উৎপাদিত সমস্ত ফসল রাস্তায় পচবে; এই অরাজকতা দেশে চলবে এ জন্য নয়। মানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকারকে সরকারের মতো হতে হবে। বেগম জিয়া বাংলাদেশের রানী নন, বরং সাধারণ মানুষ যেখানে নিয়মিত ট্যাক্স দেন সেখানে বেগম জিয়া কর ফাঁকি পর্যন্ত দেন। তাছাড়া দেশের ভেতর বসে রাজনৈতিক দলের নামে দেশে নরহত্যা করার লাইসেন্স কাউকে দেশের আইন দেয়নি। দেশের আইন এ কথা বলে যে, কোন বিশেষ ব্যক্তির অধিকার আছে তিনি হুকুম দিয়ে পিতার সামনে সন্তানকে পুড়িয়ে মারার অধিকার রাখেন। দেশের আইন সকল অপরাধীর জন্য সমান। তাই গত ষাট ও ষাট, এক শ’ বিশ ঘণ্টার হরতালের নামে যেভাবে নিরীহ মানুষকে বেগম জিয়ার নির্দেশে তাঁর নব্য আলবদর বাহিনী হত্যা করেছে; এরপর আর বেগম জিয়া আইনের আওতার বাইরে থাকতে পারেন না। সরকার যদি অবিলম্বে তাঁকে আইনের আওতায় এনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু না করে তাহলে এই সরকার তার শপথ ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। কারণ, জনগণের ভোটে নির্বাচিত এ সরকারের শপথ আছে, তারা দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেবে ও সকলের জানমালের নিরাপত্তা দেবে। তাই এই একের পর এক পৈশাচিক নরহত্যার পর বেগম জিয়া কোন মতেই আইনের আওতার বাইরে থাকতে পারেন না। সরকার যদি দেশের মানুষের কল্যাণ চায় তাহলে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।



সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৮

রতন দাস বলেছেন: বেগম খালেদা ফালু (থুক্কু জিয়া) কে বি এন পি চেয়ারপারসন পদ থেকে পদত্যাগ করে জামাতের মহিলা দলের মহিলা আমীর পদে যোগ দেয়ার আহবান জানাই।

২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

ল্যাটিচুড বলেছেন: এত কিছু জানার পর ৫ বছর ধরে সরকার তাহলে কি বাল ফালাইলো ?

এগুলোকে ফায়ারিং স্কোয়াডে না দেওয়ার অপরাধে জনগন যদি এবার আওয়ামীলিগকে ভোট না দেয়, তাহলে দোষ কিন্তুু আপনার :P :P :P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.