![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
বাংলাদেশ জ্বলছে, বাংলাদেশ পুড়ে-পুড়ে অঙ্গার হচ্ছে। এভাবে কতকাল পুড়ে মরবে বাংলাদেশের মানুষ। ক্ষমতার লোভে দেশে এখন মানুষ পোড়ার রাজনৈতিক ট্রাডিশন চালু হয়েছে। প্রশ্ন হলো রাজনীতিবিদরা কাদের জন্য রাজনীতি করেন? মানুষের জন্য? তবে কেন সাধারণ মানুষ পুড়ে মরছে? কেন মানুষের সম্পদ নষ্ট করা হচ্ছে? শত্রুতা যদি থাকে সরকারি দলের সাথে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব যদি হয় দলে-দলে, তবে সাধারণ মানুষের কেন জীবন দিতে হচ্ছে? দেশের মানুষের জীবনের চেয়ে কি ক্ষমতা বড়? তা না হলে কেনইবা বিরোধীপক্ষের হরতাল-অবরোধের নামে এই প্রহসনের ডাক? রাজ্য চালানোর এই নীতি মোটেও রাজনীতি নয়? হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও, ধুম্ধাম্ ককটেল, মিছিল, জনসাধারণের এলোমেলো ছোটাছুটি আর রক্তমাখা কিংবা ঝলসানো লাশ!- এর নাম কি রাজনীতি?
কারা ঝলসে যাচ্ছে? কাদের করা হচ্ছে অঙ্গার? কারা মরছে হরতাল-অবরোধে? দিন এনে দিন খাওয়া মানুষতো আর ঘরে বসে থাকতে পারে না? চাকরিজীবী হলে কর্মচারীরা কি অফিসে না গিয়ে পারেন? ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকলে ছাত্র-ছাত্রীরা কি স্কুল-কলেজে না গিয়ে পারে? এরাই বেশি হরতাল সহিংসতার শিকার হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে বাধ্য হয়ে হরতালে রাস্তায় নামে, নইলে গোটা সংসার যে অনাহারে দিন কাটাবে। কোন রাজনীতিই এরা বোঝে না। পেটনীতি করে ওরা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে। অথচ এর বিনিময়ে তাদের ভাগ্যে কি জুটছে? পেট্রোল বোমা, লাঠিপেটা আর ককটেল! গাড়িতে পুড়ে মরা, ট্রাক উল্টে বা ইটের আঘাতে রক্তাক্ত হওয়া। আমরা প্রতিদিন কি দেখছি? কি শুনছি আমরা? হতভাগ্য পিতার চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ কিংবা ঝলসে যাওয়া ছেলের আর্তচিত্কার। এরা তো সবাই রাষ্ট্রের সুনাগরিক? এদেরতো বাঁচার অধিকার আছে। এদের বাঁচিয়ে রাখার সরকারের দায় আছে। আছে আইনও। নাগরিকের নিরাপত্তাবিধান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দ্বিতীয় অপরিহার্য কাজ। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩য় ভাগে ২৬-৪৭ক অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নাগরিকের অধিকারসমূহ বর্ণিত আছে। সেখানে কাউকেই নির্বিচারে মানুষ হত্যার বৈধতা দেয়া হয়নি। এ হত্যার দায় যেমন বিরোধী দলকে অবশ্যই নিতে হবে। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে সরকারও এ দায় এড়াতে পারে না। যখন হরতাল অবরোধের নামে জীবন্ত মানুষগুলো পুড়ে ঝলসে যায়, কয়লা হয়, যখন তাদের উপার্জনের একমাত্র সম্বল কেড়ে নেয়া হয়, অসহায় স্বজনের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়; যখন কষ্টার্জিত লাখ লাখ টাকার সম্পদ চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয় তখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনও প্রশ্নের মুখে পড়ে। কি করবে রাষ্ট্র? প্রতিটি ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করবে। গ্রেফতার করবে, সর্্বোপরি দ্রুত বিচার আইনে অতি দ্রুত বিচারকার্য সম্পন্ন করে সাজা নিশ্চিত করবে। এসব ঘটনায় দ্রুত সাজা দেয়ার ব্যবস্থা করা গেলে এমন সহিংসতা কমবে। যারা হরতাল আহবান করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট করছে আর পৈশাচিকভাবে নিরীহ মানুষগুলোকে হত্যা করছে এসব ঘটনার দায়তো তাদের উপরই বর্তায়। এ সহিংসতা তো মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাত বেশ লম্বা তাই চেষ্টা করলে তারা এসব প্রতিহত করতে পারে অনায়াসে। কিন্তু কেন একের পর এক এসব অপকর্ম চলছে? অগ্নিদগ্ধদের তালিকায় যুক্ত হলো আরও ১৯ জন।
২৮ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগে অবরোধকারীদের দেয়া পেট্রোল বোমায় তাদের শরীর ঝলসে গেছে। এর মধ্যে নাহিদ মোড়ল নামে এক স্কুলছাত্র মারা গেছে। এরই মধ্যে হরতাল সহিংসতায় মনির, কাশেম, নাসিমা, মন্টু, আসাদসহ এক ডজন তাজা প্রাণ এভাবে পুড়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিল। এরমধ্যে প্রতিবন্ধী আর শিশুও রয়েছে। দেশের মানুষ আজ বড় বেশি অসহায়। তাদের বুকভরা আকাশসমান স্বপ্নেরা মুকুলেই ঝরে যাচ্ছে। একে একে নিভে যাচ্ছে জীবন-প্রদীপ। সেই প্রদীপের আলো ছাড়া পরিবারগুলো আজ অমাবস্যার অন্ধকারে ঢেকে গেছে।
হয়ত আহত অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে আরও কয়েকজন দুর্ভাগ্যজনকভাবে যুক্ত হবে সেই মিছিলে!!! কি নিষ্ঠুর এ হত্যাকাণ্ড। জানি এসব হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক বিচারেই বিবেচ্য হবে। একদিন এসব খুনি মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়ে কোন এলাকার প্রতিনিধিত্ব করবে। তা কখনই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে না? ক্ষমতার রাজনীতিতে জনগণ কেবল ক্রীড়নক হয়েই রয়ে যাবে। এখানে স্বাভাবিক মৃত্যুরও কোন গ্যারান্টি পাওয়া যাবে না। তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিরোধী দলের মাথায় যেন খুন চেপেছে। একের পর এক লাশ পড়ছে। জ্বলে পুড়ে সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষুধার্ত বাঘ সহিংস হয়ে উঠেছে। আক্রমণ চলছেই। হরতাল অবরোধ কি? মানুষ পুড়ে মারলেই কি সব সমস্যার সমাধান মিলবে? কেবল ভাংচুর খুন-খারাবির নামই কি হরতাল? দেশের মানুষকে কষ্ট দেবার নামই কি হরতাল? তাই তো মনে হচ্ছে! পরীক্ষার মৌসুমে শিক্ষা-শিক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন বাজি রেখে অফিসে যেতেই হচ্ছে। ব্যবসায়ীদেরও পড়তে হচ্ছে নানামুখী সংকটে। দেশের অর্থনীতিতে বারোটা বেজে যাচ্ছে। চারদিকে এই একই 'হ য ব র ল' অবস্থার। লাভ কি হচ্ছে? ধ্বংসের মুখে পড়ছে দেশ এবং ভবিষ্যত্ প্রজন্ম। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশ এক পা এগিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি মানে দেশের অর্থনীতিতে দরিদ্রের বান ডাকা। জ্বলছে বাস, ট্রেনের বগি, গাড়ি, পুড়ছে জীবন্ত মানুষ; সর্বোপরি জ্বলছে বাংলাদেশ; বাংলাদেশের হূদয়। এই জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি থেকে কবে মুক্তি পাবে দেশ? আর কত জীবন্ত মানুষ পুড়লে আমাদের সোনার বাংলাদেশ খাঁটি সোনার বাংলা হবে? সুত্র
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৩
তালপাতারসেপাই বলেছেন: ভয়ঙ্কর কাজ গুলো প্রতিহত করূন।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৩
চলতি নিয়ম বলেছেন: ভয়ঙ্কর ছবিগুলা সরিয়ে দিন।