নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে কারণে সাড়া নেই লাদেনী স্টাইলে তারেক রহমানের আন্দোলনের আহ্বান

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:০৯

৫ জানুয়ারি ছিল গোটা জাতির জন্য একটি অপেক্ষার দিন; দেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন। একদিকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন প্রতিহতের দিন। বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন প্রতিহত মানে তা-ব, আগুন, ভয়ভীতি, অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি, নিরীহ পশু, গাছপালা কারও রেহাই নেই। এটা নাকি তাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন। জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই আন্দোলন। নির্বাচনের ২/১ দিন আগে দেশের প্রায় ৫৩১টি বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, ব্যালট পেপার ছিনতাই, প্রিজাইডিং অফিসার খুনসহ নানা জঙ্গিমূলক কাজের মধ্য দিয়ে তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাহলে তাদের কাছে গণতান্ত্রিক আন্দোলন মানে এইসব?

নির্বাচনের আগের দিন ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রতিটি গণমাধ্যমে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি ভিডিওবার্তা সারা দিন-রাত প্রচারিত হয়েছে।

তিনি তাঁর ভিডিওবার্তাটি গণমাধ্যমে প্রচারের জন্যই পাঠিয়েছেন। গণমাধ্যম দায়িত্বশীলতার সাথে সেই ভিডিওবার্তাটি যথারীতি সম্প্রচার করে জনগণের কাছে তারেক রহমানের বক্তব্য তুলে ধরেছে। এই ভিডিও বার্তায় তিনি যা বলেছেন সেটা বাংলাদেশের আপামর জনগণ যারা টেলিভিশন দেখার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা দেখেছেন ও শুনেছেন। দেশ ও জাতির জন্য উদ্বিগ্ন তারেক রহমান বাংলাদেশের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগের দিন জনগণকে ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধ, প্রতিহত ও বর্জন’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘গণ আকাক্সক্ষাবিরোধী সংবিধান’ বলে দাবি করেছেন। তিনি আরো অনেক কিছুই বলেছেন এবং বলতেই পারেন, কারণ একজন রাজনীতিবিদ ও স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তাঁর বলার এখতিয়ার আছে।

দেশ ও জাতির প্রতি তাঁর দরদের কথা তাঁর দলের লোকজনের কাছেও কতোটুকু বিশ্বাসযোগ্য সেটা নিয়ে সংশয় আছে। বিশেষত তাঁর অতীত পর্যালোচনায় যতটুকু বোঝা যায়। কিন্তু বিষয়টি সেখানে নয়, একেক জনের কথা বলার ভঙ্গি একেক রকম হতেই পারে। কিন্তু তারেক রহমান যা বলেছেন সেসব কি তিনি নিজে থেকে বলেছেন নাকি তাঁরই চারপাশের কোনো একটি বিশেষ চক্র তাঁকে বাধ্য করেছেন এমন একটি ‘লাদেন মার্কা’ ভিডিওবার্তা পাঠাতে? বিএনপির ভেতরে-বাইরে তারেক রহমান সম্পর্কে রয়েছে নানান নেতিবাচক সমালোচনা। তারা বলছেন, ভিডিওবার্তা মোতাবেক সত্যিই যদি এ দেশ ও মানুষের প্রতি তারেক রহমানের এত দরদ থাকে তবে তিনি কেন বছরের পর বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন? দেশে অবস্থান করে কেন তিনি এ দেশের রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছেন না। দুর্দিনে দল ও দেশের মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে কেন তিনি ভিডিওবার্তার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের উস্কে দিয়ে দেশের জন্য মায়াকান্না দেখাচ্ছেন। তারেক রহমান একজন ফৌজদারী মামলার আসামি। তিনি ১/১১-এর সময় এতোটাই নির্যাতিত হয়েছিলেন যে ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়। তাঁর প্যারোলের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসার কথা থাকলেও মামলা-মোকাদ্দমার কারণে জেলে যাওয়ার ভয়ে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন।

এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো ম্যাচিউরড হয়ে একটিতে তিনি খালাশ পেয়েছেন এবং অন্যান্যগুলো বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। আইনের চোখে সবাই সমান আর আইন তার নিজের গতিতেই চলবে, এটা আমরা সবাই জানি। তাঁর বিরুদ্ধে যেহেতু কয়েকটি মামলা বিচারাধীন সেহেতু তিনি বিদেশে বসে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য, তাঁর সমর্থকদের উস্কে দেওয়ার জন্য ভিডিওবার্তা পাঠাতে পারেন না। এক্ষেত্রে বিজ্ঞ আদালতের কাছে আইনত প্রতীয়মান হওয়া স্বাভাবিক যে, তারেক রহমান তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত এবং তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে দেশে ফিরছেন না এবং মামলার তারিখে হাজিরা না দিয়ে বিচারকাজকে বিঘিœত করে আদালতকে অবমাননা করছেন। এটা নিয়ে আদালত চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিতে পারেন। তাঁকে দিয়ে যে বা যারাই এই কাজটি করিয়েছেন সে বা তাঁরা কাজটি ঠিক করেননি। পরোক্ষভাবে এতে তাঁর ক্ষতি করেছেন।

২. তারেক রহমান ভিডিওবার্তায় সরাসরি নির্বাচন প্রতিরোধ, প্রতিহত ও বর্জন করার জন্য তাঁর দলের ও দেশের জনগণকে আহ্বান করেছেন। তাঁর ‘আহ্বান’টি ছিল পক্ষান্তরে একটি ‘নির্দেশ’। তিনি ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে যতটুকু ক্ষতি নিজের করেছেন, তেমনি

পক্ষান্তরে তাঁর দলেরও করেছেন। কারণ তিনি বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর দলকে আহ্বান জানাতে পারেন কিন্তু সমগ্র দেশবাসীকে তিনি নির্দেশ দিতে পারেন না। কারণ তিনি কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। তিনি দলীয় মনোনীত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান।

৩. ‘প্রতিরোধ’ শব্দের আভিধানিক অর্থের সঠিক ধারণা তাঁর নিশ্চয়ই জানা আছে। ‘প্রতিহত’ শব্দটিও তাঁর কাছে অবোধ্য নয়। এই দুটি শব্দ চয়ন করে তিনি যে দেশের একটি উচ্ছৃঙ্খল সন্ত্রাসী বাহিনীকে তা-ব চালানোর জন্য পরোক্ষ নির্দেশ দিলেন সেটা অনেকেই কয়েকদিন থেকে খুব হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছে। কারণ তাঁর ঐ ভিডিওবার্তা প্রচারিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের সন্ত্রাস ও তা-বের মাত্রা এতোটাই বেড়ে গেল যে সরকারি কাজে নিয়োজিত অসহায় সহকারী রিটার্নিং অফিসারের জীবন তৎক্ষণাৎ কেড়ে নিল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনবিরোধীরা। তাই এই হত্যার দায় তারেক রহমানের কাঁধেই পড়বে।

৪. এর আগেও অনেকে ‘ডিজিটাল যুগের’ বরাতে তারেক রহমানের সাথে শমসের মবিন চৌধুরীর ফোনালাপ শুনেছেন। সেখানেও দেখা গেছে যে তিনি দেশের রাজনৈতিক বিষয়ে যথেষ্ট তৎপর আছেন এবং শমসের মবিন চৌধুরীকে নির্দেশনা দিচ্ছেন। শমসের মবিন চৌধুরীও তারেক রহমানকে বারবার আশ্বস্ত করছেন যে, সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহকে দিয়ে তিনি সেই কথা ‘টক শো’তে বলাচ্ছেন। যারা নিয়মিত ‘টক শো’ দেখেন তারা জানেন সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহ ‘টক শো’গুলোতে কী কথা বলছেন। তারেক রহমান বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কেও যে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ দু’জনের কথোপকথনে এটা বোঝা গেল। সুতরাং টেলিফোনে এ কথা বললেও তারেক রহমানের একটু সতর্কতার সাথে বলা ভালো বৈকি। তিনি যদিও একটি দলের নেতা তারপরও তাঁকে সর্বদাই মনে রাখতে হবে ভবিষ্যতে দেশের হাল ধরতে হলে কারো পেতে দেওয়া ফাঁদে তাঁর পা না ফেলাই ভালো।

৫. তারেক রহমান তাঁর ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগ সরকার কতোদিন হরতাল করেছেন এবং সাধারণ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। তবে মাত্র এই কয়েকদিনে সারা বাংলাদেশে যে মানুষগুলো পেট্রলবোমায়, গুলিতে, লাঠিপেটায় বা চাপাতির আঘাতে নিহত হয়েছেন এবং এখনো যারা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন সেই সংখ্যাটি তাঁর জানা আছে বলেই অনেকের বিশ্বাস। তাহলে কী এরা কেউ সাধারণ মানুষ নন? বা এরা কেউই মানুষই নন? এই প্রশ্ন আসা কী খুবই অনুচিত?

৬. তারেক রহমানের দল নির্বাচন বর্জন করেছে; করতেই পারে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যদিও একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এখনো অনেকে মনে করে বিএনপি নির্বাচনে এলে ভালো করতো। কারণ বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের সাধারণ ভোটারদের মন বোঝা ভার। প্রতি পাঁচ বছর পর পর তাদের মনের গতিধারা পরিবর্তিত হয়। তাই মানুষও খুব মহানন্দে নতুন নতুন দূতদেরকে মহান জাতীয় সংসদে বসায়। তারেক রহমান তো ভিডিওবার্তায় বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় তাই তাঁরা এমন নির্বাচন করছেন। তাই যদি হয় তাহলে তো বিএনপির মতো বৃহৎ ও জনপ্রিয় দল অনায়াসে নির্বাচনে এসে জয়যুক্ত হয়ে সরকার গঠন করতেই পারতো। সেটা যখন বিএনপি করেনি, এখানে জনগণের মনে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে যেখানে আওয়ামী লীগ-এর জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় সেখানে বিএনপি নির্বাচনে এলো না কেন?

বিএনপি নির্বাচনে আসার পর যদি কোনো কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেত তাহলেও তো নির্বাচনের কারচুপিসহ শত সহস্র অভিযোগ এনে সংসদ বাতিলের গণ-আন্দোলন করতে সক্ষম হতো এবং বলতে পারতো যে আমরা আগেই বলেছিলাম, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। সেটা বলার পথ বিএনপি নিজেই বন্ধ করে দিল।

বিষয়টি আসলে সেটা নয়। বিষয় হলো জামায়াত। জামায়াত-বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে দিল না। কারণ জামায়াত জানে তাদেরকে ছাড়াও নির্বাচন করলে বিএনপি বিজয়ী হয়ে যেতে পারে। আর একবার জামায়াত ছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভবিষ্যতে জামায়াতের ছায়াও বাংলাদেশের মানুষ সহ্য করবে না। জামায়াত এখন আইনত একটি অবৈধ সংগঠন। তাদের কোনো কূটচাল বাংলাদেশের কীটপতঙ্গও মেনে নেবে না। তাই অতি কূটচালে বিএনপিকেও শেষ করে দিতে চাইছে জামায়াত। আর জামায়াতের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কূটচালে এবং বিএনপির মাঝে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াতপন্থিরা সেই চক্রের আবর্তেই ফেলে দিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে।

তারেক রহমানের সাথে শমসের মবিন চৌধুরীর টেলিফোনালাপ ও তারেক রহমানের ভিডিও বার্তা প্রচার হওয়ার পর দেশে যে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে তার জন্য আইনত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করতে পারে। এখানে ব্যক্তি তারেক রহমানের কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো এটাই নিয়ম। তবে জনগণ চায়, দেশ নিয়ে তাঁর ভাবনা চিন্তা করার কোনো সুযোগ আছে কিনা সেটা জনগণের কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার। অনেকেই আশা করেন নতুন সরকার এ বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন। আর তারেক রহমানও রাজনীতি করতে চাইলে দেশে থেকেই তা করবে বলে অনেকে আশা করে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: তারেক লাদেন ঠিকই জয় বাবাজি মুখোশ পড়া আমেরিকা। মিথ্যে অজুহাতে লক্ষ্য কোটি মানুষ মারতে যাদের হাত কাঁপেনা।






আপনার লেখাটি সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.