নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতির জনকের জন্মদিন আজ

১৭ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:১০

''‘আমি জন্মদিন পালন করি না, আমার জন্মদিনে মোমের বাতি জ্বালি না, কেকও কাটি না। এ দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই। আপনারা আমাদের জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যেকোনো মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে। আমি জনগণেরই একজন। আমার জন্মদিনই কি, আর মৃত্যুদিনই কি? আমার জনগণের জন্য আমার জীবন ও মৃত্যু।’'' ..... বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান একাত্তরের রক্তঝরা মার্চের ১৭ তারিখ



স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৫তম জন্মদিন আজ ১৭ মার্চ সোমবার। দিনটি উদ্‌যাপিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়, পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে। আজ সরকারি ছুটি। দিবসটি উপলক্ষে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায়ও বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এবং জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে কার্যত তাঁর হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। তাঁর বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা শেখ সায়েরা খাতুন। বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রপতি এই মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব শিশু-কিশোরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শৈশব থেকেই নতুন প্রজন্মের মধ্যে সৎ গুণাবলির উন্মেষ ঘটাতে হবে, যাতে তারা দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতে শেখে। বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেমের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

গতকাল পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমতা ছিল অপরিসীম। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। এই দিনে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার শপথ নিতে হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, দেশের সব শিশুসহ দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের ব্যক্তিত্ব গঠন, দেশপ্রেম জাগ্রত করা এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে তাদেরকে প্রিয় মাতৃভূমি ও জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দোয়া মাহফিল, মোমবাতি প্রজ্বালন, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। আয়োজক সংগঠনগুলো হচ্ছে বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা, গৌরব-৭১ ইত্যাদি। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পালিত হচ্ছে নানা আয়োজন।

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন অসামান্য গৌরবের। স্কুলজীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কৈশোরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকাবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন। ম্যাট্রিক পাসের পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ তৎকালীন প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। ওই সময় থেকে নিজেকে ছাত্র-যুব নেতা হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করেন।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর পরই ঢাকায় ফিরে নতুন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা নিয়ে অগ্রসর হন বঙ্গবন্ধু। সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন তৎকালীন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হলে তরুণ নেতা শেখ মুজিব দলটির যুগ্ম সম্পাদক পদ পান। পরে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নামকরণ করা হয় আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধু বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আটান্নর আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানি সামরিক শাসনবিরোধী সব আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাঙালির অধিকার আদায়ের এসব আন্দোলনের কারণে বারবার কারাগারেও যেতে হয় তাঁকে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাঁকে। আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন তথা বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নামে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে তাঁদের কারাগারে পাঠান। ঊনসত্তরের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালি শেখ মুজিবকে কারামুক্ত করে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের ম্যান্ডেট লাভ করে আওয়ামী লীগ; কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির এ নির্বাচনী বিজয়কে মেনে নেয়নি। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে প্রথমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং চূড়ান্তপর্বে স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ দেন।

এ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মার্চে নজিরবিহীন অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এ ভাষণে সেদিন স্বাধীনতার ডাক দিয়ে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতাসংগ্রামের দিকনির্দেশনা দেন তিনি। ১৯৭৫ সালে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ১৫ আগস্টের কালরাতে নিজ বাসভবনে ক্ষমতালোভী ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর জীবনাবসান ঘটে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.