নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাত-শিবিরের হত্যা-নকশা

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:১২



রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের নিজ কক্ষে গুলিতে ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ছিলেন হল শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রলীগের নেতারা দাবি করেছেন, শিবিরের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে তাকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। রাজশাহী বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ তাদের নেতা রুস্তম আলীর হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছে। রুস্তম হত্যার পর ক্যাম্পাসে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, রুস্তমের খুনিদের বিচার, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপসাহিত্য সম্পাদক শাহজাহান সাংবাদকিদের জানিয়েছেন, ‘রুস্তমের কিছু নেতাকর্মীর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছিল বলে শুনেছিলাম।’ হলের আরেকজন শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘রুস্তমের সঙ্গে শিবিরের কিছু ঝামেলা হয়েছিল।’



রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘এটা কোনো দলীয় কোন্দল বা নিজের গুলি নিজের গায়ে লাগানোর ঘটনা নয়। শিবিরের ক্যাডাররাই জুমার নামাজের সময় নির্জনতাকে কাজে লাগিয়ে রুস্তমকে গুলি করে হত্যা করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘রুস্তমকে কয়েকদিন ধরে শিবিরের ক্যাডাররা হুমকি দিয়ে আসছিল। বিভিন্ন এসএমএস ও ফোনকলের মাধ্যমে এসব হুমকি দেয়া হচ্ছিল।ৃ তাকে হুমকি দেয়ায় বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে রুস্তমসহ অন্য নেতাকর্মীদের সান্ত¡না দিয়ে এসেছিলাম। এর এক দিন পরই শিবিরের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করলো।’ (জনকণ্ঠ -৫/৪/১৪)।



জামাত-শিবিরের হত্যা পরিকল্পনার নকশা কোনো ছোটখাটো ব্যাপার নয়, অনেক লম্বা। যে রাজশাহীতে রুস্তমের মতো ছাত্রলীগ নেতাকে শিবিরের নির্দয় আর্মস ক্যাডার হত্যা করেছে, সেই রাজশাহীর মতিহারের প্রতি ইঞ্চি মাটি শিবিরের হাতে রঞ্জিত হয়েছে। এক সময় ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেক ছাত্রনেতাকে হত্যা করেছে, কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে, হাতুড়ি দিয়ে মাথার খুলি চুরমার করেছে, হাতের কবজি কেটেছে, পায়ের রগ কেটেছে শিবির বাহিনী। ’৭৫ পরবর্তীকালে ওরা জিয়াউর রহমানের নীতি বিবর্জিত, চাণক্য রাজনীতির সুযোগ নিয়ে সশস্ত্রভাবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল, ওরা হয়ে উঠেছিল গুলি খাওয়া বাঘ। বাঘকে গুলি করার পর যদি মারা না যায়, কোনোক্রমে বেঁচে যায় তাহলে ওই বাঘ দ্বিগুণ হিংস্র হয়।

১৯৭১ সালে জামাত-শিবির এতো অপরাধ করেছেÑ হত্যা, নরহত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটপাট, দখল, উদ্বাস্তুকরণ, অত্যাচার, নিপীড়ন কোনো কিছু বাকি রাখেনি তাতে দেশ স্বাধীনের পর ওদের ফায়ারিং স্কোয়াডে দেয়া উচিত ছিল। তা হয়নি, ওদের প্রাপ্য কোনো শাস্তিই দেয়া হয়নি। ওরা অল্প-স্বল্প বিপদ মোকাবেলা করে ধর্মের ভেক ধরে পার পেয়ে গেছে। তাই ওদের স্বভাবে, ওদের ধারালো নখরে সেই বন্য স্বভাব রয়ে গেছে। ওদের রক্তে যে খুনের নেশা প্রবেশ করেছিল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে আবার তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ওরা ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের, তরুণদের, মুক্তিযোদ্ধাদের, ছাত্রনেতাদের হত্যা করছে। এ কথা অবিসংবাদিতভাবে সত্য, ওরা স্বাধীনতা স্বীকার করবে না, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, শহীদ মিনার মান্য করবে না, ১৯৭২-এর সংবিধান মানবে না, জেনেভা কনভেনশন, জাতিসংঘ সনদ কিছুই মানবে না। ওরা বাংলাদেশকে রক্তাক্ত, মধ্যযুগীয় মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চায়। ওরা বাংলাদেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্র বানাতে চায়। ওরা আপাতত বিএনপিকে ছত্রছায়া হিসেবে ব্যবহার করছে কিন্তু এক সময় ওরা বিএনপিকে সুপারসিড করবে।



আমাদের সমাজে ও রাষ্ট্রে ওদের বলিষ্ঠ সমর্থক আছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়ায় ওরা টাকা বিনিয়োগ করে রেখেছে, তখাকথিত ‘বীর উত্তম’ উপাধিধারীরা টকশোতে ওদের টাকা খেয়ে ওদের ভাড়া খাটছে, ওদের হয়ে কৌশলে বয়ান দিচ্ছে। তাছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের রাজনীতিতে বিভিন্ন দুর্বলতা আছে, ওরা এই দুর্বলতাকে অক্ষরে অক্ষরে কাজে লাগাচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে ওরা যতোগুলো আসনে জয়ী হয়েছে, তার প্রায় সিংহভাগ জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং মহাজোটের মধ্যে পরস্পর অনৈক্য ছিল, সমন্বয় ছিল না, ওরা সেই সুযোগ নিয়েছে। আজ ড. হুমায়ুন আজাদের কথাটি মনে পড়ছে, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা সব সময় মুক্তিযোদ্ধা নয় কিন্তু একজন রাজাকার সব সময় রাজাকার।’



আমাদের রাজনীতি ঠিক এই জায়গায় এসে বেঘোরে মার খাচ্ছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে, ২০১৩ সালে বিএনপির ডাকা অবরোধের সময়কালে সাতক্ষীরাসহ বাংলাদেশের জনপদে জামাত-শিবির যে তা-ব চালিয়েছে তা ১৯৭১কে হার মানিয়েছে। কবরের মধ্যে পালিয়েও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবগলীগের নেতাকর্মীরা প্রাণ রক্ষা করতে পারেনি।



যে দিনের এবং যে জাতীয় দৈনিকটি থেকে তথ্য নিয়ে এই কলামটি শুরু করেছি, সেই পত্রিকাতে এই খরব পেয়েছি, ‘লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে উপজেলা নির্বাচনকালীন ও পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় জড়িত বিএনপি-জামাতের কর্মীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার বা আটক না হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিকার ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের পূর্বদিন থেকে শুরু হওয়া জামাত-বিএনপির নেতৃত্বে সংঘটিত একাধিক হামলার বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগ কর্মী জসিম উদ্দিন ৩৫ জামাত-বিএনপি কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনের নামে হত্যার চেষ্টা, ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জানা যায়, ৩১ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিনও রাতে ৯নং চর আবাবিল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র দখল, হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও জামাতের ১২ নেতাকর্মী আহত হন। নির্বাচনের আগের দিন রাতে চরপাতা এলাকায় প্রকাশ চন্দ্র রায় নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করে শিবিরের কর্মীরা।



পুরোনো পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, শিবিরের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে সুনির্দিষ্টভাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা লাগাতারভাবে, বোঘারে প্রাণ হারাচ্ছে। ছাত্রলীগের বিচ্ছিন্ন অপরাধকে যারা গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে দেখাচ্ছে, তারা শিবিরের অব্যাহত কিলিং মিশন সম্পর্কে কিছুই বলছে না। যেনো অঘোষিতভাবে শিবির ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীদের নিধন করার ছাড়পত্র পেয়ে গেছে। টিভি চ্যানেলে টকশোওয়ালারাও শিবিরকে আস্তিনে আড়াল করে সরকারকে ধরাশায়ী করার গোলা নিক্ষেপ করেন। এর পরিণত হবে ভয়াবহ। অতএব সাধু সাবধান। সুত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.