নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
সংক্ষেপে বলি, আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণে বিএনপি-জামাত-হেফাজত তথা ইসলামি মৌলবাদী জোট বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে এই তারেক জিয়াই হবে এদেশের প্রধান। তখন সে তার আজকের এসব বক্তব্য অবশ্যই রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করবে। যেমন: পাকিস্তানি সেনাদের হাতে বন্দী হবার কারণে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতাবিরোধী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে দেশত্যাগী দল, শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের দেশ ও জাতির শত্রু, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার, গণতন্ত্র হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ দলের বিচার ইত্যাদি রাষ্ট্রীয়ভাবে করবে। অপরদিকে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশের বন্ধু, বাংলাদেশী জাতির জনক, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সফল রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশী গণতন্ত্রের প্রবক্তা, একমাত্র বিএনপি ও তাদের সমমনা দলকে মুক্তিযোদ্ধা দল ইত্যাদিও রাষ্ট্রীয়ভাবে করবে।
এসব হালকা করে দেখার বিষয় নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা যা পারেননি, পারছেন না; জিয়াউর রহমান তা পেরেছেন এবং সেই জিয়ার সন্তান তারেক জিয়াও তা পারবে। আওয়ামী লীগের নেতাদের ভাষ্য অনুসারেই জানা যায়, মেজর জিয়া ১৯৭১ সালে নিজেকে এ দেশের প্রধান দাবি করেছিলেন। দুএকবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ দিয়েই স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেছিলেন; আওয়ামী লীগের নেতাদের স্বাধীন করা ‘স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র’ থেকে। পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশ অনুসারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বারবার। যুদ্ধ চলাকালেও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল মেজর জিয়ার ভূমিকা। [দেশ স্বাধীন না হলে হয়তো তিনি বলতেন, আমি বাধ্য হয়ে শেখ মুজিবুর রমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছি।] কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা তখন তাকে চিনতে পারেননি। আজকের তারেক জিয়ার মতোই হালকা করে দেখেছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর শেখ মুজিবুর রহমানও মেজর জিয়াকে অবিশ্বাস করেননি। তার সকল দুরভিসন্ধিকে সাধারণ অজ্ঞতা বা অনিচ্ছাকৃত ভুল মনে করেই তখন তাকে আনেননি কোনোরূপ বিচারের আওতায়। বরং সিনিয়রিটি বজায় রেখে সকল বেতনভাতা দিয়ে তাকে রেখে দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীতেই। কিন্তু ১৯৭৫ সালে সপরিবারে মুজিব হত্যাযজ্ঞের ভেতর দিয়ে সেই সেনাবাহিনীর বলেই অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মেজর জিয়া প্রমাণ করেছেন, তিনিই এদেশের প্রধান। তখন তিনি কিন্তু ছাড় দেননি কাউকেই। সামরিক আদালতের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছেন নিজের সহযোগী কর্নেল তাহেরসহ আরো অনেককেই!
আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতারা তো মনে হয় কেবল চাপার জোরে ইতিহাস ধরে রাখার নামে বিতর্ক জিইয়ে রেখে রাজনীতি করতে চান। তারা তারেক জিয়াকে যতোটা বকাবকি করছেন, দলিল দিয়ে ততোটা খ-ন করছেন না যে তার বক্তব্য মিথ্যা। নিচ্ছেন না কোনো আইনগত ব্যবস্থাও। এমতাবস্থায়, যারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে না, পড়ে না, পড়তে পারে না কিংবা জানতে চায় না; তারা তো তারেক জিয়ার কথা কম/বেশি বিশ্বাস করে বিভ্রান্ত হবেই। আওয়ামী লীগের নেতারা যদি মনে করেন, এসব বিতর্ক জিইয়ে রেখে সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে আজীবন পার হবেন নির্বাচনী বৈতরণী, তো তাদের সেই আশায় আগামীতে গুড়েবালি। এসব বিষয়ে মানুষের সেন্টিমেন্ট যে এখন আর ততোটা ধারালো নেই তা তারেক জিয়ার বক্তব্য ও শারমিন আহমদ রিপির লেখার দায়সারা প্রতিক্রিয়ার ধরন দেখেই অনুমেয়। সাধারণ মানুষ এখন কাজ চায়, উন্নয়ন চায়, বাঁচার মতো বাঁচতে চায়। চরম দলীয়করণের ফাঁদে পড়া ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখার জন্য আর জীবন দিতে চায় না।
তারেক জিয়ার আজকের বক্তব্যগুলোই হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামাত-হেফাজত তথা ইসলামি মৌলবাদী জোটের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ইশতেহার। আওয়ামী লীগের নেতারা শেখ হাসিনাকে খুশি করা বা অন্য কোনো কারণে যতোই তারেক জিয়াকে গালমন্দ করুক, পাগল বলুক, বোকা বলুক, বেয়াদব বলুক, বাচ্চা বলুক, কাঁচা বলুক; আসলে সে তা নয়। যারা বকেন তাদেরও জানা-বুঝা উচিত এ আসল সত্যটা। তারেক জিয়া সচেতনভাবে এবং দলীয় ও জোটগতভাবে এসব বক্তব্য দিচ্ছেন বলেই তার প্রতিটি কথাকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন, মহাসচিব ও অন্য নেতারা। আর সে সঙ্গে চুপ থেকে মৌন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সমমনা সকল দল।
এদেশের অধিকাংশ মানুষ এখনো নির্বাচনী ইশতেহার না বুঝেই ভোট দেন। বিকল্প দলকে বা দলের মানুষকে ভালো জেনে নয়; বরং বর্তমান দলের লোকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ভোট প্রদান করে থাকেন বিপক্ষ দলকে। তাছাড়া বারবার একই দলকে ভোট দিতেও অনীহা দেখায় অনেকেই। তদুপরি প্রতিনিয়ত ভারী হচ্ছে বর্তমান সরকারি জোটের ব্যর্থতার পাল্লা। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পুনরায় রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না। এমনকি বর্তমান অরাজক পরিস্থিতি চলতে থাকলে, তারেক জিয়ার বক্তব্যগুলো নির্বাচনী এজেন্ডা হিসেবে যুক্ত করে যেনতেন প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে এলেও ইসলামি মৌলবাদী জোটেরই বিজয় হবে। তখন তারেক জিয়া তার এসব বক্তব্য এমনভাবে (আইনগত ও রাষ্ট্রীয়) প্রতিষ্ঠিত করবে যেন, কেউ অন্যথা বলতে গেলেই জেল ফাঁসি হবে। যদিও তারেক জিয়ার এখন কিছুই হচ্ছে না! তার আজকের এসব বক্তব্যই হবে এদেশে সঠিক ইতিহাস! তার দলের জ্ঞানপাপীরা তাকে বানাবে এদেশের ইতিহাসের জনক। যা জানতে, মানতে, চলতে, বলতে বাধ্য হবে আওয়ামী লীগসহ সবাই। আমি জানি আমার এই ধারণাগত বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হবে অনেক। ক্ষুব্ধ হবে বিএনপি জোট, নিষ্ক্রিয় থাকবে আওয়ামী জোট। আওয়ামী লীগের অনেক পাকা নেতা হয়তো বলবেন- ‘এসব ফালতু কথা, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও প্রথম সংবিধানসহ এতো এতো প্রমাণ থাকতে মেজর জিয়া কোনোভাবেই স্বাধীনতার ঘোষক ও প্রথম রাষ্ট্রপতি হতে পারে না।’ জি হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ না পারলেও বিএনপি পারে। যেমন, বিএনপি ৭২-এর সংবিধান জবাই করতে পেরেছে; আওয়ামী লীগ আর সেটি পুনরুজ্জীবিত করতে পারেনি। তাই আবারো বলবো, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতা হারাবার আগে বাংলাদেশের ইতিহাসের এসব বিষয় সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে ফয়সালা করতে ব্যর্থ হলে বা অনীহা দেখালে; যা যা বলেছি তাই হবে, অপেক্ষা করুন।
সুত্র
১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
তালপাতারসেপাই বলেছেন: তাই ?
২| ১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:২৪
নিজাম বলেছেন: তারেক রহমানকে রাজনীতিতে পুনর্বান করতে হলে তাঁকে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে।
১২ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৪৯
তালপাতারসেপাই বলেছেন: উনি কি নিজেই সুস্থ ?
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৩২
রেজওয়ান26 বলেছেন: তারেক রহমান ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ বাচবে, বাংলাদেশের জনগন বাচবে। বাংলার জনগন তাদের হারানো ভোটাধিকার ফিরে পাবে ।