নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
‘খালেদা জিয়ার অদূরদর্শিতার জন্যই বিএনপি ধ্বংস হচ্ছে।’
এমন মন্তব্য কতোটা দূরদর্শী হলো তা নিয়ে মনের ভেতর ধন্ধ তৈরি হলেও যিনি এ কথা বলছেন তার মাথার চুলহীন সামনের অংশে দু’পাশে দু’টো গভীর দাগ। কয়েক ইঞ্চি জায়গা নিয়ে ওপর থেকে নিচের দিকে বিস্তৃত। ‘৯৬ সালে সরকার বিরোধী মশাল মিছিলে আওয়ামী লীগের হামলায় হকিস্টিকের বাড়িতে কপালের দিকে ওই দুই দাগ বসে যায় তার।
সে ঘটনায় দু’পাশে ৬টি করে ১২টি সেলাই লেগেছিলো মাথায়। এছাড়া গত সাড়ে তিন দশকে কয়েক দফায় জেলের ঘানি টেনেছেন বছর পাঁচেক। তিনবার খেটেছেন ডিটেনশন। তার নাম মনিরুজ্জামান পিনু।
কেএম ওবায়েদুর রহমান বিএনপি মহাসচিব থাকাকালে তার হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে পালন করেন জেলা সেক্রেটারির দায়িত্ব। বর্তমানে জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হলেও তিনিই যে গোপালগঞ্জ বিএনপির নিউক্লিয়াস তা বুঝতে বেগ পেতে হয় না। বঙ্গবন্ধুর জন্মজেলা গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিরোধী দল টিকিয়ে রাখা তো আর সহজ কথা না।
দলীয় ফোরামে কথা বলে কাজ না হওয়ায় বাংলানিউজকে পেয়ে যেন অভিমান আর অভিযোগের ঝাঁপি খুলে বসলেন পিনু। অকপটে বললেন, ম্যাডাম দিনভর ঘুমাবেন, আর রাতে অফিস করবেন। এতে দল চলবে না। জিয়ার দল বিএনপিকে তিনিই নষ্ট করছেন।
গোপালগঞ্জের মেডিকেল গেটে তার অফিসে বসে কথা হয় তৃণমূলের এই ত্যাগী নেতার সঙ্গে। আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতেও তিনি যে বেশ জনপ্রিয় তা বুঝতে কষ্ট হয় না।
অভিমানে বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন নয়াপল্টনের অফিসে বসবেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের কথা শুনবেন। কিন্তু বসছেন না। রাত দু’টায় গুলশানে তার সঙ্গে দেখা করতে কে যাবে?
নয়াপল্টন অফিসে খালেদা জিয়া বসলে দলের অনেক উপকার হতো মন্তব্য করে পিনু বলেন, সারেং হাল ঠিকমতো ধরলে লঞ্চ ঠিকমতো চলবে। যতোই ঝড় আসুক, ডুববে না। কিন্তু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিএনপি চলছে না।
তিনি বলেন, কিছু দিন আগে রাজবাড়ি সার্কিট হাউসে ম্যাডামকে বলেছি- রাত ২টা পর্যবন্ত অফিস করেন কেনো। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে পরে কথা বলবেন।
গত বছর সরকার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের হামলার মুখে নয়াপল্টনের অফিস থেকে হেলমেট মাথায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চলে যাওয়ার ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দলের নেতা এভাবে পালাবেন, এটা দুঃখজনক।
অনেকটা একই রকম মত পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়ার। জিয়াউর রহমানের জাগদল দিয়ে ১৯৭৮ সালে রাজনীতিতে আসেন তিনি।
সদর রোডে তার অফিস ভর্তি দলীয় নেতাকর্মীতে। বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি বিপদে আছে।
একই সঙ্গে খালেদা জিয়াকে সতর্ক করে বলেন, ম্যাডামকে গুলশান ছাড়তে হবে। রাত ২টা অবধি জাগলে হবে না।
পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক, ছাত্রদলের সাবেক জেলা সভাপতি ও সেন্ট্রাল ছাত্রদলের সাবেক অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম লিটন বলেন, দল তো খালেদা জিয়া নিজ হাতে শেষ করে দিচ্ছেন। ত্যাগীদের বঞ্চিত করে সুবিধাবাদীদের রাখছেন সামনে।
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদল সেক্রেটারি মসিউর রহমান মিলন বলেন, ম্যাডাম তো কখনোই তৃণমূলের খবর জানার চেষ্টা করেন না। কোর্ট-প্যান্ট পরা নেতাদের পছন্দ করেন তিনি।
পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মাহবুব আলম বলেন, ম্যাডামের ওপর আস্থা উঠে যাচ্ছে। নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।
সাবেক যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির বলেন, জিয়া আর খালেদা এক জিনিস না।
সবসময় তৃণমূলই কেন গুলি খাবে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ফখরুল ভাই কেন হেলমেট মাথা? তিনি অ্যারেস্ট হলে কেবল ঠাকুরগাঁওয়ে কেন আন্দোলন হয়, সারাদেশে কেন হয় না। জয়নুল আবদিন ফারুককে মারার পর কঠোর কর্মসূচি কেনো দেওয়া হলো না? তাহলে মানুষ কথা কেন মানবে?
বিএনপিতে ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন কম মন্তব্য করে পটুয়াখালীর এই তৃণমূল নেতা আরো বলেন, ত্যাগীরা ছুটে যাচ্ছেন। দল ভারি হচ্ছে সুবিধাবাদী নেতায়। সুত্র
©somewhere in net ltd.