নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে পেট্রলবোমা ছুড়ে সাধারণ ও নিরপরাধ মানুষ পুড়িয়ে মারাকে মর্মান্তিক ও বর্বর বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন। তাঁর মতে, এ ধরনের সহিংসতা কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। গতকাল বুধবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি তাঁর ওই অবস্থান তুলে ধরেন। এদিকে বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার বেনওয়া পিয়ের লাঘামে গতকাল সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বলেছেন, 'সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ হতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগও অবশ্যই দিতে হবে।' চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় দেশ ও দেশের জনগণ চরম মূল্য দিচ্ছে বলেও কানাডার হাইকমিশনার জানান।
ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার পর ঢাকায় ইইউ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, 'যেকোনো ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে ইইউর অবস্থান ও সংলাপের অব্যাহত আহ্বানের কথা তিনি (ইইউ রাষ্ট্রদূত) পুনর্ব্যক্ত করেছেন।'
ইইউ দূতাবাস আরো জানায়, ইইউ দূত জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে নিরপরাধ নাগরিকদের ওপর সহিংসতার নিন্দা জানান।
ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেসসচিব নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ইইউ রাষ্ট্রদূত একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি আগুনে পোড়া ব্যক্তিদের দুর্দশা ও কষ্টে অত্যন্ত মর্মাহত হন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। মানুষ কিভাবে এমন কাজ (পেট্রলবোমা ছোড়া) করতে পারে? এটি বর্বর ও মর্মান্তিক কাজ।'
এ ধরনের নাশকতা কারো মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না বলে ইইউ রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব দলকে নির্বাচনে আনতে সব ধরনের চেষ্টাই করা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় বিএনপি থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী ইইউ রাষ্ট্রদূতকে বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না পাওয়ায় বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। গত এক বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচনসহ সব অর্থনৈতিক সূচকে ও সব খাতে অগ্রগতি সাধন হয়েছে। তবে হঠাৎ আন্দোলনের নামে পেট্রলবোমা ছুড়ে নিরপরাধ মানুষ হত্যা কোনোভাবেই রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং তা আইএসের (জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট) মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
ইইউকে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন বলেন, ইইউ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে এ দেশের বাণিজ্য জোরদারে একটি বিজনেস কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের 'সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি' (ব্লু ইকোনমি) ধারণার প্রশংসা করে মায়াদোন বলেন, এ ক্ষেত্রে ইইউর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আছে। সমুদ্র সম্পদের বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশ চাইলে ইইউ এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। 'ডিজিটাল বাংলাদেশ'-এর স্বপ্ন পূরণে অগ্রগতির প্রশংসাও করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উজ্জ্বল সম্ভাবনা প্রসঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় পাঁচ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য পূরণযোগ্য। এ ক্ষেত্রে ইইউ বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত।
এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে গতকাল সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কানাডার হাইকমিশনার বেনওয়া পিয়ের লাঘামের সৌজন্য সাক্ষাতের পর কানাডীয় হাইকমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, গণতন্ত্র, শান্তি ও সুশাসন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ভিত্তি। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার ফলে দেশ ও জনগণকে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে।
কানাডীয় হাইকমিশনার বলেন, 'মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে অগ্রযাত্রায় এবং উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে কানাডা বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সঙ্গে কাজ করবে।'
তিনি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য হাইকমিশনারের মাধ্যমে কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। হাইকমিশনার এ ক্ষেত্রে তাঁর দেশের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন।
©somewhere in net ltd.