নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ মেরে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না

০১ লা মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:২৩


ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের মাতৃভাষার গর্বে গৌরবান্বিত। যে ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, তখন প্রশ্ন জাগে বিবেকের কাছে আজ কেন অবরোধ, কেন হরতাল? কার বিরুদ্ধে অবরোধ আর হরতাল? ২ মাস ধরে অবরোধ-হরতাল চলছে। সবচেয়ে দুঃখজনক লেখক অভিজিত্ রায়ের হত্যা ও রাফিদা বন্যার ওপর আক্রমণ। এই অবরোধের মধ্যে দুঃখজনক হল বার্ন ইউনিটে মানুষ কাতরাচ্ছে, মারা গেছেন ১০৪ জন। যে জীবনগুলো চলে গেল সেগুলো আর কোনোদিন ফিরবে না। এই ঘটনাবহুল ২ মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশেও সফর করেছেন। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এবং জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যরা বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। হরতাল-অবরোধে দেশের অর্থনীতি ক্রুসবিদ্ধ হচ্ছে। দেয়ালে মানুষের পিঠ ঠেকে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ অবরোধ-হরতাল কিছুই মানতে চাচ্ছে না। তারা বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে। “অর্থনীতির চাকা যেন সচল থাকে”—এক দাবি কৃষক, শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, দুধওয়ালা, ফুটপাতের হকার থেকে পেশাজীবী, আমলা, ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা সবার। অথচ যারা হরতাল-অবরোধ দিচ্ছেন তারা কেবল বার বার মানুষকে পেছন থেকে টেনে ধরতে যাচ্ছেন। বলগাহীন গতিতে অর্থনীতি ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। দেশে পাঁচ কোটি ছাত্র-ছাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার মধ্যে ১৫ লাখ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা রয়েছে। আমরা অত্যন্ত বেদনার সাথে একটি স্বাধীন দেশে তাদেরকে মুক্ত হাওয়ায় নিশ্বাস নিতে দিচ্ছি না। তাদেরকে সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা নিতে ব্যর্থ হচ্ছি।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে রক্তক্ষয়ী ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে তা কাটিয়ে উঠতে হলে অবিলম্ব্বে সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করা উচিত। সহিংসতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ কখনও ক্ষমতায় যাওয়ার সোপান হতে পারে না। ক্ষমতায় যেতে হলে একমাত্র সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন যে, অবরোধ ও নাশকতার জন্য এক লাখ বিশ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
আজকে চরম দুর্দিনে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সুখ, দুঃখকে একাকার করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, সামাজিকভাবে যে অগ্রযাত্রা ছিল তা অব্যাহত রাখা দরকার। দেশে নারীর যে ক্ষমতায়ন হয়েছে তা ভারত, পাকিস্তানসহ পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়ে বেশি। আমাদের দেশ সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত হোক, বীর বাঙালি কখনও ঔদ্ধত্য পছন্দ করে না। ইতিহাস সাক্ষী দেয় বাঙালি সব সময় দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এবং সমঝোতাপূর্ণ আচরণ পছন্দ করে। সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলে কখনও রাজনীতি হতে পারে না। আর এই কারণেই অবিলম্বে হরতাল, সহিংসতা প্রত্যাহার করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেয়া উচিত। পাশাপাশি আশা করবো শুভবুদ্ধির উদয় হবে। যে সকল অসত্য ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে সেগুলোর কালো মেঘ কেটে যাবে। সহিংস রাজনীতির কারণে দেশের অর্থনীতির ক্ষতির মধ্যেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রা ২৩ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ হয়েছে।
আমরা চাই জনকল্যাণের জন্য যেহেতু রাজনীতি সেহেতু সবার আগে সহিংসতা ও সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। দেশ যেখানে বৈজ্ঞানিকভাবে ও ডিজিটাল পথে এগিয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম যেন বাংলাদেশকে আরও সুন্দর করে সততা, নিষ্ঠা ও দুর্নীতিমুক্তভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
যে সব অসহায় পরিবার হিংস্র দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পাশে কেবল প্রধানমন্ত্রী নয়, দেশে যারা সম্পদশালী আছেন তাদের কাছেও আমার অনুরোধ থাকবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার। পাশাপাশি আশা করবো যারা এই ধরনের অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এদেশের উন্নয়নে গ্রামীণ অর্থনীতি একটি শক্তিশালী বুনিয়াদ হিসেবে কাজ করছিল। সেখানে কৃষিখাত থেকে শুরু করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং গরীবের গগন বিদারি আহাজারিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠছে। তার ফল কিন্তু তাদেরকেই বহন করতে হবে যারা এ ধরনের বর্বরতা সৃষ্টি করছে। ব্যাংকিং খাতের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতা। তারা যেখানে যেখানে অর্থায়ন করছে সেই অর্থগুলো উঠে আসার সম্ভাবনা খুব কম। ফলে ঋণ খেলাপি সংস্কৃতি আবার বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিন্তু একবারও এই ধরনের সহিংসতা ও সন্ত্রাসকে সমর্থন করেনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় যেভাবে বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের সহিংসতার নিন্দা করেছেন তা অত্যন্ত সাধুবাদযোগ্য। এর পরও যারা এই পথ থেকে সরে আসছেন না, তাদের কি ভুল ভাঙবে? বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে আমরা দাঁড়িয়ে যখন ইউনিয়ন থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত সর্বত্র ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে, সেই সময় এই ধরনের বর্বরোচিত আক্রমণ আমাদেরকে পেছনের দিকে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। বার্ন ইউনিটে দাঁড়িয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কান্না আমাদেরকে আপ্লুত করে। একই সাথে প্রশ্ন জাগায় স্বাধীন বাংলাদেশে এই নারকীয় ঘটনার অবসান কীভাবে ঘটবে? আমার মনে হয় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না। নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন মনে করেন, ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি অনেক বেশি। নারীর প্রগতির পাশাপাশি দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
যেন দুর্বিনীতদের কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। দুষ্কর্ম দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না, এটা যেমন ঠিক, যারা এই ধরনের বর্বরোচিত ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং যাদের পরিবারে অন্ধকার নেমে আসছে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি কীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র দেবে? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন এটা যেমন ঠিক কিন্তু তেমনি দরকার জাতীয় সংসদ সদস্যদের নিজস্ব নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা। এবং যারা এ ধরনের অপকর্ম ঘটাচ্ছে তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করা। কেননা যারা তালেবানি দুষ্কর্ম করে বেড়াচ্ছে তাদের প্রতিহত করতেই হবে।
বস্তুত বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে শান্তি ফিরে আসুক, আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ বন্ধ হোক, ভাষা আন্দোলনের মাসে একুশের মূলমন্ত্র হোক এটা।
সুত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.