![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা উৎকণ্ঠায় ভুগছেন। অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ১ এপ্রিল থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই থাক রুটিন অনুযায়ীই নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেয়া হবে। রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা কাম্য হলেও সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি পরীক্ষার্থীদের জন্য যে নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করেছে তা এড়ানো কঠিন। বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ঘোষণা করেছে সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা ও চট্টগ্রামে না থাকলেও সারা দেশে হরতাল-অবরোধ থাকবে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য ২০ দলীয় জোটের কোনো ছাড় না থাকায় পরীক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া-আসা করতে হবে। পরীক্ষাও দিতে হবে বাড়তি চাপের মধ্যে।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী তাত্তি¡ক পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ১১ জুন। এরপর ১৩ থেকে ২২ জুনের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। প্রতিবারের মতো এবারো এ পরীক্ষা আটটি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসহ একটি মাদ্রাসা বোর্ড এবং একটি কারিগরি বোর্ডের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে।
স্মর্তব্য, প্রায় দুই মাস আগে শুরু হওয়া এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়েছে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে। হরতাল ও অবরোধের কারণে ইতোমধ্যে ১১ বার পরীক্ষার সময়সূচি পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষা নিতে হয়েছে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। এইচএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই প্রতিক‚লতার পুনরাবৃত্তি হলে জুলাই মাসের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ওই সময় রোজা ও ঈদের কারণে পরীক্ষা নেয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারা একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে কিনা তা অনেকাংশে শিক্ষাদীক্ষার সুযোগকে কতটা কাজে লাগাতে পারবে তার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের কার্যকালাপে তাদের ভবিষ্যৎকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। বিশেষত, এবারের এসএসসি ও এইচএসসি পরিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর সাংঘর্ষিক রাজনীতি বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
সভ্য দেশে হরতাল-অবরোধের ঠাঁই নেই। গত তিন দশকে দেশের অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার স্বার্থে হরতাল-অবরোধ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে সমাজের বিশিষ্টজনদের পক্ষ থেকে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কারণে অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত থাকা সত্ত্বেও তা ভূতের মতো চেপে বসে আছে জাতির ঘাড়ে। সরকারে থাকলে হরতাল-অবরোধভিত্তিক নেতিবাচক রাজনীতির বিরোধিতা এবং বিরোধী দলে থাকলে তার লাগামহীন চর্চা আমাদের রাজনীতির সাধারণ বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। হরতাল-অবরোধে অর্থনীতির ক্ষতিটা হয় ব্যাপক। এই কর্মসূচি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ায়, দেশের অর্থনীতি ও শিক্ষা কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হরতালে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার সময়সূচি ভেঙে পড়ে, প্রস্তুতি নষ্ট হয়। ঠিকমতো ক্লাস ও পরীক্ষা হয় না। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ চলে যায় অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হওয়া সভ্য সমাজের জন্য একটি অকল্পনীয় বিষয়। স্বাধীনতার ৪৪ বছরে নানা ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে গেলেও আমাদের রাজনীতিকরা যে এখনো নিজেদের মনমানসিকতাকে জংলি সমাজে আবদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে তাদের দায়িত্বহীনতা তারই প্রমাণ।
©somewhere in net ltd.