নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭ জন মানবতা বিরোধীর বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে, যদিও চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। মিরপুরের কসাই কাদের মোল্লার পর সোহাগপুরের জল্লাদ কামারুজ্জামানের উইকেটটি হলো দ্বিতীয়। প্রথম উইকেটটি পড়তে ৪৩ বছর সময় নিয়েছে। এর এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় উইকেট। প্রথম উইকেটগুলো পড়তে একটু সময় নেয় বটে; তৃতীয়-চতুর্থ উইকেট ঝটপট পড়তেও পারে, আবার সময়ও নিতে পারে। তবে উইকেট যখন পড়তে শুরু করেছে, তখন চটজলদি একের পর এক উইকেট পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বিদেশি প্রভুরা যাই বলুক না কেন, দেশীয় আম্পায়াররা যখন আছেন, তখন হলুদ সিদ্ধান্ত না হওয়ারই কথা। অবশ্য ‘পিচ’ ভালো চাই; সরকার পাল্টে গেলে পিচ খারাপ হয়ে যাবে। না, সরকার পাল্টানোর কোনো সম্ভাবনা নেই, তবু বিচারকার্যটি দ্রুততার সঙ্গে করা উচিত। কারণ উইকেটের সংখ্যা তো দশ নয়, অনেক।
তৃতীয়-চতুর্থ বা পঞ্চম উইকেটগুলো বেশ শক্ত এবং এরা হলেন, সাকাচৌ, নিজামী বা মুজাহিদী প্রমুখ। এই উইকেটগুলো পড়লে রাজাকারদের ব্যাটিংয়ে ধস নেমে যাবে। বিচারিক বিলম্ব বা শৈথল্যে আমরা গোলাম আযম ও সাঈদীকে হারিয়েছি। স্বাভাবিক বা জেলে বসে মৃত্যুর চেয়ে মানবতা বিরোধীদের জন্য ফাঁসির রজ্জু অনেক বেশি কাম্য। কারণ কামারুজ্জামানের দণ্ড কার্যকর হওয়ার পর সোহাগপুরের সব বিধবার চোখের অশ্রæ মুছে গেছে। চার দশকের বেশি সময় কামারুজ্জামান ওদের বুকে জদদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। এতকাল পরে ওদের বুক খালি হয়ে স্বজন হারানোর ব্যথায় ওরা ঢুকরে কেঁদে উঠেছে। হয়ত মনে মনে বলেছে, ‘শেষ পর্যন্ত বিচারটি হয়েছে’। হয়ত হারানো স্বজনদের উদ্দেশ্যে ওরা বলেছে, ‘তোমাদের মৃত্যু বৃথা যায়নি।’ অপরাধী শাস্তি পেয়েছে। এর মধ্যে সুসংবাদ হলো, শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা পহেলা বৈশাখ সোহাগপুরের বিধবা মা-দের সঙ্গে পালন করার কথা ঘোষণা করেছে। মায়ের যোগ্য সন্তানের কাজ বটে।
কামারুজ্জামান নাকি মরে শহীদ হয়ে গেছেন! মরণের পর শহীদদের জন্য নাকি ‘বিশেষ সুবন্দোবস্ত’ আছে, তাই তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। অনেকদিন আগে এক ছাত্রী বলেছিল, ‘স্যার, সাঈদী যদি বেহেশতে যায়, তবে ওই বেহেশতে আমরা যেতে রাজি নই’। তেমনি কামারুজ্জামান যদি শহীদ হন, তবে প্রকৃত শহীদরা তাদের জন্য সংরক্ষিত সুব্যবস্থায় থাকতে নাও চাইতে পারেন। কামারুজ্জামান শহীদ হন কি করে আমার জানা নেই। তবে ব্যারিস্টার তুহিন আফরোজ যেমন বলেছেন, ‘এই মৃত্যুতে শহীদ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মানবতাবিরোধী একজন অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, সেটা কার্যকর হলে তিনি কি করে শহীদ হন। টিভি-পত্রপত্রিকায় দেখলাম, কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা ‘ভি’ সাইন দেখাচ্ছেন। ‘ভি’ মানে ভিক্টরি, ইংরেজি শব্দ। ওদের তো ইংরেজিতে সাইন না দেখিয়ে আরবি সাইন দেখানো উচিত, নিদেনপক্ষে উর্দু। কারণ বাংলা বা বাংলাদেশ তো ওদের নয় বা ওরা তা মানেও না। আর ইংরেজি তো নাসারার ভাষা! এ সময় পৃথিবীর মানুষ সুইসাইড বোম্বারদের জ্বলায় অতিষ্ঠ। আমদের এক বিদেশি বন্ধু একদিন বলেন, ‘আচ্ছা, ওরা যদি হেভেনে যেতে এতই উদগ্রীব, তখন ওদের সেখানে পাঠিয়ে দিলেই তো হয়’। আর এক বন্ধু অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে বলেন, ‘আমেরিকা তো তাই করছে।’ আসলে ওরা যদি এই অসম্মানজনক মৃত্যুকে ‘ভি’ মনে করে তবে সরকারের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের আরো বেশি সংখ্যক ‘ভি’ উপহার দেয়া। সেটা হলে ওরা ওপারে গিয়ে মজা লুটুক, এ পারে আমরা রাজাকারমুক্ত হই।
কামারুজ্জামানের ছেলে নাকি একবার দম্ভ করে প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘কুকুর’ বলে গালি দিয়ে বলেছিল, ‘পারলে বিচার করিস।’ হ্যাঁ, বাঙালি শেষমেশ বিচার করেছে। ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রাজাকারেরও আছে, ‘জাস্টিস ইজ সার্ভড ফাইনালী’। কামারুজ্জামানের ফাঁসির পর দেশে টুকটাক হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘লজ্জা লিখেছি ২৩ বছর আগে। এখনো লজ্জার ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশে। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি হওয়ার পর তার সৈন্যসামন্ত হিন্দু মন্দিরগুলোয় হামলা চালাচ্ছে। বরগুনা বা বাগেরহাটের মন্দিরে ইতোমধ্যে ভাঙচুর করেছে। কিছু হিন্দু বাড়ি লুট করেছে। এরপর হয়ত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার খবর পাব, ধর্ষণের খবরও পাব। এরপর যে খবরটা পাব না সেটা হলো হিন্দুদের দেশত্যাগ। হিন্দুর সংখ্যা কমতে কমতে শূন্যে এসে ঠেকলে হয়ত শুনব। তখন বিস্মিত হব না। বিস্মিত হতে হতে এখন আর কিছুতেই বিস্মিত হই না।’
দেশমাতৃকা যুদ্ধাপরাধী মুক্ত হোক, এই কামনায় শেষ করছি।
২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:২৫
তালপাতারসেপাই বলেছেন: হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ওদেরকে অলআউট করবোই ইনশাল্লাহ।
২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:২৬
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: পুলিশের কোলে বসে 'আন্দোলন' করে, সকাল-বিকাল বিরানী খেয়ে 'দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ' করে জামায়াত বিরোধী সরকারকে বশে এনে আইন পরিবর্তন করে যাবজ্জীবনকে ফাঁসিতে রুপান্তর করে 'ভি' চিহ্ন প্রদর্শনে কোন লজ্জা হয়না।
৬৪% পারসেন্ট ভোটে ক্ষমতায় গিয়ে ৫% ভোট পাওয়া দলের উপর সরকারী ক্ষমতা, আইন, পুলিশ, র্যাব, বিচার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে একটার পর একটা উইকেট ফেলা কোন বীরত্বের ব্যাপার নয়।
পয়লা বৈশাখে ভীড়ের মধ্যে চাপা পড়া মেয়েদেরকে নিয়ে ৩০/৩৫ জন মদমত্ত ছাত্রলীগ কর্মী যে বীরত্ব দেখিয়েছে - এটা হল সেই ধরণের বীরত্ব। এই বীরত্বে কেবল লজ্জাই প্রাপ্তি হয় - গৌরব ধুলিস্যাত হয়।
২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০৯
তালপাতারসেপাই বলেছেন: নীল ছবি ২০১,
রাজাকারের লজ্জা নেয় আমরা তা জানি। ৭১এ তোমার মাকে চু*এ যে বীরত্ব দেখিয়েছে তাতে তুমি তাদের সন্তান হয়েছ।
পয়লা বৈশাখে ঘটনা ঘটিয়েছে তোমার চাচারা।
৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
সাদী ফেরদৌস বলেছেন: যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি হওয়ার পর তার সৈন্যসামন্ত হিন্দু মন্দিরগুলোয় হামলা চালাচ্ছে। বরগুনা বা বাগেরহাটের মন্দিরে ইতোমধ্যে ভাঙচুর করেছে। কিছু হিন্দু বাড়ি লুট করেছে। এরপর হয়ত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার খবর পাব, ধর্ষণের খবরও পাব
আফসোস ! স্বাধীন বাংলাদেশে এখনো ওদের তাণ্ডব দেখে ।একটা বিশেষ রাজনৈতিক দলের জন্যই আজ ওরা এতটা শক্তিশালী হয়েছে ।
ব্যাপার না , আমরা মরি নাই ।এবং সুখের কথা স্বাধীন বাংলাদেশে আমরাই সংখ্যায় বেশি ।আমাদের রক্তে মিশে আছে ৫২ , ৬৬ , ৬৯ , আর ৭১ । জয় আমাদের হবেই ।
বাংলা ও বাঙ্গালির জয় হোক
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের জয় হোক
লেখক কে ধন্যবাদ । বরাবরের মতই অসাধারণ লিখেছেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:১২
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ওদেরকে অলআউট করবোই ইনশাল্লাহ।