নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
যিনি নির্বাচন প্রতিহত করতে চেয়েছিলেন, তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন গাড়িবহর নিয়ে। তার বহরের নমুনা হয় বরাবরই আড়ম্বরপূর্ণ, জাঁকজমকপূর্ণ, চমক লাগানো, এমনকি উস্কানিমূলকও। তিনি বলেছেন বিএনপির গণজোয়ার দেখে সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে। যার এত গণসমর্থন তিনি কেন গত ৫ জানয়ারি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে গণদের পোড়ানোর কর্মসূচি হাতে নিলেন? তারপর সিটি নির্বাচনের মতো স্থানীয় নির্বাচনে রাস্তায় নেমেছেন ভোট চাইতে। এটা মিডিয়ার যুগ, তিনি ভোট চেয়ে আবেদন জানালে তো মুহূর্তে প্রচার হয়ে যাবে। বেগম জিয়া কৌশলের চেয়ে অপকৌশলের চর্চা সব সময় বেশি করেন।
বন্দুকধারী সৈন্য-সামন্ত নিয়ে তিনি দামি গাড়িতে চড়ে ভোটের প্রচারণায় নেমেছেন। গণজোয়ারের নেত্রীর বন্দুকধারীর প্রয়োজন হলো কেন? তিনি জানেন, ৯৫ দিনে অবরোধ-হরতাল দিয়ে দেশের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন। তিনি নিশ্চিত জানতেন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, যানবাহনের পেশাজীবীরা, ১ হাজার পঙ্গু মানুষের আত্মীয় স্বজনরা, দেশের প্রতিটি বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা তার ওপর ক্ষেপে আছে। তারা মনস্তাত্তি¡কভাবে খালেদা জিয়ার অনুশোচনা বিবর্জিত নির্বিকার ভাবমূর্তিতে ক্ষুব্ধ হয়েছে, তাই তারাই কালো পতাকা দেখিয়েছে। কালো পতাকা প্রদর্শন করা কি পেট্রলবোমা ছুঁড়ে মারার চেয়ে খারাপ নাকি? পৃথিবীর অনেক বড় বড় বড় নেতাদের তাদের দেশের মানুষ কালো পতাকা দেখিয়েছে, আবার ফুলের মালাও দিয়েছে। তিনি এতই ‘আপসহীন’ যে তার বিরুদ্ধে কালো পতাকাও দেখানো যাবে না। তার অহঙ্কার এতটাই চূড়াস্পর্শী যে তার জন্য আলাদা গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে।
সরল সাদা মনে তিনি ভোট চাওয়ার জন্য রাস্তায় নামেননি, আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত। তাই যদি হত তাহলে তিনি সশস্ত্র নিরাপত্তা অফিসার নিয়ে মাঠে নামতেন না। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুব্ধ নাগরিকদের খালেদা জিয়া সহজভাবে গ্রহণ করেননি। যিনি ৯৫ দিন ঘর থেকে নামেননি, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে যাননি, একটি বার্ন ইউনিটও পরিদর্শন করেননি, এবার তিনি পুলিশকে না জানিয়ে সরাসরি রাস্তায় নেমে পড়লেন- এর মধ্যে সরলতার চেয়ে গরলতাই বেশি।
হরতাল এত মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তারপরও তিনি আবার হরতাল ডেকেছেন। মনুষ্যত্বের চর্চা থাকলে ফের হরতাল দিতে তিনি একটু ভাবতেন। তার চারপাশে তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিবর্জিত লোক, যারা গণহত্যার সাফাই গায়, তারাও বেগম জিয়াকে বিবেকের চর্চা করার প্রেরণা দেয় না। রাজনীতি মানবতা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। হত্যা মধ্যযুগীয় ধারা, রাজনীতির ধারা নয়। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ যদি মানবতার পরিচয় এবং আইনের শাসনকে গুরুত্ব না দিতেন তাহলে ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফেরার আগে রাজাকাররা সমূলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। রাজাকাররা প্রধানমন্ত্রী, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেত না। গত ২১ বছরে রাজাকারদের ভোটের হার অনেক বেড়েছে। তারা নীরবে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েছে। ইসলামের নাম বিক্রি করে তারা মধ্যপ্রাচ্য থেক পেট্রডলার এনে মজবুত হয়েছে। অস্ত্র মজুত করেছে। এসব খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে শক্তি যোগান দিয়ে যাচ্ছে, এজন্য বাংলার মা-বোনদের বুক খালি করতে বিচলিত হচ্ছেন না।
এ ছাড়া ’৭৫ পরবর্তী কালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চক্রবৃদ্ধিহারে অনৈতিক রাজনীতির প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশকে ভূতের মতন পেছন দিকে হাঁটানো হয়েছে। রাজনীতির মঞ্চে ধর্ম ডেকে এনে ধর্মের চরম বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। আলেম সমাজের মধ্যে বিভাজন ঘটানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ইসলামের বিপক্ষে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ ঘুষ-দুর্নীতি খালকাটার নামে অর্থের অপচয়, গ্রাম সরকারের নামে অবাধে লুটপাট চলেছে জিয়ার আমলে। জিয়াউর রহমানের আমলে উত্তরবঙ্গে মা-বোনেরা প্রকাশ্যে বেশ্যা পাড়ায় দেহ বিক্রি করতে চলেছিল। আবার অন্যদিকে নীল-অশ্লীল ছবি প্রদর্শনের ব্যবসা, প্রিন্সেস লাকিখানের উলঙ্গ নৃত্য- এসব জঘন্য সামাজিক অবক্ষয় শুরু হয়েছিল। এই যে সমাজকে কলুষিত করার কাজ, এই বর্জ্য থেকে একটি প্রজন্মের জন্ম হয়েছে যারা জামায়াত-বিএনপির ভোটার হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। উস্কানি, হঠকারিতা অস্ত্রবাজি, পেট্রল-বোমাবাজি সব অপশক্তি খালেদা জিয়ার পতাকাতলে দাঁড়িয়েছে।
রাজনীতির সুস্থ প্রতিযোগিতা খালেদা জিয়ার অভিধানে লেখা আছে বলে মনে হয় না। সুস্থ রাজনৈতিক পথ ধরে তিনি রঙিন চশমা পরে, গাড়িতে চড়ে কাওরান বাজার গিয়েছিলেন বলে মনে হয় না। পরিস্থিতির জট পাকানোই ছিল তার নিয়ত। তাই হয়েছে, জট পাকিয়েছে। তার গাড়ি বহরে হামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। সেই গাড়ি নিয়ে তিনি বিদেশী ক‚টনীতিকদের দেখিয়েছেন। এত বিদেশ-নির্ভরতা কেন? কথায় কথায় যারা বিদেশের দুয়ারে ধর্না দেন তারা আবার ধর্মের দোহাই দেন কীভাবে? তারা আবার জঙ্গি লালন করেন কীভাবে? তারা আবার ‘নাস্তিক সরকার’ বলেন কীভাবে? যাদের কাছে ধরনা দেন তারা সবাই কি মুসলিম? বিএনপি জামায়াতের বড় কৃতিত্ব ভণ্ড রাজনীতির জন্ম দেয়া। ভণ্ড রাজনীতিতে মানবতা থাকে না, বিবেক থাকে না, মনুষ্যত্ব থাকে না, সহনশীলতা থাকে না।
পাকিস্তানি শাসকরা ছিল মদ্যপ, শূকরের মাংস খেকো বেনামাজি। তারপরও তারা ইসলামের ঝান্ডা উড়িয়ে দিত। তাদের ইসলাম ছিল ভারত বিরোধিতা। এই ন্যাক্কারজনক ভন্ডামি উত্তরাধিকার সূত্রে পাকিস্তান থেকে পেয়েছেন খালেদা জিয়া, এজন্য অসুস্থ নিয়তে কাওরান বাজারে গিয়েছিলেন ভোট চাওয়ার জন্য। আমরা চাই সুস্থ রাজনীতি, সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা। আমরা চাই সৎ ও স্বচ্ছ রাজনীতি, মুুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার রাজনীতি।
সুত্র
২| ০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ২:০৩
বাংলার জামিনদার বলেছেন: সব দিকেই খেয়াল রাখেন দেখি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭
কানাই স্যার বলেছেন: গুরু গুরু/